Ajker Patrika

স্লোগানে মুখরিত বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য শুরু

খান রফিক ও মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, বরিশাল থেকে
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২২, ১৩: ৫৫
স্লোগানে মুখরিত বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য শুরু

নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগেই বরিশাল বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে গণসমাবেশের সূচনা হয়। গণসমাবেশের জন্য নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ২টায়। তবে লোকসমাগম বেশি হওয়ায় তাঁদের মনোযোগ ধরে রাখতেই নির্ধারিত সময়ের আগেই সমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

সমাবেশে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বরিশাল বিভাগীয় নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশ নির্ধারিত সময়ের আগে শুরু হলেও প্রধান অতিথি ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা নির্ধারিত সময়েই মঞ্চে আসবেন। সমাবেশে যোগ দিতে গতকাল শুক্রবার রাতেই বরিশালে পৌঁছেছেন প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে। আশপাশের এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকা লোকারণ্য হয়ে পড়ায় সাড়ে ১১টার দিকে গণসমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বরগুনা জেলা বিএনপির এক নেতা প্রথম বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেন। এরপরে বিভিন্ন জেলার নেতারা পর্যায়ক্রমে বক্তৃতা করছেন। সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে আজ শনিবার সকাল থেকেই মঞ্চে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) সদস্যরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশ করতে থাকেন।

সকাল ১০টার মধ্যেই সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান উপচে চারদিকের এক কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সব সড়কই লোকে ভরে ওঠে। নগরের বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি থেকে একের পর এক মিছিল যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের দিকে। নগরীতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে দলে দলে যোগ দিচ্ছেন দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। তাঁদের মিছিল-স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান (পুরোনো বেলস পার্ক)। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় দূরদূরান্তের নেতা-কর্মীদের একসঙ্গে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে তাঁরা সমাবেশস্থল স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছেন।

নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘণ্টা আগেই শুরু হয়েছে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। আজ শনিবার ভোরে বরিশাল মহানগরীর রুপাতলী, সদর রোড, লঞ্চঘাট, নথুল্লাবাদসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান নগরীর সড়কগুলোতে খণ্ড খণ্ড মিছিলের চাপ বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে স্লোগানের প্রতিধ্বনিও। এ ছাড়া সকাল থেকেই বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক) মাঠে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মানুষ নিজ এলাকার নেতাদের নিয়ে স্লোগান দিয়ে মুখরিত করে তুলেছেন সমাবেশস্থল। মাঝে মাঝে দেশাত্মবোধক গানে মাতিয়ে রাখছেন, বাজনার তালে তালে কেউ কেউ নেচে উঠছেন।

পটুয়াখালী থেকে আসা জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আলী খান কবির বলেন, ‘দূর-দূরান্তের নেতা-কর্মীরা অনেক খুশি। অনেক বাধা পেরিয়ে আমরা এসেছি এই মাঠে। সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে আমাদের সমাবেশ সফল করতে দিতে চাইছিল না। কিন্তু আজ কানায় কানায় পূর্ণ আমাদের সমাবেশস্থল।’ পাথরঘাটা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান জলিল সরকার বলেন, ‘রাস্তায় লোকজনকে বাধা দিচ্ছে, এ জন্য জামা খুলে মাথায় বেঁধে এই সমাবেশস্থলে এসেছি। সমাবেশ সফল করেই যাব ইনশাআল্লাহ।’

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা সবাই আনন্দিত। এই সরকারের অত্যাচার-নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায় সবাই। কেন্দ্রীয় নেতাদের পেয়ে সবাই অনেক খুশি। আজ এই সমাবেশ বরিশাল বিভাগে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বরিশালের সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার পরও খোলা মাঠে থেকে সমাবেশ সফল করতে আনন্দে মেতে উঠেছেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও গণসমাবেশ বাস্তবায়ন মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্যসচিব আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ বলেন, ‘সব বাধা উপেক্ষা করে জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীরা এসে এরই মধ্যে বেলস পার্ক জনারণ্যে পরিণত হয়েছে। সব নেতা-কর্মীর মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে।’

বিএনপির সমাবেশ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশের উদ্যোগে ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল শিক্ষার্থীদের ‘শান্তিচুক্তি’, এল না সিটি কলেজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শান্তিচুক্তির পর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
শান্তিচুক্তির পর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভবিষ্যতে কোনো প্রকার বিবাদে না জড়ানোর অঙ্গীকার করে রাজধানীর ঢাকা কলেজ ও ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌখিক ‘শান্তিচুক্তি’ হয়েছে। তবে এই চুক্তিতে যোগ দিতে আসেননি সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার দুপুরে ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিবাদে না জড়ানোর অঙ্গীকার করেন।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। কখনো কখনো তা ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের এই সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেমন বিপাকে পড়তে হয়, তেমনি ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাস্তায় চলাচল করা সাধারণ মানুষদেরও।

তাই এই ‘শান্তিচুক্তি’ সম্পাদনের আয়োজন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিউমার্কেট থানা। ওই থানার ওসি এ কে এম মাহফুজুল হকের উদ্যোগে তিন কলেজের ‘শান্তিচুক্তি’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

জানতে চাইলে এ কে এম মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমরা ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ “শান্তিচুক্তি” অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে আসেননি। এখানে আমরা কী করব বলেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা যে মৌখিকভাবে শান্তি চুক্তি করেছেন আমরা এই বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাই। পুলিশ, দুই কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে আমরা একটি কমিটি করে দেব। ভবিষ্যতে যদি এই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো বিবাদ ঘটে তা এই কমিটির মাধ্যমে সুরাহা করা হবে।’

এই ‘শান্তিচুক্তি’ যেন দীর্ঘদিন বজায় থাকে সে কামনা করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘শান্তিচুক্তি’ অনুষ্ঠানে এলে তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের কোলাকুলি করতেও দেখা যায়।

‘শান্তিচুক্তি’ অনুষ্ঠানে ওসি এ কে এম মাহফুজুল হক, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস, আইডিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রেযওয়ানুল হকসহ কলেজ দু’টির শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনায় ইজিবাইকের মোটরের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে সুরাইয়া (২৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার নগরীর বয়রা বাজার শেরের মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সুরাইয়া যশোরের অভয়নগর উপজেলার হিতিয়া এলাকার মো. আতিয়ার মোল্লার মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, আজ সকালে অভয়নগর থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন ওই নারী। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত ইজিবাইকের মোটরের সঙ্গে তাঁর ওড়না পেঁচিয়ে যায়। এ সময় ইজিবাইক থেকে ওই নারী নিচে পড়ে গিয়ে গলায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ওই নারীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাটা গলা নিয়ে রিকশা চালিয়ে ৩ কিলোমিটার, হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রিকশাচালক ফজলুর রহমানের (৩৫) গলা কেটে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও রিকশা চালিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে তিনি বাজারে আসেন। এরপর হাসপাতালে পাঠানো হলে তিনি মারা যান। গতকাল শনিবার রাতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে।

ফজলুর রহমানের বাড়ি তানোর উপজেলার অমৃতপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ইবরাহিম আলী। ফজলুর রহমানের ব্যাটারিচালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিতে ছুরি দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেওয়া হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে মৃত্যুর আগে তিনি কিছু বলে যেতে পারেননি।

মোহনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোদাচ্ছের হোসেন খান জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর শিয়ালকোলা এলাকায় রিকশাচালক ফজলুর রহমানের গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তিনি নিজেই রিকশা চালিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরের কেশরহাট বাজারে আসেন। সেখান থেকে স্থানীয় লোকজন তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠান। এরপর রাত ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এসআই মোদাচ্ছের হোসেন খান জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এরপর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্বজনেরা থানায় আসার পর এ ব্যাপারে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬: ইয়াসিনকে প্রার্থী করার দাবিতে নির্যাতিত বিএনপি পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা-৬ আসনে হাজি ইয়াসিনকে প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে বিএনপির কারা নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা-৬ আসনে হাজি ইয়াসিনকে প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে বিএনপির কারা নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াসিনকে চূড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় নগরীর টাউন হল মাঠের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব চৌধুরীর স্ত্রী নাসরিন খানম। তিনি বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপিকে সমর্থন করার কারণে বহু পরিবারের স্বামী, বাবা, ভাই ও সন্তানেরা মামলা, হামলা, কারাবরণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন। সেই কঠিন সময়ে এসব পরিবারের পাশে থেকে আইনি সহায়তা, আটক নেতা-কর্মী ও তাঁদের পরিবারের ভরণপোষণ, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসনসহ সকল মানবিক সহায়তা দিয়েছেন আমিন উর রশিদ ইয়াসিন।

লিখিত বক্তব্যে নাসরিন খানম দাবি করেন, এই সময়ে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে শত শত মামলা হয়েছে এবং হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাবরণ করেছেন। নিরাপত্তার কারণে নেতা-কর্মীরা নিজ বাড়িতে রাত কাটাতে পারেননি, এমনকি স্বজনদের জানাজা ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারেননি। সেই দুঃসময়ে পরিবারগুলোর অন্যতম ভরসা ছিলেন আমিন উর রশিদ ইয়াসিন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় কুমিল্লা-৬ আসনে আমিন উর রশিদ ইয়াসিনের নামের পরিবর্তে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বক্তারা মনিরুল হক চৌধুরীকে এই অঞ্চলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের কাছে ‘কম পরিচিত’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের দাবি, গত ১৭ বছরের রাজনৈতিক সংকট ও নির্যাতনের সময়ে মনিরুল হক চৌধুরী এলাকায় নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন না।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে দলের ত্যাগী, জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতাকে মনোনয়ন না দিলে বিজয় অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী আনা আজিজা আবেগঘন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর নামে ৩২টি মামলা ছিল। প্রতিটি মামলার আইনি সহায়তা, জেলখানায় পিসির খরচ, চিকিৎসা, জামিন, পরিবারের দেখাশোনাসহ সকল কিছুর দায়িত্ব নিয়েছিলেন হাজি ইয়াসিন। বিগত ১৭ বছর তিনি আমার মতো শত শত নির্যাতিত নেতা-কর্মীর অভিভাবক হয়ে বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়েছিলেন। আমরা তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ জানাই, আমাদের বটবৃক্ষকে যেন উপড়ে না ফেলা হয়।’

এ সময় গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য দেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী আবিদা সুলতানা প্রমী, বিএনপি নেতা ইকরাম হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগম, মনির হোসেনের স্ত্রী লাকি আক্তারসহ অন্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত