Ajker Patrika

সোহাগ হত্যা: পুরান ঢাকার ভাঙারিপট্টিতে ভয়-আতঙ্ক

বরগুনা প্রতিনিধিনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১০: ২৩
ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় শুক্রবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আলমগীর ও মনির নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় শুক্রবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আলমগীর ও মনির নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে নৃশংসভাবে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৪৩) হত্যার ঘটনার পর স্থবির হয়ে পড়েছে সেখানকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ভাঙারিপট্টির ব্যবসায়ীরা।

কোটি টাকার ব্যবসার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সোহাগকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‍্যাব। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে। আসামিদের মধ্যে টিটন গাজীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ গিয়াস রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে এই মামলার আরেক আসামি তারেক রহমান রবিন অস্ত্র মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

দুপুরের পর দুই আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন। তিনি টিটন গাজীর ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে রবিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন।

শুনানি শেষে আসামি টিটন গাজীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে রবিনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত বুধবার সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। নিহত সোহাগ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন এলাকায় বসবাস করতেন। শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে ঢাকা থেকে নিহত লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের মরদেহ বরগুনায় নিয়ে আসেন স্বজনেরা। পরে সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুরের বান্দরগাছিয়া গ্রামে নানাবাড়িতে মায়ের কবরের পাশে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

শনিবার বিকেলে মিটফোর্ট রোডের রজনী বোস লেনে ভাঙারিপট্টিতে গিয়ে দেখা যায়, গলিতে শতাধিক ভাঙারির দোকান। বেশ কিছু দোকান খুললেও নেই তেমন কর্মচাঞ্চল্য। দোকানি ও কর্মচারীরা অনেকে বসে আছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যবসায়ী সোহাগ খুন হওয়ার পর ভাঙারিপট্টিতে আগের মতো কর্মচাঞ্চল্য নেই। আগে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটত ব্যবসায়ীদের। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর তিন দিন ধরে লোকজন কম আসছে। ব্যবসায়ীরাও কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না।

নিহত সোহাগের সোহানা মেটালের পাশের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘দুই দিন ধরে ব্যবসা কিছুটা স্থবির হয়ে আছে। বেচাকেনা কম। লোকজনও আসছে না। যাঁরা আসতেছেন, অধিকাংশই বিভিন্ন গণমাধ্যমের লোকজন; ঘটনা জানতে আসছেন।’

মার্কেটের আরেক অ্যালুমিনিয়াম ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা মালামাল বেচাকেনার বাইরে ভাত খাওয়ার সময় পেতাম না। কিন্তু এই ঘটনার পর এখন তেমন কাজ নেই। অল্প অল্প বেচাকেনা চলে। ঘটনার পর অনেকে আতঙ্কিত।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, সোহাগ হত্যায় জড়িত মাহমুদাল হাসান মহিন চকবাজার থানা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। দু-তিন বছর ধরে তিনি যুবদলের রাজনীতি করছেন। গ্রেপ্তার তারেক রহমান রবিন ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর মা তাহমিনা মিটফোর্ড হাসপাতালের কর্মী। সরোয়ার হোসেন টিটু চকবাজার থানা যুবদলের সাবেক সদস্য। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নের অনুসারী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রবিউল কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানান।

সাবাহ করিম লাকি ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। অপু দাস চকবাজার থানা ছাত্রদল দলের সদস্যসচিব। মহিন, অপু, টিটুরা একসঙ্গে চলতেন। তাঁরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। কয়েক মাস আগে ব্যবসা নিয়ে তাঁদের মধ্যে সমস্যা দেখা দিলেও গত কোরবানির ঈদের আগে তা মীমাংসা হয়। তাঁরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতেন। এই নিয়ে ব্যবসায়ীরাও কিছুটা বিরক্ত ছিলেন। মহিন বিএনপির প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী সাবেক কমিশনার নাসিমা আক্তার কল্পনা, যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইসহাক সরকার ও হামিদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিত।

ব্যবসায়ী সূত্র জানান, সোহাগ ১০-১২ বছর ধরে ভাঙারি গলিতে ব্যবসা করতেন। ভাঙারির ব্যবসার আড়ালে এ দোকানে অ্যালুমিনিয়ামের চোরাই তার বেচাকেনা হতো। এতে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকার ব্যবসা হতো তার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলটির নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যবসা চালিয়ে যান। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই কোটি টাকার ব্যবসায় ভাগ বসাতেই তাঁর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয় মহিন, অপু ও টিটুর।

এ ছাড়া মিটফোর্ড হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট দেখভাল করতেন নান্নু। মহিনদের ছত্রচ্ছায়ায় এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন নান্নু। আর হত্যায় জড়িত বড় মনির এলাকায় পরোটা মনির নামেও পরিচিত বলে জানা যায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে সোহাগের দোকানে ৮-১০টি মোটরসাইকেলে করে লোক এসে তাঁকে মারধর শুরু করে। মারতে মারতে তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাহমুদুল হাসান মহিনের নেতৃত্বে সোহাগের ওপর হামলা চালানো হয়। সোহাগের গায়ে ইট ও পাথর মারেন লম্বা মনির ও আলমগীর। তাঁর শরীরের ওপর লাফালাফি করেন ছোট মনির।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার নিহত সোহাগের বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। হত্যায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‍্যাব। এই নিয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে পুলিশ ও র‍্যাব। শনিবার মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দিন বলেন, সেখানে একটি ভাঙারি দোকানে কারা ব্যবসা করবে, এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। যিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং যাঁরা হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁরা পরস্পর সম্পর্কিত। তাঁরা একসঙ্গে ব্যবসাটা কিছুদিন করেছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাঁরা নিজেদের মতো ব্যবসা করার জন্য সোহাগের সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হন এবং এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

পাঁচজনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার

এই হত্যাকাণ্ডে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নাম আসা পাঁচজনকে গত শুক্রবার নিজেদের সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। অবশ্য গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না অভিযোগ করেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং মামলার এজাহার থেকে মূল তিন আসামিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। একই বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও প্রশ্ন তোলেন।

স্ত্রী-সন্তানের আহাজারি

গতকাল আহাজারি করতে করতে স্বামীর কবরের ওপর গড়াগড়ি খাচ্ছেন লাকী আক্তার। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি, আর প্রলাপ বকছিলেন। কান্নায় ভেঙে যাওয়া কণ্ঠে লাকী আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীরে মারতাছে, আর হাজার হাজার লোক চেয়ে চেয়ে দেখল। কেউ এসে একবারও ওই উন্মাদ খুনিদের থামাইল না। সে পাঞ্জাবি পইরা বের হইছিল। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ওরা আমার স্বামীর বুকের ওপর উঠে নৃত্য করেছে। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? দুইটা অবুঝ শিশু; ওদের কীভাবে মানুষ করব। এই নির্মমতার কি কোনো বিচার করবে এই দেশের মানুষ?

লাকী আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার স্বামীর দোকান থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল হত্যাকারীরা। আমার স্বামীর ব্যবসা তাদের সহ্য হচ্ছিল না। তারা প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাইছিল। আমার স্বামী তা দিতে চায়নি। আর এ কারণেই নির্মমভাবে হত্যার শিকার হতে হয়েছে তাকে।’

শোকে যেন পাথর হয়ে গেছে সোহাগের দুই শিশুসন্তান। চোখে তীব্র ক্ষোভ ও বুকভরা সাহস নিয়ে তারা পিতৃহত্যার বিচার চেয়েছে দেশবাসীর কাছে।

নিহত সোহাগের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সোহান (১১) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ওরা এতিম বানাইয়া ফালাইছে। আমরা কোথায় থাকব? আমার বাবাকে কী নিষ্ঠুরভাবে পাথর দিয়া মারছে। এই হত্যার বিচার চাই আমরা।’ এটুকু বলেই সে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

এ সময় সোহাগের বড় মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহানা (১৪) বলেন, ‘আমার বাবাকে ব্যবসার জন্য মেরে ফেলেছে। আমার বাবার কাছে হত্যাকারীরা টাকা চাইছে। আমার বাবা বলেছে, আমি কষ্ট করে রোজগার করি আমার সন্তানদের জন্য। তোদের কেন টাকা দিব। আর এ জন্যই আমার বাবাকে ওরা মেরে ফেলেছে। এই নরপিশাচদের ফাঁসি চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ের দেড় মাসের মাথায় সড়কে ঝরল প্রবাসীর প্রাণ

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাজমুল হাসান (২৮) নামের এক প্রবাসী যুবক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় উপজেলার বেগমাবাদ এলাকায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাজমুল উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে।

নিহত যুবকের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ বেলা সাড়ে ৩টায় কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন নাজমুল। বেগমাবাদ এলাকায় এলে একটি পিকআপ ভ্যান তাঁর মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে চলন্ত একটি কাভার্ড ভ্যানের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

নিহত যুবকের ফুফাতো ভাই ফারুক হোসেন জানান, নাজমুল হাসান কুয়েতে কাজ করেন। প্রায় তিন মাস আগে ছুটিতে দেশে ফেরেন। দেড় মাস আগে বিয়ে করেন তিনি। ১৫ দিন পর তাঁর বিদেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। আজ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট বাজার থেকে একটি টি-শার্ট কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নাজমুল।

নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বুক চাপড়ে বলেন, ‘ছেলেকে বিয়ে করিয়ে খুব আনন্দে ছিলাম। আনন্দটা বেশি দিন টিকল না।’

এ বিষয়ে মীরপুর হাইওয়ে পুলিশের এসআই আনিসুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেল পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সড়কে যানজট হয়। বিকেল সোয়া ৫টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা হামলা ও গুলি, নিহত ১

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আইটি গেটসংলগ্ন বিএনপির স্থানীয় কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এমদাদুল হক (৫৫) নামের এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫)। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ রোববার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসে ছিলেন।

এ সময় দুর্বৃত্তরা হঠাৎ অফিসে থাকা মামুন শেখকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

প্রথম গুলি মিস হয়ে পাশে থাকা এমদাদুল হকের শরীরে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর সন্ত্রাসীরা আরও গুলি চালালে মামুন শেখ গুলিবিদ্ধ হন। তখন দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা গুরুতর আহত মামুনকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যাচ্ছি। একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়ী গেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় মুগডালে ক্ষতিকর রং, ৪ দোকানিকে লাখ টাকা জরিমানা

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুগডালে ক্ষতিকর রঙের উপস্থিতি পাওয়ায় বগুড়ায় চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ রোববার শহরের ডালপট্টিতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে এই জরিমানা করা হয়।

অভিযানে শহরের ডালপট্টি এলাকার একাধিক দোকানে মুগডালে ক্ষতিকারক রং আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। অভিযানে চারটি দোকানের মুগডালে ক্ষতিকারক রঙের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

যদিও দোকানিরা বলছেন, তাঁরা প্রত্যেকে এই ডালগুলো রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে কিনেছেন। এগুলোর মধ্যে রংমিশ্রিত থাকে তা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোই ভালো বলতে পারবে। তাঁরা পাইকারি এনে সেভাবেই আবার বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আজ রোববার আকস্মিক অভিযানে সব ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি দুই দোকানকে ৩০ হাজার করে এবং আরও দুই দোকানকে ২০ হাজার করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পাশাপাশি আজ সন্ধ্যার মধ্যে যাঁদের কাছে রংমিশ্রিত ডাল রয়েছে, সেসব বস্তা নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী নেতারা ডালের বস্তাগুলো একত্র করে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারককে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, মুগডালে যে রঙের উপস্থিতি তাঁরা অভিযানে পেয়েছেন, তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেসব অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোজ্যপণ্যে ভেজাল কিংবা ক্ষতিকারক এমন রং ব্যবহারের প্রচেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অভিযানে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছাসহ জেলা পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিশোরগঞ্জের বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন আজকের পত্রিকার সাজন আহম্মেদ পাপন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপনের হাতে। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপনের হাতে। ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড (সংবাদপত্র) পেলেন আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপন। চলতি বছর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত ‘১৪ বছর ধরে অনির্বাচিত কমিটি, অচল কিশোরগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গন’ প্রতিবেদনের জন্য তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে শহরের রথখোলা এলাকায় এক অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে চার ক্যাটাগরিতে চারজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব।

পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন অনলাইন ক্যাটাগরিতে তাসলিমা আক্তার মিতু, মাল্টিমিডিয়ায় রাকিবুল হাসান রোকেল ও টেলিভিশনে রুমন চক্রবর্তী।

কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির রমজান আলী, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলমগীর হোসাইন তালুকদার, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান, উপাধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. একরাম আহসান জুয়েল, হয়বতনগর আনওয়ারুল উলুম (এইউ) কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজিজুল হক, পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মুআ লতিফ, কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসিম খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত