Ajker Patrika

সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি পেছাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১৭: ৪০
সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি পেছাল

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি পিছিয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তারিখ পিছিয়ে আগামী ৬ জুলাই পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। 

আজ মঙ্গলবার অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সম্রাটকে অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির করা সম্ভব না হওয়ায় শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। এদিন সম্রাটের পক্ষে করা জামিনের আবেদনও ৬ জুলাই শুনানির জন্য ধার্য করা হয়। এর আগে, গত ২৪ মে সম্রাট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

তাঁর আগে, গত ১৮ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্রাটের জামিন বাতিল করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে তাঁকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল চেয়ে গত ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল দুদক। এ মামলায় গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান। ওই দিনই আড়াই বছর কারাভোগের পর মুক্তি পান সম্রাট। 

গত ২২ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ সম্রাটের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আমলে নেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বদলি করেন। 

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। 

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, সম্রাট অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসাও পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে তাঁর ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। 

ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে তাঁকে নিয়ে সেদিন বেলা দেড়টার দিকে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্য প্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

পরদিন র‍্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। সেসব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। পরে সিআইডি অর্থ পাচারের অভিযোগে এবং দুদক জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আরও দুইটি মামলা করে। 

উল্লেখ্য, মাদক মামলা, অর্থ পাচার ও অস্ত্র আইনে দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় সম্রাটকে ঢাকার তিনটি পৃথক আদালত আগেই জামিন দিয়েছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত