Ajker Patrika

ভরা মৌসুমেও আমদানি, কৃষকের মাথায় হাত

� দেশীয় চার পণ্যের উৎপাদন খরচও উঠছে না।

� ন্যূনতম দাম ও আমদানি বন্ধের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভ।

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৮: ২৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশীয় পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও লবণের ভরা মৌসুম এখন। চলতি মৌসুমে এসব পণ্য উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ায় এই সময়ে কৃষকের মুখে হাসি ফোটার কথা। কিন্তু লাভ তো দূরে থাক, পণ্যের উৎপাদন খরচও তুলতে না পেরে হতাশ কৃষকেরা।

ভরা মৌসুমে আমদানি অব্যাহত থাকা, পণ্যের ন্যায্যমূল্য বেঁধে না দেওয়া এবং সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় লোকসানে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। ন্যূনতম দাম ও আমদানি বন্ধের দাবিতে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা।

২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার সড়কে লবণ ঢেলে দিয়ে লবণের ন্যায্য দাম ও আমদানি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার কৃষকেরা। আলুর ন্যায্যমূল্যের দাবিতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলায় কয়েক দফায় বিক্ষোভ হয়েছে। পণ্যের যৌক্তিক দামের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পেঁয়াজচাষিরাও।

ভোক্তা পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি লবণ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও মিল পর্যায়ে (ক্র্যাশিং শেষে আয়োডিনযুক্ত) বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকার কম দামে (১০ টাকা ৪০ পয়সা)। অথচ মাঠপর্যায়ে কৃষক প্রতি কেজি লবণের দাম পাচ্ছেন মাত্র ৪ টাকা।

চকরিয়া উপজেলার লবণচাষি খোরশেদ আলম বলেন, এক কানি (৪০ শতক) জমিতে লবণ চাষ করতে ইজারা ৪০-৪৫ হাজার, মাঠ তৈরিতে ৭ হাজার, সেচ ৫ হাজার, মজুরি ২০ হাজার, পলিথিন বিছানোয় ৩ হাজারসহ মোট ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়।

একই জমিতে উৎপাদিত লবণের পরিমাণ ২০০ মণ। বর্তমানে মাঠপর্যায়ে প্রতিমণ লবণের দাম ২০০ টাকা। সেই হিসাবে এক কানি জমি থেকে উৎপাদিত লবণ বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ৩৬-৪০ হাজার টাকা।

চট্টগ্রামের লাল মিয়া সল্ট নামের লবণ কারখানার মালিক আসাদ আহমেদ বলেন, মৌসুমেও আমদানি অব্যাহত থাকায় কৃষকেরা লবণের ন্যূনতম দাম পাচ্ছেন না। ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট (শিল্পে ব্যবহারের লবণ) এবং দেশে সংকট হলে লবণ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্টের নামে আমদানি হওয়া বেশির ভাগ লবণ খাবার লবণ হিসেবে ভোক্তাদের কাছে চলে যাচ্ছে। দেশের লবণচাষিদের বাঁচাতে হলে মৌসুমে লবণ আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।

মৌসুমেও লবণ আমদানির প্রমাণ মিলেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যেও। অক্টোবর থেকে পুরোদমে মাঠে লবণ ওঠা শুরু হয়। এর মধ্যেই গত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি– এই চার মাসে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট নাম দিয়ে দেশে ২ লাখ ১৯ হাজার ৩১৬ টন লবণ আমদানি হয়েছে।

এভাবে মৌসুমেও আমদানি অব্যাহত থাকায় আলু, পেঁয়াজ ও রসুনের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষকেরা।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, উৎপাদন মৌসুম শুরুর পরও নভেম্বর-ডিসেম্বর দুই মাসে দেশে ২৪ হাজার ১২২ টন আলু আমদানি হয়েছে। একইভাবে গত চার মাসে ৬৬ হাজার ৬৭ টন পেঁয়াজ এবং ২২ হাজার ৬০৮ টন রসুন আমদানি হয়েছে। ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, দেশে বছরে রসুনের চাহিদা প্রায় ৬ লাখ টন। চাহিদার কাছাকাছি অর্থাৎ ৬ লাখ থেকে সাড়ে ৬ লাখ উৎপাদন হলেও পচে যাওয়া রসুনের হিসাব বাদ দিয়ে প্রকৃত উৎপাদন ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার টন। সেই অনুযায়ী, চাহিদার ১৩ থেকে ২০ শতাংশ রসুন আমদানি করতে হয় বলে মনে করে ট্যারিফ কমিশন।

আমদানিনির্ভরতা কাটিয়ে স্বনির্ভর হতে হলে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। মৌসুমের সময় পেঁয়াজ, রসুনসহ পণ্য আমদানি বন্ধ করতে হবে।বলয় কুমার পোদ্দার ব্যবসায়ী, খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের রেয়াজুদ্দিন বাজারে পাইকারিতে বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকার মধ্যে। আর কৃষক পর্যায়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়।

৩ মার্চ খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০-৩৫ টাকায়; যা মাঠে ১৫-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ একই বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।

পাইকারিতে বর্তমানে প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২১৫-২২০ টাকায়। অথচ দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের কাঁচা পণ্য (পেঁয়াজ, রসুন ও আদা) ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিচ মিয়া বলেন, প্রতিবছর মৌসুমে লোকসানে পণ্য বিক্রি করতে হয় কৃষকদের। আমদানি বন্ধ থাকলে এই সময়ে দেশি পেঁয়াজ কমপক্ষে ৫০ টাকা এবং রসুন ১০০ টাকায় বিক্রি হতো। কিন্তু আমদানি পণ্যের চেয়ে অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ ও রসুন। এভাবে লোকসানে পড়ে আগ্রহ হারিয়ে বছর বছর পেঁয়াজ, রসুন ও আদার উৎপাদন কমছে।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী গ্রামীণ বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী বলয় কুমার পোদ্দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমদানিনির্ভরতা কাটিয়ে স্বনির্ভর হতে হলে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। মৌসুমের সময় পেঁয়াজ, রসুনসহ পণ্য আমদানি বন্ধ করতে হবে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে দেশীয় উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে এবং উৎপাদনে আগ্রহী করতে ভোক্তাদের উচিত দেশীয় পণ্য ব্যবহারে সচেতন হওয়া।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, সরবরাহ সংকটের কারণে তিন মাস আগেও প্রতি কেজি আলু কিনতে হয়েছে ৮০ টাকা দামে। অথচ মৌসুমে এসে ৮০ টাকায় ৮ কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কৃষককে প্রতি কেজি আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ টাকায়। যে আলু উৎপাদনে তাঁর খরচ পড়েছে কমপক্ষে ৩০ টাকা। এভাবে কৃষকেরা চাষে আগ্রহ হারানোয় আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ছে বাজার। কৃষককে বাঁচাতে হলে ‘পণ্যের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ, সংরক্ষণ এবং আমদানি-রপ্তানির কৌশল’ নির্ধারণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে (২০২৪-২৫) দেশে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার টন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের একটি ও কক্সবাজারের ৭ উপজেলায় ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৮ হাজার ১২৪ টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে। গত দুই বছরে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদিত হয়; যা চাহিদার বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে বার্ষিক আলুর চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ টন। চলতি অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ (৫ লাখ ২৪ হাজার হেক্টর) জমিতে আলু চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে এবার।

দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮ থেকে ৩০ লাখ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। চাহিদার বাড়তি উৎপাদনের পরও একই বছর ভারত থেকে ৭ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ সঠিক পরিচর্যা, সংরক্ষণের অভাবসহ নানা কারণে নষ্ট হয়। ফলে বাড়তি উৎপাদনের পরও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উখিয়ায় র‍্যাবের অভিযান: আটক ১৮ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ বাসাভাড়া নিয়ে থাকে

কক্সবাজার প্রতিনিধি
উখিয়ায় র‍্যাবের অভিযান আটক ১৮ রোহিঙ্গা। ছবি: সংগৃহীত
উখিয়ায় র‍্যাবের অভিযান আটক ১৮ রোহিঙ্গা। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়ায় বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস করা পাঁচ পরিবারের ১৮ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী।

আজ সোমবার র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক এবং সহকারী পুলিশ সুপার আ ম ফারুক এ তথ্য জানান।

আ ম ফারুক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রোববার রাতে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীর বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে ক্যাম্পের বাইরে থাকা ১৮ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।

সম্প্রতি রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে ক্যাম্পের বাইরে বিভিন্ন ভাড়া বাসায় অবস্থান করছে। তারা ক্যাম্পের বাইরে এসে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক পাচার, অপহরণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। এতে কক্সবাজারসহ আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। আটক রোহিঙ্গাদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় গির্জার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এক সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রাজধানীতে সম্প্রতি ককটেল হামলার ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। প্রাথমিক তদন্তে তাঁকে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল ও সেন্ট জোসেফ স্কুল প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণসহ একাধিক ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ডিএমপি এই জঘন্য ও কাপুরুষোচিত সহিংসতায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের জন্য র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সঙ্গে সমন্বয় করে শহরজুড়ে অভিযান জোরদার করেছে। রাজধানীর সব গির্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আন্তধর্মীয় ঐক্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ধর্মীয় সহাবস্থানে কোনোরূপ বিঘ্ন ঘটানোর প্রচেষ্টা হলে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইলে নির্বাচন অফিসে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হামলা, কর্মকর্তাসহ আহত ৩

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভাঙচুর। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভাঙচুর। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচন অফিসের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেন ও স্ক্যানিং অপারেটর সুমন আহত হয়েছেন।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে এ ঘটনা ঘটে। গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন ভূইঞা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

খবর পেয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও গোপালপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তুহিন হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

প্রত্যক্ষদশীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত ও পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উথান নির্বাচন কার্যালয়ে যান। এ সময় নির্বাচন অফিসের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনের সঙ্গে তাঁদের কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা এক কর্মী আমজাদ হোসেনের গায়ে আঘাত করেন। তখন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এসে বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর কিছুক্ষণ পরে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা এসে নির্বাচন অফিসে প্রবেশ করে ভাঙচুর করেন। এ সময় তিনজন আহত হন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, আজ সকালে হঠাৎ করে বিএনপির ৩০ থেকে ৪০ জন নেতা-কর্মী উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে নির্বাচন অফিসারের ওপর হামলা করেন। তাঁরা স্টাফদের মারধর করেন। এ সময় নির্বাচন অফিস ভাঙচুর ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলেন তাঁরা। এ সময় নির্বাচন অফিসের বাইরেও শতাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন।

গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসের সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু রায়হান বলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসারসহ তিনজন আহত হয়েছেন। সম্প্রতি অফিসের কিছু দালাল চক্র সুবিধা করতে পারছিল না। এ জন্য হামলা হতে পারে।

হামলার বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত বলেন, ‘নির্বাচন অফিসার নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। আমাদের কাছে অনেক ভুক্তভোগী বহুবার অভিযোগ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নির্বাচন অফিসে গিয়েছিলাম স্থানীয় বাসিন্দাদের না ভোগানোর জন্য। অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম সেখানে। আমরা ভুক্তভোগীদের বিষয় নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার অফিসে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। আমাদের কেউ তাঁদের ওপর হামলা করেনি।’

উপজলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন অফিসের আমজাদ হোসেন আমাদের এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আমরা তাঁকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি।’

ইউএনও তুহিন হোসেন বলেন, নির্বাচন অফিসের কাচের দরজা ভেঙেছে। একজন আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সরকারি অফিস ভাঙচুর ও সরকারি কর্মকর্তার গায়ে আঘাত করার কারণে একটি মামলা করা হবে, মামলাটি প্রক্রিয়াধীন।’

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা পরিদর্শন করে দেখলাম, সরকারি অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। যদি নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকত, তাহলে লিখিত অভিযোগ দিতে পারত। এ বিষয়ে নির্বাচন অফিসার অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন ভূইঞা বলেন, ‘আহত একজনকে উদ্ধার করে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নির্বাচন অফিস কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দেবে বলে আমাদের জানিয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উখিয়ায় বাজারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিট

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়া উপজেলা সদরের দক্ষিণ স্টেশনের একরাম মার্কেটে আগুন লাগে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়া উপজেলা সদরের দক্ষিণ স্টেশনের একরাম মার্কেটে আগুন লাগে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা সদরে মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট। ইতিমধ্যে আগুনে দগ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এতে অনেকেই আহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা সদরের দক্ষিণ স্টেশনের একরাম মার্কেটে আগুন লাগে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল পৌনে ৫টা) আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা ডলার ত্রিপুরা।

স্থানীয়দের বরাতে ডলার ত্রিপুরা বলেন, বিকেলে উখিয়া সদর স্টেশনের একরাম মার্কেটে আকস্মিক আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা পুড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

পরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত ২টি এবং কক্সবাজার স্টেশন থেকে ১টি ইউনিটও আগুন নিয়ন্ত্রণ কাজে যোগ দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ক্ষয়ক্ষতিসহ ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হবে বলে জানান ডলার ত্রিপুরা।

এদিকে আগুনে দগ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সাজেদুল ইমরান শাওন নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আহত হয়ে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত