Ajker Patrika

কর্মী সংকটে মহিষ রুগ্‌ন হচ্ছে প্রজনন খামারে

  • সঠিকভাবে খাবার ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা করতে না পারায় স্থবিরতা।
  • ৫২টি শূন্য পদ থাকলেও আছেন মাত্র ১৩ জন।
  • সরাসরি মহিষ পরিচর্যার জন্য ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে আছেন মাত্র চারজন।
  • সম্প্রতি খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যায় ২০ মহিষ।
আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট) 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাংলাদেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটি দীর্ঘদিন ধরে লোকবল সংকটে ভুগছে। মাত্র ১০ শতাংশ (মহিষ অ্যাটেনডেন্ট) জনবল দিয়ে খামারের প্রায় ৫০০ মহিষের খাবার ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে না পেরে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা।

এদিকে সংকটের কারণে মহিষের রুগ্‌ণতা ও মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে, যা দেশের দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

জানা গেছে, ফকিরহাটের পিলজংগ এলাকায় ৯৫ একর জমির ওপর ১৯৮৪-৮৫ সালে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে খামারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে ১১১টি মহিষ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪২৫টি মহিষ রয়েছে। খামার পরিচালনার জন্য মোট ৫২টি শূন্য পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র ১৩ জন কর্মী রয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণির ১৪টি পদের বিপরীতে মাত্র ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী দাপ্তরিক কাজ সামলাচ্ছেন, এর মধ্যে কয়েকজন শিগগিরই অবসরে যাবেন।

এ ছাড়া মহিষের সরাসরি পরিচর্যার জন্য ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে মাত্র চারজন কর্মী কাজ করছেন। এর মধ্যে দুইজন সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকায় মাত্র দুইজন মহিষ অ্যাটেনডেন্ট বিশাল খামারের সব কাজ পরিচালনা করছেন। ফলে দৈনিক ৫-৬ হাজার কেজি ঘাস কাটা, দানাদার খাদ্য প্রস্তুত, খড় কাটাসহ অন্যান্য কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এই খামারের ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ২০টি মহিষ মারা যায়, যা সংকটের ভয়াবহতা তুলে ধরছে। এমন চলতে থাকলে খামারটি অচলাবস্থার মধ্যে পড়তে পারে।

এদিকে জনবল সংকটে খামারে হিট ডিটেকশন পর্যবেক্ষণ ঠিকমতো না হওয়ায় মহিষের গর্ভধারণের হার কমে গেছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রজনন ও দুধ উৎপাদনে। আবার কর্মীর অভাবে দুধ সংগ্রহ ও বিতরণে বিলম্ব হওয়ায় স্থানীয় ভোক্তারা প্রায়ই বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন কর্মীদের সঙ্গে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে যখন মূল অফিস থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নতুন শেডে মহিষগুলো স্থানান্তর করার পর। ফলে মহিষের নানা অসুস্থতা, রোগ-ব্যাধির খোঁজখবরসহ বিভিন্ন ধরনের তদারকিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘ ৩৮ বছরেও কোনো ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি হয়নি খামারটিতে, যা মহিষের স্বাস্থ্যসেবায় বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানতে চাইলে মহিষ খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শেখ আল মামুন জানান, বর্তমানে ২০৩টি গাভি, ২১২টি বাছুর ও ১০টি ষাঁড় রয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য থাকলেও কর্মী সংকটের কারণে তা সঠিকভাবে পরিবেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই বৃহৎ খামার পরিচালনার জন্য চতুর্থ শ্রেণির অন্তত ৯০ জন মহিষ অ্যাটেনডেন্ট কর্মী প্রয়োজন। অথচ আছে চারজন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, ‘মহিষ খামারে প্রকল্প শেষ হওয়ায় জনবল সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শূন্য পদে নিয়োগ দীর্ঘ সময়ের বিষয়। আমরা আউট সোর্সিং কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

মোদি আকর্ষণীয়, পিতার মতো, কিন্তু খুব কঠিন: ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই মঞ্চের নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, এনসিপির নেতা গ্রেপ্তার

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
আল আমিন সৈকত। ছবি: সংগৃহীত
আল আমিন সৈকত। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন চাঁদপুরে জুলাই মঞ্চের নেত্রী (১৯)। ওই মামলায় আজ বুধবার আল আমিন সৈকত (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার চাঁদপুরের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করা হয়।

গ্রেপ্তার আল আমিন সৈকত জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ওই উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে আল আমিন সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিধি মোতাবেক আদালতে প্রেরণ করা হবে।’

ভুক্তভোগী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মঞ্চের নেত্রীর সঙ্গে এনসিপি নেতা আল আমিন সৈকতের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের জেরে সৈকত তাঁকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনার পর ৫ অক্টোবর সৈকতের গ্রামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করেন ভুক্তভোগী। দুই দিন অনশনের পর জেলা পর্যায়ের এনসিপি নেতারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাধান না হওয়ায় গত শনিবার ভুক্তভোগী চাঁদপুর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে ফরিদগঞ্জ থানা-পুলিশ বুধবার সন্ধ্যায় আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে মামলাটি মিথ্যা দাবি করে এনসিপির চাঁদপুর জেলা সমন্বয়ক মাহবুব আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ঘটনা অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মূলত বিষয়টি আমাদের গত মাসে জানানো হলে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ১০ জন অ্যাডভোকেট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

উভয়ের কথা শুনে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে ওই মেয়ের অভিভাবক তাঁকে বাসায় ফেরত নেন। কিন্তু কোনো তদন্ত ছাড়া মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আল আমিন সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

মোদি আকর্ষণীয়, পিতার মতো, কিন্তু খুব কঠিন: ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গোপন নথি ফাঁস, উপাচার্যের পিএসকে অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
অপসারণ করা পিএস মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
অপসারণ করা পিএস মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্যের দপ্তরের একাধিক গোপন নথি ফাঁস করে দেওয়ার ঘটনায় উপাচার্যের একান্ত সচিব (পিএস) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান সানজিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত সোমবার মধ্যরাতে মিজানুর রহমানের ফেসবুক আইডিতে কমপক্ষে ৬০টি নথি শেয়ার করা হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে সেগুলো মুছে ফেলা হলেও অনেক শিক্ষার্থী সেগুলোর স্ক্রিনশট রেখেছেন। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে ক্যাম্পাসে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

প্রকাশ করা নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা, ব্যক্তিগত ফাইল ও শাস্তির নথি, তদন্ত প্রতিবেদন ও অডিট আপত্তির নথি, শিক্ষার্থীদের মামলার নথি ও কর্মকর্তাদের চাকরির আবেদনপত্রের ব্যক্তিগত ছবি রয়েছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে সরিয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই আদেশে আরও দুই কর্মকর্তার রদবদল করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

মোদি আকর্ষণীয়, পিতার মতো, কিন্তু খুব কঠিন: ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তরায় নায্য বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিভিন্ন অজুহাতে বেতন কাটার প্রতিবাদ, প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুতি এবং ন্যায্য বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পোশাকশ্রমিকেরা। রাজধানীর উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। তা চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। এতে তীব্র যানজটের কারণে দুর্ভোগে পড়ে পথচারীরা।

তুরাগের নিশাতনগর এলাকার গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন।

কারখানাটির কয়েক শ শ্রমিক এই বিক্ষোভে অংশ নেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। শ্রমিকেরা জানান, গার্মেন্টসটি কাপালি গার্মেন্টস নামে পরিচিত। সেখানে প্রায় ১ হাজার ২০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা যে বেতনে কাজ করেন, সেই বেতন ঠিকমতো পান না। নানা অজুহাতে মালিকপক্ষ তা কেটে নেয়। কেউ প্রতিবাদ করলেই বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাই সহজে কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পান না।

পোশাক কারখানার মেশিন অপারেটর কল্পনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা টাকার জন্য রাতদিন কষ্ট করে গার্মেন্টসে পরিশ্রম করি; অথচ ন্যায্য বেতন পাই না। যেটা পাই, তার থেকেও নানান বাহানায় টাকা কেটে নেওয়া হয়। কেউ কিছু বললেই চাকরিচ্যুত করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছি। শান্তিপ্রিয় আন্দোলনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা নেই। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এদিকে বিক্ষোভের কারণে গতকাল এই সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কের হাউস বিল্ডিং থেকে কামারপাড়া এবং আশুলিয়া থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া কামারপাড়া থেকে টঙ্গী সংযোগ সড়কেও বিক্ষোভকালে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের জানানো হয়, এই সংকটের সমাধান হবে। তাঁরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। শ্রমিকদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে বেলা ২টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকেরা।

এ বিষয়ে ডিএমপির তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তুরাগের গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কিছুসংখ্যক গার্মেন্টস শ্রমিক ছাঁটাই করার প্রতিবাদে কামারপাড়া পুলিশ বক্সের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শ্রমিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে গার্মেন্টস মালিকের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করে।’ তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার পর বেলা ২টার দিকে তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। শ্রমিকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকেরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

মোদি আকর্ষণীয়, পিতার মতো, কিন্তু খুব কঠিন: ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুরো সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে: নাহিদ

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর পর্যটন হোটেলে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর পর্যটন হোটেলে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুরো সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বুধবার রংপুর পর্যটন হোটেলে এনসিপির আট জেলা ও এক মহানগর আহ্বায়ক কমিটির পদপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন যথার্থ সুপারিশ দিয়েছে। সংস্কারের বিপক্ষে আমরা ঐকমত্য কমিশনে অনেক দলকে অবস্থান নিতে দেখেছি। বিএনপিও অনেকগুলো বড় সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে গোটা সংস্কারপ্রক্রিয়াকে তারা চায় কি না, এইটা নিয়ে কিন্তু এখন প্রশ্ন তৈরি হবে। কারণ, পুরো সময় ধরে দেখেছি আমরা, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি ভেটো দিয়েছে, বিরোধিতা করেছে।’

নাহিদ আরও বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে তো নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। জুলাই সনদ ও বিচারের রোডম্যাপ দিয়ে তারপরে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। এ কারণে দ্রুত সংস্কারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘জনগণের তো অনেক প্রত্যাশা ছিল গণ-অভ্যুত্থানের পরে, এই সরকারের পক্ষ থেকে এবং এমনকি আমাদের পক্ষ থেকেও। ফলে আমাদের সেই প্রত্যাশাগুলো পূরণ করতে হবে।’

দেশের মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে দেশের। মানুষের একটা ভয় আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সবকিছু আগের মতো হয়ে যাচ্ছে কি না, যাবে কি না। নতুন করে কোনো ফ্যাসিবাদ আসবে কি না, স্বৈরতন্ত্র আসবে কি না, মানুষের সে কথা বলার জায়গাটা থাকবে কি না। ৫ আগস্টের পরে আমরা দেখেছি যে, দেশে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি নতুন করে শুরু হয়েছে। আবার অন্যদিকে আমরা সামাজিক ফ্যাসিবাদের উত্থান দেখছি।’

দেশের নানামুখী সংকটের কথা জানিয়ে এনসিপি নেতা বলেন, ‘দেশে কিন্তু নানামুখী সংকট আছে। আবার পতিত স্বৈরাচারী শক্তি, তারা তো নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে, তাদের সঙ্গে বহু নানান বৈদেশিক শক্তি জড়িত। ফলে আমরা কিন্তু একটা সংকটের মুখেই আছি।

‘এই সংকটের মধ্যে আমাদের যেমন জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন, আবার এই জাতীয় ঐক্যের ভেতরে আমাদের নিজেদের দলগুলোর ভেতরে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেই সমস্যাগুলোও সমাধান করে আমাদের এক জায়গায় থাকতে হবে।’

এককভাবে সরকার গঠন সম্ভব নয় উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন কেউ যদি মনে করে, সে এককভাবেই সব নেতৃত্ব দেবে অথবা সরকার গঠন করে ফেলবে, এটা আসলে সম্ভব হবে না। যদি এই ন্যূনতম ঐক্য না থাকে দেশের সবগুলো পক্ষের মধ্যে, ফলে এককভাবে সরকার গঠন করা এবং সেই সংসদ ও সরকার টিকিয়ে রাখা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না।

জনগণের যে ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল; সংস্কার ও বিচার—এই দাবিগুলোকে উপেক্ষা করে যদি নির্বাচনের দিকে যাওয়া হয়, সেটিও আসলে টেকসই হবে না।’

এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘একটা টেকসই পরিবর্তনের জন্য, স্থিতিশীল পরিবর্তনের জন্য অনেক সংস্কার আমরা চেয়েছিলাম, সেটা হয়নি। কিন্তু সংবিধানের অল্প কিছু জায়গায় আমরা ঐকমত্য হয়েছি, কিছু গণতান্ত্রিক, যেটা একটা স্পেস আমাদের তৈরি করে দেবে, ন্যূনতম এই সংস্কার নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই।

‘সেই জায়গায় যদি বাধা তৈরি হয়, সেই জায়গায়ও যদি সরকারের জায়গা থেকে কোনো গড়িমসি তৈরি হয়, তাহলে এই সরকারকে কিন্তু জনগণের মুখোমুখি হতে হবে এবং যারা বাধা দেবে, তাদেরও জনগণের মুখোমুখি হতে হবে।’

জোট গঠন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা কারও মুখাপেক্ষী নই, কারও ওপর নির্ভরশীল হয়ে আমরা রাজনীতি করব না। কিন্তু নির্বাচনে কৌশলগত কারণে বা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যদি কোনো ধরনের সমঝোতা প্রয়োজন হয়, আমরা সেটার জন্য ওপেন আছি। আমরা এইটুকুই বলছি। কিন্তু আমরা কার সঙ্গে জোট হবে কি হবে না, সেটার ওপর বসে নেই, সেটার ওপর নির্ভর করে নেই। আমরা আমাদের মতোই কার্যক্রম করছি এবং আমরা আমাদের মতো প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘জনগণের আমাদের নিয়ে অনেক প্রত্যাশা আছে। আমাদের তারা একটা স্বতন্ত্র জায়গায় দেখতে চায় এবং পুরোনো দলগুলোর প্রতি জনগণের অনীহা আছে। আওয়ামী লীগ তো একটা ফ্যাসিস্ট রূপ নিয়েই ছিল, জনগণ তাকে বিতাড়িত করেছে।

‘এ ছাড়া যে দলগুলো আছে, গত ১৬ বছর তাদের ভূমিকা, জনগণের পক্ষে সঠিকভাবে দাঁড়াতে না পারা এবং ঐতিহাসিকভাবেও অনেক দলের অনেক ধরনের ব্যাগেজ (খারাপ নজির) থাকার কারণে কিন্তু জনগণের নতুন রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা সমাজে তৈরি হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

মোদি আকর্ষণীয়, পিতার মতো, কিন্তু খুব কঠিন: ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত