Ajker Patrika

কৌশলে জমি লিখে নিয়ে মা-বাবাকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ০৪
ভুক্তভোগী মা-বাবা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভুক্তভোগী মা-বাবা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিরোজপুরের নেছারাবাদে এক পাষণ্ড ছেলের বিরুদ্ধে কৌশলে ২২ শতক জমি লিখে নিয়ে মা-বাবাকে নির্মমভাবে মারধর ও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৬ অক্টোবর রাতে ছেলে ও পুত্রবধূর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রবীণ দম্পতি ১০ দিন ধরে নিজ বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী বাবা মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) এবং মা মমতাজ বেগম (৫০) এই ঘটনায় তাঁদের বড় ছেলে মো. মিলন এবং পুত্রবধূ রুবি বেগমের বিরুদ্ধে নেছারাবাদ থানায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে।

বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেনের অভিযোগ, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে মিলনবড়। স্ত্রীসহ নিজের চিকিৎসার জন্য মিলনের কাছ থেকে তিনি কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন। এই সুযোগে ছেলে কৌশলে তাঁর ২২ শতক জমি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন।

শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন বাড়ি থেকে কোনো ফল-ফসল ধরতে পারি না। ৬ অক্টোবর সকালে বাগানের কিছু সুপারি পাড়ার কারণে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি বেগম মিলে আমাদের নির্মমভাবে মারধর করে। তাদের বেদম প্রহারে আমার দুটি দাঁত পড়ে গেছে। এখন আবার বাকি জমিটুকুও লিখে দিতে বলছে।’

মা মমতাজ বেগম বলেন, ‘ছেলে কৌশলে জমি লিখে নিয়ে এখন আমাদের কাছে টাকা চাইছে। বাকি জমিও লিখে দিতে বলছে। সেদিন (৬ অক্টোবর) ওর বাপকে বেদম মারধর করেছে। আমি রক্ষা করতে কাছে গেলে আমাকেও খুব মেরেছে।’

আটঘর কুড়িয়ানা ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ওই বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাঁদের ছেলে মিলন কারও কথা শোনে না, তাই আমি তাঁদের থানায় যেতে বলেছি।’

ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘তাঁদের ছেলে খুবই খারাপ। জমির জন্য তাঁদের মারধর করে। কয়েক দিন আগে রাতে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ওই পাষণ্ড ছেলের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।’

নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বনি আমিন এ বিষয়ে বলেন, ‘তাঁরা যেন থানায় এসে আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। আমি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে আজ সকালে রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে আজ সকালে রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্র-জনতা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা জেলা ঘোষণার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে এই বিক্ষোভ শুরু হয় এবং দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেন। বিক্ষোভ চলাকালে সিলেট থেকে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনে নির্ধারিত যাত্রাবিরতি করে।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ছাত্র ও যুবসমাজ ভৈরবের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম শাহরিয়ার, রাষ্ট্র সংস্কার ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক নূরুল কাদের সোহেল, গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজলসহ অন্যরা।

ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে আজ সকালে রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে আজ সকালে রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্র সংস্কার ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক নূরুল কাদের সোহেল বলেন, ‘২০০৯ সালে ভৈরবকে নতুন জেলা করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও তা পরে বাস্তবায়ন করা হয়নি। সাধারণ মানুষের প্রাণের এই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।’ তিনি অবিলম্বে ভৈরবকে জেলা ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্টেশনে ভৈরব থানা-পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ও র‍্যাব সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।

এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি সাঈদ আহামেদ বলেন, রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে বিক্ষোভ হলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল এবং কোনো ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।

এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, বেলা ১১টার দিকে প্ল্যাটফর্মে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে স্থানীয় লোকজন। স্টেশনে যথাসময়ে ট্রেন যাত্রাবিরতি করে। ট্রেন চলাচলে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে নার্সদের কর্মবিরতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্সরা কর্মবিরতি পালন করছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁরা কর্মবিরতিতে অংশ নিয়েছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলছিল।

নার্সদের অভিযোগ, এক চিকিৎসক এক নার্সকে মারধর করেছেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদেই তাঁরা কর্মবিরতিতে গেছেন।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, নার্সদের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের বেশিরভাগ সেবা কার্যত বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বহির্বিভাগ ও ভর্তি রোগীরা।

নার্সদের অভিযোগ, বুধবার বিকেলের শিফটে কামরুল হাসান নামে এক নার্সের সঙ্গে সৈকত তাওহিদ নামে এক চিকিৎসকের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে সৈকত তাওহিদ আরও কয়েকজনকে নিয়ে কামরুল হাসানকে মারধর করেন। সৈকত তাওহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি।

আহত কামরুল হাসান বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন নার্সেরা। সকালে হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ করেন এবং ঘটনার বিচার দাবিতে স্লোগান দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, ‘আমাদের সহকর্মীর ওপর হামলার বিচার চাই। এর প্রতিবাদেই আমরা কর্মসূচি পালন করছি।’

অভিযোগের বিষয়ে চিকিৎসক সৈকত তাওহিদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শিহাব উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর অফিস ও মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাকসু ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ, প্রয়োজনে আসবে সেনাবাহিনী: পুলিশ কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩০
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাকসু নির্বাচন পরিদর্শনের পর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। তারপরও যদি প্রয়োজন হয়, আহ্বান করলে সেনাবাহিনীও আসবে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা নেই, কোনো সমস্যাও নেই। আমি নিজেও ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করলাম। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।’ তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী সরাসরি এই নির্বাচনে থাকবে না। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা যদি আহ্বান করি, তাহলে তারা আসবে।’

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘সবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। প্রার্থীরা যদি আচরণবিধি মেনে চলেন, তাহলে কোনো সমস্যা হবে না।’

পুলিশ কমিশনার জানান, ভোটের আগের দিন বুধবার থেকেই ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এটি বলবৎ থাকবে শুক্রবার পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে রহস্যজনক আগুন: একজন নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আজ ভোরে আগুনে দগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ ভোরে আগুনে দগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌলভী পাড়ায় একটি ছয়তলা ভবনের ফ্ল্যাটে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে ‘দেওয়ান প্লাজা’ নামের ওই ভবনের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে এই অগ্নিকাণ্ডে শাহ ফরহাদ উদ্দিন আহমদ (৬৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ফরহাদ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি আখাউড়া উপজেলার আজমপুর হলেও তিনি পরিবার নিয়ে শহরের ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাস বলেন, ভোর ৪টা ১২ মিনিটে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের মোট তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফ্ল্যাটের ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষটি থেকে শাহ ফরহাদ উদ্দিন আহমদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিউটন দাস জানান, শারীরিকভাবে অসুস্থ ফরহাদ উদ্দিন আহমদ অগ্নিকাণ্ডের সময় কক্ষের ভেতরে ছিলেন। তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিরাপদে বের হতে পেরেছিলেন।

ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, আগুন লাগার খবর বিলম্বে দেওয়া হয়েছে। তবে নিহত ব্যক্তির স্বজনদের বরাত দিয়ে উপসহকারী পরিচালক বলেন, ফরহাদ উদ্দিনের পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ কারণে অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ উদ্‌ঘাটনে তদন্ত চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম জানান, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত