Ajker Patrika

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯৪ কোটি টাকার বাজেট পাস

জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯৪ কোটি টাকার বাজেট পাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২৯৪ কোটি ১৬ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসির বরাদ্দ রয়েছে ২৭১ কোটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় প্রায় ২৩ কোটি টাকা।

বাজেটে গত অর্থবছরের তুলনায় ৬টি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ও কমেছে ৫ টিতে। এ ছাড়া বাজেটে গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

আজ শনিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো রেজিস্ট্রার ভবনে ৪০ তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম।

এর আগে অধিবেশনের প্রারম্ভেই আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী সিনেটররা হট্টগোল করেন। যার জের ধরে বিএনপিপন্থী সিনেটররা ১০ মিনিটের জন্য সিনেট অধিবেশন বর্জন করেন।

সিনেটে বাজেট উত্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ রাশেদা আখতার। ২৯৪ কোটি ১৬ লাখ টাকার বাজেট বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২৭১ কোটি ৮১ লাখ টাকা অনুদান দেবে। শিক্ষার্থীদের ফিস থেকে আয় হবে ৪ কোটি ৩৭ লাখ, ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি বাবদ আয় হবে ১২ কোটি ৮৬ লাখ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সূত্রে আয় হবে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা।

এবারের বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে বেতন ভাতা, পেনশন ও অবসর, গবেষণা ও উদ্ভাবন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সহায়তা, অন্যান্য মূলধন জাতীয় ব্যয় ও অন্যান্য ব্যয় খাতে। অন্যদিকে বরাদ্দ কমেছে পণ্য ও সেবা (সাধারণ আনুষঙ্গিক), পণ্য ও সেবা (রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত), যন্ত্রপাতি ক্রয় ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে।

বাজেট বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। যা মোট বরাদ্দের ৫৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। পেনশন ও অবসর সুবিধা খাতে ৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যা বরাদ্দের ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বেশি। গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

তা ছাড়া মূল ছয়টি খাতে বরাদ্দের পরিমাণ গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় কমানো হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য ও সেবা (সাধারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ) খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬০ কোটি ৩১ লাখ টাকা। যা বরাদ্দের ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। যন্ত্রপাতি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। যানবাহন ক্রয় বাবদ দেড় কোটি টাকা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫৫ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ।

অন্যদিকে সিনেট অধিবেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও পেশ করা হয়। সংশোধিত বাজেটের আকার ২৮৭ কোটি এক লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এর আগে, সিনেট অধিবেশনের প্রথম অংশে সিনেট সদস্য অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিম উপাচার্যের ভাষণে ‘পয়েন্ট অব অর্ডার’ দিলে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি মো. মোহাতার হোসেন মোল্লা তাঁকে বেয়াদব বলে আখ্যায়িত করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে ১০ মিনিটের জন্য ওয়াকআউট করেন বিএনপিপন্থী সিনেটররা।

এ সময় বিএনপিপন্থী সিনেটর ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশন। এতে সবার কথা বলার অধিকার আছে। সেখানে একজন সিনেটরের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে গালি দিতে পারেন না। তাই মোতাহার হোসেন মোল্লাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’

সিনেট অধিবেশন থেকে বের হয়ে বিএনপিপন্থী সিনেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “এই প্রশাসনকে বারবার বলার পরেও বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্ষদে নির্বাচন দেয়নি। এই যৌক্তিক কথা বলার জন্য এভাবে অপমানিত হতে হয়। ওই সিনেট সদস্যের বলা ‘বেয়াদব’ শব্দটি সিনেট অধিবেশন থেকে এক্সপাঞ্জ করতে হবে। ”

ওয়াক আউট করা সিনেটরদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক মো. সোহেল রানা, অধ্যাপক মো. শামছুল আলম, অধ্যাপক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক মাহবুব কবির, সাবিনা ইয়াসমিন ও ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত