Ajker Patrika

‘বৈষম্যবিরোধীর’ মামলায় আন্দোলনকারীও আসামি

  • বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম সাংবাদিক ফোরাম নামক সংগঠনের আহ্বায়ক পরিচয়ে মামলা।
  • নিরীহ মানুষের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীকেও আসামি করার অভিযোগ।
খান রফিক, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডের বাসিন্দা সুলতান খান। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে গত বুধবার কোতোয়ালি থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেছেন। ‘বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম সাংবাদিক ফোরাম’ নামের সংগঠনের আহ্বায়ক পরিচয়ে তিনি এ মামলা করেন। এতে বরিশালের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি), সিটি করপোরেশনের মেয়র থেকে শুরু করে ১৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা অন্তত দেড় শজনকে আসামি করা হয়।

আসামিদের অনেকেরই অভিযোগ, হয়রানির জন্যই সুলতান খান এ মামলা করেছেন। অনেকে তাঁকে চেনেন না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সুলতান এবং তাঁর সংগঠন সম্পর্কে বরিশালের পেশাদার সাংবাদিক নেতারা কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন।

এদিকে কোনো আলামত জব্দ দেখানো ছাড়াই থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা নেওয়ার বৈধতা নিয়েও আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলছেন, ‘বাদীকে মোবাইল ফোনে কল দিয়েছিলাম। তাঁকে থানায় আনা যাচ্ছে না।’

বাদী সুলতান খান বলছেন, ‘আরও মামলা করা হবে।’

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত ১৭ জুলাই বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আসামিদের হামলায় রাকিবুল্লাহ আহসান নামের একজন চোখে গুলিবিদ্ধ হন। রাকিবুল্লাহকে তাঁর খালাতো ভাই বলে দাবি করা হয়। যদিও আহত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে সুলতান খান কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।

মামলার আসামি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস, সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথ, জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও আবুল খায়ের আবদুল্লাহসহ জেলার বিগত সরকারের সাবেক এমপি, মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১৫৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া নগরের বিশিষ্ট নাগরিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদেরও আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামি বরিশাল নাগরিক ফোরামের সমন্বয়ক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলুর অভিযোগ, গত ২৭ এপ্রিল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তাঁর ডান পায়ের হাড় তিন টুকরা হয়ে যায়। এরপর থেকে টানা ৯ মাস বরিশাল ও ঢাকায় হাসপাতালে ছুটছেন। এখনো ক্রাচে ভর দিয়ে তাঁকে হাঁটতে হচ্ছে।

শিবলু বলেন, ‘সামাজিক মর্যাদাহানি এবং হয়রানি করতেই আমাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

আরেক আসামি বাকেরগঞ্জ উপজেলার গোলাম সরোয়ার সবুজ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি কোনো দলের পদে নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমি ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদে দুবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলাম। সুলতানকে আমি চিনি না। আমাকে কেন বরিশালে মামলায় আসামি করা হয়েছে, তা-ও জানি না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল নগরের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সুলতানকে আমি চিনি না। আমার এক ছোট ভাই তোহা (নওশদ আহমেদ তোহা) বলেছে, সুলতান নাকি মামলায় সাধারণ একজন মানুষকে বিনা অপরাধে ফাঁসাচ্ছেন। এভাবে কোনো সংগঠনে “বৈষম্যবিরোধী” কথাটি যুক্ত করে আমাদের বিতর্কিত করা হচ্ছে।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নওশদ আহমেদ তোহা বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময় নগরের নথুল্লাবাদে গোলাম দস্তগীর নামের একজন আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাঁকে ৬৪ নম্বর আসামি করে ফাঁসানো হয়েছে।’

মামলায় আসামি জাপা নেতা রুহুল আমিন হাওলাদারের বিষয়ে যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা বলেন, ‘রুহুল আমিন কী বরিশাল নগরে গিয়ে হামলা করতে পারেন? অখ্যাত এই সুলতানের কথায় ওসি মামলাটা নিয়ে ঠিক করেননি। শুনেছি, তিনি নাকি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করেন।’

মামলার বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিঅ্যান্ডবি রোডে সুলতান খানের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। এ সময় সুলতান নিজেকে ‘দি ডেইলি টাইমস অব বাংলাদেশ’র বিশেষ প্রতিনিধি এবং ‘বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম সাংবাদিক ফোরাম’-এর আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় দেন।

মামলার আসামিদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান খান বলেন, ‘আরও মামলা করা হবে। বিএনপি যে মামলা করেছে, তা ঠিক হয়নি। তারা ঢালাও আসামি করেছে।’

বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘কেউ অভিযোগ নিয়ে এলে মামলা নিতে হয়, তাই নিয়েছি। তদন্তে বিস্ফোরকের আলামত পাওয়া না গেলে এ ধারাটি বাদ দেওয়া হবে।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপপরিদর্শক মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘বাদীকে মোবাইল ফোনে কল দিয়েছিলাম। তাঁকে তো থানায় আনা যাচ্ছে না। এটা সঠিক যে, তাঁকে অনেকেই চেনেন না। মামলার তদন্ত চলছে।’

বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী কাইউম খান কায়সার বলেন, ‘আলামত জব্দ ছাড়া বিস্ফোরক আইনে মামলা হয় না। সুলতানের মামলায় আলামত জব্দ দেখানো হয়নি। ফলে তাঁর অভিযোগ এজাহার হিসেবে নেওয়া বৈধ হয়নি।’

বরিশাল মহানগর জামায়াতের মুখপাত্র মো. শাহ আলম বলেন, ‘সুলতান অনেক আগে ইসলামী ছাত্রশিবির করতেন। জামায়াতের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। তাঁর মামলার সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা নেই।’

বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, ‘মামলার পর জানতে পেরেছি, বরিশালে সুলতান খান নামের কোনো সাংবাদিক আছেন। বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম সাংবাদিক ফোরামের নাম এর আগে আমরা শুনিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছাত্রদল নেতার বাবার নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগ, আহত ৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতার বাবার নেতৃত্বে চালানো হামলায় তিনজন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলাকারীরা সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মোবাইল ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে ফতুল্লার গিরিধারা বউবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন স্থানীয় সাংবাদিক আকাশ, মামুন আব্দুল্লাহ ও আয়াজ রেজা।

পুলিশ হামলাকারী শাহাদাত হোসেনকে (৬০) আটক করেছে। তিনি মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আতা-ই-রাব্বির বাবা।

সাংবাদিক মো. আকাশ জানান, গিরিধারা বউবাজার এলাকায় এক নারীর অভিযোগ ছিল তাঁদের জমি দখল করে রেখেছিলেন ছাত্রদল নেতা আতা-ই-রাব্বীর বাবা শাহাদাত। ওই ঘটনায় নারী ফতুল্লা থানায় একাধিকবার জিডি করেছেন। এই বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে ঘটনাস্থলে গেলে শাহাদাত লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিত হামলা করেন।

একপর্যায়ে আমাদের একটি রুমে আটকে লাঠিসোটা ও রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল ভেঙে ফেলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করলে আমরা খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিই।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, শাহাদাতকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মনোনয়ন চেয়ে বিএনপি নেতার সমর্থকদের মানববন্ধন

দেবহাটা ও সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
শহিদুল আলমকে ধানের শীষের প্রার্থী করার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শহিদুল আলমকে ধানের শীষের প্রার্থী করার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরা-৩ (কালিগঞ্জ-আশাশুনি) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শহিদুল আলমকে মনোনয়ন না দেওয়ায় বিক্ষোভ-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর সমর্থকেরা। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে শহিদুলকে ধানের শীষের প্রার্থী করার দাবিতে কালিগঞ্জ ব্রিজ থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মানববন্ধন করেন তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা।

মানববন্ধনে বিক্ষোভকারীরা ‘হটাও কাজী, বাঁচাও ধানের শীষ’ বলে স্লোগান তোলেন। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নলতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কিসমাতুল বারী। এতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য শেখ নুরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়, জেলা তরুণ দলের সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, বিএনপি নেতা এস এম হাফিজুর রহমান বাবু প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শহিদুল আলম জনমানুষের নেতা। মানুষটি কখনো নিজের জন্য ভাবেননি। তিনি গরিবের চিকিৎসক। তাঁকে মনোনয়ন না দিলে সাতক্ষীরা-৩ আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হবে। তাঁরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত দ্রুত পুনর্বিবেচনা করে কাজী আলাউদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল ও শহিদুলকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধন শেষে নেতারা সাত দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তাঁরা জানান, দাবি না মানা পর্যন্ত প্রতিদিন কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজন হলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করবেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেরোবিতে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে অব্যাহতি

বেরোবি প্রতিনিধি 
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যৌন হয়রানির অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলামকে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বিভাগীয় জরুরি সভার সিদ্ধান্তে এই অব্যাহতির বিষয়টি জানানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় এক জরুরি সভায় ড. শাকিবুল ইসলামের নিকট বণ্টনকৃত চতুর্থ বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের কোর্সসমূহ পুনর্বণ্টনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সঙ্গে DSM4207 (Research Project) কোর্সে সুপারভাইজার ও দ্বিতীয় পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এ ছাড়া চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সদস্যপদ থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য শিক্ষককে নতুন সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ড. শাকিবুল ইসলামকে একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি এমএসসি ২০২৪-২৫ প্রোগ্রাম থেকেও সম্পূর্ণভাবে বিরত রাখা হবে।

অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমাদের এক নারী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ড. শাকিবুল ইসলামকে ওই ব্যাচের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ভুক্তভোগী প্রশাসন বরাবরও অভিযোগ দায়ের করেছে, বিষয়টি যৌন নিপীড়ন সেলে গিয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আমরা এখনো অবগত নই।’

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক এবং যৌন নিপীড়ন সেলের সদস্যসচিব ড. ইলিয়াছ প্রামাণিক বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে হামলার শিকার হয়েছেন শামীম হোসেন মোল্লা নামের এক ঠিকাদার। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ভাঙচুর করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু হুরায়রার নেতৃত্বে একদল লোক। খবর পেয়ে সদর থানা-পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

আজ বুধবার ঝিনাইদহ জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শামীম হোসেন মোল্লা শৈলকুপা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের সাব্দার হোসেন মোল্লার ছেলে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

সূত্রে জানা গেছে, শামীম হোসেন মোল্লা এলজিইডির একজন ঠিকাদার। তিনি আজ বুধবার দুপুরে কাজের বিল নিতে জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে আসেন। এ সময় হঠাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু হুরায়রা আসেন। তিনি সংগঠনের সদস্যসচিব সাইদুর রহমানসহ ১০-১৫ জনকে ডেকে এনে শামীম হোসেন মোল্লাকে মারধর এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। বর্তমানে তিনি সদর থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধীর নেতা আবু হুরায়রা আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম হোসেন মোল্লা শৈলকুপায় ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে অনেক মিছিল-মিটিং করেছেন। শৈলকুপায় তাঁর নেতৃত্বে ঢাল, সড়কি, রামদা নিয়ে মিছিল করেছে, তার দায় সে কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শৈলকুপায় একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে ঠিকাদারি কাজ করে এসেছেন। যেকোনো কাজের টেন্ডার প্রভাব খাটিয়ে নিজে নিয়ে কাজ করতেন। তিনি অন্য কাউকে কাজ করতে দিতেন না।

আবু হুরায়রা বলেন, ‘এমনকি ৫ আগস্টের পর এখনো তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। আজ দুপুরে এলজিইডি অফিসে গিয়ে দেখি, সরকারি অফিসে বসে শামীম মোল্লা চা খাচ্ছেন। হাসি-তামাশা করছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে আবু হুরায়রা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শৈলকুপার কিছু লোক ছিল, তারা আগের ক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর করেছে।’ তবে মারধরের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান ঝিনাইদহ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনোয়ার উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই, আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে এসেছি।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুপুরে এলজিইডি অফিসে শামীম হোসেন মোল্লাকে আটকিয়ে রাখার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সদর থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

তাঁকে কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাঁর নামে সদর থানায় কোনো মামলা নেই। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত