Ajker Patrika

একমাত্র সন্তান আমার, খুব যত্ন করে বড় করেছিলাম— সাগরে নিখোঁজ অরিত্রর বাবার আহাজারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৪১
অরিত্র হাসান। ছবি: সংগৃহীত
অরিত্র হাসান। ছবি: সংগৃহীত

‎‘আমার ছেলের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বন্ধুরা মিলে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাওয়ার কথা জানানোর পর আমি যেতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু বন্ধুরা সবাই মিলে যাবে। তাই বললাম, কোনো রিসোর্টে গিয়ে ঘুরে এসো। কিন্তু আজ সকালে আমাকে ফোন করে জানানো হলো, কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্রসৈকত এলাকায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়েছে। আমার একমাত্র সন্তান। খুব যত্ন করে বড় করেছিলাম।’ ‎

‎আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে আজকের পত্রিকাকে ফোনে কথাগুলো বলছিলেন কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্রসৈকত এলাকায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের বাবা সাকিব হাসান। তিনি ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক। ‎

‎সাকিব হাসান বলেন, ‘সমুদ্রসৈকতে ছেলের নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে রাজধানীর বাসাবোর নন্দীপাড়ার বাসা থেকে অরিত্রের মাকে নিয়ে বিমানবন্দরে এসেছি। কক্সবাজারে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছি।’ ‎

‎ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান। গত বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে ভর্তি হয়েছে। তার প্রথম বর্ষের লিখিত পরীক্ষা গতকাল সোমবার শেষ হয়েছে। গতকাল রাতে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন সে জানায়, তার বন্ধুরা মিলে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাবে। কিন্তু আমি তাকে যেতে নিষেধ করেছি। কিন্তু বন্ধুরা সবাই মিলে যাবে, তাই বললাম, কোনো রিসোর্টে গিয়ে ঘুরে এসো। কিন্তু আজ সকালে আমাকে ফোন করে জানানো হলো, সে সমুদ্রসৈকতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ আছে।’ ‎‎

কান্নাজড়িত কণ্ঠে অরিত্রের বাবা সাকিব হাসান বলেন, ‘ভাইভা পরীক্ষা শেষে আগামী ১৫ জুলাই বাসায় আসার কথা ছিল। আমার ছেলে মাংস খুব পছন্দ করে। বাসায় এসে মাংস খাওয়ার কথাও বলেছিল। একটামাত্র সন্তান। খুব যত্ন করে বড় করেছি। খুব মেধাবী ছিল ছেলেটা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বেশ ভালো রেজাল্ট করে পছন্দের বিভাগে ভর্তি হয়েছে। প্রথম বর্ষের পরীক্ষাও বেশ ভালো হয়েছে জানিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এমনটা হয়ে গেল।’

অরিত্রের গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়। পরিবার ঢাকায় থাকলেও তিনি হলে থাকতেন। ‎

‎প্রথম বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শেষে গতকাল বিকেলে অরিত্র হাসানসহ পাঁচজন সহপাঠী কক্সবাজারে বেড়াতে যান। তাঁদের মধ্যে তিনজন আজ সকাল ৭টার দিকে হিমছড়ি সৈকত এলাকায় সাগরে গোসল করতে নেমে পানিতে ভেসে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর এক সহপাঠী কে এম সাদমান রহমানের লাশ সৈকতে ভেসে এলেও অরিত্র হাসান ও আসিফ আহমেদ নামের অপর দুই সহপাঠী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত