Ajker Patrika

ফরিদপুর বিভাগ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে গণসমাবেশ ও পদযাত্রা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুর বিভাগ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে শহরে গণসমাবেশ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। আন্দোলনকারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দ্রুত ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানান।

কর্মসূচি থেকে বক্তারা শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে বিভাগ বাস্তবায়নবিরোধী আন্দোলনকে ‘আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন’ এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দেন।

‘ফরিদপুরের সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে আজ সকাল ১০টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে গণসমাবেশ শুরু হয়। পরে বেলা ১১টায় পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে জনতা ব্যাংকের মোড় ও হাসিবুল হাসান লাবলু সড়ক হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ডে উল্লেখ করা হয়, ‘ফরিদপুর বিভাগ নিয়ে টালবাহানা মানব না’, ‘ফরিদপুরের সাথে বৈষম্য মানি না, মানব না’, ‘ফরিদপুর বিভাগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে’।

এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ১৯৮৫ সালে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসা সাংবাদিক ও লেখক মফিজ ইমাম মিলন। তিনি বলেন, একসময় ফরিদপুরের অন্তর্ভুক্ত ছিল বরিশাল জেলা। ১৮৯৩ সালে বরিশালকে আলাদা করা হয়। সেই বরিশাল আজ বিভাগীয় শহর, ময়মনসিংহকে বিভাগ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক ফরিদপুরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা দল-মতনির্বিশেষে সকলে একসঙ্গে আন্দোলন করে যাব। যত দিন বিভাগ বাস্তবায়ন না হবে, তত দিন মাঠ ছাড়ব না।

ফরিদপুর উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘ফরিদপুর বিভাগ ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন উন্নয়ন কমিটির নামে আমাদের যাত্রা শুরু ১৯৮৫ সাল থেকে। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে এসেছি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এই সরকারের আমলে ফরিদপুর বিভাগের কার্যক্রম শুরু হবে। তাহলে ঐতিহাসিক ফরিদপুরের পুনঃমর্যাদা অধিষ্ঠিত হবে।’

আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুরকে বিগত সময়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বঞ্চিত করেছিল। ফরিদপুরের বড় রিজিওনাল অফিসগুলো গোপালগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে বিভাগবিরোধী আন্দোলন করছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে আন্দোলন করছে। এই সরকার তাদের ফাঁদে পড়ে বিভাগ বাস্তবায়ন না করলে কঠোর আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শহিদুল ইসলাম বাবুল। তিনি এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, ‘এ দাবি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দাবি নয়, এটা ফরিদপুরের ২৫ লাখ মানুষের দাবি। বাংলাদেশের ১০টি পুরোনো জেলার মধ্যে ফরিদপুর একটি। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু ফরিদপুর অবহেলায় রয়ে যায়। এই পুরোনো জেলা রাজনীতিতে, কৃষ্টিতে, সংস্কৃতিতে, জনসংখ্যা ও ভৌগোলিকভাবে পদ্মার এপারে ঢাকার সঙ্গে থাকার কোনো যুক্তি নেই।’

শহিদুল ইসলাম দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে এই সরকারের আমলে ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ভাঙ্গা-ফরিদপুর সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ, দৌলতদিয়া-আরিচায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের দাবি জানান। এ জন্য তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য দেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল প্রতিনিধি, তরুণ সংগঠক ও শিক্ষার্থী নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

ভাইকে ১১১ কোটি টাকার বাংলো তাহলে এ কারণেই দিয়েছেন কোহলি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট রেলস্টেশনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের ঘোষণার দুদিন পরই সিলেট রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ‍দুপুরে এই অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানে রেলস্টেশনের সামনে বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বিপুল পুলিশও উপস্থিত ছিল।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিক মাহমুদ কবীরের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের শুরুতে তিনি অবৈধ স্থাপনা যাঁরা বসিয়েছেন, তাঁদের ২০ মিনিট সময় দেন সরিয়ে নেওয়ার জন্য। ২০ মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন দোকান ও এসব অবৈধ স্থাপনার মালিকেরা তাঁদের মালপত্র সরিয়ে নেন। পরে বুলডোজার দিয়ে স্থাপনাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার সিলেট রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে গিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ওই এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কথা জানিয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

ভাইকে ১১১ কোটি টাকার বাংলো তাহলে এ কারণেই দিয়েছেন কোহলি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সৈয়দপুরে ১০ শিক্ষকের কলেজে এক পরীক্ষার্থী, তবুও ফেল

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
সাতপাই উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাতপাই উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কলেজটিতে বর্তমানে ১০ জন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। কলেজটির পরিচিতি থাকলেও শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র একজন। চলতি বছর এই একজন শিক্ষার্থী শুধু এক বিষয়ে (তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

আজ বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণা হলে দেখা যায়, কলেজটির একমাত্র পরীক্ষার্থী দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারেনি। এমন ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার সাতপাই উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে।

ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা যায়, মো. খায়রুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠান থেকে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে ফেল করে। সে এ বছর আবার প্রতিষ্ঠানটি থেকে ফরম ফিলাপ করে ওই এক বিষয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ফল প্রকাশে দেখা যায়, ওই একজন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, অর্থাৎ ওই কলেজ থেকে এ বছর কেউ পাস করেনি; একজন পরীক্ষার্থী, একজনই ফেল।

সূত্রটি আরও জানায়, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে শিক্ষকেরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১০ জন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু-একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী নিয়ে কোনো রকমে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। কলেজের শিক্ষকেরাও নিয়মিত আসেন না। ক্লাস ঠিকমতো হয় না। প্রতিদিন আগেই ছুটি হয় প্রতিষ্ঠানটিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চান না কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হোক। তাই তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে অনাগ্রহী। আমরা স্যারকে একাধিকবার বলেও তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে চান না। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির জমি নিয়েও রয়েছে ঝামেলা। ১০ বছর আগে আমাদের নিয়োগ দেওয়া হলেও আমরা কোনো বেতন-ভাতা পাই না।’

অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থী মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ১ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে কলেজে ভর্তি হই। এরপর ক্লাস করার জন্য অধ্যক্ষ স্যারকে কল দিলে তিনি বলেন যে, তুমি বাসায় ও প্রাইভেটে পড়ো।’

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিম এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘কলেজটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি থেকে একজন মাত্র শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিয়ে ফেল করার বিষয়টি জেনেছি। কেন এমন হলো—বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

ভাইকে ১১১ কোটি টাকার বাংলো তাহলে এ কারণেই দিয়েছেন কোহলি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিরপুরের আগুন নেভাতে আরও সময় লাগবে, বের হচ্ছে বিষাক্ত পানি ও গ্যাস: ফায়ার সার্ভিস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে রাসায়নিক গুদামের আগুন নেভাতে আরও সময় লাগবে। ভেতর থেকে এখন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক পানি ও বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে আসছে। ফলে এই মুহূর্তে ওই এলাকা বিপজ্জনক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপনগর শিয়ালবাড়ি ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান।

কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ‘কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন খুব ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। যার কারণে আমরা নিজেদের সেফটি বজায় রেখে কাজ করছি। এই আগুন নির্বাপণ করতে একটু সময় লাগবে। সকাল থেকে আমরা প্রত্যেকটা গ্রাউন্ড মনিটরে দুইটা করে ডেলিভারেজ দিয়ে পানি দিচ্ছি। মোট চারটা লাইনে পানি দিচ্ছি। সকাল থেকে একটু গন্ধ বেশি ছিল। কুয়াশা আকারেও পানি দিচ্ছি। পানির সঙ্গে কেমিক্যালটা মিশে যাচ্ছে। ভেতর থেকে যে পানি আসছে—এটা আমাদের মানবদেহের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এলাকার জনগণকে এটা থেকে নিরাপদে থাকতে হবে। ৩টার দিকে আমাদের একটা বিশেষজ্ঞ দল আসবে। তারা ভিজিট করে বিস্তারিত আপনাদের বলবে।’

ভেতরে প্রবেশের বিষয়ে নজমুজ্জামান বলেন, ‘গুদামের ওখানে স্টিলের একটা গেট ছিল। আগুন লাগার পর থেকেই সেটা তালা মারা ছিল। এই তালা কেটে আমরা ভেতরে প্রবেশ করেছি। ভেতরে গ্রাউন্ড মনিটর সেট করে আসছি। সেখানে কুয়াশার মতো করে পানি দিচ্ছি, যাতে কেমিক্যালের বিক্রিয়া কমে যায় এবং এলাকার পরিবেশ নিরাপদ হয়।’

বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ে কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ‘এই গ্যাস মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। নিজের নিরাপত্তার জন্য আমরা যেন সেফ পজিশনে চলে যাই। অন্ততপক্ষে অনেক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’

রাসায়নিকের গুদামে মরদেহ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা গেট খুলে দেখেছি, কিন্তু আমরা সঠিকভাবে এখনো দেখতে পাইনি ভেতরে লাশ আছে কি না। আমাদের ধারণা, সেখানে লাশ থাকার সম্ভাবনা কম। কারণ, গেট বন্ধ ছিল।’

কী ধরনের কেমিক্যাল ও দ্রুত কাজ শেষ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্লিচিং পাউডার, অ্যাসিড, সোডিয়াম-বায়ো-কার্বনেট, পটাশসহ আরও কিছু কেমিক্যাল ছিল। আগুন লেগে সব এক হয়ে গেছে। ভেতরে বিস্ফোরণ হচ্ছে। সময় না দিয়ে দ্রুত কাজ করতে গেলে বিপদের আশঙ্কা থাকে। আমাদের গ্রাউন্ড মনিটর সেখানে সেটআপ করে আসছি। আর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখানে কুয়াশা আকারে পানি দিয়ে এই বিক্রিয়া কমাতে হবে। আমরা সেভাবেই করছি। আমাদের আধুনিক গাড়ি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। এ মুহূর্তে এই এলাকা বিপজ্জনক। সবাই নিরাপদে থাকুন। কেমিক্যালের আগুন নেভাতে গেলে দ্রুত অ্যাকশনে যাওয়া যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

ভাইকে ১১১ কোটি টাকার বাংলো তাহলে এ কারণেই দিয়েছেন কোহলি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ৩ বাংলাদেশির লাশ, কুপিয়ে ও তির মেরে হত্যার অভিযোগ

হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ০১
ভারতের ত্রিপুরায় নিহত বাংলাদেশিদের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় থানা-পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ত্রিপুরায় নিহত বাংলাদেশিদের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় থানা-পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই এলাকায় তিন বাংলাদেশিকে কুপিয়ে ও তির মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চুনারুঘাটের বাল্লা স্থলবন্দর দিয়ে ওই তিন ব্যক্তির লাশ হস্তান্তর করে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ সময় বিজিবি এবং বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন চুনারুঘাটের আলীনগর গ্রামের আশ্বব আলীর ছেলে জুয়েল মিয়া (৩২), বাসুল্লা গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে পণ্ডিত মিয়া (৪৫) ও কবিলাশপুর গ্রামের কদ্দুস মিয়ার ছেলে সজল মিয়া (২০)।

এর আগে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম জানান, বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই তিন ব্যক্তির লাশ হস্তান্তরের কথা রয়েছে। লাশ গ্রহণের জন্য পুলিশ, বিজিবি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বল্লা সীমান্তে অপেক্ষা করছেন।

নিহত পণ্ডিত মিয়ার ছেলে জাহির মিয়া জানান, গত মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাবাসহ তিনজন বিড়ির পাতা সংগ্রহের জন্য পাহাড়ে গিয়েছিলেন। ভুলবশত হয়তো তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে যান। এর পর থেকে তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় খবর আসে, তাঁদের লাশ ভারতে রয়েছে।

থানা-পুলিশ জানিয়েছে, ওই তিন ব্যক্তি গরু আনার জন্য গত সোমবার রাতে অবৈধভাবে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ত্রিপুরার খোয়াই জেলার বিদ্যাবিল এলাকায় প্রবেশ করেন। সেখানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী তাঁদের কুপিয়ে ও তির মেরে হত্যা করেন। পরে ত্রিপুরার খোয়াই থানা-পুলিশ তাঁদের লাশ উদ্ধার করে।

চুনারুঘাটের গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তারেকুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে বিজিবি নিহত ওই তিন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। পরে বিএসএফের পক্ষ থেকে পাওয়া ছবি দেখে জুয়েল, পণ্ডিত ও সজলের লাশ শনাক্ত করা হয়।

৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিনুল রহমান বলেন, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

ভাইকে ১১১ কোটি টাকার বাংলো তাহলে এ কারণেই দিয়েছেন কোহলি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত