Ajker Patrika

আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

রাতুল মণ্ডল শ্রীপুর প্রতিনিধি
আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি বাড়িতে জোর করে প্রবেশ, নারী ও শিশুদের মারধর, দরজা–জানালা ভাঙচুর, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে শ্রীপুর থানা–পুলিশের বিরুদ্ধে। গত শনিবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের নয়নপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

এ সময় পুলিশ তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ফরিদপুর গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে ইসাহাক (২০), বাঁকে মুন্সির ছেলে মো. সিরাজুল (৪৫), পিয়ার আহমেদের ছেলে মো. আলম মিয়া (৫০)। 

রোববার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এরই মধ্যে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে বেশির ভাগ পুরুষ। আতঙ্কে আছেন গ্রামের বেশির ভাগ নারী ও শিশুরা। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের দাবি ঘটনার সময় তাঁরা কেউ ঘটনাস্থলে ছিল না। পুলিশের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায়ও গ্রেপ্তারকৃতদের নাম নেই। 
 
মামলায় অভিযুক্ত মনির হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার বাড়িতে পুলিশ প্রবেশ করে টিনের বেড়া ভাঙচুর চালায়। এরপর আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে নেওয়ার সময় আমি বাঁধা দিলে পুলিশ আমাকে আঘাত করে আঙুল ভেঙে দেয়। অথচ ঘটনায় আমার স্বামী ছিল না। 

হালিমা আরও বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে পুলিশ সদস্যরা এসে ঘরের সবকিছু ভেঙে তছনছ করে ফেলে। এ সময় তাঁরা বিদ্যুৎ ও পানির লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, মাটির চুলা ভেঙে দেয়। ঘরের ফ্রিজে ভাঙচুর চালায়। আমার অসুস্থ ছেলেকে ঘুম থেকে ধমক দিয়ে তুলে কয়েকটি থাপ্পড়ও মারে। পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা আমিনের ছেলে মামুন ও মাসুদ ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ আমার মা কে হাতকড়া পড়িয়ে পাকা সড়ক পর্যন্ত নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার ছেড়েও দেয়।’ 

মামলার প্রধান অভিযুক্ত লাইছ উদ্দিনের বোন স্বপ্না বলেন, ‘আমার ভাই পুলিশের হাতে মারধরের পর গুরুতর আহত হয়েছে। এখন পুলিশ উল্টো মামলা করেছে। গত রাতে পুলিশ বাড়িতে এসে বাড়ির মূল ফটক ভাঙচুর করে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।’ 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ‘পুলিশের কাজে বাঁধা দেওয়ার ঘটনার মামলার তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মারধর আর ভাঙচুরের বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে থানা-পুলিশকে কোনো ভুক্তভোগী জানায়নি।’ 

উল্লেখ, গত ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পুলিশের ঘুষিতে নাক ফেটে যায় এক যুবকের। পরবর্তীতে স্থানীয়রা ঘণ্টাব্যাপী পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আট ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত