Ajker Patrika

ড. ইউনূসের ঘোষণাপত্র দেওয়ার বৈধ অধিকার নেই: ফরহাদ মজহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ৩৭
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে বঞ্চনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে বঞ্চনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার আইনগতভাবে কোনো বৈধ অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, ‘ড. ইউনূস শেখ হাসিনার সংবিধানের অধীনে একজন উপদেষ্টামাত্র। তাঁর কোনো অধিকারই নেই জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার। তিনি গণ-অভ্যুত্থানের নেতা নন, তিনি গণ-অভ্যুত্থানের ফলমাত্র।’

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার সকালে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে বঞ্চনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করব, আপনি জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে দেননি কেন? জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া জনগণের অধিকার। সেই অধিকার কেড়ে নিলেন কেন? ছাত্ররা গত বছর ও এই বছরের প্রথমে ঘোষণাপত্র দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মিথ্যা কথা বলে আপনি তাদের ঘোষণাপত্র দিতে দেননি।’

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘এখন একটা ঘোষণাপত্র দিয়েছেন, যেটা নিয়ে আমি অসন্তুষ্ট। প্রথম দিনই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমি এটা প্রত্যাখ্যান করেছি। ড. ইউনূসের ঘোষণাপত্র দেওয়ার কোনো বৈধ অধিকার নেই আইনগতভাবে। কারণ, তিনি শেখ হাসিনার সংবিধানের অধীনে একজন উপদেষ্টামাত্র। তাঁর কোনো অধিকার নেই। তিনি গণ-অভ্যুত্থানের নেতা নন, তিনি গণ-অভ্যুত্থানের ফলমাত্র। আমাদের গণ-অভ্যুত্থান যদি ব্যর্থ হয়, সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবে যদি আমাদের প্রতারিত করা হয়, তাহলে আমরা আবারও গণ-অভ্যুত্থান ঘটাব। পৃথিবীতে ভূরি ভূরি এমন উদাহরণ রয়েছে।’

ফরহাদ মজহার আরও বলেন. ‘শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে যখন শপথ বা সরকার গঠন হয়েছে, সেদিন তৎক্ষণাৎ আমি বলেছিলাম, সাংবিধানিক একটা প্রতিবিপ্লব ঘটেছে। গত বছরের ৮ আগস্ট সরকার গঠনে শেখ হাসিনার সংবিধানে যখন আপনি গণ-অভ্যুত্থান ঢুকিয়ে দিলেন, তখন আপনি শেখ হাসিনার রাষ্ট্রটা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন। এতটুকু বোঝার কাণ্ডজ্ঞান আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজে, আমাদের সাংবাদিক মহলে হয়নি। যেহেতু এটা হয়নি, এর কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) প্রতিদিন দিতে বা গুনতে হচ্ছে।’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমরা একটা গঠনতন্ত্র প্রণয়ন চেয়েছি। সেটা আইনের কথা বলে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার সংবিধান রেখে সরকার গঠন করা, এটা তো হতে পারে না। জনগণ যে দাবি তুলেছিল, তা বারবার তুলতে হবে, বাতিল করতেই হবে। এখানে কোনো কম্প্রোমাইজ (সমঝোতা) চলবে না। আমরা কেন ইংরেজদের পুরোনো কলোনিয়ান বা পুরোনো রাষ্ট্রব্যবস্থা রাখব, যেখানে একজন ব্যক্তি সব ক্ষমতার অধিকারী।’

১৯৭২-এর সংবিধানের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সাম্য, মানবিক মর্যাদার, সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি যুদ্ধ করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কি সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা—এসবের জন্য যুদ্ধ করেছেন? আমরা এটার জন্য যুদ্ধ করিনি। আমাদের এগুলো চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৯৭২-এর সংবিধান যারা লিখেছে, তারা ছিল পাকিস্তানি। কারণ, পাকিস্তানের সংবিধান লেখার জন্য ১৯৭০ সালে তাদের আমরা নির্বাচিত করেছিলাম।’

বিএনপির উদ্দেশে ফরহাদ মজহার প্রশ্ন করেন, ‘এই যে আপনারা ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ধরে রাখতে চান, আপনারা কি পাকিস্তানের দালাল? আপনারা কেন এটা ধরে রাখতে চাইছেন? জিয়াউর রহমান তো ধরে রাখতে চাননি। খালেদা জিয়া এটা ধরে রাখতে চাননি। তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন, এই সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। তাহলে কেন আপনারা গণ-অভ্যুত্থানের পরে চাপ দিয়ে সংবিধানটি রেখেছেন এবং সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব ঘটিয়েছেন? যেটা করার সেটা করেননি; বরং আপনারা নির্বাচনের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছেন—আমাদের নির্বাচন লাগবে, আমাদের নির্বাচন লাগবে।’

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। সরকারের অনেক অর্জন থাকলেও সরকার রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা গ্রহণযোগ্য নয়।

আলোচনা সভায় কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বলেন, ‘সংস্কার না করে কোনো লাভ নেই, যে লাউ সে-ই কদু হবে। আমাদের মতো করে সংবিধান করতে পারতাম। এমন সুযোগ আমরা পেয়েছি। ভালো রাজনীতিবিদ থাকলে দেশের এমন অবস্থা হতো না। সেনাপ্রধানকে সঙ্গে নিয়ে জুলাইপত্র ঘোষণা করলে একটা ঐক্য বা সফলতায় আসতে পারতাম।’

গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান আইনজীবী ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ বলেন, ‘যেখানে বৈষম্য, অনাহার, অত্যাচার, নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাবে, সেখানে গণ-অভ্যুত্থান বা বিপ্লব হবে। সেই বিপ্লবকে ধারণ করে আমাদের পরিবর্তন করতে হবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ টি এম জিয়াউল হাসান বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র কাদের দিয়ে লিখিয়েছেন? যারা লিখেছে, তাদের জুলাইয়ে অংশগ্রহণই ছিল না। যারাই অভ্যুত্থানের অনুঘটক, তাদের কথা বলা বা স্মরণ করাও হয়নি।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণশক্তি সভার সভাপতি সাংবাদিক সাদেক রহমান। অধ্যাপক ড. দেওয়ান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ, গণমুক্তি জোটের মহাসচিব আখতার হোসেন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাকসুতে ভিপি-জিএসসহ ২৪টি পদে ছাত্রশিবিরের জয়, এজিএস ছাত্রদলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭: ০৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ও জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত চারটার দিকে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চাকসুর ১৪টি হলের ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২২১টি আর জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯৫টি। অন্যদিকে এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪১টি।

বুধবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়েছেন ৪৯৩ জন।

চাকসু নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত একটার পর দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অধ্যাপক কামাল মুক্ত হন।

এর আগে দিনভর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের বাইরে ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি ও ছাত্রশিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা আশেপাশে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশে থাকলেও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাত একটা পর্যন্ত তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাতেই ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাকসুর ফল ঘোষণা নিয়ে ছাত্রদল-শিবির হট্টগোল, সহ-উপাচার্য অবরুদ্ধ

চবি প্রতিনিধি 
বুধবার দিবাগত রাতে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের সামনে এ হট্টগোল শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার দিবাগত রাতে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের সামনে এ হট্টগোল শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হল সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণা নিয়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের সামনে এ হট্টগোল শুরু হয়। দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটেও দুই পক্ষ সেখানে অবস্থান নিচ্ছিল। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনকে প্রকৌশল অনুষদ ভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সোহরাওয়ার্দী হলে ভিপি পদে জমাদিউল আওয়ালকে কারচুপির মাধ্যমে ফেল করানো হয়েছে। তাঁকে ১ হাজার ২০৩ ভোট দেওয়া হয়েছে, এই পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত নেয়ামত উল্লাহ ১ হাজার ২০৬ ভোট পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে ছাত্রদলের এক কর্মী দাবি করেন, প্রকৌশল অনুষদের ৩১২ নম্বর কক্ষে দর্শন ও সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছে। অথচ এই কক্ষে জমাদিউল আওয়াল পেয়েছেন ৩ ভোট। এমনটি হওয়ার কথা নয়। আর দর্শন বিভাগের অনেকের সঙ্গে জমাদিউল আওয়ালের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাঁকে কারচুপির মাধ্যমে ৩ ভোট দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ফলাফল ঘোষণা শেষে চলে যাচ্ছিলেন। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাঁর পথ আটকে সোহরাওয়ার্দী হল সংসদে এই ভবনের ৩১২ নম্বর কক্ষের ভোট আবার গণনার দাবি করেছেন। এ সময় তিনি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তবে তাঁরা মানেননি। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে কেমিক্যাল পার্ক: রাসায়নিকের গুদাম সরছে না

  • প্রকল্প শুরু হয় ৭ বছর আগে।
  • অধিগ্রহণ করা হয় ৩০৮ একর জমি।
  • মেয়াদ শেষ হওয়ার বাকি ২ মাস।
  • সম্পন্ন হয়নি সড়ক, ডাম্পিং ইয়ার্ডের নির্মাণকাজ।
  • প্লট হস্তান্তর না হওয়ায় সরছেন না ব্যবসায়ীরা।
আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরদিন গতকাল ঘটনাস্থলে স্বজন ও সহকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরদিন গতকাল ঘটনাস্থলে স্বজন ও সহকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল ব্যবসা সরাতে সাত বছর আগে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কাজ শুরু করে সরকার। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার বাকি আর মাত্র দুই মাস, অথচ এখনো সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজও শেষ হয়নি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে সেখানে এখনো ঝোপঝাড়ে ভরা মাঠ। কয়েকটি ভবনের নির্মাণকাজ চলছে, বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হয়েছে। কিন্তু রাস্তা, ড্রেন, ডাম্পিং ইয়ার্ড কিছুই এখনো সম্পন্ন হয়নি। প্লট হস্তান্তর হয়নি, তাই ব্যবসায়ীরাও সরছেন না।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলে ফিরতি বার্তায় জানান, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৮ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী বছর প্লট হস্তান্তর করা হবে।

বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে অনুমোদন এখনো পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পাওয়া গেলে ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

এই রাসায়নিক পল্লির জন্য ৩০৮ দশমিক ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী এখানে হবে ১ হাজার ৮৪৩টি প্লট, থাকবে রাস্তা, ড্রেন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ফাঁড়ি, পানি সরবরাহব্যবস্থা, ইনসিনেরেটর ও জেটি। কিন্তু কাজের গতি বলছে, এসবের বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিরাপদ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা এখনো বহু দূর।

কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক প্রকল্পের কাজের এমন দশায় পুরান ঢাকায় আগের মতোই চলছে কেমিক্যাল ব্যবসা।

২০১০ সালের নিমতলী ও ২০১৯ সালের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। তারপরও নিরাপত্তাব্যবস্থায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। বরং ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে মিরপুর, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জের মতো শহরগুলোয়। কিন্তু দ্রুত যেকোনো বিপর্যয় সামাল দিতে ফায়ার সার্ভিসেরও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। কেমিক্যালের আগুন নেভাতে তাদের সক্ষমতা সীমিত। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে।

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা সরতে চান, কিন্তু শর্ত পূরণ না হলে তা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, গুদামঘর স্থানান্তরের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। তবে প্লট বুঝে না পেলে তাঁরা কীভাবে যাবেন। তাঁরা শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করে থাকেন। সঠিকভাবে এসব মালামাল সংরক্ষণের জন্য রাসায়নিক পল্লিতে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠতে সময় লাগবে। বিষয়গুলো নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে বিসিককে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করা না হলে ব্যবসায়ীদের কী করণীয় থাকতে পারে?

প্রকল্পের ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে পরিবেশবিদদেরও। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান বলেন, তখন জোরজবরদস্তি করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। এটি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকার কাছাকাছি হাজারীবাগ বা আশপাশে অল্প পরিমাণ জমিতে নির্মাণ হলে এত দিনে স্থানান্তর হয়ে যেত। কিন্তু পল্লি দূরে তৈরি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের সেখানে যেতে আগ্রহ কম। সরকারও ঢিলেতালে হাঁটছে।

রসায়নবিদেরা বলছেন, কেমিক্যাল ব্যবসা জটিল ও সংবেদনশীল। এ কাজে দক্ষতা জরুরি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেন, কেমিক্যাল কেনাবেচা কিংবা এগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে হলে এসব সম্পর্কে বিশদ ধারণা থাকা প্রয়োজন। একেকটি কেমিক্যালের একেক রকম চরিত্র। কেমিস্ট, রিসার্সার, সায়েন্টিফিকদের এসব সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকে। এসব কেমিক্যালের ডিলিংস সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে সেটি অন্ধকারে ঢিল মারার মতো অবস্থা হবে। এতে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অতীশ দীপঙ্কর ও সূর্য সেন হলে ভিপি পদে এগিয়ে ছাত্রদল

চবি প্রতিনিধি 
ভোটকেন্দ্রে অপেক্ষারত শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোটকেন্দ্রে অপেক্ষারত শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে অতীশ দীপঙ্কর হল ও মাস্টারদা সূর্য সেন হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রদল।

চাকসু নির্বাচনে অতীশ দীপঙ্কর হলে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাত হোসেন হৃদয় পেয়েছেন ২২৩ ভোট। এই হলে ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহীম রনি পেয়েছেন ৯০ ভোট।

এই হলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রদলের মো. শাফায়েত হোসেন পেয়েছেন ১৬৪ ভোট। ছাত্রশিবিরের সাঈদ বিন হাবিব পেয়েছেন ৮৩ ভোট।

এছাড়া এজিএস পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক পেয়েছেন ২৬৬ ভোট এবং ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোসেন মুন্না পেয়েছেন ৪৫ ভোট।

অন্যদিকে, মাস্টারদা সূর্য সেন হলেও ভিপি পদে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রদল। এ হলে ভিপি পদে ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ১৪১ ভোট। আর ছাত্রশিবির সমর্থিত ইব্রাহীম হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট।

এই হলে জিএস প্রার্থী ছাত্রশিবিরের সাঈদ বিন হাবিব ১৭৫ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। এজিএস পদে এগিয়ে আছেন ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান। তিনি পেয়েছেন ১৭০ ভোট।

নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত