Ajker Patrika

সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকাসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা।  ছবি: সংগৃহীত
সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের এক দিন পর সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানসহ ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে আনোয়ারা থানার এসআই মো. আবুল বাশার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এ ঘটনায় উপজেলার জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ছোট ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাদা এস এম মহিউদ্দিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম এ হান্নান চৌধুরী মনজু, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী রিদোয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম, সহকারী অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন বাবু, চাতরীর সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াছিন হিরো, রায়পুরের চেয়ারম্যান আমিন শরীফ, বারশতের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ূম শাহ্, চাতরীর চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল, সদরের চেয়ারম্যান আসিম কুমার দেব, জুঁইদণ্ডীর চেয়ারম্যান মাস্টার মুহাম্মদ ইদ্রিছসহ দলীয় পদধারী ৬৮ জন।

আসামিদের মধ্যে জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের (৫০), আব্দুল খালেক (২৮) ও মো. আরিফ (২০) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে উপজেলার জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের চৌমুহনী এলাকায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে। এ সময় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দরে অস্থিরতা: বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতেই মাশুল

 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দর। 	ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সংগৃহীত

অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারকেরা যখন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াই করছেন, ঠিক তখনই চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বাড়ানো হলো। ব্যবসায়ীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও এ মাশুল ১৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। এ অবস্থায় গতকাল শনিবার কনটেইনার পরিবহন বন্ধ করে বন্দরের কার্যক্রম থমকে দিয়েছেন চালকেরা। কারণ বন্দরের প্রবেশ ফি ৫৭.৫০ টাকার জায়গায় ২৩০ টাকা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেড়েছে ১৭২.৫০ টাকা। এ ছাড়া বন্দরের পুরো মাশুল ব্যবস্থাপনা নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতেই বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। এমন অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সরকারকে সাত দিন সময় দিতে চাই। এ সময়ের মধ্যে সরকারকে যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে বর্ধিত মাশুল স্থগিত করার দাবি জানাই।’ তিনি আরও বলেন, এ সময়ে প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে স্টেক হোল্ডাররা (অংশীজনেরা) কর্মবিরতি পালন করবেন।

চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৪১ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য এক গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর কার্যক্রম ‘কস্ট-বেইজড অ্যান্ড সার্ভিস-ওরিয়েন্টেড’ মডেলে পরিচালিত হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়ানো হয়েছে বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতেই। তিনি আরও বলেন, ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ ট্যারিফ-কাঠামো প্রণয়নের সময় মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার বিনিময় হার ছিল ৩০.৬১ টাকা। বর্তমানে (২০২৫ সালে) এই হার ১২২ টাকা ছাড়িয়েছে, অর্থাৎ বন্দরের বিদ্যমান ট্যারিফেই কার্যত চার গুণের বেশি বেড়ে গেছে। এ ছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর ২ হাজার ৯১৩ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল স্থগিত করে তা পুনর্বিবেচনার দাবিতে ১৪ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরাম।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে ২৩টি খাতে বর্ধিত মাশুল আদায় শুরু করার ঘোষণা দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

একে একে চট্টগ্রাম বন্দরের সব টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিটিসি) সৌদি আরবভিত্তিক রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালকে (আরএসজিটিআই) দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০ বছরের জন্য বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের দুই টার্মিনাল লালদিয়া ও নিউমুরিং টার্মিনাল (এনসিটি) এবং কেরানীগঞ্জের পানগাঁও। আগামী ডিসেম্বরে এদের সঙ্গে চুক্তি হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ।

১২ অক্টোবর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এ তথ্য জানান। এতে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘২০২০ সালে সরকার চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে বিদেশি কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে। তাদের প্রতিবেদন সরকার ছয় মাস আগে পেয়েছে।’

সংশোধিত ট্যারিফ সূচির বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এবং আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটর—উভয়েরই আয় এতে বাড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সেসব সেবায়, যেগুলো সরাসরি বেসরকারি অপারেটরদের আয়ের উৎস। বিদেশি অপারেটরদের হ্যান্ডলিং কার্যক্রম—ক্রেন অপারেশন, কনটেইনার লোডিং ও আনলোডিং, স্টোরেজ, রিফার প্লাগ-ইন এবং কনটেইনার চলাচলের ট্যারিফ গড়পড়তা ১৪৪ শতাংশ বেড়েছে। তুলনামূলকভাবে, সিপিএ-সংক্রান্ত চার্জ, যেমন পাইলটেজ, নেভিগেশন এবং নদী শুল্ক প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বন্দরের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ১৫ অক্টোবর থেকে আদায় হওয়া বন্দরের বর্ধিত মাশুলের অংশ কোনো আবেদন ছাড়াই পতেঙ্গা টার্মিনালের বিদেশি অপারেটর আরএসজিটিআই পাবে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ৪০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে বছরে অনেক টাকা ব্যয় হয়, তাই ৩০-৪০ শতাংশ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, মাশুল বাড়ানোকে কেন্দ্র করে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টম-বিষয়ক সম্পাদক মো. রেজাউল করিম স্বপন জানান, একে একে চট্টগ্রাম বন্দরের সব টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাচ্ছে। এ সময়ে মাশুল বৃদ্ধি করার কোনো যুক্তি নেই। যেন বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতেই বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে।

একইভাবে প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘কার স্বার্থে বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে? বন্দরে মাশুল পরিশোধ হয় ডলারে। ৩০ বছরে ডলারের দাম চার গুণ বেড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল: অস্ত্রোপচারে মাসের অপেক্ষা

মাহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বারান্দায় রোগী ও স্বজনদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বারান্দায় রোগী ও স্বজনদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে একের পর এক পদ শূন্য থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে চিকিৎসাসেবা। ৫০ শয্যার জনবল ও ১০০ শয্যার খাবার-ওষুধ নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ২৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতালটি; বিশেষ করে ১০ মাস ধরে অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট না থাকায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের পূর্ণাঙ্গ সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। বিকল্প হিসেবে অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের একজন মেডিকেল অফিসার বা সহকারী সার্জনকে এনে সাময়িকভাবে ব্যবস্থা করে চালানো হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ৫০ শয্যা হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। খাতাকলমে ১০০ শয্যায় রূপ নিলেও শুধু খাবার এবং ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখনো সেই ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে কোনোরকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হাসপাতালটি। ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম চুয়াডাঙ্গায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ৬ তলা ভবনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এতে ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ৩০ কোটি টাকা। উদ্বোধনের ৭ বছর পার হলেও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু হয়নি। ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই এ বিশাল চাপ প্রতিনিয়ত সামলাতে হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০ শয্যার জনবলেও সংকট রয়েছে। হাসপাতালের সিনিয়র চক্ষু কনসালট্যান্ট, সিনিয়র ও জুনিয়র অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট, সিনিয়র শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র মেডিসিন কনসালট্যান্ট, জুনিয়র ইএনটি কনসালট্যান্ট, জুনিয়র রেডিওলজিস্টসহ একজন মেডিকেল অফিসার, ডেন্টাল সার্জনের পদসহ মোট ৯ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২০টি পদ ফাঁকা। সম্প্রতি জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন আ স ম মোস্তফা কামাল ডেপুটেশনে সদর হাসপাতালে যোগ দিয়েছেন। অ্যানেসথেসিয়া কোর্স সম্পন্ন থাকায় আপাতত তাঁর মাধ্যমেই অপারেশন থিয়েটার চালানো হচ্ছে।

হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের অর্থোপেডিক জোনে ভর্তি রোগী উজির আলী বলেন, ‘প্রায় এক মাস হয়ে গেল ভর্তি আছি। ডাক্তার বলেছেন, সোমবার অপারেশন হবে, কিন্তু এখনো নিশ্চিত নয়। গরিব মানুষের মৃত্যুতেও শান্তি নেই।’

সেলিনা খাতুন নামের এক রোগী বলেন, ‘১৫ দিন হয়ে গেল ভর্তি আছি। প্রথমে তারিখ দিয়েছিল, পরে পরিবর্তন করেছে। এখন আর বিশ্বাস করতে পারি না কবে হবে অপারেশন।’

হাসপাতালের জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট এহসানুল হক তন্ময় বলেন, ‘জানুয়ারিতে অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট বদলি হওয়ার পর অপারেশন থিয়েটার কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক দিন পর বিকল্প ব্যবস্থায় পুনরায় চালু করা হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডেপুটেশনের মাধ্যমে একজন সহকারী সার্জন হাসপাতালে যোগদান করে অ্যানেসথেসিয়া দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়। কিন্তু তিনি কিছুই বলতে রাজি হননি। তবে ভোগান্তির কথা স্বীকার করেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন। তিনি বলেন, হাসপাতালটি মাত্র ১০০ শয্যার, কিন্তু জনবল ৫০ শয্যার। রোগী ভর্তি থাকে ৩৫০ শয্যার মতো। দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায় একমাত্র জুনিয়র কনসালট্যান্টকে (অ্যানেসথেসিয়া) অন্যত্র বদলি করার পর। এরপর থেকে অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। বিকল্প উপায়ে সাধারণ কিছু অপারেশন হলেও উপায় না থাকায় গুরুতর রোগীদের অন্যত্র রেফার করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২ প্রাথমিকে শিক্ষক হাজিরা মেশিন অচল

  • এসব যন্ত্রে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যবহার হয়নি এক দিনও
  • প্রকল্পে সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ
  • ১৫ হাজার টাকা দরে কেনা হয় প্রতিটি মেশিন
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হাজিরার জন্য বসানো বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো কোনো কাজেই আসেনি। দিনের পর দিন ব্যবহার না হওয়ায় এসব যন্ত্র এখন নষ্টের পথে। এতে অপচয় হচ্ছে সরকারের লাখ লাখ টাকা।

প্রায় ছয় বছর আগে জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানো হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্থাপন করা এসব যন্ত্রে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় এক দিনের জন্যও ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, সদর উপজেলার ২০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব কটিতে মেশিন বসানো হয়। এ ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও কিছু বিদ্যালয়ে একইভাবে মেশিন স্থাপন করা হয়েছিল। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দ থেকে প্রতিটি মেশিন প্রায় ১৫ হাজার টাকা দরে কেনা হয়। কিন্তু যন্ত্রগুলো বসানোর পর কোম্পানি আর কোনো খোঁজ নেয়নি। ফলে বিদ্যালয়গুলোর দেয়ালে বা টিনের বেড়ায় ঝুলে থাকা মেশিনগুলো বছরের পর বছর অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। কোথাও কোথাও মেশিন হারিয়েও গেছে।

সরেজমিনে সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকার ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৌর এলাকার রিজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৭৫ নম্বর কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১০১ নম্বর দত্তকেন্দুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।

জানতে চাইলে রিজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুন নাহার বলেন, ‘শিক্ষকদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন বসানো হয়েছিল, কিন্তু এক দিনও তা ব্যবহার করা হয়নি। ছয় বছর ধরে স্কুলের দেয়ালে এভাবেই পড়ে আছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে এই প্রকল্প করে সরকারি অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। লাখ লাখ টাকা ব্যয় হলেও শিক্ষার কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই মেশিনগুলো চালু থাকলে শিক্ষকদের নিয়মিত আসা নিশ্চিত হতো।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফ মুহাম্মদ ইমারত হোসেন বলেন, ‘মেশিনগুলো কেন ব্যবহার হচ্ছে না, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি, পুরোনো নথিপত্র দেখে বিস্তারিত বলতে পারব।’

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব আজকের পত্রিকাকে বলেন, যন্ত্রগুলো কেনার সময় কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য এগুলো কেনা হয়েছিল—এটা সরকারের ভালো উদ্যোগ ছিল।

তাই পুনরায় চালুর দিকেও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষকদের পদোন্নতির তোড়জোড়

  • অন্তত ২৩ জনকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু
  • এর মধ্যে সাতজন গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছিলেন
  • নিয়োগ বন্ধে ভিসিকে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের চিঠি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অন্তত ২৩ শিক্ষককে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে সাতজন জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী রয়েছেন। পদোন্নতির এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. তৌফিক আলম। গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেওয়া এসব শিক্ষকের পদোন্নতি ঠেকাতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ইতিমধ্যে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে। এর মধ্যে আজ রোববার থেকে বসছে সিলেকশন বোর্ড।

চিঠিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ‘আমরা ববির ফ্যাসিস্টবিরোধী শিক্ষার্থীরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম সিন্ডিকেটে জুলাই আন্দোলনে বিরোধিতাকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের পুনর্বাসনের জন্য পদোন্নতি বোর্ড বসানো হচ্ছে। অথচ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে এসব ফ্যাসিস্টের বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। সাবেক উপাচার্য শুচিতা শরমিন ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে আঁতাত করায় আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।’

অভিযোগ রয়েছে, যোগদানের পাঁচ মাসেও উপাচার্য আগের বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ডের সদস্য পরিবর্তন করেননি। ৫০-এর কাছাকাছি পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও প্রভাষকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ না দিয়ে অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনে পদোন্নতি দিচ্ছেন। তড়িঘড়ি করে এক দিনে দুই বিভাগের বোর্ড বসিয়েছেন এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবাঞ্ছিত শিক্ষক দিয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের ছাত্র আন্দোলন ও পরিকল্পনা সম্পাদক মোকাব্বেল শেখ বলেন, ‘ইউজিসির অনাপত্তি ছাড়াই রোববার থেকে ২৩ জনকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে বোর্ড বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য। এদের মধ্যে অনেকেই জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন। বিচারের আগে তাঁদের পদোন্নতি চান না শিক্ষার্থীরা।’

শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজা শরিফ বলেন, ‘এই ভিসি আসার পর দাবি ছিল, যাঁরা শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছেন, তাঁদের বিচার করতে হবে। কিন্তু উনি কিছু করেননি। অথচ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচার হয়েছে।’

জুলাই আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই সময়ে তাঁদের বিরোধিতা করা অন্তত ৭ শিক্ষককে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির পাঁয়তারা চালাচ্ছেন উপাচার্য। এর মধ্যে ইতিহাস, মার্কেটিং, লোকপ্রশাসন, মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রয়েছেন। অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে এক জোট হয়ে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন শিক্ষকেরা। এর মধ্যে মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. জামাল উদ্দিন পদোন্নতি না দিলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মুহসিন উদ্দীন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ভিসিকে চিঠি দিয়েছেন বলে শুনেছি। এবারের সিন্ডিকেটে জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে ক্ষমতা অর্পণ করেছে সিন্ডিকেট। উপাচার্য কমিটি করে কিংবা যেকোনো উপায়ে কারা ফ্যাসিস্ট তা চিহ্নিত করবেন। এর আগে এ বিষয়ে কমিটি করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। উপাচার্য এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কি না তা জানা নেই।’ রেজিস্ট্রার বলেন, ‘আমরা অপরাধীর বিচার চাই, নিরপরাধীর নয়।’

মুহসিন উদ্দীন স্বীকার করেন, রোববার থেকে ২৩ জনের বেশি অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য বোর্ড বসছে। তবে অধ্যাপক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসির অনাপত্তি দরকার আছে কি না, তা জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য তৌফিক আলমকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে কল দিলেও সাড়া দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক ফয়সাল মাহমুদ রুমি বলেন, ‘ভিসি স্যার এই মুহূর্তে কোথায় আছেন তা জানি না। তবে ভিসি স্যারকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত