Ajker Patrika

এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে: ঢাবির সাবেক উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৭: ২৩
এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে: ঢাবির সাবেক উপাচার্য

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ফ্যাসিস্টের লোক রয়েছে এটা আপনারা সন্দেহ করেন, এটা অমূলক নয়। এই সরকারকে অসফল করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। তবে আমি মনে করি, এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী আজ বুধবার এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।

আজ সকালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার আগামী নির্বাচন নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাই সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ তৈরি করে দ্রুত জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে দেশের ভার তুলে দিতে হবে।

প্রধান অতিথি বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সময়কালকে অন্ধকার যুগ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘দেশ আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ২০০৭ সালের শুরু থেকে বাংলাদেশ এক অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছিল। এর অবসান হয় জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে।’

প্রধান অতিথি বলেন, ‘কেন অন্ধকার যুগ বলা হয়, কারণ এই সময়কে ইতিহাসে ইউরোপের মধ্যযুগের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এ সময় মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। ভোটের, কথা বলার অধিকার ছিল না। অন্যায়ের অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বললে আপনার পরিণতি কারাগার। পুরো দেশটা কারাগারে পরিণত হয়েছিল। এভাবে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেই স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যায়। ইউরোপের এই মধ্যযুগ বা অন্ধকার যুগ রেনেসাঁর মাধ্যমে শেষ হয়। একটা জাগরণের মাধ্যমে এর অবসান ঘটে। বাংলাদেশেও এই অন্ধকার যুগের শেষ হয়েছে একটি জাগরণের মধ্য দিয়ে।’

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই সরকার সংস্কার করবে। কিন্তু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই আন্দোলন হয়েছিল অধিকার পাওয়ার জন্য। সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সচল করতে হবে। তার জন্য নির্বাচন কী করে আয়োজন করা যায় তার রোডম্যাপ তৈরি করেন। একটা দিনক্ষণ ঠিক করেন। কিন্তু আপনারা অনাদিকাল ধরে সংস্কার করবেন তার জন্য তো মানুষ আন্দোলন করে নাই।’

অতিথি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা যেখানে ব্যর্থ হয়েছে আমাদের সন্তানরা সেখানে সফল হয়েছে। কবে নির্বাচন হবে কে ক্ষমতায় বসবে তার জন্য তারা বিপ্লব করেনি। আন্দোলন প্রথমে সরকার বিরোধী ছিল না। কিন্তু সরকার মনে করেছে এটা তাদের বিরুদ্ধে।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে যদি এই আন্দোলন হয় তাহলে এই সরকারের প্রথম কাজই হবে রাষ্ট্র সংস্কার করা। বিগত বছরগুলোতে কোনো আইন কানুন মানেনি এই আওয়ামী লীগ সরকার। সামগ্রিকভাবে একটা দলতন্ত্র কায়েম করে যে সর্বনাশ করেছে এটা মেরামত করা এত সহজ নয়।’

সাবেক জাসাস সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারি, আমাদের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি হতে পারে, কিন্তু আমরা পাহাড়ি সমতল সবাই জাতীয়তাবাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশি। ৭০ দশকে জিয়াউর রহমান এই চিন্তা করেছিলেন। ২০২৪ এ এসে এই তরুণেরা সেটি বুঝিয়ে দিলেন। ভারতের আগ্রাসনকে ঠেকাতে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত সার্ককে শক্তিশালী করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা হলো, মুক্ত স্বাধীন মূল্যস্ফীতি হীন একটি স্বাধীন দেশ। আজকে ছেলেরা হাসপাতালে এখনো। তাদের কেন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। যারা টাকা লুট করেছে তাদের অর্থ ফিরিয়ে এনে এদের চিকিৎসা করান।’

কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘মাহমুদুর রহমানকে জেলে ঢুকাইছেন এইটা মানব না। সাবের হোসেন চৌধুরীকে ছেড়ে দিয়েছেন। আমাদের হাইকোর্ট দেখায়েন না।’

আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সাবেক নিউ নেশন এর সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকমল বড়ুয়া। আয়োজনের সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির ব্যাপারী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

নির্বাচনের আগে কোনো বৈধ অস্ত্র ফেরত দেবে না সরকার

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত