Ajker Patrika

হল প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ না করায় ৩ কর্মচারীর চাকরিচ্যুতের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি 
হলের সামনে তিন চাকরিচ্যুত কর্মচারীর অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
হলের সামনে তিন চাকরিচ্যুত কর্মচারীর অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন নেছা হলের প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে রাজি না হওয়ায় তিন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই তিন কর্মচারী চাকরি ফিরে পেতে হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করছেন।

অভিযুক্ত হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহম্মদ নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক। আর ভুক্তভোগী তিন চাকরিচ্যুত কর্মচারী হলেন ফজিলাতুন নেছা হলের ডাইনিং অ্যাটেনডেন্ট (মহিলা) মিরা রানী রায় ও চম্পা এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী (মহিলা) মোছা. সোমা।

আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ফজিলাতুন নেছা হলের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছেন ওই তিন কর্মচারী। প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল—‘বিনা কারণে চাকরিচ্যুত হওয়া মানি না’, ‘আমরা হারানো চাকরি ফেরত চাই’, ‘আমরা হলে কাজ করতে এসেছি, প্রভোস্ট নজরুল স্যারের বাসায় কাজ করতে নয়’।

জানা গেছে, চাকরিচ্যুত হওয়া ওই তিন কর্মচারী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দেড় বছর ধরে হলটিতে কর্মরত ছিলেন। গত বুধবার (১ অক্টোবর) তাঁদের চাকরিচ্যুত করে এসব পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী তিন কর্মচারী জানান, ২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড সিকিউরিটি সলিউশন নামের আউটসোর্সিং কোম্পানির আওতায় তাঁরা ফজিলাতুন নেছা হলে নিয়োগ পান। নিয়োগের পর থেকে তাঁরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করে আসছিলেন। তবে গণ-অভ্যুত্থানের পর হলটিতে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে হলের কাজের পাশাপাশি তাঁর বাসায় গিয়েও আনুষঙ্গিক কাজ করার জন্য বলা হয়। কর্মচারীদের অনেকে প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে গেলেও ওই তিনজন অস্বীকৃতি জানান। গত এপ্রিল মাসে প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে না গেলে চাকরিচ্যুত করা হবে বলেও তাঁদের হল প্রশাসন থেকে হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে হলের এক ওয়ার্ডেনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়। তারপরও গত বুধবার তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি ফিরে পেতে ওই দিন থেকে তাঁরা হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

ভুক্তভোগী কর্মচারী চম্পা বলেন, ‘আমাদের যে পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আমরা সে পদেই কাজ করব। হলের সব কাজ আমরা করতে আগ্রহী। কিন্তু হলের প্রভোস্টের বাসায় কেন কাজ করতে যাব? হলের প্রভোস্টের বাসায় আমরা কাজ করতে যেতে রাজি না হওয়ার পর থেকে আমাদের হুমকি দিয়ে রাখছিল। পরে হঠাৎ শুনি, আমাদের চাকরি নেই। এই চাকরির ওপর আমাদের সংসার চলে। এভাবে হঠাৎ করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, আমরা এখন খাব কী? আমরা আমাদের চাকরি ফেরত চাই।’

ভুক্তভোগী ওই তিন কর্মচারীর অভিযোগ, তাঁদের বাদ দিয়ে অধ্যাপক নজরুল ইসলামের বাসায় আগে থেকে যাঁরা কাজ করতেন, তাঁদের হলে কর্মচারী হিসেবে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফজিলাতুন নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, হলের কোনো কর্মচারীর চাকরি দেওয়ার বা চাকরি খাওয়ার এখতিয়ার কোনো হল প্রাধ্যক্ষের নেই। আউটসোর্সিং কোম্পানি চাইলে তাদের কর্মচারী পরিবর্তন করে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘যে তিনজন কর্মচারীর কথা বলা হচ্ছে, তাদের আমার বাসায় কাজ করতে আসার জন্য বলিনি। তাদের হলের অন্য কাজ করার জন্য বলেছিলাম, কিন্তু তারা যে পদে কাজ নিয়েছে, তার বাইরে কাজ করতে চায় না। তারা ডাইনিংয়ের জন্য নিয়োগ পেয়েছিল, কিন্তু আমাদের হলে গত দুই বছর ধরে কোনো ডাইনিং চালু নেই। সে ক্ষেত্রে তাদের তো বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়া যায় না। আমাদের হলে পরিচ্ছন্নতাকর্মী কম থাকায় তাদের সেই কাজ করার জন্য বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা রাজি হয়নি। এ জন্য আমরা বিষয়টি আউটসোর্সিং কোম্পানিকে জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড সিকিউরিটি সলিউশন নামের আউটসোর্সিং কোম্পানির ডিরেক্টর (অপারেশন) মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লায়েন্ট যদি আমাদের কাছে কারও বিষয়ে অভিযোগ করে, সে ক্ষেত্রে আমাদের সেই কর্মচারী পরিবর্তন করে দিতে হবে। যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তারা হলের কাজ ঠিকমতো না করায় তাদের এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের অন্য কোথাও ব্যবস্থা করে দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...