Ajker Patrika

আড়াই কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি  
ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুতে উঠতে ব্যবহার করা হচ্ছে মই। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুতে উঠতে ব্যবহার করা হচ্ছে মই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর আকার বৃদ্ধি এবং সংস্কারকাজ চলছে ধীর গতিতে। এদিকে নদী পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী তিনটি ইউনিয়নের মানুষ। বিকল্প হিসেবে কাঠের মই ব্যবহার করে সেতুতে উঠে হেঁটে পার হচ্ছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, উপজেলার ঢুলন্ডি-সিংজুরী আঞ্চলিক পাকা সড়কের পেঁচারকান্দা এলাকায় এ সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হয় গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর। চলতি বছরের ২০ জুলাইয়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কাজ শেষ হয়নি। এ অবস্থায় সেতুর উপকারভোগীদের যানবাহন নিয়ে জেলা সদরে যেতে হচ্ছে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার ঘুরে। এতে এলাকার শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এ সড়কে প্রতিদিন সিংজুরী, পয়লা ও বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের মানুষজন যাতায়াত করে থাকেন।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানিয়েছে, ২০০৮ সালে এলজিইডির অধীনে পেঁচারকান্দা বাজারসংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর ওপর ১০০ দশমিক ১০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু বন্যার ভাঙনে উত্তর পাশে সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক নদীতে বিলীন হওয়ায় যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫ দশমিক ৮ মিটার সেতু বৃদ্ধি ও পুরো সেতুর সংস্কারকাজ হাতে নেয় এলজিইডি। এ কাজের দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিতু ট্রেডার্স জামালপুর।

আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ হয়েছে মাত্র অর্ধেক। অল্পসংখ্যক লোক দিয়ে চলছে কাজ। এদিকে শিশুশ্রমিক কাজ দিয়ে করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় সমালোচনার মুখে পড়ছে উন্নয়নকাজ। কয়েক দিন পরপর শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে সাইট থেকে চলে যান, আবার শুরু করেন। কাজ চলছে কচ্ছপগতিতে।

সিংজুরী গ্রামের আল আমিন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও অবহেলায় ধীর গতিতে কাজ হচ্ছে। অল্পসংখ্যক লোক দিয়ে কোনোমতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চলছে। এ ছাড়াও অদক্ষ শিশুশ্রমিক দিয়ে করানো হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ।

ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুতে উঠতে ব্যবহার করা হচ্ছে মই। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুতে উঠতে ব্যবহার করা হচ্ছে মই। ছবি: আজকের পত্রিকা

বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল খান বলেন, ‘জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানাই। অনন্ত ৩টি ইউনিয়নের মানুষজনের চলাচলে খুবই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষকের কৃষি পণ্য ও উপকরণ পরিবহনে দ্বিগুণ অর্থ অপচয় এবং কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পিন্টু সাহা বলেন, জাতীয় নির্বাচন এবং বর্ষার কারণে কাজ শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। ২য় ধাপে কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হবে।

উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘আমি ঘিওরে নতুন জয়েন করেছি। বর্তমানে সেতুর কাজ চলমান। শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ কাজ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এ কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত