হুমায়ুন কবির তমাল, ঢাকা
পূর্ব দিকে বানার নদী। উত্তরে বিল, দক্ষিণেও বিল। পশ্চিম অংশে লালচে মাটির টেক। মাঝ দিয়ে চলে গেছে একটি পাকা রাস্তা। ঘাস, লতাপাতা, ঝোপঝাড় সবখানেই। যেদিকে তাকাই শুধুই সবুজ গাছপালা। এটি আমার প্রিয় বারিষাব গ্রামের চিত্র।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের কেন্দ্রে আমাদের গ্রামটি। পাকা রাস্তাটি বারিষাব বাজার থেকে আমরাইদ হয়ে কাপাসিয়া সদরে চলে গেছে।
গ্রামে একটি স্কুল আছে। নাম সরকারটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের পাশেই মসজিদ। নুরার বাজার জামে মসজিদ। যদিও বাজারটি সম্প্রতি বিলুপ্ত। স্কুল প্রাঙ্গণে আছে দৃষ্টিনন্দন মাঠ। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে প্রতিদিন বিকেলে এ মাঠে ফুটবল খেলতাম। সবাই মিলে চাঁদা তুলে ফুটবল কেনা হতো। গন্ডগোল বাধলে বলটি কেটে ভাগাভাগির প্রস্তাবও আসত।
সন্ধ্যা নামলেই পড়তে বসতাম। পাটিতে বসে কুপি বা হারিকেনের আলোয় চলতো ধুম পড়ালেখা। রেডিও ছিল বিনোদনের বড় মাধ্যম। তা-ও সবার ঘরে ছিল না। বিবিসির খবর, পল্লিগানের অনুষ্ঠান `বাঁশরি’, সৈনিক ভাইদের জন্য অনুরোধের আসর `দুর্বার’ এবং ছায়াছবির গান ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। পুরো গ্রামজুড়ে একটাই টেলিভিশন ছিল আমার এক চাচার বাড়িতে। ব্যাটারিতে চালানো সাদাকালো এই টিভির ঝিলমিলানি এখনো চোখে ভাসে। মাসে একটি বাংলা সিনেমা ও ছায়াছন্দ দেখতে সারা গ্রাম যেন চলে আসত সেই বাড়িতে।
এ গ্রামে আছে তিনটি বিল। একটির নাম পুশকুনি বিল (পুকুর বিল)। এতে মাছ চাষ করা হয়। তবে তা বিক্রির জন্য নয়, খাওয়ার জন্য। বিলে জমি আছে এমন অর্ধশত পরিবারের সারা বছরের মাছ মেলে এই বিলে।
এখানকার নদী বা বিলের পাড়ে হাঁটাহাঁটি, নৌকায় চড়া, টেক-টিলায় ঘুরে বেড়ানো, লতাপাতা আর মাটির ঘ্রাণ যে কাউকে বিমোহিত করে। গ্রামটি যেন প্রাকৃতিক রিসোর্ট।
প্রায় সব ঘরই মাটির তৈরি। রাস্তা পাকা হলো এক দশক আগে। আট বছর আগে মিলল বিদ্যুৎ-সংযোগও। একসময়ের অবহেলিত গ্রামটি ক্রমেই উন্নতির দিকে হেঁটে চলছে। মাটির ঘরগুলো হচ্ছে দালানকোঠা। গ্রামের অনেকে বিদেশে থাকেন। উন্নতির পেছনে তাঁরা বড় ভূমিকা রাখছেন।
আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে স্বপ্নের মতো। বানার নদীতে দল বেঁধে সাঁতার কাটা, ডুবোডুবি খেলা, নুরার পুল থেকে পানিতে লাফিয়ে পড়ার খেলা ছিল দুরন্তপনার বিশেষ দিক। পাখির বাসা ভেঙে ফেলা, ফড়িংয়ের লেজে কাঠি ঢুকিয়ে আকাশে ছেড়ে দেওয়ার মতো অমানবিক কাজও তখন করেছি।
বর্তমানে গ্রামের উঠতি বয়সী কেউ কেউ বিপথে হাঁটছে। এরা বখাটেপনা, ধূমপান, ক্যারমের নামে জুয়া খেলা ও মোবাইল অপব্যবহারে লিপ্ত। কিছু তরুণ লেখাপড়া ছেড়ে হচ্ছে বিদেশমুখী।
জীবিকার তাগিদে আজ আমি নগরে। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে গ্রামেই। নাটাইয়ের মতো আমাকে টানে বাড়ির আঙিনায় জন্মানো টাটকা সবজি-ফল, বিলে ধরা ট্যাংরা-পুঁটির চচ্চড়ি, দাদির হাতের পিঠা, মা-বাবার মমতা, বউ কথা কও পাখির গান, কাঠবিড়ালির লম্ফঝম্প; আরও কত-কী!
জন্মের পর প্রথম নিশ্বাস এ গ্রামেই। পরম মমতায় এর বুকে ঘুমিয়েছি টানা ২০টি বছর। শেষনিশ্বাসের পর চিরঘুমের ইচ্ছাও এখানেই। ভালো থেক প্রাণের ভূখণ্ড; প্রিয় গ্রাম আমার।
পূর্ব দিকে বানার নদী। উত্তরে বিল, দক্ষিণেও বিল। পশ্চিম অংশে লালচে মাটির টেক। মাঝ দিয়ে চলে গেছে একটি পাকা রাস্তা। ঘাস, লতাপাতা, ঝোপঝাড় সবখানেই। যেদিকে তাকাই শুধুই সবুজ গাছপালা। এটি আমার প্রিয় বারিষাব গ্রামের চিত্র।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের কেন্দ্রে আমাদের গ্রামটি। পাকা রাস্তাটি বারিষাব বাজার থেকে আমরাইদ হয়ে কাপাসিয়া সদরে চলে গেছে।
গ্রামে একটি স্কুল আছে। নাম সরকারটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের পাশেই মসজিদ। নুরার বাজার জামে মসজিদ। যদিও বাজারটি সম্প্রতি বিলুপ্ত। স্কুল প্রাঙ্গণে আছে দৃষ্টিনন্দন মাঠ। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে প্রতিদিন বিকেলে এ মাঠে ফুটবল খেলতাম। সবাই মিলে চাঁদা তুলে ফুটবল কেনা হতো। গন্ডগোল বাধলে বলটি কেটে ভাগাভাগির প্রস্তাবও আসত।
সন্ধ্যা নামলেই পড়তে বসতাম। পাটিতে বসে কুপি বা হারিকেনের আলোয় চলতো ধুম পড়ালেখা। রেডিও ছিল বিনোদনের বড় মাধ্যম। তা-ও সবার ঘরে ছিল না। বিবিসির খবর, পল্লিগানের অনুষ্ঠান `বাঁশরি’, সৈনিক ভাইদের জন্য অনুরোধের আসর `দুর্বার’ এবং ছায়াছবির গান ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। পুরো গ্রামজুড়ে একটাই টেলিভিশন ছিল আমার এক চাচার বাড়িতে। ব্যাটারিতে চালানো সাদাকালো এই টিভির ঝিলমিলানি এখনো চোখে ভাসে। মাসে একটি বাংলা সিনেমা ও ছায়াছন্দ দেখতে সারা গ্রাম যেন চলে আসত সেই বাড়িতে।
এ গ্রামে আছে তিনটি বিল। একটির নাম পুশকুনি বিল (পুকুর বিল)। এতে মাছ চাষ করা হয়। তবে তা বিক্রির জন্য নয়, খাওয়ার জন্য। বিলে জমি আছে এমন অর্ধশত পরিবারের সারা বছরের মাছ মেলে এই বিলে।
এখানকার নদী বা বিলের পাড়ে হাঁটাহাঁটি, নৌকায় চড়া, টেক-টিলায় ঘুরে বেড়ানো, লতাপাতা আর মাটির ঘ্রাণ যে কাউকে বিমোহিত করে। গ্রামটি যেন প্রাকৃতিক রিসোর্ট।
প্রায় সব ঘরই মাটির তৈরি। রাস্তা পাকা হলো এক দশক আগে। আট বছর আগে মিলল বিদ্যুৎ-সংযোগও। একসময়ের অবহেলিত গ্রামটি ক্রমেই উন্নতির দিকে হেঁটে চলছে। মাটির ঘরগুলো হচ্ছে দালানকোঠা। গ্রামের অনেকে বিদেশে থাকেন। উন্নতির পেছনে তাঁরা বড় ভূমিকা রাখছেন।
আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে স্বপ্নের মতো। বানার নদীতে দল বেঁধে সাঁতার কাটা, ডুবোডুবি খেলা, নুরার পুল থেকে পানিতে লাফিয়ে পড়ার খেলা ছিল দুরন্তপনার বিশেষ দিক। পাখির বাসা ভেঙে ফেলা, ফড়িংয়ের লেজে কাঠি ঢুকিয়ে আকাশে ছেড়ে দেওয়ার মতো অমানবিক কাজও তখন করেছি।
বর্তমানে গ্রামের উঠতি বয়সী কেউ কেউ বিপথে হাঁটছে। এরা বখাটেপনা, ধূমপান, ক্যারমের নামে জুয়া খেলা ও মোবাইল অপব্যবহারে লিপ্ত। কিছু তরুণ লেখাপড়া ছেড়ে হচ্ছে বিদেশমুখী।
জীবিকার তাগিদে আজ আমি নগরে। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে গ্রামেই। নাটাইয়ের মতো আমাকে টানে বাড়ির আঙিনায় জন্মানো টাটকা সবজি-ফল, বিলে ধরা ট্যাংরা-পুঁটির চচ্চড়ি, দাদির হাতের পিঠা, মা-বাবার মমতা, বউ কথা কও পাখির গান, কাঠবিড়ালির লম্ফঝম্প; আরও কত-কী!
জন্মের পর প্রথম নিশ্বাস এ গ্রামেই। পরম মমতায় এর বুকে ঘুমিয়েছি টানা ২০টি বছর। শেষনিশ্বাসের পর চিরঘুমের ইচ্ছাও এখানেই। ভালো থেক প্রাণের ভূখণ্ড; প্রিয় গ্রাম আমার।
টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মা নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ডুবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণপুর
২৪ মিনিট আগেরংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর রূপলাল দাস (৪৫) ও জামাই প্রদীপ লালের (৩৫) প্রাণহানির পেছনে আইনশৃঙ্খলাহীনতাকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনের চুরি, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে স্থানীয় জনতার ভেতর মবের মনোভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও সেভাবে তৎপর নয়। এসব কারণেই শ্
৩১ মিনিট আগেশেরপুরের গারো পাহাড়ে মানুষের বিচরণ বাড়ার পাশাপাশি কমতে শুরু করেছে বন-জঙ্গল। এতে সেখানে বন্য হাতির জীবন সংকটে পড়েছে। প্রায়ই নানা ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে গারো পাহাড় থেকে বিলুপ্তের পথে বিশালাকৃতির এই প্রাণী। এদিকে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষও। গত ৩০ বছরে শেরপুরে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বে জেলায়
৩৫ মিনিট আগে২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় পাস হয় যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প। ৪ হাজার ১৮৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত হয় ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ও মূল্য।
৩৯ মিনিট আগে