Ajker Patrika

কাঁদলেন, কাঁদালেন তামিম ইকবাল

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৩, ১০: ০৪
কাঁদলেন, কাঁদালেন তামিম ইকবাল

আচমকা সংবাদ সম্মেলন। কিন্তু কেন? একেবারে নিশ্চিত করে কেউ কিছু তখন বলতে পারছিলেন না। তবে অনুমান করেছেন একেকজন একেকভাবে। কেউ মনে করেছেন, হয়তো অধিনায়ক থেকে সরে দাঁড়াবেন। কিন্তু কেউ ভাবেননি, একেবারে ক্রিকেট থেকেই বিদায় নেবেন তামিম ইকবাল। সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিলেন মন খারাপের কথা। ওই সময় হোটেলের বাইরে ঝরছিল বৃষ্টি। সংবাদ সম্মেলনে তামিমের চোখেও বৃষ্টি।

চোখ মুছতে মুছতে হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়েন তামিম ইকবাল। মুখে কোনো রাগ না থাকলেও, অনেক কথা যেন তিনি বলে দিচ্ছিলেন শব্দহীনভাবে। এখানেও তিনি কাঁদলেন। তবে একা নয়, এবার ভক্তরাও কাঁদলেন। তামিমই মূলত তাঁদের কাঁদালেন। পুরো আবেগঘন পরিবেশ তখন। সবারই মন খারাপ। আকাশের মনও কি ভালো ছিল? আকাশ থেকেও বৃষ্টি ঝরছিল। ঠিক যেন তামিমের জন্য চোখের জল ফেলা!

হোটেল থেকে বেরিয়ে দ্রুত কালো রঙের গাড়িতে উঠে পড়েন তামিম। ভক্ত টাইগার শোয়েব আলীসহ কয়েকজন গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ান। কথা বলতে চাইলেন। কিন্তু অভিমানী তামিম গাড়ির গ্লাস আর খুললেন না। তামিমকে বহন করা গাড়ি চলে যাওয়ার সময় শোয়েব আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দুই হাতে মাটি চাপড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘প্লিজ ফিরে আসো তামিম।’ 

এর কিছুক্ষণ আগে কোতোয়ালি এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে তামিম ইকবাল আচমকা সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে ঘোষণা দেন, ২২ গজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁকে আর দেখা যাবে না। 
গতকাল বুধবার ছিল তাঁর শেষ ম্যাচ। এই ঘোষণা মানতে পারেননি তামিম ইকবালের ভক্তরা। হোটেলের সামনে জড়ো হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবির) প্রতি ক্ষোভ জানান তাঁরা। 

শোয়েব আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যে লোকটা বিশ্বকাপ পর্যন্ত দলকে গোছাই আনছে। নদী পাড়ি দিয়ে, সাগর পাড়ি দিয়ে যে লোকটা দাঁড়িয়েছে। সেই তিনি বিশ্বকাপে থাকবেন না। মেনে নিতে পারি না ভাই।’ এ সময় শোয়েব বুক চাপড়ে বলেন, ‘মানি না, মানব না। তামিম ভাইয়ের এটি ভুল সিদ্ধান্ত। অভিমানী সিদ্ধান্ত।’ 

এশিয়া কাপে হাতে ইনজুরি পেয়েও দলের প্রয়োজনে ব্যান্ডেজ মোড়ানো এক হাতে ব্যাট করেছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১৮ সালে ওই ঘটনার সময় আবিদ রায়হান সরকারি মুসলিম হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। সে দৃশ্য দাগ কেটেছিল বর্তমানে দশম শ্রেণির এই ছাত্রের। হঠাৎ করেই তামিম ইকবালের অবসর অন্যদের মতো সেও মেনে নিতে পারছে না। কাজীর দেউড়ির আউটার স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করছিল এই খুদে ক্রিকেটার। তামিমের অনুপ্রেরণায় তার ক্রিকেটে আসা। সে অভিমান করে বলে, ‘খেলাও আর দেখব না। প্রিয় ক্রিকেটার নেই, খেলা দেখে কী হবে।’ 

তামিম ইকবালের সংবাদ সম্মেলন মোবাইল ফোনে সরাসরি দেখছিলেন সিএনজি অটোরিকশাচালক মজিদ মিয়া। যখনই তামিম ইকবাল অবসরের ঘোষণা দিলেন, মন খারাপ তাঁর। তামিম ইকবালের কান্না দেখে চট্টগ্রামের ভাষায় তিনি বলেন, ‘হলিজা পুরি জারগই তামিম। নিজেও হাঁনের, অন্যরেও হাঁনার। আরা তামিম ইকবালের এই সিদ্ধান্ত না মানি না।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত