Ajker Patrika

বুয়েটের ই-রিকশা চলবে ধানমন্ডি, পল্টন ও উত্তরায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, ২০: ৩৩
বুয়েটের নকশা করা ই-রিকশা। ছবি: সংগৃহীত
বুয়েটের নকশা করা ই-রিকশা। ছবি: সংগৃহীত

আগামী আগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহযোগিতায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তিন এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে যাচ্ছে ই-রিকশা। রাজধানীর উত্তরা, ধানমন্ডি ও পল্টন এলাকায় ই-রিকশা চালু হবে। আজ শনিবার (২৮ জুন) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে দেশের সিটি করপোরেশন এলাকায় ই-রিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করে নতুন নিয়মকানুন কার্যকর করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন প্রবিধান অনুসারে সিটি করপোরেশনের অধীনে রিকশা ও চালকদের নিবন্ধন এবং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে চালকদের প্রশিক্ষণ, ফিটনেস সনদ এবং দুর্ঘটনা বিমা গ্রহণও।

ডিএনসিসির বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য নির্ধারিত একটি স্ট্যান্ডার্ড মডেলের ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি দেশের সব সিটি করপোরেশনকে পাঠানো হয়েছে, যাতে তারা ডিজাইন অনুযায়ী গাড়ি যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করতে পারে।

ই-রিকশা ও চালকদের তথ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি ইউনিফাইড ফরম তৈরি করে ডেটাবেইস তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। এই তথ্যভান্ডারে রিকশার মালিক, চালক, বিমা, লাইসেন্স ও ফিটনেসসংক্রান্ত সব তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অতিরিক্ত সচিব এবং বিআরটিএ, বুয়েট, বিএসটিআইসহ বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি কমিটি গঠন কারা হবে, যারা প্রস্তুত করা ই-রিকশার টাইপ অনুমোদন করবে।

ই-রিকশা চলাচলসংক্রান্ত প্রবিধান থেকে জানা যায়, প্রতিটি রিকশার জন্য ইউনিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও নম্বরপ্লেট সরবরাহ করবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন। একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি রিকশা নিবন্ধন করতে পারবেন। প্রতিটি ই-রিকশার দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ২৫০ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ১১০ সেন্টিমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া এসব রিকশা শুধু অনুমোদিত কারখানা বা ওয়ার্কশপে প্রস্তুত করা হবে। সেগুলোর প্রতিটিকে নির্ধারিত গাইডলাইনের আলোকে টাইপ-অনুমোদন নিতে হবে।

তিন চাকার এই ই-রিকশার চালকের লাইসেন্স পেতে হলে ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর হতে হবে এবং বাংলা পড়তে ও লিখতে জানতে হবে। চালকদের সিটি করপোরেশন নির্ধারিত সরকারি হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি পাঁচ বছর পর লাইসেন্স নবায়নের সময় চালকদের ড্রাইভিং পরীক্ষা দিতে হবে। চালকদের জন্য সড়ক নিরাপত্তা, ট্রাফিক আইন, রোড মার্কিং, ট্রাফিক সাইন ও ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ব্র্যাককে অংশীদার করা হয়েছে।

নতুন নিয়ম অনুসারে চালকদের জন্য ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চালক কিংবা মালিক যেকোনো পক্ষ এই বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে পারবেন। বিমার কভারেজ সচল আছে কি না, তা সিটি করপোরেশন নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং নবায়নের কপি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।

বিমা গ্রহণসংক্রান্ত সব কাগজপত্র চালকের লাইসেন্স ফাইলে সংযুক্ত রাখতে হবে। ইচ্ছুক মালিকগণ অতিরিক্ত বিমাও নিতে পারবেন, যার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সিটি করপোরেশন বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেবে। এ ছাড়া নিবন্ধিত প্রতিটি রিকশার দুই বছর পরপর ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হবে এবং নবায়নের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। ফিটনেস সনদ না থাকলে সংশ্লিষ্ট যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না।

সড়কে চলাচলের জন্য প্রবিধানে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা শুধু সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিভাগের নির্ধারিত রাস্তায় চলাচল করতে পারবে। হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কিংবা বাস চলাচলের জন্য নির্ধারিত সড়কে এসব রিকশার চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যানবাহন নির্ধারিত এলাকার বাইরে চলতে পারবে না। যানজট সৃষ্টি যেন না হয়, সে জন্য চালকদের সর্বদা বাঁ লেনে চলাতে হবে গাড়ি। এ ছাড়া গাড়ির গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

রিকশা চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে জরিমানাযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত করা হবে। এই সকল রিকশায় দুজনের বেশি যাত্রী বহন বা অতিরিক্ত মালপত্র পরিবহন পারবে না। সরকারি ভবন, কূটনৈতিক এলাকা ও নিরাপত্তা সংবেদনশীল স্থানে এই রিকশা চলাচল করতে পারবে না। নিয়মবহির্ভূতভাবে ওভারটেক বা লেন পরিবর্তনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশার পার্কিং ও চার্জিং-সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনাও নতুনভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিভাগ ওয়ার্ড বা অঞ্চলভিত্তিক রিকশার সংখ্যা নির্ধারণ করবে। এলাকাভিত্তিক কালার কোড চালু করা হবে, যাতে নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্ধারিত পার্কিং এলাকা থাকবে, যেখানে চার্জিং স্টেশন ও ব্যাটারি বিনিময় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে ব্যাটারি চার্জের জন্য।

ব্যবহৃত ব্যাটারির রিসাইকেল প্রক্রিয়াও থাকবে নিয়ন্ত্রিত। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কেউ ব্যাটারি ভাঙা, আগুনে গলানো বা পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম চালাতে পারবে না। ব্যাটারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশগত ছাড়পত্রপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রিসাইকেল করবে।

ব্যাটারি ব্যবহারকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পুরোনো বা অকার্যকর ব্যাটারি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদিত এজেন্ট, ডিলার বা রিসাইকেল কারখানার কাছে হস্তান্তর করতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তি, বিশেষ করে সোলার চার্জিং পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হবে। চালক ও মালিকদের আর্থিক সহায়তা দিতে সহজ শর্তে ঋণ দেবে সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় মশাল মিছিল: ছাত্রলীগের ৭ নেতা-কর্মী আটক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনায় বাইপাস সড়কে মশাল মিছিল থেকে ছাত্রলীগের ৭ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার বাইপাস সড়কের চল্লিশা-দুধকুড়া অংশ থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন আলম মিয়া, মো. আরিফ মিয়া, ইব্রাহিম খলিল, জোনায়েদ হাসান রাফি, শাহাদাত রহমান সিয়াম, সাকিবুল ইসলাম ও রিয়াদ মিয়া সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। আটক সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজি শাহনেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাইবাস সড়কে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মশাল মিছিল করার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। তখন ঘটনাস্থল থেকে ওই সাতজনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমি এলাকার সন্তান হওয়ার পরেও ফেস্টুন-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছে; সম্ভাব্য প্রার্থীর আক্ষেপ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর-৪ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রায়হান জামিলের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ ভাঙচুরের প্রতিবাদে ঝাড়ুমিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুর-৪ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রায়হান জামিলের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ ভাঙচুরের প্রতিবাদে ঝাড়ুমিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ফরিদপুর-৪ (চরভদ্রাসন-সদরপুর-ভাঙ্গা) আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রায়হান জামিলের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঝাড়ুমিছিল করেছেন তাঁর সমর্থকেরা। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশের দাবি জানিয়েছেন এই প্রার্থী।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চরভদ্রাসন উপজেলায় ফরিদপুর-৪ আসনের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রার্থীর নিজবাড়ি, উপজেলা সদরের এমপিডাঙ্গী এলাকা থেকে বের হয়ে উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই জায়গায় গিয়ে শেষ হয়।

রায়হান জামিল জানান, ফরিদপুর-৪ আসন থেকে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। সেই লক্ষ্যে প্রচারণার অংশ হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে এসব ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের দাবি জানিয়ে রায়হান জামিল বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে এই আসনে বাইরে থেকে লোক এসে এমপি হয়েছেন। তাঁরা কেউ এলাকার সন্তান নন; কিন্তু আমি এই এলাকার সন্তান হওয়ার পরেও গত কয়েক দিন যাবৎ দুষ্কৃতকারীরা আমার গেট ভাঙচুর ও ফেস্টুন-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাতেই আজ ঝাড়ুমিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।’

ওই ভাঙচুরে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সম্ভাব্য এই স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুম নাচ-গানে রাজশাহীতে ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা ও লবান উৎসব উদ্‌যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
অনুষ্ঠানে গারো সম্প্রদায়ের তরুণীদের জুম নাচ। ছবি: আজকের পত্রিকা
অনুষ্ঠানে গারো সম্প্রদায়ের তরুণীদের জুম নাচ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে ধর্মীয় আচার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা ও লবান (নবান্ন) উৎসব।

রাজশাহীর গারো সম্প্রদায় দীর্ঘ এক যুগ ধরে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এই উৎসব উদ্‌যাপন করে আসছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের বাগানপাড়ায় উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল গির্জা প্রাঙ্গণে দেবতাদের পূজার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ‘আমুয়া’ ও ‘রুগালা’ পালনের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। গারো শিল্পীরা নিজস্ব ভাষায় গান পরিবেশন করেন, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল গারোদের ঐতিহ্যবাহী ‘জুম নাচ’, এটি উৎসবে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয়।

উৎসবের আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের ডিডি বিশপ জের্ভাস রোজারিও। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি বহু জাতি, ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় অসাম্প্রদায়িক দেশ। এই ধরনের উৎসবের মাধ্যমে জাতিগত ঐতিহ্য রক্ষায় আমাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করা উচিত। ওয়ানগালা ও লবান উৎসব আমাদের একতা ও সমন্বয়ের প্রতিফলন।’

রাজশাহী অঞ্চলের কারিতাস বাংলাদেশের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আরোক টপ্য বলেন, ‘ওয়ানগালা ও লবান শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আদিবাসীদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরতে এই উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডা, রাজশাহী নানকিং গ্রুপের প্রোপ্রাইটর এহসানুল হুদা, রাজশাহী পারলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুকসানা হুদা এবং উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল গির্জার পালকীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফ্রান্সিস সরেন। উৎসবের দিন গির্জা প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শত শত মানুষ একত্রিত হন, আনন্দ ভাগাভাগি করেন এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের দোকানে ঘুরে নানা স্বাদের খাবার উপভোগ করেন। জুমের আলু, কুমড়া, শামুক ও কাঁকড়ার মতো খাবার ছিল বিশেষ আকর্ষণ।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় ‘ওয়ানগালা’ ও ‘লবান’ উৎসব মূলত জুম চাষের সঙ্গে সম্পর্কিত। গারো, সাঁওতাল, পাহাড়ি, মাহালি ও ওঁরাও—এই পাঁচ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী প্রতি বছর শস্যদেবতা ‘মিসি সালজং’-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এবং নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে উৎসবটি পালন করেন। নতুন ফসল তোলার পর নকমা (গ্রামপ্রধান) সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে উৎসবের তারিখ নির্ধারণ করেন তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পানিতে ডুবে ২ শিশু মারা গেছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কুট্টাপাড়া উত্তর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া শিশুরা হচ্ছে মো. তাকরিম (৩) উপজেলার কুট্টাপাড়া উত্তর এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে ও একই উপজেলার উচালিয়াপাড়া এলাকার মো. আরাফাত মিয়ার ছেলে মো. আদনান (৫)।

জানা গেছে, আদনান কিছুদিন আগে কুট্টপাড়া উত্তর এলাকায় তার নানাবাড়িতে বেড়াতে আসে। সকালে তার মামাতো ভাই তাকরিমের সঙ্গে বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে খেলা করছিল। একপর্যায়ে অসতর্কতাবশত ২ শিশু পুকুরের পানিতে ডুবে যায়। পরে স্বজনেরা শিশুদের না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা পুকুরে ২ শিশুটিকে ভাসতে দেখেন। এ সময় পুকুর থেকে তাদের উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত