Ajker Patrika

ভূমিকম্প সুরক্ষা নিয়ে সেমিনার

নিয়ম না মেনেই ৯৫% ভবন

  • ভূমিকম্পপ্রবণ ১৯৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫তম। দেশে সিলেট সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ
  • ঢাকায় নীতিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ, ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৫১ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্পপ্রবণ ১৯৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫তম অবস্থানে জানিয়ে পরিকল্পনাবিদ তৌফিকুল আলম বলেন, দেশে সিলেট অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ। ঢাকায় উচ্চ জনঘনত্ব, মাটি দুর্বল ও নীতিমালা না মেনেই ভবন নির্মাণের কারণে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৫১ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, রাজধানীতে ৯৫ শতাংশ ভবন নিয়ম না মেনেই তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য ভূমিকম্পে ভেঙে পড়ার ঝুঁকি বেশি। এটি সমাধানে ৪৫টি সংস্থার কন্টিনজেন্সি প্ল্যান তৈরি ও বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতে হবে। প্রশিক্ষিত জনসংখ্যা তৈরি, নীতিমালা নিয়ে ভবন নির্মাণসহ ৬টি মন্ত্রণালয়ের অধীনে টাস্কফোর্স গঠন করে ভূমিকম্প ও অগ্নি-দুর্ঘটনাপ্রবণ ভবন চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

‘প্লাস্টিক পলিথিন দূষণ প্রতিরোধ, বর্জ্যব্যবস্থাপনা ও ভূমিকম্প সুরক্ষা প্রস্তুতি’বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আয়োজনে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে তা শেষ হয় বেলা ২টায়। এ সময় ‘প্লাস্টিক ও পলিথিন প্রতিরোধে করণীয়, শিল্প ও মেডিকেল বর্জ্যব্যবস্থাপনা এবং ভূমিকম্প সুরক্ষা প্রস্তুতি’ তিনটি প্রধান বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন বক্তারা।

বক্তারা বলেন, যথাযথ বর্জ্যব্যবস্থা না থাকায় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে। শিল্পের ও মানুষের বর্জ্য সরাসরি নদী বা নালায় ফেলা হয়। বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্য থেকে তরল বিষাক্ত বর্জ্য নির্গত হয়ে মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন। ঢাকা বা এর আশপাশে নদীগুলোতে অবাধে বর্জ্য ফেলায় পানি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়ে মশার বিস্তার ও রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, শিল্পবর্জ্য থেকে নির্গত বিষাক্ত উপাদান মানবদেহে প্রবেশ করলে ত্বকে অ্যালার্জি, চোখ জ্বালা, শ্বাসকষ্ট ও কিডনির সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনায় বক্তারা বলেন, শিল্পবর্জ্য সমস্যা সমাধানে প্রতিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে ইটিপি স্থাপন এবং কার্যকরভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়া ব্যবহার করে বর্জ্য উৎপাদন কমাতে হবে। শিল্পমালিকদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং নিয়মিতভাবে মনিটরিং (তদারকি) করতে হবে। সরকারকে শিল্প অঞ্চলভিত্তিক আধুনিক সিইটিপি গড়ে তোলা এবং রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিকে উৎসাহিত করতে হবে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা শিল্পবর্জ্যের প্রভাব সম্পর্কে জানে এবং ব্যবস্থা গ্রহণে চাপ সৃষ্টি করে। এ ছাড়া গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে বিকল্প উপকরণ ও প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করতে হবে, যাতে বর্জ্যের পরিমাণ কমে আসে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির। বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক ড. এম ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক ড. এম শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, নগরায়ণ ও নগর সুশাসনবিষয়ক প্রোগ্রাম কমিটির সদস্যসচিব পরিকল্পনাবিদ তৌফিকুল আলম, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসানুল বান্না ও ডব্লিউবিবির পরিচালক গাউস পিয়ারী।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, ‘আমরা বাজারে যাই খালি হাতে, বাড়িতে নিয়ে আসি প্লাস্টিক। আর এগুলো বর্জ্যে পরিণত হয়। শিক্ষিত শ্রেণি পর্যন্ত এসব বিষয়ে উদাসীন। পলিথিনের ব্যবহারের পরিবর্তে ভিন্ন কিছু ব্যবহারে মনোযোগী হতে হবে।’

আইনজীবী হাসানুল বান্না বলেন, দেশে ২০০-এর বেশি পরিবেশ বিষয় নিয়ে আইন আছে; কিন্তু তার কার্যকর প্রয়োগ নেই। এ জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

কারাগারে ১০৫ মন্ত্রী-এমপি

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ও পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত