Ajker Patrika

অবৈধ মোবাইল দিয়ে বন্দিরা আমাকে কল করেন, এটা বিস্ময়কর: কারা মহাপরিদর্শক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মঙ্গলবার বকশিবাজারে কারা সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন আইজি প্রিজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মঙ্গলবার বকশিবাজারে কারা সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন আইজি প্রিজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎কারাগার থেকে বন্দিরাও তাঁকেও ফোনকল করেন বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

‎কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘অবৈধ মোবাইলের মাধ্যমে বন্দিরাও আমাকে ফোন দেন অনেক সময়। এটা বিস্ময়কর! তাঁরা সাধারণত ফোন দেন, তাঁদের টার্গেট হলো আরেকজনকে ধরিয়ে দেওয়া, অর্থাৎ তাঁদের যেই প্রতিপক্ষ রয়েছেন তাঁদের ধরিয়ে দেওয়া। অনেক সময় আমি এটাকে আমলে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। অনেক সময় ব্যবস্থা নিয়েছি। এটাই হলো বাস্তবতা। আমি কোনোভাবে এটা অস্বীকার করতে পারব না যে এটা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই।’ ‎

‎বন্দিদের জন্য ল্যান্ডফোনে যোগাযোগের উদ্যোগ এখনো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন, প্রতি সপ্তাহে একবার ৫ মিনিট করে বন্দীদের ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সমস্যা হলো ম্যানুয়াল সিস্টেমের জন্য। কারণ স্বজন ও আইনজীবীর বাইরে ফোন দেওয়ার কথা না। কিন্তু আসলে এটার অপব্যবহার করা হচ্ছে। এজন্য একটা অটোমেশন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কেরানীগঞ্জ কারাগারে চালুর ব্যবস্থা হচ্ছে। ১৩টা কারাগারের জন্য কাজ চলছে। এর ফলে কারারক্ষীদের ডিউটি চাপ কমবে ও যারা বন্দী আছে তারাও অপব্যবহার করতে পারবে না। ‎

তিনি বলেন, পাশাপাশি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) করা হয়েছে যদি ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য বা অন্য কোনোভাবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত ঘটনার চেষ্টা করে তাহলে আমাদের মেসেজ দিবে। তখন আমরা ব্যবস্থা নেব। ‎

‎কারা মহাপরির্দশক বলেন, ‘আমরা কারাগারগুলোতে ধীরে ধীরে কম্প্রিহেন্সিভ জ্যামিং সিস্টেম চালুর চেষ্টা করছি। প্রথমে স্পেশাল জেল ও কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে এটি প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া পাইপলাইনে আছে। এটি খুব শীঘ্রই লেগে যাবে, আরেকটি হয়তো দুই-তিন মাস লেগে যাবে। ধাপে ধাপে সব গুরুত্বপূর্ণ কারাগারে এটি লাগানো হবে।’ ‎

‎কারাগারে রাজনৈতিক বন্দিদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে রাজনৈতিক বা ভিআইপি বন্দি বলে কিছু নেই। এখানে রাজনৈতিক কোনো মামলা নেই, এখানে হচ্ছে বিভিন্ন অভিযোগ। কেউ মারামারি, কেউ গণহত্যা, কেউ হত্যা মামলার আসামি। আমার জায়গা থেকে রাজনৈতিক আইডেন্টিফিকেশন দিয়ে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মামলার গুরুত্ব বা ধারা অনুসারে আলাদা করছি। কারাগারে ভিআইপি বন্দি বলে কিছু নেই। এটা হচ্ছে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি। বর্তমানে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি আছেন ১৬৩ জন। এছাড়া ডিভিশন আবেদন করে পাননি এমন বন্দি আছেন ২৮ জন।’ ‎

‎কারাগারে খাবারের মান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কাজ করেছি। কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি, বন্দিদের প্রাপ্যতা অনুসারে খাবারে যেন ছাড় দেওয়া না হয়। এখন খাবারের পরিমাণ নিয়ে খুব বেশি অভিযোগ পাবেন না। হ্যাঁ, রান্না নিয়ে অভিযোগ থাকতে পারে। কারণ আমাদের রাঁধুনীরা প্রফেশনাল কুক না, বন্দিরাই রান্না করেন। যে কারণে টেস্ট নিয়ে কিছু কিছু অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু পরিমাণ ও প্রাপ্যতা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। তাদের একটি অভিযোগ আছে প্রোটিন নিয়ে। বন্দিদের মাথাপিছু ৩৬ গ্রাম প্রোটিন দেওয়া হয়। মাছ, মাংসের টুকরো হিসেবে এটি ছোট একটি পিছ। এটা সরকারি বরাদ্দ। এখানে আমার কিছু করার নেই। কিন্তু সরকার এটি বাড়িয়ে ৫৪-৫৫ গ্রামে নিয়ে গেছে। এতে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়বে।’ ‎

‎কারাগারগুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমাদের কারা অধিদপ্তরে লিস্টেট ডাক্তার আছে ১৪১ জন। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ২ জন। এছাড়া সিভিল সার্জন থেকে ১০৩ জন নিয়োগকৃত আছেন, যারা প্রয়োজনে আসেন। তবে এটা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। আমরা এটা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। এটি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদের অ্যাম্বুরেন্সেরও সল্পতা আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

কুমিল্লায় দুই ট্যাংকে পানি, তদন্ত শেষ হয়নি ১ মাসে

জিন সম্পাদনায় নতুন সাফল্য, ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নিতে হবে না

কনস্যুলেটে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলা, ব্যবস্থা নিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠি

ট্রাম্পের শুল্ক এড়াতে ১০৩টি বোয়িং বিমান কিনবে দক্ষিণ কোরিয়া

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত