Ajker Patrika

হত্যা মামলায় জবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ ৭ নেতার নাম

জবি সংবাদদাতা 
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ১২
হত্যা মামলায় জবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ ৭ নেতার নাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার এলাকায় কবি নজরুল কলেজের ছাত্র ওমর ফারুককে গুলি করে হত্যায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনসহ জবি ছাত্রলীগের ৭ নেতার নামও রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন নিহত কলেজছাত্রের মা কুলছুমা আক্তার। এ সময় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সূত্রাপুর থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মামলার আসামির তালিকায় জবি ছাত্রলীগের বাকি নেতারা হলেন জবি ছাত্রলীগের ১নং সহসভাপতি মহিউদ্দিন অনি, সহসভাপতি ইব্রাহিম সানিম, সহসভাপতি আবুল হোসেন পরাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক রিফাত সাঈদ এবং জবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম।

এ ছাড়া জবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলামের ভাই ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়ির একসময় দায়িত্বে থাকা আলোচিত পুলিশ উপপরিদর্শক নাহিদুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান করে ৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১৯ জুলাই কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ওমর ফারুক কলেজের মূল গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বন্ধুদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আসামিরা ওমর ফারুকের বুকে পিঠে একাধিক গুলি করে। হাসপাতালে নিলে তাঁর মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে হামলার শিকার হয়েছেন শামীম হোসেন মোল্লা নামের এক ঠিকাদার। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ভাঙচুর করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু হুরায়রার নেতৃত্বে একদল লোক। খবর পেয়ে সদর থানা-পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

আজ বুধবার ঝিনাইদহ জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শামীম হোসেন মোল্লা শৈলকুপা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের সাব্দার হোসেন মোল্লার ছেলে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

সূত্রে জানা গেছে, শামীম হোসেন মোল্লা এলজিইডির একজন ঠিকাদার। তিনি আজ বুধবার দুপুরে কাজের বিল নিতে জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে আসেন। এ সময় হঠাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু হুরায়রা আসেন। তিনি সংগঠনের সদস্যসচিব সাইদুর রহমানসহ ১০-১৫ জনকে ডেকে এনে শামীম হোসেন মোল্লাকে মারধর এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। বর্তমানে তিনি সদর থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধীর নেতা আবু হুরায়রা আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম হোসেন মোল্লা শৈলকুপায় ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে অনেক মিছিল-মিটিং করেছেন। শৈলকুপায় তাঁর নেতৃত্বে ঢাল, সড়কি, রামদা নিয়ে মিছিল করেছে, তার দায় সে কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শৈলকুপায় একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে ঠিকাদারি কাজ করে এসেছেন। যেকোনো কাজের টেন্ডার প্রভাব খাটিয়ে নিজে নিয়ে কাজ করতেন। তিনি অন্য কাউকে কাজ করতে দিতেন না।

আবু হুরায়রা বলেন, ‘এমনকি ৫ আগস্টের পর এখনো তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। আজ দুপুরে এলজিইডি অফিসে গিয়ে দেখি, সরকারি অফিসে বসে শামীম মোল্লা চা খাচ্ছেন। হাসি-তামাশা করছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে আবু হুরায়রা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শৈলকুপার কিছু লোক ছিল, তারা আগের ক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর করেছে।’ তবে মারধরের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান ঝিনাইদহ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনোয়ার উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই, আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে এসেছি।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুপুরে এলজিইডি অফিসে শামীম হোসেন মোল্লাকে আটকিয়ে রাখার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সদর থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

তাঁকে কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাঁর নামে সদর থানায় কোনো মামলা নেই। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গভীর রাতে পিনাকীর বগুড়ার বাড়ির গেটে দুর্বৃত্তের আগুন

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ২৯
পিনাকীর বগুড়ার বাড়ির গেটে দুর্বৃত্তের আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিনাকীর বগুড়ার বাড়ির গেটে দুর্বৃত্তের আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রবাসী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের বগুড়ার বাড়ির গেটে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাঁর শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।

আজ বুধবার ঘটনাটি জানাজানি না হলেও সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৮টার দিকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনাটি নিয়ে পিনাকী পরিবারের কোনো অভিযোগ নাই এবং বিষয়টি প্রচার না করার অনুরোধ জানান।

স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ৬ মিনিটে দুই যুবক ‘শ্যামা পাখি’ নামের বাসভবনের সামনে পলিথিন জাতীয় কিছু রেখে আগুন জ্বালিয়ে মোবাইল ফোনে ছবি উঠিয়ে দ্রুত চলে যান। কিছুক্ষণ পর আগুন নিভে যায়। ঘটনাটি বুধবার সারা দিন জানাজানি না হলেও সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সন্ধ্যার পর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হানের নেতৃত্বে সদর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ছাড়া বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হকের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা যায়, শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার ওই দোতলা বাড়িতে নিচতলায় ভাড়াটিয়া এবং উপর তলায় পিনাকী ভট্টাচার্যের মা, মামা ও মামি বসবাস করেন।

জানতে চাইলে পিনাকী ভট্টাচার্যের মামা সুব্রত ভৌমিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নাই। তিনি ঘটনাটি প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করেন।’

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আলামত সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পলিথিনজাতীয় কিছুতে আগুন দেওয়া হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করতে আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ

ময়মনসিংহ ও গফরগাঁও প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আব্দুল করিম (৭২) নামের এক বৃদ্ধকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পাগলা থানার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ওই বৃদ্ধের গলায় জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে পুলিশ বলছে, তারা গলায় জুতার মালা পরানোর বিষয়ে কিছু জানে না। আব্দুল করিমকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই কলেজছাত্রীর বাবা পাগলা থানায় মামলা করেছেন। আজ বুধবার পুলিশ আব্দুল করিমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এদিকে আজ দুপুরে পাগলা থানায় আটক অবস্থায় আব্দুল করিম নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁকে অপদস্থ করতে এ ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে।

মামলার বাদী বলেন, ‘ঘরে আমার কলেজপড়ুয়া মেয়েকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন, তাই আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তবে তাঁর গলায় জুতার মালা পরানোর বিষয়ে কিছু জানি না।’

ওই ছাত্রীর বড় ভাই বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার বোন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আজ বাবা বোনকে সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহ আদালতে যান জবানবন্দি দিতে।’

গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় আব্দুল করিম নামে তালিকাভুক্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছে।’

পাগলা থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, ‘শ্লীলতাহানির অভিযোগে আব্দুল করিমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে আব্দুল করিমকে জুতার মালা পরানো হয়েছে কি না, এ বিষয়ে জানা নেই। আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোতোষ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে শ্লীলতাহানির চেষ্টার সত্যতা পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক যুগ পর ঘরে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া ভাই, পরিবারে খুশির বন্যা

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
পরিবারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিবারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন বাবাকে দেখতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন আমিরুল ইসলাম। কিন্তু পথ ভুলে কোথায় যেন তিনি চলে গেলেন। ফিরলেন না আর বাড়িতে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ঘটনা এটি। তারপর কেটে গেছে এক যুগ। এত দিন ধরে আমিরুলকে খোঁজাখুঁজির চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাঁর বড় ভাই আনসারুল ইসলাম। অবশেষে আনসারুলের সব কষ্টের ফল মিলেছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে হারিয়ে যাওয়া ভাই আমিরুলকে ফিরে পেয়েছেন তিনি। আজ বুধবার আমিরুলকে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন তিনি।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের মাহৎপাড়া গ্রামের ঘটনা এটি। এই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পেষু মোহাম্মদের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৫২)। বহু আগে একবার মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। এর পর থেকে অনেক কিছু তিনি ভুলে যেতেন। ১২ বছর আগে রংপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবাকে দেখতে গিয়ে হারিয়ে যান তিনি। ২ নভেম্বর ফেসবুকে ভিডিও দেখে তাঁর বড় ভাই আনসারুল ইসলাম জানতে পারেন, মেহেরপুরের সদর উপজেলার মনিরামপুর এলাকায় আমিরুল রয়েছেন। এরপর সেখানে গিয়ে ভাইকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন তিনি।

আনসারুল ইসলাম জানান, দিনাজপুরে গাড়ি মেরামতের কাজ করতেন আমিরুল। ওস্তাদ মাথায় রেঞ্জ দিয়ে তাঁর মাথায় একবার আঘাত করেছিলেন। এর পর থেকে মাঝেমধ্যে অনেক কিছু ভুলে যেতেন আমিরুল। পরে বাড়ি ফিরে কৃষিকাজ শুরু করেন। বিয়ে করলেও ছয় মাসের মাথায় স্ত্রী তাঁকে ত্যাগ করেন।

এত বছর পর হারানো ভাইকে ফিরে পাওয়ার অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে আনসারুল বলেন, ‘যখন মেহেরপুরে ১২ বছর পর আমার সামনে আমিরুলকে আনা হলো, বলা হলো কে এই লোক, চিনো? এক থেকে দেড় মিনিট পর ‘ভাই’ বলে চিৎকার দিয়ে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল। এত দিন পর ভাইকে দেখা, তার মুখে ভাই ডাক শোনার যে কী আনন্দ, এটা মুখে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।’

স্বজনরা জানান, হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে অনেক খুঁজেছেন বাবা পেষু মোহাম্মদ। কিন্তু ছেলের ঘরে ফিরে আসা দেখে যেতে পারলেন না তিনি। গত ৪ জানুয়ারি বাবা পেষু মোহাম্মদ মারা গেছেন।

এদিকে এক যুগ পর বাড়ি ফিরে আসা আমিরুলকে একনজর দেখতে ছুটে আসছেন কৌতূহলী মানুষেরা। ছোট ভাইকে ফিরিয়ে আনতে বড় ভাইয়ের চেষ্টার প্রশংসা করছেন অনেকেই। প্রতিবেশীরা বলছেন, ছোটবেলা থেকে আমিরুলসহ সব ভাইবোনকে আদর স্নেহে বড় করেছেন বড় ভাই আনসারুল।

ভাইকে হারানোর পর তিনি সব সময় আফসোস করতেন, মন খারাপ করে থাকতেন। এত বছর পর ভাইকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন আনসারুল।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি দুরুল হোদা জানান, ‘নিখোঁজ আমিরুল ফেরার খবর থানায় অবগত করেননি তাঁর ভাই। তাঁরা অবগত না করলে আমরা খোঁজখবর নেব। তবে এটা ভালো খবর যে পরিবারটি দীর্ঘদিন পর তার স্বজনকে খুঁজে পেয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত