Ajker Patrika

ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: নানা সংকটে ব্যাহত চিকিৎসা

  • সহকারী সার্জনের পাঁচটি পদের সব কটি শূন্য
  • প্রথম শ্রেণির ৩০টি পদের ১৭টি ফাঁকা
  • সন্তান প্রসবসহ সব অস্ত্রোপচার বন্ধ
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: নানা সংকটে ব্যাহত চিকিৎসা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জনবল, রোগ পরীক্ষার যন্ত্রপাতি সংকটসহ নানা সমস্যায় ধুঁকছে। এর সঙ্গে রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। একসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ ১০-এ থাকা হাসপাতালটি বর্তমানে ৯৩ নম্বরে নেমে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালটিতে চিকিৎসকসহ প্রথম শ্রেণির ৩০টি পদের ১৭টি শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণির ৩৭টি পদের মধ্যে তিনটি, তৃতীয় শ্রেণির ৮৬ পদের মধ্যে ৩৩, চতুর্থ শ্রেণির ২০ পদের মধ্যে ১১টি পদ শূন্য রয়েছে। ফলে জনবল সংকটে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজিসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্রপাতি নেই। এতে বাধ্য হয়ে রোগীদের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে ছুটতে হয়। তাঁদের বেশি টাকা দিয়ে এসব পরীক্ষা করাতে হয়। এ ছাড়া বর্জ্য অপসারণের জন্য হাসপাতালে আয়া এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সাতটি পদ থাকলেও আছেন মাত্র একজন। শুধু একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে পুরো হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার কাজ সম্ভব হচ্ছে না। এতে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা দুর্গন্ধে কষ্টে পড়েন।

জানা গেছে, ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে জুনিয়র মেডিসিন কনসালট্যান্ট, জুনিয়র প্রসূতি কনসালট্যান্ট, জুনিয়র অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট, জুনিয়র চক্ষু কনসালট্যান্ট, জুনিয়র হৃদ্‌রোগ কনসালট্যান্ট, জুনিয়র ইএনটি কনসালট্যান্ট পদগুলো শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া মেডিকেল অফিসার পদে দুটি, সহকারী সার্জনের পাঁচটি পদের সব কটি, জুনিয়র শিশু কনসালট্যান্ট পদের একটি পদে কোনো চিকিৎসক নেই।

জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট হিসেবে একজন চিকিৎসক কাগজে-কলমে থাকলেও তিনি এই হাসপাতালে আসেন না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রেষণে কর্মরত আছেন। ফলে রোগীদের সাধারণ অপারেশন ও সিজার দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালটিতে। এতে দরিদ্র রোগীদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

হাসপাতালটির একমাত্র জুনিয়র মেকানিক পদটি দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে আবাসিক রোগী, ল্যাবসহ বিভিন্ন সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী জানান, জনবল সংকটের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনার ফলে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠিয়ে টেস্ট-বাণিজ্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকের দালালদের দৌরাত্ম্য, ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদেরও দৌরাত্ম্য রয়েছে।

রোগীদের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সপ্তাহে ছয় দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখার কথা থাকলেও চিকিৎসকেরা সাধারণত ১০টার আগে বসেন না। আবার বেলা দেড়টার মধ্যে অনেক চিকিৎসক কক্ষ ছেড়ে চলে যান। ডাক্তার সংকটের কারণে আবাসিক রোগীদের জন্য রাউন্ডে গেলে বহির্বিভাগের রোগী দেখার ব্যাঘাত ঘটে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জনবল সংকটে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ বা আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। এসব পদে জনবল নিয়োগ দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির সংকটকালে ভারতীয়-আমেরিকানদের বিস্ময়কর নীরবতা

শুধু ডিজিএফআইয়ের লোগোর সঙ্গে মিল থাকায় শাপলা না দেওয়া বৈষম্যমূলক: এনসিপি

মানচিত্র থেকে পাকিস্তানকে মুছে ফেলার হুমকি দিলেন ভারতের সেনাপ্রধান

তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’

জনসংখ্যার সংকট, তারপরও বিদেশিদের প্রতি ঘৃণা এখন তীব্র জাপানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত