Ajker Patrika

গ্যাসের লাইনের যে অবস্থা, ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরে বড় বিপদ: ম তামিম 

সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৭: ১০
গ্যাসের লাইনের যে অবস্থা, ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরে বড় বিপদ: ম তামিম 

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেছেন, ‘তিতাসের গ্যাস সরবরাহ লাইন বেশ পুরোনো, সেটা জেনেও তিতাস তাদের গ্যাস সঞ্চালন লাইন সংস্কার করে না। তাদের অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে গতকাল রাতের ঘটনা ঘটেছে। ভূমিকম্পসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্যাস প্ল্যান্ট বিস্ফোরণ হয়ে সামনে যে বিপদ ঘটবে, সেটা আমাদের কল্পনার বাইরে। তিতাসের উচিত নাগরিক নিরাপত্তার কথা ভেবে সরবরাহ লাইন জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা।’ ম তামিমের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার সাজ্জাদ হোসেন।

আজকের পত্রিকা: গতকাল গ্যাস লিকেজের জন্য তিতাস অতিরিক্ত গ্যাসের চাপকে দায়ী করেছে। বলা হচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ লাইনে অতিরিক্ত গ্যাস থাকার কারণে গ্যাস লিক করেছে। এই ব্যাখ্যা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

ম তামিম: ঈদের ছুটির কারণে অধিকাংশ কলকারখানা ও গৃহস্থালিতে গ্যাসের চাহিদা কমে যাওয়ায় সরবরাহ লাইনে গ্যাস উদ্বৃত্ত ছিল। চাহিদা কমে যাওয়ার পরেও তিতাস গ্যাস সরবরাহ না কমানোয় গ্যাসের অতিরিক্ত প্রেশারে আগে ঢাকা শহরে যেসব ছোটখাটো লিকেজ ছিল, সেগুলো দিয়ে গ্যাস বেরিয়ে গেছে। গতকাল গ্যাসের লিকেজ নিয়ে তিতাসের যে বক্তব্য, সেটা আমার মনে হয় যুক্তিযুক্ত। 

আজকের পত্রিকা: আগে আমরা শুনতাম, ঢাকা শহরের বিচ্ছিন্ন কিছু জায়গায় গ্যাসের লিকেজ হচ্ছে। কিন্তু গতকাল (সোমবার) ঢাকার অধিকাংশ জায়গায় লিকেজ ধরা পড়ার কারণ কী? 

ম তামিম: ঢাকা শহরে তিতাসের যেসব বিতরণ লাইন আছে, সেগুলো ৫০ থেকে ৬০ বছরের পুরোনো। এই পুরোনো লাইনগুলো নিয়মিত সংস্কার করা দরকার। কিন্তু তিতাস সেটা করে না। এর ফলে যেটা হয়েছে, আগে কোনো জায়গায় ছোটখাটো লিকেজ থাকলেও পাইপ লাইনে গ্যাসের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকার কারণে গ্যাসের প্রেশার ছিল কম। ফলে ওই সব ছোটখাটো ফুটো দিয়ে অতিরিক্ত গ্যাস বের হয়ে যায়নি। কিন্তু গতকাল সরবরাহ লাইনে অতিরিক্ত গ্যাসের চাপ থাকায় পুরো ঢাকা শহরে থাকা অসংখ্য ফুটো দিয়ে গ্যাস বেরিয়ে গেছে। আগে ছোটখাটো লিকেজ অথবা সরবরাহ লাইনে জং ধরে থাকলে, সেগুলো গতকাল গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের কারণে এক্সপোজ হয়ে গেছে। 
 
আজকের পত্রিকা: গ্যাসের এই লিকেজ আমাদের সরবরাহ লাইনের বড় দুর্বলতাকে ফুটিয়ে তুলেছে কি না? 

ম তামিম: তিতাসের গ্যাস সরবরাহ লাইনে লিকেজ আছে, সেটা আমরা আগে থেকে জানতাম। গতকালের ঘটনা লিকেজের ব্যাপকতাকে আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে। কাল ঢাকা শহরে যেভাবে লিকেজ ধরা পড়েছে, সেটা একটা বিশাল বিপদের কারণ হতে পারত। গ্যাস সরবরাহ লাইনের দীর্ঘদিনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গতকাল এ ঘটনা ঘটেছে। গতকালের ঘটনায় আমাদের গ্যাস সরবরাহ লাইনে যে প্রচুর লিকেজ আছে, সেটার একটা পরীক্ষাও হয়ে গেল। 

আজকের পত্রিকা: ঢাকা শহর এমনিতেই একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ভূমিকম্পের সময় গ্যাসের লাইন এমনিতে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। তার ওপর তিতাসের লাইনের যে ত্রুটি ধরা পড়েছে, সেটা নাগরিক নিরাপত্তায় বড় একটা হুমকি কি না?

ম তামিম: ভূমিকম্পের সময় গ্যাসের লাইন সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। তার ওপর আমরা গতকাল দেখলাম, ঢাকা শহরের সব জায়গায় তিতাসের সরবরাহ লাইনে প্রচুর ফুটো রয়েছে। তিতাসের সরবরাহ লাইনের বর্তমান যে অবস্থা, তার ওপর যদি ভূমিকম্প হয়, তাহলে ঢাকা শহরে বড় বিপদ, যেটা আমাদের কল্পনারও বাইরে। ভূমিকম্পের সময় মূল সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিতে হয়। আমি জানি না, তিতাসের সে রকম কোনো ব্যবস্থা আছে কি না। ভূমিকম্পসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে তিতাস কীভাবে গ্যাস সরবরাহ লাইন ম্যানেজ করবে, সে রকম প্রস্তুতি তাদের থাকা উচিত। অনেক ভালো ব্যবস্থাপনা থাকা সত্ত্বেও ভূমিকম্পের সময় গ্যাস সরবরাহ লাইনে আগুন ধরে যায়। সরবরাহ লাইনে আমাদের মতো দুরবস্থা থাকলে আর তো কোনো কথা নেই। 

আজকের পত্রিকা: গ্যাস সরবরাহ লাইনে তিতাসের দুর্বলতা আছে, সেটা সবাই জানে। কিন্তু তারপরও সরবরাহ লাইনে রক্ষণাবেক্ষণ ও ওভার হোলিংয়ের জন্য তিতাস কি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে? 

ম তামিম: আমরা দেখে আসছি, তিতাস সব সময় অ্যাডহক বেসিসে কাজ করে। কোথাও একটা লাইনে ফুটো দেখা গেছে, কোনো গ্রাহক অভিযোগ করলে তিতাস সেখানে সাময়িকভাবে সেই ফুটো সংস্কার করে। গ্যাস সরবরাহ লাইন আমূল সংস্কার করার কোনো পদক্ষেপ আমরা এখনো তিতাসের পক্ষ থেকে দেখিনি। আমরা অনেক দিন ধরে দেখে আসছি, তিতাস পাইপলাইনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে গ্যাস সরবরাহ করবে কি না, সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে। গতকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিতাসের উচিত সরবরাহ লাইনে গ্যাসের সরবরাহ বিষয়ে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে সরবরাহ লাইন সংস্কার করা। গ্যাস সরবরাহ লাইনে এখন যে অবস্থা, তাতে ভবিষ্যতে বড় বিপদ হতে পারে। 

আজকের পত্রিকা: গতকালের ঘটনায় দেখা গেল, তিতাস গ্যাসের লিকেজ বন্ধ করার জন্য সাময়িক পদক্ষেপ হিসেবে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এর বাইরে আপাতত আর কোনো টেকসই পদক্ষেপ তিতাস নিতে পারে কি না? 

ম তামিম: গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে পাইপলাইনের লিকেজ বন্ধ করার যে পদক্ষেপ তিতাস গতকাল নিয়েছে, সেটা কয়েক ঘণ্টার জন্য নিতে পারে। তবে সেটা কোনো টেকসই পদক্ষেপ নয়। বাসাবাড়িতে এক-দেড় ইঞ্চির ছোট ছোট সরবরাহ লাইনের পাশাপাশি যেসব বড় লাইন আছে, সেগুলোর লিকেজ চিহ্নিত করে তিতাসকে বন্ধ করার উপায় বের করতে হবে। ঢাকা শহরে কোথায় লিকেজ আছে, সেটা বের করতে তিতাসের উচিত প্রথমে ম্যাপিং করা, যাতে তারা সরবরাহ লাইনের লিকেজ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটা চিত্র পায়। 

আজকের পত্রিকা: দেশের গ্যাস-সংকট নিরসনে জনগণের টাকা ব্যয় করে অতিরিক্ত দামে বিদেশ থেকে এলএনজি নিয়ে আসছে সরকার। জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, লিকেজের কারণে মোট সরবরাহকৃত গ্যাসের প্রায় ২ শতাংশ অপচয় হয়, যা প্রায় ৬ মিলিয়ন ঘনফুট। একদিকে বেশি দামে গ্যাস আনছি, অন্যদিকে আমরা অপচয়ও করছি। 

ম তামিম: কিছুদিন আগেও আমরা টাকার অভাবে গ্যাস আনতে পারিনি। তিতাসের অদক্ষতার কারণে আমাদের মূল্যবান সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। লিকেজের কারণে প্রায় ৬ মিলিয়ন ঘনফুট প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে। তিতাসের গ্যাস চুরি মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ শতাংশ সিস্টেম লসে যাচ্ছে। এটা আমাদের জ্বালানি খাতের জন্য অনেক বড় বোঝা। তিতাস যদি সরবরাহ লাইনের লিকেজগুলো সংস্কার না করে, তাহলে প্রতি বছর কয়েক শ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হবে। আবার এলএনজি এনে অপচয় করার মতো বিলাসিতাও আমাদের মানায় না। তিতাসের উচিত ফরেন কারেন্সি সাশ্রয়ে গ্যাস অপচয়ে ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়া।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেরপুরে চালকলের গুদামে মিলল ৪ টন সরকারি চাল, গ্রেপ্তার ১

শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি চালকলের গুদামে অভিযান চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি চালকলের গুদামে অভিযান চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরে চালকলের গুদাম থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩ হাজার ৮৪০ কেজি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ ও খাদ্য অধিদপ্তরের যৌথ দল। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌর শহরের নবীনগর এলাকার মেসার্স ওয়াজকুরুনী রাইস মিলের গুদামে এই অভিযান চালানো হয়। আটক ব্যক্তির নাম এনামুল হক। তিনি গুদামের পরিচালক বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, চালকলের ভেতর দুটি অটোরিকশায় রাখা খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত পাটের ১২ বস্তা ও প্লাস্টিকের আটটি বস্তাভর্তি চাল জব্দ করা হয়। এ ছাড়া গুদামের ভেতরে রাখা খোলা চাল নতুন মোড়কে ভর্তি করা হচ্ছিল। সেখান থেকে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪০ কেজি চাল জব্দ করা হয়। তবে অভিযানের আগেই অটোরিকশা দুটির চালকেরা পালিয়ে যান।

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম চাল বলেন, চালকলের গুদাম থেকে সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কীভাবে, কারা এই সরকারি চাল গুদামে নিয়েছেন, তা নিশ্চিত জানতে তদন্ত চলছে।

শেরপুর খাদ্য বিভাগের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক পরীক্ষা করে প্রমাণ পেয়েছি, গুদামের চালগুলো দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল।’

শেরপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরেজমিনে চালগুলো আমরা দেখেছি। এগুলো খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল। এসব চাল বাইরে ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চালবোঝাই ট্রলিচাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে চালবোঝাই ট্রলির নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে মনিরামপুর-ঝিকরগাছা সড়কের বাকোশপোল মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দম্পতি হলেন উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত অনন্ত দাসের ছেলে রণজিৎ দাস (৫০) ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস (৪০)। রণজিতের স্থানীয় চাঁদপুর নতুন বাজারে ধান-পাটের আড়ত রয়েছে। পাপিয়া মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের মেকানিক ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বামী-স্ত্রী রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় চালবোঝাই ট্রলি তাঁদের চাপা দেয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে বেলা ২টার দিকে চিকিৎসক ওই দম্পতিকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বাকোশপোল মোড়ের চা-দোকানি ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার সময় চালবোঝাই একটি ট্রলি ঝিকরগাছার দিক থেকে মনিরামপুরের দিকে আসছিল। আর স্ত্রীকে পেছনে বসিয়ে মোটরসাইকেলটি স্বামী চালাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে সামনে আচমকা ট্রলি দেখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। এতে স্বামী-স্ত্রী দুজন পাকা রাস্তার ওপর পড়ে যান। এ সময় চালক ট্রলি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে চাপা দেন।

ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি দ্রুত পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করেছি। অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আহত স্বামী-স্ত্রীকে ইঞ্জিন ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে পুলিশ এসে ট্রলিসহ চালককে ধরে থানায় নিয়ে গেছে।’

মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত বলেন, ‘পাপিয়া আমার দপ্তরে মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ তিনি তদারকি করতেন। আজ স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে তিনি কাশিমনগর ইউনিয়নে নলকূপ স্থাপনের কাজ তদারকি করতে যাচ্ছিলেন। বাকোশপোল মোড় পার হওয়ার সময় ট্রলির নিচে চাপা পড়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনে নিহত হয়েছেন। পাপিয়ার মৃত্যুতে আমাদের দপ্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ‘ট্রলির নিচে চাপা পড়ে আহত মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমরা চালকসহ ট্রলি আটক করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে স্কুলে ঢুকতে পারলেন না সাবেক প্রধান শিক্ষক

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁর বদলগাছীতে এক সাবেক প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শাদাত হোসেন শামীম ও সহকারী শিক্ষক রিফাত আরার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষক শামীমকে বরখাস্ত করে। পরবর্তী সময়ে রেজাউল করিম নামের এক শিক্ষককে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ হঠাৎ করে শাদাত হোসেন শামীম তাঁর গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দেয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শামীম দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অন্যায়ভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আমি হাইকোর্টে মামলা করলে আদালত আমার পক্ষে রায় দেন এবং বকেয়া বেতনসহ পদে যোগদানের নির্দেশ দেন। সেই রায়ের কাগজ উপজেলা নির্বাহী অফিস ও থানায় জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে গেলে কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমি আত্মরক্ষার জন্য স্থান ত্যাগ করি।’

অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘হাইকোর্টের যে রায় দেখানো হয়েছে, সেটি ভুয়া বলে আমরা সন্দেহ করছি। আজ সে গ্রামের কিছু লোক নিয়ে জোর করে প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে বিদ্যালয়ে ফিরতে দেব না।’

একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের আদর্শ মানুষ। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ মানা যায় না। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এত বড় ঘটনার পর সে কীভাবে আবার বিদ্যালয়ে আসতে পারে?’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে ঢাকায় আছি। কোনো চিঠি এসেছে কি না, সে বিষয়ে অবগত নই।’

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাইকোর্টের রায়সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক আমাকে দেখিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘ঘটনার বিস্তারিত এখনো পাইনি। তবে হাইকোর্টের রায়ের কথা শুনেছি। ট্রেনিং শেষে এসে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিকটকে প্রেম, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে জিল্লুর রহমান (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমানের বাড়ি বগুড়ার কাহালু উপজেলার বামুজা গ্রামে। র‍্যাব-৫-এর একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানায়, প্রায় তিন মাস আগে টিকটকের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে জিল্লুরের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। মোবাইল ফোনে কথা হয়। পরে জিল্লুর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে পাবনার ঈশ্বরদীতে ডাকেন। গত ৯ অক্টোবর রাতে ওই তরুণী ট্রেনে ঈশ্বরদী পৌঁছালে জিল্লুর তাঁকে মোটরসাইকেলে চাপিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরান। পরদিন (১০ অক্টোবর) দুপুরে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া বাজার এলাকায় একটি কক্ষ ভাড়া নেন এবং ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

র‍্যাব জানায়, পরে বিয়ের কথা বললে জিল্লুর কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে কাজি অফিসে নেওয়ার কথা বলে ওই তরুণীর মোবাইল ফোন ও ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পর ভুক্তভোগী নিজেই ঈশ্বরদী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরপর মঙ্গলবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৫-এর রাজশাহী সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত