Ajker Patrika

আঁধারে ডুবছে রুপালী পর্দা

মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
আঁধারে ডুবছে রুপালী পর্দা

এক সময় নাগরিক বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল সিনেমা হল। নতুন বাংলা ছবি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা দেখার জন্য মানুষ ছুটে যেত সিনেমা হলে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দল বেঁধে বাংলা ছবি দেখত। আশি দশকে সিনেমা হলগুলোতে বিনোদনের জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ত। ঈদ-পূজা, পালা-পার্বণে গ্রাম ও শহরের মানুষ সিনেমা হলের সামনে লাইন ধরে দাঁড়াতো পছন্দের সিনেমার টিকিট কাটতে। তবে তখনকার ছবির পরিবেশ ছিল আলাদা।

সেই সময় বিনোদনের একমাত্র জায়গা হিসেবে  সিনেমা হলগুলোর ব্যাপক কদর থাকলেও বর্তমানে কেবল টিভি আর অনলাইন স্যাটেলাইট, ইন্টারনেট আর পাইরেসির যুগে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আর যেতে চায় না। সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়। বর্তমান ডিজিটাল এই যুগে হল বিমুখ মানুষ টেলিভিশন-কম্পিউটার ও স্মার্ট ফোন সহ নানা মাধ্যমে খুঁজে নিচ্ছে নিজেদের পছন্দের সিনেমা ও বিনোদন এমনটাই বলছেন দর্শকেরা।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় উর্বশী, অবকাশ, মনিমালা নামে তিনটি সিনেমা হল ছিল। এর মধ্যে মিট মিট করে জ্বলছে কেবল অবকাশ সিনেমা হল। বেশ কিছুদিন আগেই মনিমালা সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে গত এক বছর ধরে ছবি চালানো বন্ধ রয়েছে এ দুটি হলেও। আগে এমন এক সময় ছিল মানুষ অবসর সময়ে বিনোদন পেতে ছুটে যেতো সিনেমা হলে। কবে কখন কোন নতুন বাংলা ছবি মুক্তি পাচ্ছে তা নিয়ে চারদিকে গুঞ্জন চলতো। নতুন ছবি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গেই মানুষ হলে গিয়ে টিকিটের জন্য লাইন ধরে ভিড় জমাতো। 

সে সময় ‘রূপবান, বেদের মেয়ে জোসনা, রাঙা ভাবি, কমলার বনবাস, কাসেম মালারপ্রেম, ঝিনুক মালা, রাখাল বন্ধু, ভাত দে, নবাব সিরাজ উদ দৌলার মতো পারিবারিক আবহে নির্মিত সব ছবি মুক্তি পেত। এসব বাংলা ছবি গ্রাম বাংলার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে দল বেঁধে সিনেমা হলে গিয়ে দেখত। গ্রামে এমন প্রথাও চালু হয়েছিল যে, নতুন জামাই শ্বশুরবাড়ি গেলে নতুন বউ ও শ্যালক-শ্যালিকাদের নিয়ে সিনেমা দেখতে যেতেন! কিন্তু সেই সব এখন ভাটা পড়েছে। চারদিকে নানা প্রযুক্তির ছড়াছড়ি। ডিজিটাল যুগে মানুষ ঘরে বসে এখন সিনেমা দেখতে পাচ্ছে। এখন হলগুলোতে দর্শক শূন্যের কোঠায়। আর এর প্রভাব পড়ছে আমাদের দেশের চলচিত্রের ওপর, যা এখন হুমকির মুখে। 

২০১০ সালের পর থেকে শুরু হয় সিনেমা হলে মন্দার ভাব। একে একে বন্ধ হতে থাকে হল। এক সময়ের রমরমা সিনেমা হলের অনেকগুলোই এখন পরিত্যক্ত, ব্যবহৃত হচ্ছে স্কুল ভবন, কমিউনিটি হাসপাতাল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গোডাউন হিসেবে। সিনেমা হলগুলোকে আধুনিকায়ন করতে সরকার থেকে ২০১৮ সালে একটা উদ্যোগে নেওয়া হলেও পরবর্তীতে আর আলোর মুখ দেখেনি।

উর্বশী সিনেমা হলের স্বত্বাধিকারী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. খুরশিদ আলম মতি বলেন, ২০১০ সাল পর্যন্ত সিনেমা হল ভালোই চলছিল। এরপর ধীরে ধীরে এটা লোকসানের মুখে পড়ে। চলচ্চিত্র নির্মাণকারীরা দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারছে না। ভালো সিনেমার অভাবে দর্শকের উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে। করোনার কারণে গত বছর থেকে শো চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে। 

স্থানীয় প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিক্ষক গবিন্দচন্দ্র সরকার বলেন, এক সময় ছবির গল্পগুলো মানসম্মত ও আকর্ষণীয় ছিল। সিনেমা হলে ছবি দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এখন হলগুলোতে বসে সিনেমা দেখার তেমন পরিবেশ নাই। ভালো মানের ছবি না হওয়ার কারণে দর্শকেরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪০ বিএনপি প্রার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪০ বিএনপি প্রার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত) অংশ নেওয়া বিএনপির ৪০ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার (৯ নভেম্বর) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপি ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। কিন্তু বিএনপির ৪০ নেতা তাতে অংশ নেওয়ায় তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত নেতারা দলের হাইকমান্ডের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁদের সেই আবেদন ও দলের প্রতি তাঁদের অবদান বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ তৌফিকুল হাদী ও মুফতি কমর উদ্দীন কামু; ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান মিঠু; ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল মিয়া, খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন ও শাহেদ সিরাজ; ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরহাদ চৌধুরী শামীম; ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাঈদুর রহমান জুবের; ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহিম মতছির; ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম মুনিম; ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মুজিবুর রহমান; ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সালমান চৌধুরী শাম্মী; ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বদরুল আজাদ রানা; ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মামুনুর রহমান মামুন; ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির সুহিন; ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ; ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম আহমদ রনি; ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আব্বাস; ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা কামাল ও সাহেদ খান স্বপন; ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাবেদ আমিন সেলিম, রাজু মিয়া ও সানর মিয়া; ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আবদুল মুকিত; ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর ও দুলাল আহমদ; ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের গউছ উদ্দিন পাখী ও দেলওয়ার হোসেন নাদিম; ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের দিলওয়ার হোসেন জয়; ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের উসমান হারুন পনির; ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলতাফ হোসেন সুমন; ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হাছিব এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সুমন আহমদ সিকদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টঙ্গীতে হাতের চারটি আঙুল কেটে নিল প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
হাসপাতালে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
হাসপাতালে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে টঙ্গীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যের হাতের চারটি আঙুল কেটে নিয়েছে অন্য গ্রুপের সদস্যরা।

‎‎আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে টঙ্গীর ভরান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

‎‎আঙুল বিচ্ছিন্ন হওয়া ওই সদস্যের নাম তাসরিফ (২৫)। এ ঘটনায় একই গ্রুপের অপর দুই সদস্য আবির (২৪) ও সিয়াম (২৪) আহত হয়েছেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে পুলিশ জানায়, আজ রাত ৮টার দিকে টঙ্গীর ভরান এলাকায় দুটি কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা জড়ো হয়। পরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ‘ভরানের সৈকত বাহিনী’ নামের কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা ‘তাসরিফ বাহিনীর’ প্রধান তাসরিফের বাম হাতের চারটি আঙুল কেটে নেয়। এ সময় আবির ও সিয়ামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় তারা।

‎ঘটনার একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এলে আহত ওই তিন তরুণকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।

‎টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, দুটি কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা দুই দফায় সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরুর দাবিতে ১১ নভেম্বর সমাবেশ ও পদযাত্রা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে আয়োজন ও স্টল ভাড়া কমানোর দাবিতে সমাবেশ ও পদযাত্রার আয়োজন করেছে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ।

আগামী মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে লেখক, পাঠক, প্রকাশক, শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের নিয়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশ্যে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রাও অনুষ্ঠিত হবে।

এই আয়োজন সফল করতে আজ রোববার বাংলাবাজারের মান্নান মার্কেটের তৃতীয় তলায় ‘একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ’-এর সঙ্গে সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশকদের একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশক সমিতির সভাপতি সাঈদ বারীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান।

সভায় বক্তব্য দেন আলমগীর শিকদার লোটন, মফিজুর রহমান লাল্টু, কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, কামাল হোসেন বাদল, জহিরুল ইসলাম বুলবুল ও শাহ আল মামুন। সভাটি পরিচালনা করেন বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হাসান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদে উদীচীর গানের মিছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলে উদীচীর নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলে উদীচীর নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। আজ রোববার সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলের আয়োজন করে উদীচীর নেতারা অবিলম্বে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর না হলে সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ বিকেলে তোপখানা রোডের সত্যেন সেন চত্বর থেকে শুরু হওয়া গানের মিছিলটি শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত এলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এরপর আরও একটু এগিয়ে ব্যাটারি গলির মুখে মিছিল শেষ করে উদীচীর নেতারা সেখানে বক্তব্য দেন।

উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুল আলম খান বলেন, এই গান বাংলার মানুষের প্রাণ। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই এই গানকে বাংলার মানুষের প্রাণ থেকে দূরে সরিয়ে দেবে।

হাবিবুল আলম সরকারের এ সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আপনারা যে কাজ করেছেন, নিজেদের প্রশ্ন করেন, এর অধিকার আপনাদের আছে কি না। আপনারা কাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন, এটা পরিষ্কার হওয়ার আর কিছু বাকি নেই।’ এক সপ্তাহের মধ্যে সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তবে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সারা দেশের মেহনতি মানুষকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন সংগীত শিক্ষায় শিক্ষিত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা গান গাইতে পারব না, এটা আমি ভাবতে পারি না...বিভিন্ন সংগীতের স্কুল, একাডেমি, প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংগীত বিভাগ আছে। সেখান থেকে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী বের হচ্ছে। তারা কী করবে?’

প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জামশেদ আনোয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘চরম অসভ্যতা’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘আমরা ২৬ জুলাই সত্যেন সেন চত্বর থেকেই গান গাইতে গাইতে কারফিউ ভেঙেছিলাম। গানকে আটকে রাখে এমন শক্তি পৃথিবীতে নেই। গানকে কীভাবে স্তব্ধ করবেন, মানুষের মনের কথা কীভাবে বন্ধ করবেন।’ তিনিও এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সংগঠক কামাল হোসেন বাদল বলেন, ‘আমরা চব্বিশের অভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, কোনো মৌলবাদী রাষ্ট্রের জন্য নয়।’

মিছিলে উদীচীর শিল্পীরা ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’, ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’, ‘ভয় কি মরণে’, ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘বাবা বলে গেল আর কোনো দিন গান কোরো না’সহ বেশ কিছু গান পরিবেশন করেন।

অংশগ্রহণকারীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘আমরা চাই হাসি গানে মুখরিত বাংলাদেশ’, ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক পুনর্বহাল করো’, ‘শিক্ষার ফ্যাসিকরণ রুখে দাঁড়াও’ এবং ‘শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ রুখে দাঁড়াও’।

আয়োজনে আরও বক্তব্য দেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, উদীচীর নেতা আরিফ নূর ও রহমান মফিজ। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল সোমবার একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিতে যাবে বলে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত