Ajker Patrika

কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড

দেড় ঘণ্টা দেরিতে আগুন নেভানোর কাজ শুরুর অভিযোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৪১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের সময় দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঘটনাস্থলে থাকা কুরিয়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা। ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিসের ইনচার্জ পরিচয় দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ওই কর্মকর্তা গতকাল রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগুনের সূত্রপাত বেলা আড়াইটা থেকে পৌনে ৩টার মধ্যে হয়। প্রথমে আমাদের কুরিয়ার সার্ভিসের পাশের জায়গা থেকে আগুন লাগে। প্রায় দেড় ঘণ্টা আগুন জ্বললেও তখনো সেটা ছড়ায়নি। এর মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট আসে। কিন্তু তারা কুরিয়ার সার্ভিসে ঢুকতে দেয়নি। আমরা ভেতরে গিয়ে আগুন নেভানোর জন্য চাপ দিই, কিন্তু ফায়ার সার্ভিস জানায়, তারা ভেতরে ঢোকার পারমিশন পাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি শুরুতেই ভেতরে ঢুকে পানি দেওয়া যেত, তাহলে আগুন এত ভয়াবহ হতো না। আগুন পরে একে একে অন্য গুদামগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। দেড় ঘণ্টা আগুন জ্বললেও ফায়ার সার্ভিসের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ ছিল না। এবার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেল।’

প্রত্যক্ষদর্শী সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান এম আর লজিস্টিকসের কর্মচারী মো. এনায়েত হোসেনও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কার্গো ভিলেজের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি, ৮ নম্বর ফটকে আটকে দেওয়া হয়। তাদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না বলে জানানো হয়। ফলে প্রায় ২০-২৫ মিনিট সময় নষ্ট হয়। এর মধ্যেই আগুন সারা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।’

কার্গো ভিলেজের কিউইপি-এক্সপ্রেস নামে একটি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী মো. সাইদ হোসেন বলেন, ‘দুপুর সোয়া ২টায় কেমিক্যাল গোডাউন থেকে আগুন দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিস আসে। কিন্তু তারা ভেতরে ঢুকতে পারেনি।’

তবে গতকাল শনিবার রাতে এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা গেটে যে গাড়ি দেখেছেন সেটি হয়তো অন্য কোনো সংস্থার ছিল। আমাদের ফায়ারের ইউনিট যখন ঘটনাস্থালে পৌঁছায় তখন আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।’

গতকাল রাত সোয়া ১০টার দিকে কার্গো কমপ্লেক্সের সামনে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে এসে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল বাতাস। এখানে খোলা জায়গায় প্রচুর বাতাস ছিল। ফলে অক্সিজেনের একটা প্রাপ্তি সব সময় ছিল, যেটা আগুন জ্বলতে সহায়তা করেছে। যে কারণে অনেক ওপরে পর্যন্ত ধোঁয়া দেখা গেছে। নিচে হয়তো আগুন অল্প ছিল। কিন্তু বাতাসের কারণে মনে হয়েছে অনেক বড় আগুন।’

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ‘কার্গো কমপ্লেক্সের ভেতরের জায়গাগুলো খোপ খোপ করা। এই খোপের মধ্যে আবার দেয়াল দেওয়া। ফলে প্রতিটি খোপ পরিষ্কার করে করে আমাদের আগুন নেভাতে হয়েছে। খোলা জায়গায় কিছু কার্গো থাকে। সেগুলোতে খুব সহজেই আগুন ধরে গেছে। যেহেতু বাতাস ছিল, বাতাসের ফ্লোতে দ্রুত আগুনটা ছড়ায়।’

গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে সাত ঘণ্টা পর। এতে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি অংশ নেয়। রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দর পুনরায় চালু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাডে নিহত আবুল কালাম: মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
নড়িয়া পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নড়িয়া পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালাম চোকদারকে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।

স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের সঙ্গে আবুল কালাম। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের সঙ্গে আবুল কালাম। ছবি: সংগৃহীত

আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। প্রিয়জনকে শেষবিদায় জানাতে সেখানে উপস্থিত হন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

এর আগে, গতকাল রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর স্বজনেরা তাঁর মরদেহ নিয়ে দেশের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন এবং রাত ২টার দিকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়।

স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদ (৩৬) নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছোট ছেলে। প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁর মা-বাবা মারা যান।

আবুল কালাম ছয়-সাত বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে বিয়ে করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান—আব্দুল্লাহ (৫) ও সুরাইয়াকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পাঠানতলী এলাকায় বসবাস করতেন। ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে তিনি জনশক্তি রপ্তানির কাজ করতেন।

রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার সময় মেট্রোরেলের একটি বেয়ারিং প্যাড খুলে সরাসরি আবুল কালামের মাথা পড়ে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

আবুল কালামের মেজো ভাই খোকন চোকদার বলেন, রাত ২টার দিকে ছোট ভাই আবুল কালামের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আজ সকাল ৯টায় গ্রামের মসজিদে জানাজা শেষে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

মোক্তারের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা শেখ বলেন, ‘আবুল কালামের মা-বাবা অনেক আগেই মারা যান। ছেলেটি অনেক কষ্ট করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার হঠাৎ এভাবে করুণ মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।’

এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ‘আবুল কালামের মৃত্যু মর্মান্তিক। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারটিকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুলাউড়ায় মোটরসাইকেল-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-জুড়ী আঞ্চলিক সড়কে মোটরসাইকেল ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী মারওয়ান আলম (২৩) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও চারজন আহত হয়েছেন। রোববার দিবাগত রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মারওয়ান বড়লেখা উপজেলার কাঁঠালতলী গ্রামের ফয়সল আহমদের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মধ্যরাতে কুলাউড়া থেকে বড়লেখাগামী একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী মারওয়ানসহ মোট পাঁচজন আহত হন। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মারওয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পিকআপ ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাঘায় কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ১২, আতঙ্কে এলাকাবাসী

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর বাঘায় বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরের উপদ্রব বেড়েই চলছে। ঘুরে বেড়ানো এক কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ১২ জন পথচারী আহত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা নওদাপাড়া, পুকুরপাড়া, আঠালিয়াপাড়া, অমরপুরসহ লালপুর উপজেলার সাধুপাড়া, ধরবিলা লক্ষবাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হঠাৎ পাগলা কুকুর পথচারীদের ওপর আক্রমণ করে। এতে ১২ জন আহত হয়। তাদের অনেকেই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে দিঘা আঠালিয়া গ্রামের আহত নাজমুল হোসেনকে (২৫) সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

কুকুরের কামড়ে আহত দিঘা নওদাপাড়া গ্রামের নাজিমুদ্দিন (৫৬) বলেন, ‘গতকাল দুপুরে বাড়ির পাশে পথে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ কুকুর কামড়ে দেয়। পরে ভ্যাকসিন নিয়েছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আশাদুজ্জামন আসাদ বলেন, আহত কয়েকজন ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে শুনেছি। তবে অতি দ্রুত কুকুরটি আটক করতে পারলে ভালো হয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বাঘা পৌরসভার প্রশাসক শাম্মী আক্তার বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ পৌরসভায় কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে, তা জেনেছি। তবে হাইকোর্টে রিট থাকায় উপজেলা ও পৌরসভা কর্তৃক নিধন বা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আইন মেনে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়াইগ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নাটোরের বড়াইগ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় (৭০) এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের কয়েন ময়মনসিংহ পাড়া কবরস্থানের পাশ থেকে এই লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত ব্যক্তি মানসিক প্রতিবন্ধী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের কয়েন ময়মনসিংহপাড়া এলাকায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠায়।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহত ব্যক্তি একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ। আইনানুগ ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত