Ajker Patrika

র‍্যাব পরিচয়ে প্রথমে স্ত্রী–সন্তান, পরে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়

নুরুল আমিন হাসান, উত্তরা (ঢাকা) 
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০০: ২৯
র‍্যাব পরিচয়ে প্রথমে স্ত্রী–সন্তান, পরে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়

দিনদুপুরে ব্যবসায়ী তৌকির আহমেদের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া যায়। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি জুয়েলার্সে স্বর্ণালংকার বন্ধ রেখে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। সেদিন রাতে তৌকির বাসায় ফিরলে তাঁকেও ফোনকল করে র‍্যাব পরিচয়ে গেটের সামনে ডেকে নিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে টর্চার সেলে তিন দিন আটকে রেখে সাড়ে ৬ লাখ টাকায় আদায় করে আবার বাসার গেটে চোখ বেঁধে ছেড়ে দিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

এ ঘটনায় মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার।

ওসি মওদুত আজকের পত্রিকাকে বলেন, র‍্যাব পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় নাহিদ মাহমুদ (৩৭), মো. রাকিব আহমেদ (৩৮) ও আনোয়ার হোসেন রুহেল ওরফে রুবেল (৪২) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণে ব্যবহৃত একটি হাইচ গাড়িও জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাবিক আহমেদ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেন রুহেল কারাগারে এবং নাহিদ মাহমুদ এক দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।

ঘটনার বর্ণনায় জানা যায়, তুরাগে রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টের (রোয়াপ) ১৮ নম্বর সেক্টরের ১৫ /এ কৃষ্ণচূড়া ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ৫ আগস্ট বিকেলে ব্যবসায়ী তৌকির আহমেদের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে (১২ বছরের মেয়ে ও ৫ বছরের ছেলে) এবং রাত ১১টার দিকে ভবনের গেটের সামনে থেকে তৌকির আহমেদকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের পর ৮ আগস্ট ভোর সাড়ে ৩টার দিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বাসভবন রোয়াপের এক নম্বর গেটের সামনে রেখে চলে যায়।

ভুক্তভোগী চিকিৎসা শেষে গত ১১ আগস্ট রাতে তুরাগ থানায় সরকারি কর্মচারী পরিচয়ে অপহরণ করে চাঁদা আদায় এবং অবৈধভাবে আটক করে মারধরের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার পরদিন ১৮ নম্বর সেক্টর থেকে রাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন ১২ আগস্ট পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠালে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এদিকে ১৩ আগস্ট রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের শুক্রাবাদ এলাকা থেকে রাত আড়াইটার দিকে অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের মূল হোতা নাহিদ মাহমুদ (৩৭) ও সহযোগী আনোয়ার হোসেন রুহেল ওরফে রুবেলকে (৪২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে ১৪ আগস্ট আদালতে পাঠানো হলে নাহিদ মাহমুদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয় এবং রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

মাজেদুল ইসলাম নিজেকে মেজর খালেক পরিচয় দিয়েছিলেন। ছবি: সংগৃহীতভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তৌকির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘র‍্যাব পরিচয়ে প্রথমে বাসা থেকে আমার স্ত্রী-সন্তানদের তুলে নিয়ে যায়। পরে সন্তানদের রাজলক্ষ্মী এলাকায় রেখে আমার স্ত্রীকে আজমপুরের আমির কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে নিয়ে তাঁর ২টি চেইন ও এক জোড়া কানের দুল সেখানে বন্ধক রেখে এক লাখ টাকা আদায় করে ছেড়ে দেয়। রাতে আমি বাসায় ফেরার পর তাঁদের একজন এসে মেজর পদবির আইডি কার্ড দেখায় এবং আমাকে বলে, “আমরা র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে এসেছি, আপনাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। তাই আপনাকে আমাদের সঙ্গে র‍্যাব সদর দপ্তরে যেতে হবে। ” এই বলেই গাড়িতে তুলে চোখ বেঁধে আমাকে শুক্রাবাদের একটি টর্চার সেলে নিয়ে যায়। সেখানে নাহিদ মাহমুদ নিজেকে সিনিয়র মেজর পরিচয় দেন এবং র‍্যাব-২ (বছিলা) সদস্য কনস্টেবল মাজেদুল ইসলাম নিজেকে মেজর খালেক পরিচয় দেন।’

তৌকির আহমেদ বলেন, ‘আমাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে আমার সঙ্গে থাকা ১৫ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে থাকা ১৮ হাজার ও ব্যাংকের এটিএম বুথে থাকা ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে প্রবাসে থাকা এক বন্ধুর কাছ থেকে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা এনে দিলে তারা ছেড়ে দেয়।’

তৌকির বলেন, পুলিশ গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, নাহিদ মাহমুদ মেজর নন, তিনি স্থানীয় যুবলীগ নেতা। অন্যদিকে মেজর খালেক পরিচয়দানকারী র‍্যাব-২-এর কনস্টেবল মাজেদুল ইসলাম। পরে সবাইকে থানা-পুলিশ নিয়ে এলেও কনস্টেবল মাজেদুলকে র‍্যাব-২ রেখে দিয়েছে।

অপহরণের সময় মোবাইল ফোনে সক্রিয় লোকেশন ট্র্যাকার এক বন্ধুকে শেয়ার করেছিলেন তিনি। ফলে তাঁকে শুক্রাবাদেই নেওয়া হয়েছিল এটি তিনি পরে নিশ্চিত হতে পেরেছেন।

অপহরণের কারণ সম্পর্কে কিছু জানা গেছে কি না জানতে চাইলে ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘তৌকিরের বন্ধু মুশফিকের সঙ্গে জনৈক ব্যক্তিকে বিদেশে পাঠানোর ভিসাসংক্রান্ত ব্যাপারে টাকা লেনদেন ছিল। ওই ব্যক্তির হয়ে অপহরণকারীরা তৌকিরকে তুলে নিয়েছিল।’ 

তিনি বলেন, ‘অপহরণের দিনই হাইচ গাড়িটি পাঁচ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয়েছিল উত্তরা থেকে। অপহরণের কাজের পর গাড়িটি বগুড়া চলে গিয়েছিল, এরপর ঢাকায় এলে গাড়িটি জব্দ করা হয়।’ 

র‍্যাব সদস্য জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মওদুত বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছি। খাতা কলমে এখনো পাইনি, পেলে জানাব।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাব-২-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শিহাব করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তুরাগে ওই ঘটনার বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আপনি তুরাগসংশ্লিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিস দখল নিয়ে জুলাই রেভেলসের দুজনকে জখম

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ইউসুফ আলী রেদওয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে মাসুম ও ফাহিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এজাহারের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ‘মূল হোতা’ উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। নেপথ্যে রয়েছে, জুলাই রেভেলস অফিসটি দখল। জানা গেছে, উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের জুলাই রেভেলসের বর্তমান অফিসটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করত সন্ত্রাসী আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তিনি দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলতাফ ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। এই সুযোগে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন। পরে ওই অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি টাঙিয়ে জুলাই রেভেলস নামের একটি সংগঠন করা হয়।

জানা যায়, সম্প্রতি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ উত্তরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে আসেন। সেই সঙ্গে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে গড়া জুলাই রেভেলসের অফিসটি খালি করে দিতে বলেন। কিন্তু রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন এতে নারাজ ছিল; যা নিয়ে আলতাফ ও রেদওয়ানের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই আলতাফ ও তাঁর সহযোগীরা রেদওয়ানকে কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এক কক্ষের অফিসটি ছিল শ্রমিক লীগের। শ্রমিক লীগের সেই অফিস দখল করে জুলাই রেভেলসের কার্যালয় করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিক লীগের আলতাফ বিএনপির লোকজনের সঙ্গে মিল দিয়ে প্রকাশ্যে এসে ওই অফিস ফেরত চেয়েছিল। কিন্তু জুলাই রেভেলসের সদস্যরা সেটি না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

ওসি আরও জানান, আহত রেদওয়ান বাদী হয়ে আলতাফকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম ও ফাহিমও এজাহারভুক্ত আসামি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রি, চুয়াডাঙ্গায় ডিলারকে জরিমানা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম।

জানা গেছে, সদর উপজেলার পাঁচমাইল এলাকার এক বিএডিসির সারের ডিলার অবৈধ উপায়ে আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর এলাকার তাওহীদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ডিএপি ১১ বস্তা ও এমওপি ৯ বস্তা সার বিক্রি করেন।

বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জরিমানা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বিএডিসি সার ডিলার মডার্ন অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইকবাল বিশ্বাসকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে সার কেনার অপরাধে ক্রেতা তাওহীদ হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে বিএনপির ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বিএনপি নেত্রী নাসরিনের ওপর সরোয়ার অনুসারীদের হামলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপি নেত্রী নাসরিনের ওপর সরোয়ার অনুসারীদের হামলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। এর আগে দুপুরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন নাসরিন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফুল দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সেই ইস্যুতে বিএনপির নেত্রী নাসরিন থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জানা গেছে, অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনের কথা বলা হয়েছে। এদের অধিকাংশই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মী।

জানতে চাইলে বিএনপির নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন জানান, তাঁর ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি রোববার রাত ৯টার দিকে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাদের নাম তিনি প্রকাশও করেছেন।

নাসরিনের অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-৫ (মহানগর-সদর) আসনের মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা করেছে।

এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, রোববার দুপুরে ফুল দিয়ে তাঁরা যখন যাচ্ছেন, তখন বাইরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নাসরিনের ঝামেলা হয়েছে। তবে কী হয়েছে জানেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩২
ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক শিপু, স্ত্রী সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক শিপু, স্ত্রী সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, তাঁর শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া।

র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, সামিয়া ও শিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার হাদিকে গুলির ঘটনার আগে ও পরে ফয়সালের সঙ্গে তাঁদের ফোনে ঘন ঘন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে এ ঘটনায় র‍্যাব মোট চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নেয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।

আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।

ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত