তাসনিম মহসিন

ঢাকা: বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। এমন সুন্দর সম্পর্কের মধ্যেই গতকাল সোমবার হঠাৎ করেই বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কোয়াড নিয়ে বেশ কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যা সবাইকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। কূটনীতিকেরা মনে করেছন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা চাপ সামলাতে গিয়ে চীন নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তাই অন্যের ওপর গলা চরাচ্ছে তারা।
চীন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক শক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একমেরু বিশ্বকাঠামোয় নিজের হিস্যা বুঝে নিতে লড়ছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রও বসে নেই। এশিয়াসহ গোটা বিশ্বে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে নানা কৌশল ও জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। এ ক্ষেত্রে ইউরোপের পরীক্ষিত মিত্রদের নিজের পাশে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে চীনের প্রতিবেশীদের মধ্যেও অনেককে পাশে পাচ্ছে ওয়াশিংটন।
কোভিড-১৯, তাইওয়ান, হংকং, দক্ষিণ চীন সাগরসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর অবস্থান। চীনকে কোনঠাসা করতে মার্কিন নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে কয়েকটি জোট। এগুলো নিয়ে চীন আগে খুব একটা সোচ্চার না থাকলেও বর্তমানে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সোচ্চার হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে শুধু মার্কিন নেতৃত্বে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকটি দেশ নিজ স্বার্থে চীন বিরোধিতা করে আসছিল। তবে এবার পুরো অঞ্চলের দেশগুলোকে এ জোটে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্দো প্যাসিফিক কৌশলের (আইপিএস) মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের দেশগুলোকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র। গঠন করা হয়েছে কৌশলগত জোট কোয়াড, যেখানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
সম্প্রতি কোয়াডের দেশগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছে। আর এ বৈঠক থেকে আসিয়ানভুক্ত দেশ ও আইপিএসের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এতে টিকার ফর্মূলা দেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অর্থায়ন করবে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। আর টিকা উৎপাদন করবে ভারত। আর এটাই নতুন করে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনের জন্য। কারণ আসিয়ানের দেশগুলোর সবাই চীনের প্রতিবেশী। দীর্ঘ দিন ধরে চীন এ দেশগুলোর ওপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজের দিকে টানার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক টানাপোড়েন যত বাড়বে, অন্য দেশগুলাকে ততই বিপদে পড়তে হবে। বাংলাদেশ কখনোই কোনো নিরাপত্তা জোটে অংশ নেয়নি। কুয়েত বা ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের কাছে জোটভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ যায়নি। পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বাংলাদেশের কাঠামোতে সামরিক দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু সামরিক অংশ বাদ দিয়ে আইপিএসে যোগ দেওয়ার কথা বলেছে, তাই বাংলাদেশের ওপর চীনের তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতেই গতকাল সোমবার চীন অনেকটা হঠাৎ করেই এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডকে চীনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেইজিং। তাই চীন মনে করে, এতে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে।
এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ সমতা বজায় রেখেই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে। কোনো দেশের শত্রু বাংলাদেশের শত্রু হবে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। এটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বাইরে। বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য—জনগনের উন্নয়ণ। এ জন্য সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে বাংলাদেশ।
তবে এমন বক্তব্য সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের প্রেক্ষাপটেই এসেছে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা মিশনের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, চীনা রাষ্ট্রদূতকে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তর তিনি দিয়েছেন। প্রশ্নটি এই মুহূর্তে একটু অন্য রকম হলেও সমসাময়িক ছিল। বিশেষ করে চীন যেভাবে তার কূটনীতিকে পরিচালনা করে, তার তুলনায় এর উত্তর অন্য সময়ের থেকে বেশি জোরালো ছিল। বিগত দিনগুলোর পরিস্থিতি, চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঢাকা সফর, টিকা কূটনীতিসহ সামনের দিনে চীনের অবস্থানের একটি পরিষ্কার বার্তা এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিয়েছে বেইজিং।
চীনের হুমকির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ন্যাচারালি তিনি একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁরা হয়তো এটা চায় না। তিনি তাঁর বক্তব্য বলবেন। যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছেন, সে প্রতিষ্ঠানের লোকজন আমাদের কাছে অ্যাপ্রোচও করে নাই। এটা একটু আগ বাড়িয়ে বলা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে খুব একটা... উনি বলেছেন, ফাইন, দ্যাটস মাচ। এটা নিয়ে আমাদের বিশেষ বক্তব্য নাই। বাট উই উইল ডিসাইড হোয়াট টু ডু (কিন্তু আমরা ঠিক করবে যে, আমরা কী করব)। আমরা আমাদের জনগণের জন্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এত দিন ধরে দেখেছেন। বহু সময় বহু লোক বহু কিছু বলেছেন। কিন্তু আমাদের দেশের স্বার্থের ব্যপারে, আমাদের দেশের মঙ্গলের জন্য, যা যা করার, আমরা সেটাই করেছি। উই মেইনটেইন আ নন অ্যালাইন (জোটনিরপেক্ষ) এবং একটি ব্যালেন্স ফরেন পলিসি (ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি)। অ্যান্ড উই কনটিনিউ টু ডু ইট (আমরা এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখব)।’
চীনের বক্তব্যটিকে ভাষাগত দিক থেকে বিবেচনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূত প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিয়েছেন। আর চীনের তো একটি অবস্থান রয়েছেই। কোয়াড বা আইপিএস হলো একটি সামরিক জোট। ফলে এখানে চীন বাংলাদেশকে এর অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় না। ব্রিটিশরা বললে হয়তো আরও পরিশীলিত ভাষায় বলত। চীনারা ভাষাগত দিক থেকে একটু সরাসরি বলেছে।’
এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তাঁর মন্তব্যের জন্য তলব করা হবে কি না—জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ‘এখনো সে রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে, তলব করা হবে না। তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলব।’
এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা কী করি–না করি, তা আমরা সব মিডিয়াকে বলি না। উই হ্যাভ ভিশন...ওয়েস অব ডুয়িং থিংস (আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য ও কাজের ধরন আছে)।’
২০১৬ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং বাংলাদেশ সফর করেন। সফরে মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হয়। সে সময় দেশের ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালকে দুই দেশের জন্য বন্ধুত্বের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। ২০২০ সালের মধ্যে ওই ২৭ প্রকল্পের সই হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো ঋণ চুক্তিতে বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল। তবে ২০২০ সালের মে পর্যন্ত এ ২৭ সমঝোতার মাত্র ছয়টি ঋণ চুক্তিতে রূপান্তর হয়েছে। আর ২১টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি চীন-বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যেই আরও নয়টি প্রকল্পে মোট ৬৪১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে এ মুহূর্তে চীনের ঋণে যেসব প্রকল্প চলমান, তার মধ্যে রয়েছে ৫০ কোটি ডলারের ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’, ২০ কোটি ডলারের ‘মর্ডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি’, ১৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-১)’ ও ৯১ কোটি ৭১ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-২)’ প্রকল্প। এ ছাড়া ‘ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-৩’ ও ‘কনস্ট্রাকশন অব টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলি’ প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করা যায়। এ দুই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ কোটি ও ৭০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণের অর্থ ছাড় করেছে চীন। এর বাইরে সররকারি ব্যবস্থানায় পায়রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ করছে চীনারা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চীনের এ আচরণে আমরা বিরক্ত হয়েছি কথাটা পুরোপুরি ঠিক না হলেও ভুল না। এটাকে এককথায় বিরক্ত না বলে অপ্রত্যাশিত বলাটা ঠিক হবে। কারণ, বিরক্ত শব্দের আলাদা অর্থ রয়েছে। চীনের একজন রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে আমরা এ রকম আচরণ প্রত্যাশা করিনি। চীনকে এ নিয়ে তলব করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করার বিষয়টি নিয়ে এ মুহূর্তে নানা হিসাব করা হচ্ছে। শুধু চীনা প্রকল্প নয়, চীনা টিকারও প্রয়োজন রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে জনগণের স্বার্থে যেটি ভালো হবে, আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।

ঢাকা: বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। এমন সুন্দর সম্পর্কের মধ্যেই গতকাল সোমবার হঠাৎ করেই বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কোয়াড নিয়ে বেশ কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যা সবাইকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। কূটনীতিকেরা মনে করেছন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা চাপ সামলাতে গিয়ে চীন নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তাই অন্যের ওপর গলা চরাচ্ছে তারা।
চীন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক শক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একমেরু বিশ্বকাঠামোয় নিজের হিস্যা বুঝে নিতে লড়ছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রও বসে নেই। এশিয়াসহ গোটা বিশ্বে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে নানা কৌশল ও জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। এ ক্ষেত্রে ইউরোপের পরীক্ষিত মিত্রদের নিজের পাশে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে চীনের প্রতিবেশীদের মধ্যেও অনেককে পাশে পাচ্ছে ওয়াশিংটন।
কোভিড-১৯, তাইওয়ান, হংকং, দক্ষিণ চীন সাগরসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর অবস্থান। চীনকে কোনঠাসা করতে মার্কিন নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে কয়েকটি জোট। এগুলো নিয়ে চীন আগে খুব একটা সোচ্চার না থাকলেও বর্তমানে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সোচ্চার হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে শুধু মার্কিন নেতৃত্বে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকটি দেশ নিজ স্বার্থে চীন বিরোধিতা করে আসছিল। তবে এবার পুরো অঞ্চলের দেশগুলোকে এ জোটে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্দো প্যাসিফিক কৌশলের (আইপিএস) মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের দেশগুলোকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র। গঠন করা হয়েছে কৌশলগত জোট কোয়াড, যেখানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
সম্প্রতি কোয়াডের দেশগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছে। আর এ বৈঠক থেকে আসিয়ানভুক্ত দেশ ও আইপিএসের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এতে টিকার ফর্মূলা দেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অর্থায়ন করবে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। আর টিকা উৎপাদন করবে ভারত। আর এটাই নতুন করে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনের জন্য। কারণ আসিয়ানের দেশগুলোর সবাই চীনের প্রতিবেশী। দীর্ঘ দিন ধরে চীন এ দেশগুলোর ওপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজের দিকে টানার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক টানাপোড়েন যত বাড়বে, অন্য দেশগুলাকে ততই বিপদে পড়তে হবে। বাংলাদেশ কখনোই কোনো নিরাপত্তা জোটে অংশ নেয়নি। কুয়েত বা ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের কাছে জোটভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ যায়নি। পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বাংলাদেশের কাঠামোতে সামরিক দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু সামরিক অংশ বাদ দিয়ে আইপিএসে যোগ দেওয়ার কথা বলেছে, তাই বাংলাদেশের ওপর চীনের তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতেই গতকাল সোমবার চীন অনেকটা হঠাৎ করেই এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডকে চীনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেইজিং। তাই চীন মনে করে, এতে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে।
এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ সমতা বজায় রেখেই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে। কোনো দেশের শত্রু বাংলাদেশের শত্রু হবে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। এটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বাইরে। বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য—জনগনের উন্নয়ণ। এ জন্য সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে বাংলাদেশ।
তবে এমন বক্তব্য সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের প্রেক্ষাপটেই এসেছে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা মিশনের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, চীনা রাষ্ট্রদূতকে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তর তিনি দিয়েছেন। প্রশ্নটি এই মুহূর্তে একটু অন্য রকম হলেও সমসাময়িক ছিল। বিশেষ করে চীন যেভাবে তার কূটনীতিকে পরিচালনা করে, তার তুলনায় এর উত্তর অন্য সময়ের থেকে বেশি জোরালো ছিল। বিগত দিনগুলোর পরিস্থিতি, চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঢাকা সফর, টিকা কূটনীতিসহ সামনের দিনে চীনের অবস্থানের একটি পরিষ্কার বার্তা এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিয়েছে বেইজিং।
চীনের হুমকির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ন্যাচারালি তিনি একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁরা হয়তো এটা চায় না। তিনি তাঁর বক্তব্য বলবেন। যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছেন, সে প্রতিষ্ঠানের লোকজন আমাদের কাছে অ্যাপ্রোচও করে নাই। এটা একটু আগ বাড়িয়ে বলা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে খুব একটা... উনি বলেছেন, ফাইন, দ্যাটস মাচ। এটা নিয়ে আমাদের বিশেষ বক্তব্য নাই। বাট উই উইল ডিসাইড হোয়াট টু ডু (কিন্তু আমরা ঠিক করবে যে, আমরা কী করব)। আমরা আমাদের জনগণের জন্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এত দিন ধরে দেখেছেন। বহু সময় বহু লোক বহু কিছু বলেছেন। কিন্তু আমাদের দেশের স্বার্থের ব্যপারে, আমাদের দেশের মঙ্গলের জন্য, যা যা করার, আমরা সেটাই করেছি। উই মেইনটেইন আ নন অ্যালাইন (জোটনিরপেক্ষ) এবং একটি ব্যালেন্স ফরেন পলিসি (ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি)। অ্যান্ড উই কনটিনিউ টু ডু ইট (আমরা এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখব)।’
চীনের বক্তব্যটিকে ভাষাগত দিক থেকে বিবেচনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূত প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিয়েছেন। আর চীনের তো একটি অবস্থান রয়েছেই। কোয়াড বা আইপিএস হলো একটি সামরিক জোট। ফলে এখানে চীন বাংলাদেশকে এর অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় না। ব্রিটিশরা বললে হয়তো আরও পরিশীলিত ভাষায় বলত। চীনারা ভাষাগত দিক থেকে একটু সরাসরি বলেছে।’
এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তাঁর মন্তব্যের জন্য তলব করা হবে কি না—জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ‘এখনো সে রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে, তলব করা হবে না। তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলব।’
এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা কী করি–না করি, তা আমরা সব মিডিয়াকে বলি না। উই হ্যাভ ভিশন...ওয়েস অব ডুয়িং থিংস (আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য ও কাজের ধরন আছে)।’
২০১৬ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং বাংলাদেশ সফর করেন। সফরে মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হয়। সে সময় দেশের ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালকে দুই দেশের জন্য বন্ধুত্বের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। ২০২০ সালের মধ্যে ওই ২৭ প্রকল্পের সই হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো ঋণ চুক্তিতে বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল। তবে ২০২০ সালের মে পর্যন্ত এ ২৭ সমঝোতার মাত্র ছয়টি ঋণ চুক্তিতে রূপান্তর হয়েছে। আর ২১টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি চীন-বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যেই আরও নয়টি প্রকল্পে মোট ৬৪১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে এ মুহূর্তে চীনের ঋণে যেসব প্রকল্প চলমান, তার মধ্যে রয়েছে ৫০ কোটি ডলারের ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’, ২০ কোটি ডলারের ‘মর্ডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি’, ১৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-১)’ ও ৯১ কোটি ৭১ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-২)’ প্রকল্প। এ ছাড়া ‘ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-৩’ ও ‘কনস্ট্রাকশন অব টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলি’ প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করা যায়। এ দুই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ কোটি ও ৭০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণের অর্থ ছাড় করেছে চীন। এর বাইরে সররকারি ব্যবস্থানায় পায়রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ করছে চীনারা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চীনের এ আচরণে আমরা বিরক্ত হয়েছি কথাটা পুরোপুরি ঠিক না হলেও ভুল না। এটাকে এককথায় বিরক্ত না বলে অপ্রত্যাশিত বলাটা ঠিক হবে। কারণ, বিরক্ত শব্দের আলাদা অর্থ রয়েছে। চীনের একজন রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে আমরা এ রকম আচরণ প্রত্যাশা করিনি। চীনকে এ নিয়ে তলব করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করার বিষয়টি নিয়ে এ মুহূর্তে নানা হিসাব করা হচ্ছে। শুধু চীনা প্রকল্প নয়, চীনা টিকারও প্রয়োজন রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে জনগণের স্বার্থে যেটি ভালো হবে, আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।
তাসনিম মহসিন

ঢাকা: বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। এমন সুন্দর সম্পর্কের মধ্যেই গতকাল সোমবার হঠাৎ করেই বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কোয়াড নিয়ে বেশ কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যা সবাইকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। কূটনীতিকেরা মনে করেছন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা চাপ সামলাতে গিয়ে চীন নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তাই অন্যের ওপর গলা চরাচ্ছে তারা।
চীন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক শক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একমেরু বিশ্বকাঠামোয় নিজের হিস্যা বুঝে নিতে লড়ছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রও বসে নেই। এশিয়াসহ গোটা বিশ্বে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে নানা কৌশল ও জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। এ ক্ষেত্রে ইউরোপের পরীক্ষিত মিত্রদের নিজের পাশে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে চীনের প্রতিবেশীদের মধ্যেও অনেককে পাশে পাচ্ছে ওয়াশিংটন।
কোভিড-১৯, তাইওয়ান, হংকং, দক্ষিণ চীন সাগরসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর অবস্থান। চীনকে কোনঠাসা করতে মার্কিন নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে কয়েকটি জোট। এগুলো নিয়ে চীন আগে খুব একটা সোচ্চার না থাকলেও বর্তমানে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সোচ্চার হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে শুধু মার্কিন নেতৃত্বে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকটি দেশ নিজ স্বার্থে চীন বিরোধিতা করে আসছিল। তবে এবার পুরো অঞ্চলের দেশগুলোকে এ জোটে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্দো প্যাসিফিক কৌশলের (আইপিএস) মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের দেশগুলোকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র। গঠন করা হয়েছে কৌশলগত জোট কোয়াড, যেখানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
সম্প্রতি কোয়াডের দেশগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছে। আর এ বৈঠক থেকে আসিয়ানভুক্ত দেশ ও আইপিএসের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এতে টিকার ফর্মূলা দেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অর্থায়ন করবে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। আর টিকা উৎপাদন করবে ভারত। আর এটাই নতুন করে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনের জন্য। কারণ আসিয়ানের দেশগুলোর সবাই চীনের প্রতিবেশী। দীর্ঘ দিন ধরে চীন এ দেশগুলোর ওপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজের দিকে টানার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক টানাপোড়েন যত বাড়বে, অন্য দেশগুলাকে ততই বিপদে পড়তে হবে। বাংলাদেশ কখনোই কোনো নিরাপত্তা জোটে অংশ নেয়নি। কুয়েত বা ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের কাছে জোটভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ যায়নি। পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বাংলাদেশের কাঠামোতে সামরিক দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু সামরিক অংশ বাদ দিয়ে আইপিএসে যোগ দেওয়ার কথা বলেছে, তাই বাংলাদেশের ওপর চীনের তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতেই গতকাল সোমবার চীন অনেকটা হঠাৎ করেই এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডকে চীনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেইজিং। তাই চীন মনে করে, এতে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে।
এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ সমতা বজায় রেখেই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে। কোনো দেশের শত্রু বাংলাদেশের শত্রু হবে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। এটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বাইরে। বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য—জনগনের উন্নয়ণ। এ জন্য সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে বাংলাদেশ।
তবে এমন বক্তব্য সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের প্রেক্ষাপটেই এসেছে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা মিশনের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, চীনা রাষ্ট্রদূতকে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তর তিনি দিয়েছেন। প্রশ্নটি এই মুহূর্তে একটু অন্য রকম হলেও সমসাময়িক ছিল। বিশেষ করে চীন যেভাবে তার কূটনীতিকে পরিচালনা করে, তার তুলনায় এর উত্তর অন্য সময়ের থেকে বেশি জোরালো ছিল। বিগত দিনগুলোর পরিস্থিতি, চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঢাকা সফর, টিকা কূটনীতিসহ সামনের দিনে চীনের অবস্থানের একটি পরিষ্কার বার্তা এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিয়েছে বেইজিং।
চীনের হুমকির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ন্যাচারালি তিনি একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁরা হয়তো এটা চায় না। তিনি তাঁর বক্তব্য বলবেন। যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছেন, সে প্রতিষ্ঠানের লোকজন আমাদের কাছে অ্যাপ্রোচও করে নাই। এটা একটু আগ বাড়িয়ে বলা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে খুব একটা... উনি বলেছেন, ফাইন, দ্যাটস মাচ। এটা নিয়ে আমাদের বিশেষ বক্তব্য নাই। বাট উই উইল ডিসাইড হোয়াট টু ডু (কিন্তু আমরা ঠিক করবে যে, আমরা কী করব)। আমরা আমাদের জনগণের জন্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এত দিন ধরে দেখেছেন। বহু সময় বহু লোক বহু কিছু বলেছেন। কিন্তু আমাদের দেশের স্বার্থের ব্যপারে, আমাদের দেশের মঙ্গলের জন্য, যা যা করার, আমরা সেটাই করেছি। উই মেইনটেইন আ নন অ্যালাইন (জোটনিরপেক্ষ) এবং একটি ব্যালেন্স ফরেন পলিসি (ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি)। অ্যান্ড উই কনটিনিউ টু ডু ইট (আমরা এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখব)।’
চীনের বক্তব্যটিকে ভাষাগত দিক থেকে বিবেচনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূত প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিয়েছেন। আর চীনের তো একটি অবস্থান রয়েছেই। কোয়াড বা আইপিএস হলো একটি সামরিক জোট। ফলে এখানে চীন বাংলাদেশকে এর অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় না। ব্রিটিশরা বললে হয়তো আরও পরিশীলিত ভাষায় বলত। চীনারা ভাষাগত দিক থেকে একটু সরাসরি বলেছে।’
এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তাঁর মন্তব্যের জন্য তলব করা হবে কি না—জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ‘এখনো সে রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে, তলব করা হবে না। তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলব।’
এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা কী করি–না করি, তা আমরা সব মিডিয়াকে বলি না। উই হ্যাভ ভিশন...ওয়েস অব ডুয়িং থিংস (আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য ও কাজের ধরন আছে)।’
২০১৬ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং বাংলাদেশ সফর করেন। সফরে মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হয়। সে সময় দেশের ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালকে দুই দেশের জন্য বন্ধুত্বের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। ২০২০ সালের মধ্যে ওই ২৭ প্রকল্পের সই হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো ঋণ চুক্তিতে বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল। তবে ২০২০ সালের মে পর্যন্ত এ ২৭ সমঝোতার মাত্র ছয়টি ঋণ চুক্তিতে রূপান্তর হয়েছে। আর ২১টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি চীন-বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যেই আরও নয়টি প্রকল্পে মোট ৬৪১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে এ মুহূর্তে চীনের ঋণে যেসব প্রকল্প চলমান, তার মধ্যে রয়েছে ৫০ কোটি ডলারের ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’, ২০ কোটি ডলারের ‘মর্ডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি’, ১৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-১)’ ও ৯১ কোটি ৭১ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-২)’ প্রকল্প। এ ছাড়া ‘ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-৩’ ও ‘কনস্ট্রাকশন অব টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলি’ প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করা যায়। এ দুই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ কোটি ও ৭০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণের অর্থ ছাড় করেছে চীন। এর বাইরে সররকারি ব্যবস্থানায় পায়রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ করছে চীনারা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চীনের এ আচরণে আমরা বিরক্ত হয়েছি কথাটা পুরোপুরি ঠিক না হলেও ভুল না। এটাকে এককথায় বিরক্ত না বলে অপ্রত্যাশিত বলাটা ঠিক হবে। কারণ, বিরক্ত শব্দের আলাদা অর্থ রয়েছে। চীনের একজন রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে আমরা এ রকম আচরণ প্রত্যাশা করিনি। চীনকে এ নিয়ে তলব করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করার বিষয়টি নিয়ে এ মুহূর্তে নানা হিসাব করা হচ্ছে। শুধু চীনা প্রকল্প নয়, চীনা টিকারও প্রয়োজন রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে জনগণের স্বার্থে যেটি ভালো হবে, আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।

ঢাকা: বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। এমন সুন্দর সম্পর্কের মধ্যেই গতকাল সোমবার হঠাৎ করেই বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কোয়াড নিয়ে বেশ কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যা সবাইকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। কূটনীতিকেরা মনে করেছন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা চাপ সামলাতে গিয়ে চীন নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তাই অন্যের ওপর গলা চরাচ্ছে তারা।
চীন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক শক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একমেরু বিশ্বকাঠামোয় নিজের হিস্যা বুঝে নিতে লড়ছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রও বসে নেই। এশিয়াসহ গোটা বিশ্বে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে নানা কৌশল ও জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। এ ক্ষেত্রে ইউরোপের পরীক্ষিত মিত্রদের নিজের পাশে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে চীনের প্রতিবেশীদের মধ্যেও অনেককে পাশে পাচ্ছে ওয়াশিংটন।
কোভিড-১৯, তাইওয়ান, হংকং, দক্ষিণ চীন সাগরসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর অবস্থান। চীনকে কোনঠাসা করতে মার্কিন নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে কয়েকটি জোট। এগুলো নিয়ে চীন আগে খুব একটা সোচ্চার না থাকলেও বর্তমানে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সোচ্চার হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে শুধু মার্কিন নেতৃত্বে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকটি দেশ নিজ স্বার্থে চীন বিরোধিতা করে আসছিল। তবে এবার পুরো অঞ্চলের দেশগুলোকে এ জোটে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্দো প্যাসিফিক কৌশলের (আইপিএস) মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের দেশগুলোকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র। গঠন করা হয়েছে কৌশলগত জোট কোয়াড, যেখানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
সম্প্রতি কোয়াডের দেশগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছে। আর এ বৈঠক থেকে আসিয়ানভুক্ত দেশ ও আইপিএসের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এতে টিকার ফর্মূলা দেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অর্থায়ন করবে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। আর টিকা উৎপাদন করবে ভারত। আর এটাই নতুন করে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনের জন্য। কারণ আসিয়ানের দেশগুলোর সবাই চীনের প্রতিবেশী। দীর্ঘ দিন ধরে চীন এ দেশগুলোর ওপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজের দিকে টানার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক টানাপোড়েন যত বাড়বে, অন্য দেশগুলাকে ততই বিপদে পড়তে হবে। বাংলাদেশ কখনোই কোনো নিরাপত্তা জোটে অংশ নেয়নি। কুয়েত বা ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের কাছে জোটভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ যায়নি। পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বাংলাদেশের কাঠামোতে সামরিক দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু সামরিক অংশ বাদ দিয়ে আইপিএসে যোগ দেওয়ার কথা বলেছে, তাই বাংলাদেশের ওপর চীনের তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতেই গতকাল সোমবার চীন অনেকটা হঠাৎ করেই এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডকে চীনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেইজিং। তাই চীন মনে করে, এতে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে।
এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ সমতা বজায় রেখেই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে। কোনো দেশের শত্রু বাংলাদেশের শত্রু হবে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। এটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বাইরে। বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য—জনগনের উন্নয়ণ। এ জন্য সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে বাংলাদেশ।
তবে এমন বক্তব্য সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের প্রেক্ষাপটেই এসেছে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা মিশনের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, চীনা রাষ্ট্রদূতকে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তর তিনি দিয়েছেন। প্রশ্নটি এই মুহূর্তে একটু অন্য রকম হলেও সমসাময়িক ছিল। বিশেষ করে চীন যেভাবে তার কূটনীতিকে পরিচালনা করে, তার তুলনায় এর উত্তর অন্য সময়ের থেকে বেশি জোরালো ছিল। বিগত দিনগুলোর পরিস্থিতি, চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঢাকা সফর, টিকা কূটনীতিসহ সামনের দিনে চীনের অবস্থানের একটি পরিষ্কার বার্তা এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিয়েছে বেইজিং।
চীনের হুমকির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ন্যাচারালি তিনি একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁরা হয়তো এটা চায় না। তিনি তাঁর বক্তব্য বলবেন। যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছেন, সে প্রতিষ্ঠানের লোকজন আমাদের কাছে অ্যাপ্রোচও করে নাই। এটা একটু আগ বাড়িয়ে বলা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে খুব একটা... উনি বলেছেন, ফাইন, দ্যাটস মাচ। এটা নিয়ে আমাদের বিশেষ বক্তব্য নাই। বাট উই উইল ডিসাইড হোয়াট টু ডু (কিন্তু আমরা ঠিক করবে যে, আমরা কী করব)। আমরা আমাদের জনগণের জন্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এত দিন ধরে দেখেছেন। বহু সময় বহু লোক বহু কিছু বলেছেন। কিন্তু আমাদের দেশের স্বার্থের ব্যপারে, আমাদের দেশের মঙ্গলের জন্য, যা যা করার, আমরা সেটাই করেছি। উই মেইনটেইন আ নন অ্যালাইন (জোটনিরপেক্ষ) এবং একটি ব্যালেন্স ফরেন পলিসি (ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি)। অ্যান্ড উই কনটিনিউ টু ডু ইট (আমরা এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখব)।’
চীনের বক্তব্যটিকে ভাষাগত দিক থেকে বিবেচনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূত প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিয়েছেন। আর চীনের তো একটি অবস্থান রয়েছেই। কোয়াড বা আইপিএস হলো একটি সামরিক জোট। ফলে এখানে চীন বাংলাদেশকে এর অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় না। ব্রিটিশরা বললে হয়তো আরও পরিশীলিত ভাষায় বলত। চীনারা ভাষাগত দিক থেকে একটু সরাসরি বলেছে।’
এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তাঁর মন্তব্যের জন্য তলব করা হবে কি না—জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ‘এখনো সে রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে, তলব করা হবে না। তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলব।’
এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা কী করি–না করি, তা আমরা সব মিডিয়াকে বলি না। উই হ্যাভ ভিশন...ওয়েস অব ডুয়িং থিংস (আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য ও কাজের ধরন আছে)।’
২০১৬ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং বাংলাদেশ সফর করেন। সফরে মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হয়। সে সময় দেশের ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালকে দুই দেশের জন্য বন্ধুত্বের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। ২০২০ সালের মধ্যে ওই ২৭ প্রকল্পের সই হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো ঋণ চুক্তিতে বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল। তবে ২০২০ সালের মে পর্যন্ত এ ২৭ সমঝোতার মাত্র ছয়টি ঋণ চুক্তিতে রূপান্তর হয়েছে। আর ২১টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি চীন-বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যেই আরও নয়টি প্রকল্পে মোট ৬৪১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে এ মুহূর্তে চীনের ঋণে যেসব প্রকল্প চলমান, তার মধ্যে রয়েছে ৫০ কোটি ডলারের ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’, ২০ কোটি ডলারের ‘মর্ডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি’, ১৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-১)’ ও ৯১ কোটি ৭১ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-২)’ প্রকল্প। এ ছাড়া ‘ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-৩’ ও ‘কনস্ট্রাকশন অব টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলি’ প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করা যায়। এ দুই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ কোটি ও ৭০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণের অর্থ ছাড় করেছে চীন। এর বাইরে সররকারি ব্যবস্থানায় পায়রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ করছে চীনারা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চীনের এ আচরণে আমরা বিরক্ত হয়েছি কথাটা পুরোপুরি ঠিক না হলেও ভুল না। এটাকে এককথায় বিরক্ত না বলে অপ্রত্যাশিত বলাটা ঠিক হবে। কারণ, বিরক্ত শব্দের আলাদা অর্থ রয়েছে। চীনের একজন রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে আমরা এ রকম আচরণ প্রত্যাশা করিনি। চীনকে এ নিয়ে তলব করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করার বিষয়টি নিয়ে এ মুহূর্তে নানা হিসাব করা হচ্ছে। শুধু চীনা প্রকল্প নয়, চীনা টিকারও প্রয়োজন রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে জনগণের স্বার্থে যেটি ভালো হবে, আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
৪ ঘণ্টা আগে
পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা...
৪ ঘণ্টা আগে
ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।
৫ ঘণ্টা আগেআইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।
গত এক বছরে চট্টগ্রাম নগরী ও রাউজানে প্রকাশ্যে গুলি করে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, এসব খুনের ঘটনার অধিকাংশতেই পেছন থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে। ওই গ্যাংস্টারদের সহযোগীরাই একের পর এক এসব হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। এসব হত্যার ঘটনায় কিছু রাজনৈতিক নেতাদেরও ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে।
একের পর এক এমন ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, খুনের সঙ্গে জড়িতরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আবার হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোও উদ্ধার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাকলিয়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যারা গ্রেপ্তার আছে, তারা মূলত পেশাদার সন্ত্রাসী। কোনো কিছুর বিনিময়ে তারা কিলিং মিশন পরিচালনা করছে। তাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই।
পুরোনো গ্যাংস্টারদের হাত
গত বছরের ২৯ আগস্ট অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে আওয়ামী লীগ নেতাসহ জোড়া খুন, একই বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁওতে ছাত্রলীগ কর্মী তাহসিন খুন; চলতি বছর ২৯ মার্চ বাকলিয়াতে প্রাইভেট কারে গুলি করে শিবিরের সাবেক ক্যাডার সরোয়ারের দুই সহযোগী বখতিয়ার হোসেন মানিক ও আবদুল্লাহ আল রিফাতকে হত্যা এবং গত ২৩ মে পতেঙ্গা সি বিচ এলাকায় নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ গত বুধবার সন্ধ্যায় বায়েজিদ থানাধীন চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির ঘোষিত এমপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারে সন্ত্রাসীদের হামলায় এরশাদউল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সরোয়ার হোসেন বাবলা নামে শিবিরের সাবেক এক ক্যাডার মারা যান। মূলত সরোয়ার হোসেন বাবলাকে টার্গেট করেই সন্ত্রাসীরা গুলি চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, নগরের চাঞ্চল্যকর এসব হত্যাকাণ্ডে নিহতদের অনেকে বাবলার অনুসারী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবর ও সরোয়ার হোসেন বাবলা কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসী দুবাইয়ে পলাতক সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে দুজন পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হন। এর পর থেকে এলাকার আধিপত্য নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।
চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক অনেকগুলো খুনের ঘটনায় এইট মার্ডারে আলোচিত পুরোনো গ্যাংস্টার সাজ্জাদ আলী খান ও হাবিব খানের অনুগত সহযোগীরা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। এসব ঘটনায় তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তাদের মধ্যে উঠতি শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদসহ অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। আবার অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একের পর এক হত্যায় অংশ নিচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যে, চট্টগ্রামে রাউজানে গুলি করে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ১২টিই রাজনৈতিক। ওই ১২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে অধিকাংশতেই বর্তমানে বাইরে দাপিয়ে বেড়ানো শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে আসার কথা জানায় রাউজান থানা-পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্যে, শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হান এইট মার্ডারে আলোচিত সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং কারাগারে থাকা ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতির সহযোগী। ছোট সাজ্জাদ ও রায়হান মিলে একাধিক কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল। ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের পর জেলে গেলে এই গ্যাংয়ের অস্ত্রভান্ডার এখন নিয়ন্ত্রণ করছে রায়হান।
বেশির ভাগ খুনের একই ধরন
চট্টগ্রাম নগর এবং রাউজান ও হাটহাজারীতে সংঘটিত সবগুলো হত্যাকাণ্ডেই সন্ত্রাসীদের অভিন্ন ধরন ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের আগে সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগীকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটা সময় বেঁধে দিচ্ছে। এরপর সুযোগ বুঝে হত্যা করছে। অনেকগুলো হত্যার ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে। সর্বশেষ সরোয়ার হোসেন বাবলা হত্যার ঘটনাও ঘটেছে একইভাবে।
গত ২৫ অক্টোবর উপজেলা রাউজানের চারাবটতল এলাকায় গুলি করে যুবদল কর্মীকে আলমগীর হোসেনকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর আলমগীরের একটি পুরোনো ভিডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়, যেখানে আলমগীর নিজেই একটি সভায় বলছেন, ‘আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বুধবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।
রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ১৫টি এলজি, ২টি রিভলবার, ২টি রাইফেল, বিদেশি পিস্তল ৩টি, একনলা বন্দুক ১টি ও ২টি দোনলা বন্দুক উদ্ধার করেছি। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোনটি কোন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে, তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা মুশকিল।’

চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।
গত এক বছরে চট্টগ্রাম নগরী ও রাউজানে প্রকাশ্যে গুলি করে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, এসব খুনের ঘটনার অধিকাংশতেই পেছন থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে। ওই গ্যাংস্টারদের সহযোগীরাই একের পর এক এসব হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। এসব হত্যার ঘটনায় কিছু রাজনৈতিক নেতাদেরও ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে।
একের পর এক এমন ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, খুনের সঙ্গে জড়িতরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আবার হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোও উদ্ধার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাকলিয়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যারা গ্রেপ্তার আছে, তারা মূলত পেশাদার সন্ত্রাসী। কোনো কিছুর বিনিময়ে তারা কিলিং মিশন পরিচালনা করছে। তাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই।
পুরোনো গ্যাংস্টারদের হাত
গত বছরের ২৯ আগস্ট অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে আওয়ামী লীগ নেতাসহ জোড়া খুন, একই বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁওতে ছাত্রলীগ কর্মী তাহসিন খুন; চলতি বছর ২৯ মার্চ বাকলিয়াতে প্রাইভেট কারে গুলি করে শিবিরের সাবেক ক্যাডার সরোয়ারের দুই সহযোগী বখতিয়ার হোসেন মানিক ও আবদুল্লাহ আল রিফাতকে হত্যা এবং গত ২৩ মে পতেঙ্গা সি বিচ এলাকায় নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ গত বুধবার সন্ধ্যায় বায়েজিদ থানাধীন চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির ঘোষিত এমপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারে সন্ত্রাসীদের হামলায় এরশাদউল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সরোয়ার হোসেন বাবলা নামে শিবিরের সাবেক এক ক্যাডার মারা যান। মূলত সরোয়ার হোসেন বাবলাকে টার্গেট করেই সন্ত্রাসীরা গুলি চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, নগরের চাঞ্চল্যকর এসব হত্যাকাণ্ডে নিহতদের অনেকে বাবলার অনুসারী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবর ও সরোয়ার হোসেন বাবলা কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসী দুবাইয়ে পলাতক সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে দুজন পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হন। এর পর থেকে এলাকার আধিপত্য নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।
চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক অনেকগুলো খুনের ঘটনায় এইট মার্ডারে আলোচিত পুরোনো গ্যাংস্টার সাজ্জাদ আলী খান ও হাবিব খানের অনুগত সহযোগীরা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। এসব ঘটনায় তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তাদের মধ্যে উঠতি শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদসহ অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। আবার অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একের পর এক হত্যায় অংশ নিচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যে, চট্টগ্রামে রাউজানে গুলি করে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ১২টিই রাজনৈতিক। ওই ১২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে অধিকাংশতেই বর্তমানে বাইরে দাপিয়ে বেড়ানো শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে আসার কথা জানায় রাউজান থানা-পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্যে, শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হান এইট মার্ডারে আলোচিত সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং কারাগারে থাকা ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতির সহযোগী। ছোট সাজ্জাদ ও রায়হান মিলে একাধিক কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল। ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের পর জেলে গেলে এই গ্যাংয়ের অস্ত্রভান্ডার এখন নিয়ন্ত্রণ করছে রায়হান।
বেশির ভাগ খুনের একই ধরন
চট্টগ্রাম নগর এবং রাউজান ও হাটহাজারীতে সংঘটিত সবগুলো হত্যাকাণ্ডেই সন্ত্রাসীদের অভিন্ন ধরন ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের আগে সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগীকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটা সময় বেঁধে দিচ্ছে। এরপর সুযোগ বুঝে হত্যা করছে। অনেকগুলো হত্যার ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে। সর্বশেষ সরোয়ার হোসেন বাবলা হত্যার ঘটনাও ঘটেছে একইভাবে।
গত ২৫ অক্টোবর উপজেলা রাউজানের চারাবটতল এলাকায় গুলি করে যুবদল কর্মীকে আলমগীর হোসেনকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর আলমগীরের একটি পুরোনো ভিডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়, যেখানে আলমগীর নিজেই একটি সভায় বলছেন, ‘আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বুধবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।
রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ১৫টি এলজি, ২টি রিভলবার, ২টি রাইফেল, বিদেশি পিস্তল ৩টি, একনলা বন্দুক ১টি ও ২টি দোনলা বন্দুক উদ্ধার করেছি। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোনটি কোন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে, তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা মুশকিল।’

বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে
১১ মে ২০২১
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
৪ ঘণ্টা আগে
পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা...
৪ ঘণ্টা আগে
ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।
৫ ঘণ্টা আগেমো. খলিলুর রহমান, বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ)

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এ ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজও থমকে গেছে। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলে তা অবগত করতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তিনি সেটিও করেননি বলে জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা দায়িত্ব নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে যান। তাঁদের একজন হলেন কৈলাগ ইউপির মো. কায়ছার-এ-হাবীব। তিনি সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের সমর্থনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক মামলায় তিনি আসামি হন। সে সময় কিছুদিন অফিসে না এলেও পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট থেকে দুই মাসের জামিন নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য পরিষদে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তীব্র হলে তিনি আবার অফিসে আসা বন্ধ করেন দেন। গত ১০ আগস্ট রাকিব নামের এক যুবককে হত্যার পর তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়। এরপর থেকে তিনি আর পরিষদে আসেননি। এমনকি উপজেলা মাসিক সভায়ও তাঁর উপস্থিতি দেখা যায়নি।
সরেজমিনে কৈলাগ ইউপিতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ। প্রশাসনিক কর্মকর্তা নয়ন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি গত ১২ আগস্ট দায়িত্ব নিয়েছি। যোগদানের পর থেকে চেয়ারম্যানকে কখনো অফিসে দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কাজ করি; কিন্তু চেয়ারম্যান কীভাবে স্বাক্ষর দেন বা অনুমোদন দেন, তা জানি না।’
জন্মসনদ, ওয়ারিশান ও পরিচয়পত্র সংশোধনের কাজে আসা কয়েকজন সেবাপ্রার্থী জানান, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে তাঁরা সেবা পাচ্ছেন না। ফলে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ইউপি সদস্য মো. সোহেল রানা বলেন, এত মামলা থাকার পরও তিনি কীভাবে এখনো চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মো. কায়ছার-এ-হাবীব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় আমি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে অফিস করেছি। রাকিব হত্যা মামলায় আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে। আত্মগোপনে থাকলেও আমি অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ শূন্য ঘোষণা করা যেতে পারে। অযৌক্তিক বা দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে তাঁর পদ বাতিল বা সাময়িক বরখাস্ত করা যায়। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্যানেল চেয়ারম্যান তাঁর দায়িত্ব পালন করেন, আর অযৌক্তিকভাবে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকলে তাঁর পদ শূন্য ঘোষণা হতে পারে।
বাজিতপুরের ইউএনও ফারশিদ বিন এনাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের সেবায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
কিশোরগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিএলজি) জেবুন্নাহার শাম্মীর সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পাঠানো খুদে বার্তারও কোনো উত্তর দেননি।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এ ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজও থমকে গেছে। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলে তা অবগত করতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তিনি সেটিও করেননি বলে জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা দায়িত্ব নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে যান। তাঁদের একজন হলেন কৈলাগ ইউপির মো. কায়ছার-এ-হাবীব। তিনি সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের সমর্থনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক মামলায় তিনি আসামি হন। সে সময় কিছুদিন অফিসে না এলেও পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট থেকে দুই মাসের জামিন নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য পরিষদে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তীব্র হলে তিনি আবার অফিসে আসা বন্ধ করেন দেন। গত ১০ আগস্ট রাকিব নামের এক যুবককে হত্যার পর তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়। এরপর থেকে তিনি আর পরিষদে আসেননি। এমনকি উপজেলা মাসিক সভায়ও তাঁর উপস্থিতি দেখা যায়নি।
সরেজমিনে কৈলাগ ইউপিতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ। প্রশাসনিক কর্মকর্তা নয়ন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি গত ১২ আগস্ট দায়িত্ব নিয়েছি। যোগদানের পর থেকে চেয়ারম্যানকে কখনো অফিসে দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কাজ করি; কিন্তু চেয়ারম্যান কীভাবে স্বাক্ষর দেন বা অনুমোদন দেন, তা জানি না।’
জন্মসনদ, ওয়ারিশান ও পরিচয়পত্র সংশোধনের কাজে আসা কয়েকজন সেবাপ্রার্থী জানান, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে তাঁরা সেবা পাচ্ছেন না। ফলে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ইউপি সদস্য মো. সোহেল রানা বলেন, এত মামলা থাকার পরও তিনি কীভাবে এখনো চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মো. কায়ছার-এ-হাবীব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় আমি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে অফিস করেছি। রাকিব হত্যা মামলায় আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে। আত্মগোপনে থাকলেও আমি অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ শূন্য ঘোষণা করা যেতে পারে। অযৌক্তিক বা দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে তাঁর পদ বাতিল বা সাময়িক বরখাস্ত করা যায়। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্যানেল চেয়ারম্যান তাঁর দায়িত্ব পালন করেন, আর অযৌক্তিকভাবে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকলে তাঁর পদ শূন্য ঘোষণা হতে পারে।
বাজিতপুরের ইউএনও ফারশিদ বিন এনাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের সেবায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
কিশোরগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিএলজি) জেবুন্নাহার শাম্মীর সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পাঠানো খুদে বার্তারও কোনো উত্তর দেননি।

বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে
১১ মে ২০২১
চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা...
৪ ঘণ্টা আগে
ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।
৫ ঘণ্টা আগেআবুল কাশেম, সাঁথিয়া (পাবনা)

পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা পাকা আমন ধান পানির নিচে ডুবে আছে।
এ ছাড়া চলতি রবি মৌসুমে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন ও সরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমনটি হচ্ছে অভিযোগ করে বাঁধ অপসারণের দাবিতে ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকেরা।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ক্যানাল দিয়ে বর্ষা শেষে সাঁথিয়ার প্রায় ১৫টি বিলের পানি নিষ্কাশন হয়। কিন্তু মাছ ধরার জন্য প্রায় ১০টি স্থানে সুতি জালের বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি স্থানে ইতিমধ্যে জাল টানানো হয়েছে। ফলে মুক্তার ধর, সোনাই বিল, ঘুঘুদহ বিল, জামাইদহ, বড়গ্রাম বিল, খোলসা খালি বিল, কাটিয়াদহ বিল, গাঙভাঙা বিল ও টেংরাগাড়ী বিলের পানি বের হতে না পারায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
অন্যদিকে পানি না নামায় কৃষকেরা পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। প্রতিবছর কাদামাটির ওপর বীজতলা তৈরি হলেও এবার জমিতে পানি থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। বিলপাড়ে কৃষকেরা বীজতলার জন্য হাজার হাজার বস্তা ছাই মজুত করে রেখেছেন, পানি নামলেই বীজতলা তৈরি করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ক্যানালের বিভিন্ন অংশে সুফলভোগী মৎস্যজীবীরা লিজ নিয়ে মাছের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছেন। কিন্তু মৎস্য অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকির অভাবে লিজকে পুঁজি করে প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় এসব সুফলভোগী সুতি জালের অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করেন। প্রতিবছর যা কৃষকদের জন্য বড় বিপদ হয়ে দেখা দেয়।
কাশিনাথপুর ইউনিয়নের দোয়ারগাড়ী বিলে দেখা গেছে, কোমরসমান পানিতে আধা পাকা ধান পড়ে আছে। কোথাও কোথাও কৃষকেরা হাঁটুপানিতে জমি পরিষ্কার করে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, শামুকজানী বাজারের দক্ষিণে, দত্তপাড়া গ্রামের পশ্চিমে, বড়গ্রাম, তালপট্টি নামক স্থানের ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে, সৈয়দপুর মৌজা এবং পুন্ডুরিয়া ব্রিজের পাশে অন্তত ৫টি স্থানে সুতি জালের বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তালাই, পলিথিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি এসব বাঁধে কচুরিপানা জমে পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর গ্রামের মোস্তফা প্রামাণিক বলেন, ‘মাছের অভয়ারণ্যের জন্য লিজ নিয়ে মাছ শিকার করি। তবে সুতি জালের জন্য লিজ নেওয়া হয়নি।’
অনেক চেষ্টার পরেও অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দেওয়া ব্যক্তিদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বাঁধে মাছ শিকার করা ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে লিজ নিয়ে মাছ শিকার করছি।’
এ বিষয়ে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছশিকারের জন্য কাউকে কোনো লিজ দেওয়া হয়নি।’ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সামসুল রহমান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চালাই। সুতি জাল কেটে দিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। তাঁরা তিন দিনের মধ্যে বাঁশ অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন। তা না করলে আবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাঁথিয়া ইউএনও রিজু তামান্না বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি। এসি ল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা সময় চেয়েছেন। দ্রুত অপসারণ না হলে মৎস্য অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে বাঁধ উচ্ছেদ করা হবে।’

পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা পাকা আমন ধান পানির নিচে ডুবে আছে।
এ ছাড়া চলতি রবি মৌসুমে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন ও সরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমনটি হচ্ছে অভিযোগ করে বাঁধ অপসারণের দাবিতে ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকেরা।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ক্যানাল দিয়ে বর্ষা শেষে সাঁথিয়ার প্রায় ১৫টি বিলের পানি নিষ্কাশন হয়। কিন্তু মাছ ধরার জন্য প্রায় ১০টি স্থানে সুতি জালের বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি স্থানে ইতিমধ্যে জাল টানানো হয়েছে। ফলে মুক্তার ধর, সোনাই বিল, ঘুঘুদহ বিল, জামাইদহ, বড়গ্রাম বিল, খোলসা খালি বিল, কাটিয়াদহ বিল, গাঙভাঙা বিল ও টেংরাগাড়ী বিলের পানি বের হতে না পারায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
অন্যদিকে পানি না নামায় কৃষকেরা পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। প্রতিবছর কাদামাটির ওপর বীজতলা তৈরি হলেও এবার জমিতে পানি থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। বিলপাড়ে কৃষকেরা বীজতলার জন্য হাজার হাজার বস্তা ছাই মজুত করে রেখেছেন, পানি নামলেই বীজতলা তৈরি করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ক্যানালের বিভিন্ন অংশে সুফলভোগী মৎস্যজীবীরা লিজ নিয়ে মাছের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছেন। কিন্তু মৎস্য অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকির অভাবে লিজকে পুঁজি করে প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় এসব সুফলভোগী সুতি জালের অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করেন। প্রতিবছর যা কৃষকদের জন্য বড় বিপদ হয়ে দেখা দেয়।
কাশিনাথপুর ইউনিয়নের দোয়ারগাড়ী বিলে দেখা গেছে, কোমরসমান পানিতে আধা পাকা ধান পড়ে আছে। কোথাও কোথাও কৃষকেরা হাঁটুপানিতে জমি পরিষ্কার করে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, শামুকজানী বাজারের দক্ষিণে, দত্তপাড়া গ্রামের পশ্চিমে, বড়গ্রাম, তালপট্টি নামক স্থানের ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে, সৈয়দপুর মৌজা এবং পুন্ডুরিয়া ব্রিজের পাশে অন্তত ৫টি স্থানে সুতি জালের বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তালাই, পলিথিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি এসব বাঁধে কচুরিপানা জমে পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর গ্রামের মোস্তফা প্রামাণিক বলেন, ‘মাছের অভয়ারণ্যের জন্য লিজ নিয়ে মাছ শিকার করি। তবে সুতি জালের জন্য লিজ নেওয়া হয়নি।’
অনেক চেষ্টার পরেও অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দেওয়া ব্যক্তিদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বাঁধে মাছ শিকার করা ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে লিজ নিয়ে মাছ শিকার করছি।’
এ বিষয়ে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছশিকারের জন্য কাউকে কোনো লিজ দেওয়া হয়নি।’ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সামসুল রহমান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চালাই। সুতি জাল কেটে দিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। তাঁরা তিন দিনের মধ্যে বাঁশ অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন। তা না করলে আবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাঁথিয়া ইউএনও রিজু তামান্না বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি। এসি ল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা সময় চেয়েছেন। দ্রুত অপসারণ না হলে মৎস্য অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে বাঁধ উচ্ছেদ করা হবে।’

বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে
১১ মে ২০২১
চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।
৫ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে খেজুর রসের মৌসুম
রিমন রহমান, রাজশাহী

ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।
প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ দিকে রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলায় শুরু হয় খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরির মৌসুম। রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করে পাতা হয় মাটির হাঁড়ি। সারা রাত ধরে ফোঁটা ফোঁটা রস জমে হাঁড়িতে। সকালে সেই রস নিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির ব্যস্ততা। বড় চুলায় ফুটন্ত রসের ঘ্রাণে তখন মিষ্টি হয়ে ওঠে পুরো গ্রাম।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ১১ লাখ ৮ হাজার ১৮টি। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ২৫ লিটার রস পাওয়া যায়, যা থেকে প্রায় ১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে রস সংগ্রহ মৌসুম। গত বছর রাজশাহীতে প্রায় ১০ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার গাছির আয় হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। চলতি মৌসুমে আরও বেশি গুড় উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের গাছি মো. ওবায়দুল বলেন, গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। চিনির দাম কম হওয়ায় অনেকে আবার রসের সঙ্গে চিনিও মিশিয়ে দিচ্ছেন। এতে লাভ বেশি হচ্ছে। তবে যাঁরা চিনি দিয়ে গুড় তৈরি করেন না, তাঁদের গুড়ের দাম কিছুটা বেশি। এখন অনলাইনে খাঁটি গুড়ের ভালো চাহিদা আছে।
গত বুধবার ভোরে পুঠিয়ার ভুবননগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে রস নামাচ্ছেন মো. রানা। তাঁর বাইসাইকেলে দুটি বড় বড় জার বাঁধা। গাছ থেকে নামানো রস নেওয়া হচ্ছে ওই জারে। রানা বলেন, ‘আমার ইজারা নেওয়া ৫২টি গাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লিটার রস পাই। এতে ১০-১১ কেজি গুড় হয়।’ একই গ্রামের জালাল উদ্দিনের বাড়িতে দেখা গেল, তাঁর স্ত্রী রওশন আরা রস জ্বাল দিচ্ছেন। রওশন বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতেই ১৬০ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি হচ্ছে।
পুঠিয়ার জরমডাঙ্গা গ্রামের গাছি সাইফুল ইসলাম মিলু বলেন, যাঁদের গাছ আছে তাঁদের বেশির ভাগই রস নামাতে পারেন না। তাই তাঁরা এক মৌসুমের জন্য গাছ ইজারা দিয়ে দেন। গাছ দেখে ইজারার দাম হয়। কোনো গাছের জন্য দিতে হয় ৫০০ টাকা, কোনোটির ইজারামূল্য ১ হাজার। একজন গাছি সাধারণত ৩০ থেকে ১০০টি গাছ ইজারা নেন।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রাজশাহীর খেজুর গুড়ের সুনাম সারা দেশে। গেল মৌসুমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয়েছে। এবার আরও বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। তবে কিছু অসাধু গাছি গুড়ের সঙ্গে চিনি মেশাচ্ছেন, যা রাজশাহীর খাঁটি গুড়ের সুনামের জন্য হুমকি।’

ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।
প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ দিকে রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলায় শুরু হয় খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরির মৌসুম। রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করে পাতা হয় মাটির হাঁড়ি। সারা রাত ধরে ফোঁটা ফোঁটা রস জমে হাঁড়িতে। সকালে সেই রস নিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির ব্যস্ততা। বড় চুলায় ফুটন্ত রসের ঘ্রাণে তখন মিষ্টি হয়ে ওঠে পুরো গ্রাম।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ১১ লাখ ৮ হাজার ১৮টি। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ২৫ লিটার রস পাওয়া যায়, যা থেকে প্রায় ১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে রস সংগ্রহ মৌসুম। গত বছর রাজশাহীতে প্রায় ১০ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার গাছির আয় হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। চলতি মৌসুমে আরও বেশি গুড় উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের গাছি মো. ওবায়দুল বলেন, গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। চিনির দাম কম হওয়ায় অনেকে আবার রসের সঙ্গে চিনিও মিশিয়ে দিচ্ছেন। এতে লাভ বেশি হচ্ছে। তবে যাঁরা চিনি দিয়ে গুড় তৈরি করেন না, তাঁদের গুড়ের দাম কিছুটা বেশি। এখন অনলাইনে খাঁটি গুড়ের ভালো চাহিদা আছে।
গত বুধবার ভোরে পুঠিয়ার ভুবননগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে রস নামাচ্ছেন মো. রানা। তাঁর বাইসাইকেলে দুটি বড় বড় জার বাঁধা। গাছ থেকে নামানো রস নেওয়া হচ্ছে ওই জারে। রানা বলেন, ‘আমার ইজারা নেওয়া ৫২টি গাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লিটার রস পাই। এতে ১০-১১ কেজি গুড় হয়।’ একই গ্রামের জালাল উদ্দিনের বাড়িতে দেখা গেল, তাঁর স্ত্রী রওশন আরা রস জ্বাল দিচ্ছেন। রওশন বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতেই ১৬০ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি হচ্ছে।
পুঠিয়ার জরমডাঙ্গা গ্রামের গাছি সাইফুল ইসলাম মিলু বলেন, যাঁদের গাছ আছে তাঁদের বেশির ভাগই রস নামাতে পারেন না। তাই তাঁরা এক মৌসুমের জন্য গাছ ইজারা দিয়ে দেন। গাছ দেখে ইজারার দাম হয়। কোনো গাছের জন্য দিতে হয় ৫০০ টাকা, কোনোটির ইজারামূল্য ১ হাজার। একজন গাছি সাধারণত ৩০ থেকে ১০০টি গাছ ইজারা নেন।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রাজশাহীর খেজুর গুড়ের সুনাম সারা দেশে। গেল মৌসুমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয়েছে। এবার আরও বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। তবে কিছু অসাধু গাছি গুড়ের সঙ্গে চিনি মেশাচ্ছেন, যা রাজশাহীর খাঁটি গুড়ের সুনামের জন্য হুমকি।’

বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির সময়েও চীনকে বন্ধুর মতো করেই পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এই কয়েক দিন আগে যখন করোনার টিকা পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে দোলাচল শুরু হয় তখনো চিন তার সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে
১১ মে ২০২১
চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
৪ ঘণ্টা আগে
পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা...
৪ ঘণ্টা আগে