আব্দুর রহমান
একটা সময় পশ্চিমা বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সৌদি আরবের পরিচিতি ছিল ‘মূল্যবোধ বিবর্জিত’ এক রাষ্ট্র হিসেবে। একসময় দেশটিকে বিশ্ব থেকে ‘একঘরে’ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই সৌদিই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে একধরনের লুকোচুরিপূর্ণ মনোভাব দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গে পশ্চিমা নেতাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ঢাক গুড়গুড় শুরু হয় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে। সেই তালিকায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি এমবিএসকে খাসোগি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও অভিযোগ করেছিলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানির সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র ও বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব দেশটির জন্য অন্যতম ভরসা হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে মূল কারিগর একজনই—এমবিএস। বাইডেন কি সম্পর্কের উন্নয়ন করতে গিয়ে তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে আসবেন?
যদিও বাইডেন বলেছেন, তিনি তাঁর অবস্থান বদলাবেন না এবং তিনি সৌদি আরবে যাচ্ছেন দেশটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে; কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি না। আমি একটি আন্তর্জাতিক আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি এবং মোহাম্মদ বিন সালমান এই আলোচনার একটি অংশ হতে যাচ্ছেন।’
বাইডেনের এই কৌশলী বক্তব্য তাঁর অসহায় অবস্থা লুকাতে পারেনি। জ্বালানি ও নিরাপত্তা ইস্যু এই তিক্ত স্মৃতি ভুলে আবারও মৈত্রীর পথে হাঁটতে অনেকটা বাধ্য করেছে বাইডেন প্রশাসনকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা তাঁকে সৌদি ইস্যুতে নমনীয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদি ইস্যুতে বাইডেন এতটা অসহায় কেন? পুরোনো মৈত্রী পুনঃস্থাপন তো কোনো দোষের বিষয় নয়। তাহলে? হ্যাঁ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নির্বাচন-পূর্ব জো বাইডেনের নানা বক্তব্য, ট্রাম্প জমানায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, জ্যারেড কুশনারসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিন সালমানের সম্পর্ক নিয়ে করা নানা মন্তব্য, জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমবিএসকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিসহ নানা বিষয়। বাইডেন সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। এর সঙ্গে ইসরায়েলের জেরুজেলেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের প্রসঙ্গ এবং সে ঘটনায় বাইডেনের অবস্থানকে স্মরণে আনলে এবারের সফর নিয়ে তাঁর অস্বস্তির কারণটি বোঝা যাবে। কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি এমনই যে, বাইডেন নাচার হয়ে পড়েছেন।
জো বাইডেন শুক্রবার দেড় দিনের সফরে সৌদি আরবে পৌঁছান। সফরের প্রথম দিনেই বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের কথা আছে। চলমান আন্তর্জাতিক সংকটের মধ্যে সম্পর্ক ঢেলে সাজানোই বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী ও শীর্ষ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশটির সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা ক্রমেই বাড়ছে। রাশিয়ার সঙ্গে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের আগামী ৩ আগস্ট বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওপেক প্লাসের অঘোষিত নেতা যে আবার সৌদি আরব। এই অবস্থায় বাইডেন কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাকব সুলিভান মনে করেন, সৌদি আরব জ্বালানি তেল সরবরাহ বাড়াতে সম্মত হতে সময় নেবে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির হার চার দশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়ানো জরুরি, কিন্তু খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে না বলে মনে হচ্ছে।’
মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক থাকলেও ইসরায়েলের পর দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় সৌদি আরবকে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কোনো দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়নি। বরং জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলনকারীদের সংগঠন ‘ওপেক প্লাসকে’ বেশি তেল উত্তোলনে সম্মত করানো যায়নি। উল্টো রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে লেনদেন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি ও অঞ্চলটির দু-একটি দেশ।
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিজ স্বার্থেই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন জরুরি। কিন্তু সৌদি আরব কি এতে সম্মত হবে? কিংবা মোহাম্মদ বিন সালমান প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেনের যে অতীত মনোভাব, তা কি এই এক সাক্ষাতেই বদলে যাবে? এর উত্তর সম্ভবত ‘না’। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত সৌদি রাষ্ট্রদূত রীমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দরকার, আমাদের দরকার নিরাপত্তার। তার মানে এই নয় যে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে স্রেফ “তেলের বিনিময়ে নিরাপত্তা” হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা দ্রুত যেভাবে বদলাচ্ছে, তাতে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ভূমিকা আছে।’
সৌদি বাইডেনের দূতিয়ালিতে ইসরায়েলি বিমানের জন্য আকাশসীমা খুলে দিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও সৌদির তরফ থেকে বাইডেনের সফর নিয়ে অতটা উচ্ছ্বসিত মনোভাব না দেখানোয় এটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে দেশটি, আরও নির্দিষ্ট করে বললে এমবিএস ‘নরম বাইডেন’ দেখতে চান।
সৌদি কূটনীতিক রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদের কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে, সৌদি আরবের চাহিদা নিরাপত্তার বাইরে আরও বেশি কিছু। বেশি কিছু কী, তা এখনই স্পষ্ট না হলেও ধারণা করা যেতে পারে, বিশ্বের তেলের বাজারে আধিপত্য এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে নেতৃত্বের বিষয়টি সামনে আসতে পারে। আর এসব বিষয় যদি যুক্তরাষ্ট্রকে পূরণ করতে হয়, তবে বাইডেন নাচতে নেমে ঘোমটা দিলে চলবে না। তাঁকে ঘোমটা খুলেই নাচতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ও রয়টার্স
একটা সময় পশ্চিমা বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সৌদি আরবের পরিচিতি ছিল ‘মূল্যবোধ বিবর্জিত’ এক রাষ্ট্র হিসেবে। একসময় দেশটিকে বিশ্ব থেকে ‘একঘরে’ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই সৌদিই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে একধরনের লুকোচুরিপূর্ণ মনোভাব দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গে পশ্চিমা নেতাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ঢাক গুড়গুড় শুরু হয় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে। সেই তালিকায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি এমবিএসকে খাসোগি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও অভিযোগ করেছিলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানির সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র ও বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব দেশটির জন্য অন্যতম ভরসা হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে মূল কারিগর একজনই—এমবিএস। বাইডেন কি সম্পর্কের উন্নয়ন করতে গিয়ে তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে আসবেন?
যদিও বাইডেন বলেছেন, তিনি তাঁর অবস্থান বদলাবেন না এবং তিনি সৌদি আরবে যাচ্ছেন দেশটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে; কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি না। আমি একটি আন্তর্জাতিক আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি এবং মোহাম্মদ বিন সালমান এই আলোচনার একটি অংশ হতে যাচ্ছেন।’
বাইডেনের এই কৌশলী বক্তব্য তাঁর অসহায় অবস্থা লুকাতে পারেনি। জ্বালানি ও নিরাপত্তা ইস্যু এই তিক্ত স্মৃতি ভুলে আবারও মৈত্রীর পথে হাঁটতে অনেকটা বাধ্য করেছে বাইডেন প্রশাসনকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা তাঁকে সৌদি ইস্যুতে নমনীয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদি ইস্যুতে বাইডেন এতটা অসহায় কেন? পুরোনো মৈত্রী পুনঃস্থাপন তো কোনো দোষের বিষয় নয়। তাহলে? হ্যাঁ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নির্বাচন-পূর্ব জো বাইডেনের নানা বক্তব্য, ট্রাম্প জমানায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, জ্যারেড কুশনারসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিন সালমানের সম্পর্ক নিয়ে করা নানা মন্তব্য, জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমবিএসকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিসহ নানা বিষয়। বাইডেন সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। এর সঙ্গে ইসরায়েলের জেরুজেলেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের প্রসঙ্গ এবং সে ঘটনায় বাইডেনের অবস্থানকে স্মরণে আনলে এবারের সফর নিয়ে তাঁর অস্বস্তির কারণটি বোঝা যাবে। কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি এমনই যে, বাইডেন নাচার হয়ে পড়েছেন।
জো বাইডেন শুক্রবার দেড় দিনের সফরে সৌদি আরবে পৌঁছান। সফরের প্রথম দিনেই বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের কথা আছে। চলমান আন্তর্জাতিক সংকটের মধ্যে সম্পর্ক ঢেলে সাজানোই বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী ও শীর্ষ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশটির সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা ক্রমেই বাড়ছে। রাশিয়ার সঙ্গে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের আগামী ৩ আগস্ট বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওপেক প্লাসের অঘোষিত নেতা যে আবার সৌদি আরব। এই অবস্থায় বাইডেন কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাকব সুলিভান মনে করেন, সৌদি আরব জ্বালানি তেল সরবরাহ বাড়াতে সম্মত হতে সময় নেবে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির হার চার দশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়ানো জরুরি, কিন্তু খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে না বলে মনে হচ্ছে।’
মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক থাকলেও ইসরায়েলের পর দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় সৌদি আরবকে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কোনো দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়নি। বরং জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলনকারীদের সংগঠন ‘ওপেক প্লাসকে’ বেশি তেল উত্তোলনে সম্মত করানো যায়নি। উল্টো রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে লেনদেন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি ও অঞ্চলটির দু-একটি দেশ।
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিজ স্বার্থেই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন জরুরি। কিন্তু সৌদি আরব কি এতে সম্মত হবে? কিংবা মোহাম্মদ বিন সালমান প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেনের যে অতীত মনোভাব, তা কি এই এক সাক্ষাতেই বদলে যাবে? এর উত্তর সম্ভবত ‘না’। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত সৌদি রাষ্ট্রদূত রীমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দরকার, আমাদের দরকার নিরাপত্তার। তার মানে এই নয় যে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে স্রেফ “তেলের বিনিময়ে নিরাপত্তা” হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা দ্রুত যেভাবে বদলাচ্ছে, তাতে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ভূমিকা আছে।’
সৌদি বাইডেনের দূতিয়ালিতে ইসরায়েলি বিমানের জন্য আকাশসীমা খুলে দিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও সৌদির তরফ থেকে বাইডেনের সফর নিয়ে অতটা উচ্ছ্বসিত মনোভাব না দেখানোয় এটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে দেশটি, আরও নির্দিষ্ট করে বললে এমবিএস ‘নরম বাইডেন’ দেখতে চান।
সৌদি কূটনীতিক রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদের কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে, সৌদি আরবের চাহিদা নিরাপত্তার বাইরে আরও বেশি কিছু। বেশি কিছু কী, তা এখনই স্পষ্ট না হলেও ধারণা করা যেতে পারে, বিশ্বের তেলের বাজারে আধিপত্য এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে নেতৃত্বের বিষয়টি সামনে আসতে পারে। আর এসব বিষয় যদি যুক্তরাষ্ট্রকে পূরণ করতে হয়, তবে বাইডেন নাচতে নেমে ঘোমটা দিলে চলবে না। তাঁকে ঘোমটা খুলেই নাচতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ও রয়টার্স
চার বছর আগে, ২০২১ সালের জুনে, জেনেভায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পুতিনের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তখনো রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালায়নি। কিন্তু সেই বছরের শেষের দিকেই পুতিন ইউক্রেন সীমান্তে হাজার হাজার সেনা পাঠান এবং যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা চালানো হয়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার
১ দিন আগেআলাস্কার শান্ত শহর অ্যাঙ্কোরেজ হঠাৎ পরিণত হয়েছে বিশ্বরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠক হতে চলেছে শহরটিতে। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের ফয়সালাসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
১ দিন আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়াসংলগ্ন অঙ্গরাজ্য আলাস্কায় অবস্থিত যৌথ ঘাঁটি এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন। বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয়
২ দিন আগেনিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, তিনি ইতিমধ্যে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন এবং নতুন কোনো শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না। একই সময়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও মার্কিন পণ্যে তাদের শুল্ক স্থগিতাদেশ একই মেয়াদে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পূর্বের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে।
৪ দিন আগে