Ajker Patrika

গরু চুরির সন্দেহে যুবককে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, মেম্বারসহ আটক ২

ভোলা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭: ২২
গরু চুরির সন্দেহে যুবককে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, মেম্বারসহ আটক ২

ভোলায় গরু চুরির সন্দেহে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশকে (চৌকিদার) আটক করেছে ভোলা সদর থানা-পুলিশ। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও থেকে পরিচয় শনাক্ত করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জসিমউদ্দীন খালাসি (৪৫) এবং চৌকিদার কান্টুকে (৫০) আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির। 

নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম তাহের আলম (২৩)। তিনি বরিশাল অঞ্চলের শ্রীপুর ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন জেলে। তিনি তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জানিয়েছেন।

নির্যাতনের এ ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার সকালে। পরে ওই দিন দুপুরেই শ্রীপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোতাহার জমাদ্দার ডেকে তাঁর জিম্মায় দেওয়া হয়।

পুলিশ বলছে, এক যুবককে রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের একটি ভিডিও বুধবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে জানা যায়, এ ঘটনা ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের বান্দেরপাড় এলাকার ভোলা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে। এ সময় ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জসিম উদ্দীন খালাসি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সামনেই ওই যুবককে নির্যাতন করা হয়েছে। রহিম নামে এক যুবক ওই নির্যাতনের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি ওই যুবকের ডান হাতে রশি পেঁচিয়ে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন। সেই সঙ্গে বাঁশের লাঠি দিয়ে তাঁকে নির্যাতন করছেন। এ সময় নির্যাতনের শিকার ওই কিশোর ‘মারে-বাবারে’ বলে চিৎকার করছেন এবং নির্যাতন না করার আকুতি জানাচ্ছেন। এ সময় ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীনসহ স্থানীয় কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। 

মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা কিশোর রহিম আজকের পত্রিকাকে জানান, গরু চুরির সন্দেহে তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছি। নির্যাতনকারী ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের শুটিং স্কুল এলাকার চৌকিদার কান্টু।

এ বিষয়ে আটক ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন খালাসি জানান, ঘটনার দিন সকালে অপরিচিত ওই যুবককে স্থানীয় বান্দেরপাড় এলাকায় দেখতে পান তিনি। এ সময় তিনি তাঁর পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে সেখানে আরও অনেক লোকের সমাগম ঘটে। এ সময় চৌকিদার কান্টু মোটরসাইকেলে সেখানে উপস্থিত হন। তিনি তাঁর চুরি হওয়া গরু খুঁজতে বের হয়েছিলেন। ওই যুবককে দেখতে পেয়ে তিনিও পরিচয় জানতে চান। পরে তাঁকে ‘শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা হয়ে, এখানে কেন এসেছেন’—এমন প্রশ্ন করে রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন করে তাঁর কাছ থেকে গরু চুরির বিষয়ে তথ্য আদায়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু যুবক বারবারই চুরি-সংক্রান্ত কোনো ঘটনা জানেন না বলে, নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আকুতি জানান। শ্রীপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোতাহার জমাদ্দারকে ডেকে তাঁর জিম্মায় ওই যুবককে তুলে দেওয়া হয়। 

ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই চৌকিদার তাঁকে মারতে শুরু করেন। তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেও কেউ থামাতে পারেনি।’ 

এ বিষয়ে শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোতাহার জমাদ্দার আজকের পত্রিকাকে জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম খালাসি তাঁকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন এবং ওই যুবককে তাঁর জিম্মায় দিয়ে দেন। ওই যুবক মূলত মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পরে তিনি তাহেরকে নিয়ে শ্রীপুর চলে যান। শ্রীপুরে নিয়ে ভুক্তভোগীর চিকিৎসা করান।

এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন ও কান্টু চৌকিদারকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আসামিদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন ছিল সাদিয়ার

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
সাদিয়া হক পাটোয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
সাদিয়া হক পাটোয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

পড়াশোনা শেষ করে ব্যাংকে চাকরি নিয়ে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল সাদিয়া হক পাটোয়ারীর (২৪)। কিন্তু তাঁর শেষ দুটি ইচ্ছা আর পূরণ হয়নি। তার আগেই কক্সবাজারের চকরিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সাদিয়া, তাঁর মা-ভাবিসহ একই পরিবারের ৫ জন নিহত হন।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জানাজা শেষে সাদিয়াসহ ৫ জনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে বুধবার বেলা ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া এলাকায় সাদিয়াদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে তিনিসহ পরিবারের ৫ সদস্য ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁদের মৃত্যুর সংবাদে শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় দুটি গ্রাম।

বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় সাদিসহ ৫ জনের লাশ বহনকারী ৫টি অ্যাম্বুলেন্স যখন গ্রামে প্রবেশ করে, তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

নিহত সাদিয়ের চাচাতো বোন সাহিদা সুলতানা ঊর্মি বলেন, ‘তাঁর (সাদিয়া) ইচ্ছা ছিল এমবিএ শেষে করে ব্যাংকে চাকরি নেবে। এরপর সে বিয়ে করবে। কিন্তু তাঁর শেষ ইচ্ছাগুলো আর পূরণ হলো না। সাদিয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালা এলাকায় বেপরোয়া গতিতে বিপরীত থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের চান্দিশকরা গ্রামের উদয় পাটোয়ারীর স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা (২৮), মা রুমি বেগম (৬৫), বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী (২৪), শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী (৫৫) ও শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা (২৫) নিহত হন। এ সময় আহত হন উদয় পাটোয়ারী (৪৩), ভাইয়ের ছেলে সামাদ পাটোয়ারী (৪) ও শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশান। তাঁদের মধ্যে লিশানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সাদিয়ার বড় ভাই মো. মনিরুল হক বলেন, ‘১৫ দিন আগে কক্সবাজারে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সামাদের মাথায় আঘাতের কারণে পিছিয়ে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার ভোরে সাদিয়া, আম্মা, ভাইয়ের শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে চৌদ্দগ্রাম থেকে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িটি ভাই নিজেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সাদিয়া ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিল। তার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ব্যাংকার হবে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে সে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্নীতির মামলায় সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের বিচার শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর)। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর)। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুরের (এস কে সুর) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক আয়েশা নাসরিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে সম্পদবিবরণী দাখিল না করার এই মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেওয়ান আশিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

এস কে সুরকে কারাগার থেকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শুরু হয়। দুদকের বিশেষ পিপি শামসুদ্দিন মো. আবুল কালাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামিপক্ষে আইনজীবী না থাকায় তাঁর পক্ষে শুনানি হয়নি। অভিযোগ গঠনের পর আদালতের প্রশ্নের উত্তরে এস কে সুর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, অবৈধ সম্পত্তির মালিক হওয়ার অভিযোগে এস কে সুরের নিজের ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে বা বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ বা সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। তিনি গত বছরের ২৭ অক্টোবর নিজ স্বাক্ষরে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশসহ সম্পদ বিবরণী ফরম গ্রহণ করেন। কিন্তু আদেশ প্রাপ্তির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।

এ জন্য গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি দুদকের একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই ডেপুটি গভর্নরকে গ্রেপ্তার করে দুদক। ওই দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধুনটে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলরসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার ধুনট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে পৌরসভার চর ধুনট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে চর ধুনট গ্রামের নির্মাণশ্রমিক ও ঠিকাদার রিপন প্রামাণিককে চাঁদার দাবিতে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় আহত রিপন প্রামাণিকের স্ত্রী তাহমিনা আকতার বাদী হয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুজন হলেন চর ধুনট গ্রামের সোবাহান প্রামাণিক (৪৬) ও তাঁর ছেলে মনির হোসেন (২২)।

পুলিশ ও মামলার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর সহযোগীরা রিপন প্রামাণিকের কাছে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু রিপন প্রামাণিক টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর লোকজন মঙ্গলবার রাতে রিপন প্রামাণিকের বাড়িতে গিয়ে চাঁদার টাকা চান। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়।

এ সময় রিপন প্রামাণিকের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে জাহাঙ্গীর ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত রিপন প্রামাণিককে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রিপনের স্ত্রী তাহমিনা আকতার বাদী হয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

থানাহাজতে থাকা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে রিপন প্রামাণিকের মারামারির ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সহকর্মী পুলিশ সদস্যকে পরকীয়ার জেরে হত্যার দায়ে এক পুলিশ দম্পতিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক হারুন-অর রশিদ। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী কনস্টেবল নাসরিন নেলী। আলাউদ্দিনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর এলাকায়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালে কনস্টেবল আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাসরিন নেলীর সঙ্গে সহকর্মী কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের জের ধরেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি এলাকায় প্রেমিকা নেলীর ভাড়া বাসাতেই পরকীয়া প্রেমিক পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলামকে খুন করেন নেলী ও তাঁর স্বামী আলাউদ্দিন।

হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত পুলিশ দম্পতি সাইফুল ইসলামের মরদেহ বস্তাবন্দী করে গুম করার চেষ্টা করেন। তবে লাশ গুম করতে গিয়েই বিপত্তি বাধে। নগরীর টাউন হল মোড়ে পুলিশের তল্লাশির সময় বস্তাবন্দী লাশসহ তাঁরা হাতেনাতে আটক হন।

ঘটনার পর নিহত সাইফুলের মা মোছা. মুলেদা বেগম ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় কনস্টেবল আলাউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী নাসরিন নেলীসহ আরও অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত