Ajker Patrika

কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডে ও লাঠিপেটায় শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩৫
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার রাজপথে আবার শিক্ষকদের ওপর চড়াও হলো পুলিশ। এবার আক্রান্ত হয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন তাঁরা।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের পদযাত্রায় লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান নিয়ে হামলা চালায় পুলিশ। তাতে শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, শিক্ষকেরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোতে চাইলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সদস্যরা পদক্ষেপ নেন।

আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাছুদ বলেন, ‘শাহবাগে পুলিশের হামলায় অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন। কলম সমপর্ণ কর্মসূচি শেষে আমাদের শহীদ মিনারে ফিরে আসার কথা ছিল।’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এ শিক্ষক নেতা।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, ‘শিক্ষকেরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আহত হওয়ার বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য এখনো আমরা পাইনি।’

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে।

শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো—চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

শহীদ মিনারে শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘২০ হাজারের বেশি শিক্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষকেরা আসছেন, অনেকে এখন পথে। আমি সরকারি প্রাথমিকের সব শিক্ষককে এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাকি সংগঠনগুলো হলো, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি ও সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকেরাও।

গত ২৪ এপ্রিল ১১ তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩ তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২ তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকেরা।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই তিন দাবি মানা না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি বা ঘোষণা না আসলে পরীক্ষা বর্জন এবং ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দিয়েছেন তাঁরা।

দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭ টি। এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে যুবকের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
লাশবাহী খাটিয়া নিয়ে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাশবাহী খাটিয়া নিয়ে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে হালিশহরে নিজ বাসার সামনে মো. আকবর (৩৫) নামে এক যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ শনিবার লাশ নিয়ে পরিবার ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে।

এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ নগরের হালিশহর থানার মাইজপাড়া এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মো. সোহেল (৩০) ও মো. আরমান (২০) নামে দুজনকে আটক করেছে।

নিহত আকবর মাইজপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন বাড়ির কাছে মোটরসাইকেলে আসা চার থেকে পাঁচজন যুবক আকবরকে ধারালো দা ও চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ আকবরকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বোন মোছাম্মৎ সায়েমা আজকের পত্রিকাকে জানান, আকবর এলাকায় একটি ক্ষুদ্রঋণের সমবায় সমিতি চালাতেন। এলাকার মানুষ সমিতিতে সঞ্চয়ের টাকা জমা রাখতেন, ঋণও নিতেন। বছর দেড়েক আগে ওই সমিতি ছেড়ে দেন আকবর। কদিন আগে কয়েকজন ওই সমিতির কথা বলে চাঁদা দাবি করেন। সমিতি এখন বন্ধ হয়ে গেছে জানালেও তাঁরা চাঁদা দাবি করতেই থাকেন। আকবর চাঁদা দিতে রাজি না তারা তাঁকে হুমকি দিচ্ছিলেন। সায়েমা জানান, এ ঘটনায় কাশেম, সোহেল, আরমানসহ চারজনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনের নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেছেন, টাকাপয়সার লেনদেনের দ্বন্দ্বে আকবরকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করা হয়েছে।

স্থানীয় আরও দুজন জানিয়েছেন, টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে আকবরের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সোহেল। একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সোহেল ফোন দিলে তাঁর পক্ষে তিনটি মোটরসাইকেলে করে এসে কয়েক যুবক এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

এদিকে চমেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে আকবরের লাশ হাসপাতাল থেকে এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে লাশবাহী খাটিয়া নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এ সময় খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানায় তারা। মিছিলটি নগরের হালিশহরে বিভিন্ন সড়কে প্রদক্ষিণ করে।

ওই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া নিহতের নিকটাত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, লাশ নিয়ে এলাকাবাসী একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলটি মাইজপাড়া এলাকা থেকে শুরু করে ফইল্যাতলী বাজার, হালিশহর থানা চত্বর, হালিশহর বি-ব্লক ঘুরে হালিশহর ১০ নম্বর লেনে গিয়ে শেষ হয়েছে। লাশ দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় এক যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই যুবকের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান আজ শনিবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি এবং খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ এখনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন ওসি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলা সদরের ওয়াপদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি থেকে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। ওই সময়কার ভিডিও ফুটেজে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি চায়নিজ কুড়াল, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে বেশ কয়েকজনকে দেখা গেছে।

আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে ঝুনু সমর্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ ১৫টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। এ ছাড়া আশপাশের অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশত কর্মী-সমর্থকেরা আহত হন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রটি বের করার চেষ্টা করেন। তখন আরেকজন তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্রটি বের না করতে বলছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ওই যুবক হলেন খন্দকার নাসিরুল ইসলাম সমর্থক শাহ মো. জাকারিয়া কাজী (২৫)। তিনি গুনবহা ইউনিয়নের উমরনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা জিয়া প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক। এদিকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তাঁর আরও একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সাবেক সংসদ সদস্য ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ভিডিওটি আমার সমর্থকদের রামদা কেড়ে নেওয়ার একটি দৃশ্য, আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না।’ পরে আবার তিনি বলেন, ‘আর যদি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই থাকে পুলিশ সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কিছু উপদেষ্টা স্পষ্ট পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, এটা আমরা বুঝতে পারছি: বাবর

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সভায় ভিডিও কলে সংযুক্ত হন বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সভায় ভিডিও কলে সংযুক্ত হন বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষতার কথা বলছে; কিন্তু কিছু উপদেষ্টা স্পষ্ট পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, এটা আমরা বুঝতে পারছি। সামনে আমাদের একটা বড় সুযোগ আসতে পারে। ক্ষমতায় যাওয়ার সে সুযোগটা যেন আমরা নষ্ট না করি।’

আজ শনিবার দুপুরে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর বিএনপির পরিচিতি সভায় ভিডিও কলে সংযুক্ত হয়ে বাবর এসব কথা বলেন। শহরের অডিটরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাবর বলেন, ‘এখনো কালো মেঘের ছায়া কিন্তু যায়নি, কালো মেঘ খুব ভালোভাবে রয়ে গেছে। অনেক ষড়যন্ত্র রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শেখ হাসিনার প্রথম মামলার রায় হবে। আওয়ামী লীগ এবং পাশের এক পরাশক্তির রাষ্ট্র সাংঘাতিকভাবে লেগে আছে, যেন রায় অথবা নির্বাচন বানচাল করা যায়। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক দলও জড়িত রয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় যাব—এটা নিশ্চিতভাবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। তবে আশা তো রাখতেই হবে। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল ও শিষ্টাচার আচরণ করতে হবে। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো সুযোগ নেই। কেউ শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না, এমনকি আমি করলেও না। সবারই রুজি দরকার, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, যা খুশি তা করব। সেটা অবশ্যই হালাল পথে, ন্যায্যতার ভিত্তিতে হতে হবে।’

নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বাবর বলেন, ‘সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। ঐক্য ছাড়া কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাই সবাইকে সংগঠনের প্রতি অনুগত থেকে ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিতে হবে। আমরা চাই যেকোনোভাবে বিশৃঙ্খল এ সময়টা পার করে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে। সামনে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে। অনেক কিছু আপনারা দেখতে বা বুঝতে পারেন না; কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত তা মোকাবিলা করছি। সব কথা বলা যায় না, তবে জানিয়ে রাখছি, চ্যালেঞ্জ বড়।’

তরুণদের প্রতি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সময়টা তথ্যপ্রযুক্তির। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবাইকে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। না হলে এ কঠিন প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকা সম্ভব নয়। সবাইকে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে হবে।’

সভায় মোহনগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সেলিম কার্নায়েন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম এরশাদুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী পুতুলসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘তোকে কই গুলি করব—মাথায়, না বুকে’

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
গাজীপুরের শ্রীপুরে হামলায় আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের শ্রীপুরে হামলায় আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. সোহেল সরকার ও তাঁর বন্ধুদের ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ২০ থেকে ২২ জনের একটি দল সোহেল, তাঁর সঙ্গে থাকা এনামুল হক ও আল আমীন নামের আরও দুজনকে রড, লোহার পাইপ, হেমার দিয়ে আঘাত করে।

একপর্যায়ে হামলাকারীদের মধ্য থেকে তারিফ নামের একজন এনামুলের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলেন, ‘তোকে কই গুলি করব—মাথায়, না বুকে।’ পরে অস্ত্রধারীরা সোহেল ও তাঁর বন্ধুদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

গতকাল শুক্রবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী বাজারের পাশে কোষাদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার সোহেল সরকার এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি বরমী ইউনিয়নের পাঠানটেক গ্রামের মো. রাসেল সরকার (৩৫), এনামুল হক (৩৫) ও আল আমীন (৩২। রাতেই তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন একই গ্রামের মোসলেম উদ্দিন মাস্টারের ছেলে মো. রাসেল শেখ (২৬), তারিফ (২৫) ও জাহিদ (২৪)। তাঁদের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন ছিলেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদল নেতা সোহেল সরকার তাঁর বন্ধু এনামুল ও আল আমীনকে নিয়ে অসুস্থ শাশুড়িকে দেখার জন্য অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন। অভিযুক্তরা কোষাদিয় এলাকায় পিস্তলসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অটোরিকশা গতিরোধ করেন। এ সময় ২০ থেকে ২২ জনের একটি দল তিনজনের তাঁদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করেন। অভিযুক্ত তারিফ একপর্যায়ে এনামুলের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলেন, ‘তোর কই গুলি করব—বুকে, না মাথায়।’

সোহেল সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘অভিযুক্ত রাসেল পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই, অস্ত্র, মাদকসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি। আমরা এলাকায় সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করি। সে জন্য রাসেল তার দলবল নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হামলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নেওয়া হবে। আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। অভিযুক্ত রাসেল একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। অপরাধীরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে কাজ করছে পুলিশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত