Ajker Patrika

নিয়ম মানতে নারাজ চালকেরা, যানবাহন বন্ধ করে বিক্ষোভ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার নতুন বাজার ব্রিজের পালবাজার অংশে জেলা প্রশাসক উপস্থিত হয়ে চালকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার নতুন বাজার ব্রিজের পালবাজার অংশে জেলা প্রশাসক উপস্থিত হয়ে চালকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসনসহ অংশীজনদের নিয়ে শহরের যানবাহন চলাচলে আটটি নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু এ নিয়ম মানতে নারাজ অটোরিকশা, অটোবাইকসহ অন্যান্য যানবাহনের চালকেরা। তাঁরা শহরের প্রবেশমুখে যানবাহন বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। যার ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ যানজটের কারণে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে একযোগে শহরের পুরান বাজার নতুন বাজার ব্রিজের পালবাজার অংশে এবং চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ বাইপাস সড়কের পূর্ব মাথায় চালকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। যার ফলে শহরে কোনো যানবাহন প্রবেশ ও বের হতে পারেনি। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বাহনের যাত্রীরা হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন।

শহরের পালবাজার গেটে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজের নিচের সড়ক থেকে পুরান বাজার পর্যন্ত বিশাল যানজট। নিচের সড়কে বহু চালক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসনের দেওয়া নিয়ম তাঁরা মেনে চলতে পারবেন না। তাঁরা ‘ডিসি, ঘুষখোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে চালকদের এ বিক্ষোভের সঙ্গে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন এবং চালকদের পক্ষে বক্তব্য দিতে শোনা গেছে।

প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, লাল ও সবুজ রঙের অটোরিকশা এক দিন করে শহরে চলাচল করবে। কিন্তু চালকদের বক্তব্য হচ্ছে, ‘এ নিয়ম কার সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে। আমরা এ নিয়ম মানব না। এক দিন রোজগার বন্ধ থাকলে আমাদের সংসার চলবে কীভাবে।’

চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ বাইপাস সড়কের পূর্ব মাথায় চালকেরা বিক্ষোভ করলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ বাইপাস সড়কের পূর্ব মাথায় চালকেরা বিক্ষোভ করলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ সময় বিক্ষোভের পর ঘটনাস্থলে আসেন পৌর প্রশাসক গোলাম জাকারিয়া ও পৌরসভার কর্মচারীরা। তাঁরা চালকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন।

পৌর প্রশাসক গোলাম জাকারিয়া বলেন, জেলা প্রশাসকসহ সবার সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন আপনারা যদি না মানেন, তাহলে কিছু করার নেই। আপনারা আগে যেভাবে ছিলেন, সেভাবে গাড়ি চালান। এরপর চালকদের আটকে রাখা সব যানবাহন ছেড়ে সড়ক স্বাভাবিক করে দেন।

এদিকে একই সময় চালকেরা বন্ধ করেন চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সড়ক। সেখানে আঞ্চলিক সড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগের শিকার হন বহু যাত্রী। অনেক যাত্রী পায়ে হেঁটে লঞ্চঘাট ও বাসস্ট্যান্ডের দিকে রওনা হন।

এ সড়কেও সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা প্রায় ১টা পর্যন্ত যানবাহন আটকা ছিল। সেখানে ট্রাফিক পুলিশের টিআই (অ্যাডমিন) মাহফুজুর রহমান উপস্থিত হন। তিনি পৌর প্রশাসকের বক্তব্য জানান। এতে চালকেরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ‘ডিসি, ঘুষখোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। কিছু সময় পর এ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

চালকদের বক্তব্য, ‘প্রশাসনের এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল। শ্রমিক ও মালিক নেতারা গাড়ি চালায় না। সড়কে থাকতে হয় আমাদের। দিনশেষে মালিক আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য বসে থাকে। আমাদের সমস্যাগুলো আমাদেরই মোকাবিলা করতে হয়।’

উল্লেখ্য, শহরে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আট নির্দেশনা আজ বাস্তবায়নের কথা ছিল। এর আগে গত ৩১ আগস্ট জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় যানবাহন চলাচলের নিয়মের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম দিনেই আজ এ কার্যক্রম অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং আন্দোলনের মুখে আগের নিয়মে ফিরে যান চালকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত