Ajker Patrika

ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে বাস চালাচ্ছিলেন চালক, দাবি সহকারীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ১১: ৪২
ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে বাস চালাচ্ছিলেন চালক, দাবি সহকারীর

সাভারে দুর্ঘটনাকবলিত সেফ লাইন পরিবহনের বাসচালক ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে দাবি করেছেন বাসটির চালকের সহকারী তানভীর আহমেদ সুলতান। তিনি বলেন, ‘বারবার সতর্ক করার পরেও তিনি (চালক) আমার কথা না শুনে উল্টো ঝাড়ি দিয়েছেন। আর এ কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে।’

বর্তমানে তানভীর আহমেদ সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ হাত ভেঙে গেছে, আর বাঁ পা কেটে গেছে।

তানভীর আহমেদ বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি ঢাকা-কুষ্টিয়া-শৈলকুপা রুটে চলাচল করত। গত শনিবার সকালে আমরা যাত্রী নিয়ে ঢাকার গাবতলী থেকে শৈলকুপার উদ্দেশে ছেড়ে যাই। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মারুফ হোসেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমরা শৈলকুপায় গিয়ে পৌঁছাই। এর এক ঘণ্টা পর ৪০ জন যাত্রী নিয়ে আমরা ঢাকার উদ্দেশে শৈলকুপা ছাড়ি।’

তানভীর বলেন, ‘শৈলকুপা ছাড়ার দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে মারুফ ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে গাড়ি চালাতে থাকেন। এতে পথে বেশ কয়েকবার আমাদের গাড়িটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। কিন্তু আমি সতর্ক করার কারণে বারবারই রক্ষা পাই। এর পরও মারুফ ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আর এ কারণেই রোববার সকালে সাভারের বলিয়ারপুরে আমাদের বড় ধরনের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়।’

তানভীর বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও সুপারভাইজার পালিয়ে যান। আমি আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই।’

তানভীর জানান, চালক মারুফ হোসেনের বাড়ি চাঁদপুর। পরিবার নিয়ে তিনি রাজধানীর লালকুঠি বড় মসজিদের পাশে থাকেন। মারুফের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের পরিচয়। একসঙ্গে ১৫ বছর তাঁরা বাসচালকের সহকারীর কাজ করেছেন। গত তিন বছর ধরে মারুফ বাস চালাচ্ছেন। আর তিনি (তানভীর) এখনো চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন।

তানভীর বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত বাসের পেছনে ‘সেফ লাইন’ লেখা থাকলেও মূলত গাড়িটি চলত ‘নিউ গ্রীন এক্সপ্রেসের’ ব্যানারে। এই কোম্পানির চারটি বাস রয়েছে। মারুফ হোসেনের বাবা ও তাঁর এক বন্ধু ওই পরিবহনের মালিক বলে শুনেছি। আগের পরিচয়ের সূত্র ধরে মারুফের অনুরোধে কয়েক দিনের জন্য আমি তাঁর সহকারীর কাজ করছিলাম। আমি মূলত সাকুরা পরিবহনে চাকরি করি।’

সেফ লাইন পরিবহনের চালকের সহকারী তানভীর আহমেদউল্লেখ্য, গত রোববার সাভারের বলিয়ারপুরে ‘সেফ লাইন পরিবহনের’ বাসটি এসএন সিএনজি স্টেশনের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা অপর একটি বাসকে ধাক্কা দিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপর উঠে যায়। এ সময় পেছন থেকে আসা একটি গরুবোঝাই ট্রাক ওই বাসকে ধাক্কা দিলে বাসটি সড়কের ওপর আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে যায়।

ঠিক তখনই ঢাকার দিক থেকে আসা আশুলিয়ার গণকবাড়ীগামী বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের একটি বাস সেফলাইন পরিবহনের বাসে সজোরে ধাক্কা মারে। এতে পরমাণু শক্তি কমিশনের তিন কর্মকর্তা ও বাসের চালক নিহত হন।

দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনায় সাভার হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গত রোববার সাভার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত