Ajker Patrika

বরিশাল বিএম কলেজে অবহেলায় ছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
পরিবারের সদস্যদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত
পরিবারের সদস্যদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল বিএম কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রুমানা আক্তার সুমি নামের ওই ছাত্রী মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার কলেজে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রায় ২ ঘণ্টা পর রুমানা আক্তার সুমিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরদিন শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে সহপাঠীর মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) এ ঘটনায় দফায় দফায় সভা শেষে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের গাফিলতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপর দিকে কলেজে চিকিৎসক না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্ররা।

আজ ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা সহপাঠী সুমির মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তোলেন। এ ঘটনায় তাঁরা ওই বিভাগের শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ তুলেছেন। এ ঘটনায় সঠিক তদন্তে অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

জানতে চাইলে কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় রোববারও অর্ধশত শিক্ষার্থীর সঙ্গে বসেছি। মেয়েটি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। সে নলছিটির নাচমহল এলাকার কৃষিজীবী আ. রাজ্জাকের কন্যা।’

মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় বিভাগে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুমি। পরে বেলা ৩টার দিকে এক চাচি এসে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করান। রাত ১০টায় হাসপাতালে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন সুমি। পরদিন শুক্রবার সোয়া ৯টায় মারা যান তিনি।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে মেয়ের বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন যে, সুমি রক্তক্ষরণে ভুগছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি। তারপরও যেহেতু একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, সেহেতু কারও অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক।’

আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, কলেজে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক নেই। ছাত্ররা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অধ্যক্ষকে বলেছেন।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ মো. তাজুল ইসলামকে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি। তবে উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এ টি এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি অসুস্থ ছিলেন। আগেই মেয়েলি রোগে রক্তপাত হয়েছিল তাঁর। বিভাগের কাজে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর সেবা করা হয়। কিন্তু হয়তো একটু দেরি করে ফেলেন ওই বিভাগের শিক্ষকেরা। পরে তাঁর চাচা এসে নিয়ে যান। এখানে শিক্ষকদের বিচক্ষণতার ঘাটতি থাকতে পারে। যে কারণে আজ তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে। তিনি আরও বলেন, কলেজের নিজস্ব চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দ্রুত একজন চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বিএম কলেজ শাখা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে, প্রশাসনের চরম অবহেলা ও উদাসীনতাই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...