Ajker Patrika

দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত চেয়ারম্যান, ভোগান্তিতে জনগণ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি  
বগুড়ার শেরপুরের শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ার শেরপুরের শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এক সপ্তাহ আগে দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে দায়িত্ব পাননি কেউ। ফলে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বগুড়ার শেরপুরের শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের বাসিন্দা।

প্রায় ১৪ দশমিক ৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই ইউনিয়নে ২৭টি গ্রামে ভোটার রয়েছেন ৩৩ হাজারের বেশি। ইউনিয়ন পরিষদ নাগরিকদের জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন ও সনদপত্র, নিকাহ নিবন্ধন ও সনদপত্র, জাতীয়তা সনদ, ওয়ারিশ সনদ ও অন্যান্য প্রত্যয়নপত্র এবং বিভিন্ন লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। এর প্রতিটি ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক। কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই পদে কেউ না থাকায় বন্ধ হয়ে আছে সব নাগরিক সেবা।

এই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইউনিয়নের আটজন ইউপি সদস্য চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন। দীর্ঘ তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার আদেশ দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে এই আদেশ কার্যকর করেন।

শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী শপথ গ্রহণের ৩০ দিনের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্ধারণ করার কথা। কিন্তু সেটা যথাযথ নিয়মে না হওয়ায় কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় নাগরিকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। স্থানীয় নবীর হোসেন বলেন, ‘জরুরি চিকিৎসার খরচ মেটাতে জমি বিক্রি করতে চাই। কিন্তু ওয়ারিশান সনদের জন্য এক সপ্তাহ ধরে ঘুরছি। কবে পাওয়া যাবে কেউ বলতে পারছে না।’

ইউপি সদস্য নাসিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিনই মানুষ বিভিন্ন সেবার জন্য আমার কাছে আসছেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া কোনো কিছুই দেওয়া যাচ্ছে না। এতে জনগণের নেতিবাচক আচরণের শিক্ষার হতে হচ্ছে।’

ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করে ইউএনওর কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে ইউনিয়ন পরিষদ অচল হয়ে আছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান বলেন, আইনি জটিলতার কারণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ সম্ভব হচ্ছে না। জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত