মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আলোচকেরা গাজায় প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি বাস্তবায়নের কাছাকাছি পৌঁছেছেন। হামাসের হাতে এখনো ১০০ জনের অধিক জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই চুক্তি বাস্তবায়ন হতে পারে। চুক্তিটি বাস্তবায়ন হলে আরব অঞ্চলে বইতে পারে শান্তির সুবাতাস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, আলোচকেরা গত ১০ দিনে ইসরায়েল এবং হামাসের প্রস্তাবগুলোকে একত্রিত করে একটি লিখিত খসড়া চুক্তি তৈরি করেছেন, যা নিয়ে আজ রোববার প্যারিসে আলোচনা হবে। তবে এখনো গুরুত্বপূর্ণ মতপার্থক্যগুলোর সমাধান হয়নি, এরপরেও আলোচকেরা আশাবাদী যে, চূড়ান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন নাগালের মধ্যে রয়েছে।
মতপার্থক্যগুলো দূর করতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত শুক্রবার হামাসের হয়ে মধ্যস্থতাকারী মিশর এবং কাতারের নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে ফোনে কথা বলেছেন।
তিনি সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম জে বার্নসকে ইসরায়েলি, মিসরীয় এবং কাতারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ রোববারের আলোচনার জন্য প্যারিসে পাঠিয়েছেন। বার্নস আলোচনা যথেষ্ট এগিয়ে নিতে পারলে বাইডেন তাঁর মধ্যপ্রাচ্যের সমন্বয়কারী ব্রেট ম্যাকগার্ককেও প্যারিসে পাঠাতে পারেন, যিনি চুক্তি চূড়ান্ত করতে সবেমাত্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে ওয়াশিংটনে ফিরেছেন।
গত শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউস কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানির সঙ্গে বাইডেনের কথোপকথনের সংক্ষিপ্তসার এক বিবৃতিতে তুলে ধরে বলেছে, উভয় নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, দীর্ঘস্থায়ী মানবিক বিরতির জন্য জিম্মি বিনিময়ই চুক্তির মূল বিষয়। তাঁরা গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা সম্পর্কে একমত হয়েছেন। তাঁরা জরুরি পরিস্থিতির ওপর জোর দিয়েছেন এবং আলোচনাকে এগিয়ে নিতে আলোচকদের মধ্যে সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে নিজের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা জিম্মিদের মধ্যে ১১০ জনকে ফিরিয়ে এনেছি এবং বাকিদের সবাইকে ঘরে ফেরাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জিম্মিদের ফেরাতে চব্বিশ ঘণ্টাই কাজ করছি।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। ওই সময় প্রায় ২৪০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নেয় হামাস। প্রতিশোধপরায়ণ ইসরায়েল পাল্টা হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার গাজাবাসীকে হত্যা করেছে। তাঁদের মধ্য অধিকাংশই নারী ও শিশু। আর নিহতদের মধ্যে কতজন হামাস যোদ্ধা রয়েছেন তা এখনো অস্পষ্ট।
গত বছরের নভেম্বরে কাতার এবং মিসরের সঙ্গে বাইডেনের মধ্যস্থতায় মাত্র সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ১০০ জিম্মি ও ২৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দী বিনিময় হয়। তবে ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়া আরও ১৩৬ জন হামাসের হাতে বন্দী রয়েছে, যার মধ্যে ৬ আমেরিকান নাগরিক রয়েছেন। যদিও তাঁদের মধ্যে প্রায় দুই ডজন ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের চুক্তিটি আগেরটির চেয়ে আরও বিস্তৃত হবে। প্রথম পর্যায়ে, যুদ্ধ প্রায় ৩০ দিনের বিরতি থাকবে। এই সময়ে নারী, বয়স্ক এবং আহত জিম্মিদের হামাস মুক্তি দেবে। একই সময় উভয় পক্ষ দ্বিতীয় পর্যায়ের বিশদ বিবরণ নিয়ে কাজ করবে। একমত হতে পারলে ইসরায়েলি সৈন্য এবং বেসামরিক পুরুষ জিম্মিদের বিনিময়ে আরও ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি থাকবে। তবে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির অনুপাত নিয়ে আলোচনা এখনো বাকি আছে। এটি একটি সমাধানযোগ্য সমস্যা হিসাবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া, এই চুক্তি গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে।
হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে চুক্তিটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হলেও চুক্তিতে অংশ নেওয়া আলোচকেরা মনে করছেন, যুদ্ধ আর আগের মাত্রায় শুরু হবে না। এই যুদ্ধবিরতি আরও কূটনৈতিক আলাপের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা সংঘর্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাইডেন খানিকটা হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পাবেন। যিনি ইসরায়েলের পাল্টা হামলাকে সমর্থন দিয়ে নিজের দলের বামপন্থীদের তোপের মুখে রয়েছেন। এদিকে হামাসকে ধ্বংস করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে যুদ্ধ শুরু করা নেতানিয়াহুও এখন জিম্মিদের মুক্তির জন্যই সবচেয়ে বড় চাপের মধ্যে পড়েছেন।
তৎসত্ত্বেও, নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান নমনীয় করতে ও কৌশল পরিবর্তনে আমেরিকান এবং আন্তর্জাতিক চাপকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এমনকি গত শনিবারের বিবৃতিতেও সেই সংকল্পের পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, ‘আমরা কাজটি শেষ করতে, হামাসকে নির্মূল করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দীর্ঘসময় লাগলেও লক্ষ্য থেকে আমরা পিছপা হব না।’
নতুন এই চুক্তি বাস্তবায়ন শুধু বাইডেনের জন্যই স্বস্তিদায়ক নয়, বরং এটি বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতাকে হ্রাস করতে পারে। কেননা নভেম্বরে ৭ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় হুতি এবং হিজবুল্লাহর মতো অন্যান্য ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো আমেরিকান, ইসরায়েলি এবং অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা থেকে বিরত ছিল।
নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরে হামাস এবং ইসরায়েল তাঁদের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি গাজাবাসীর জন্য আরও ওষুধ-ত্রাণের বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের কাছে ওষুধ সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে সেই যোগাযোগহীনতা কাটে। এটাকেই নতুন চুক্তির সূচনা হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
সেই সূচনাবিন্দু থেকে ইসরায়েল এবং হামাস একটি বৃহত্তর চুক্তির জন্য লিখিত প্রস্তাব দেয় এবং আমেরিকান মধ্যস্থতাকারীরা সেগুলোকে একত্রিত করে চুক্তির খসড়া তৈরি করেন। প্রায় এক মাস পর বাইডেন গত ১৯ জানুয়ারি নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, এবং জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
দুই দিন পরে বাইডেন ম্যাকগার্ককে এই অঞ্চলে পাঠান। মধ্যপ্রাচ্যে এসে তিনি মিসরের জেনারেল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের প্রধান ও দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা জেনারেল আব্বাস কামেল এবং কাতারের শেখ মোহাম্মদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে ইসরায়েলি মিডিয়া নেতানিয়াহুর একটি ভিডিওবার্তা প্রচার করলে আলোচনাটি জটিল হয়ে ওঠে। ওই ভিডিওবার্তায় নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাতারের ভূমিকাকে ‘সমস্যাজনক’ বলে অভিহিত করেন। এরপর কাতার ওই মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ধ্বংসাত্মক’ বলে অভিহিত করে।
ম্যাকগার্ক শুক্রবার ওয়াশিংটনে ফেরার পর ওভাল অফিসে বাইডেন, বার্নস এবং সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দেখা করেন। এসব উপদেষ্টাদের সঙ্গে থাকাকালেই বাইডেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং শেখ মোহাম্মদকে ফোন করেন।
হোয়াইট হাউস সিসির সঙ্গে বাইডেনের ফোনালাপের সংক্ষিপ্তসারে বলেছে, সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি ও দীর্ঘ মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা এখনই করতে হবে।
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আলোচকেরা গাজায় প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি বাস্তবায়নের কাছাকাছি পৌঁছেছেন। হামাসের হাতে এখনো ১০০ জনের অধিক জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই চুক্তি বাস্তবায়ন হতে পারে। চুক্তিটি বাস্তবায়ন হলে আরব অঞ্চলে বইতে পারে শান্তির সুবাতাস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, আলোচকেরা গত ১০ দিনে ইসরায়েল এবং হামাসের প্রস্তাবগুলোকে একত্রিত করে একটি লিখিত খসড়া চুক্তি তৈরি করেছেন, যা নিয়ে আজ রোববার প্যারিসে আলোচনা হবে। তবে এখনো গুরুত্বপূর্ণ মতপার্থক্যগুলোর সমাধান হয়নি, এরপরেও আলোচকেরা আশাবাদী যে, চূড়ান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন নাগালের মধ্যে রয়েছে।
মতপার্থক্যগুলো দূর করতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত শুক্রবার হামাসের হয়ে মধ্যস্থতাকারী মিশর এবং কাতারের নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে ফোনে কথা বলেছেন।
তিনি সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম জে বার্নসকে ইসরায়েলি, মিসরীয় এবং কাতারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ রোববারের আলোচনার জন্য প্যারিসে পাঠিয়েছেন। বার্নস আলোচনা যথেষ্ট এগিয়ে নিতে পারলে বাইডেন তাঁর মধ্যপ্রাচ্যের সমন্বয়কারী ব্রেট ম্যাকগার্ককেও প্যারিসে পাঠাতে পারেন, যিনি চুক্তি চূড়ান্ত করতে সবেমাত্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে ওয়াশিংটনে ফিরেছেন।
গত শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউস কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানির সঙ্গে বাইডেনের কথোপকথনের সংক্ষিপ্তসার এক বিবৃতিতে তুলে ধরে বলেছে, উভয় নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, দীর্ঘস্থায়ী মানবিক বিরতির জন্য জিম্মি বিনিময়ই চুক্তির মূল বিষয়। তাঁরা গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা সম্পর্কে একমত হয়েছেন। তাঁরা জরুরি পরিস্থিতির ওপর জোর দিয়েছেন এবং আলোচনাকে এগিয়ে নিতে আলোচকদের মধ্যে সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে নিজের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা জিম্মিদের মধ্যে ১১০ জনকে ফিরিয়ে এনেছি এবং বাকিদের সবাইকে ঘরে ফেরাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জিম্মিদের ফেরাতে চব্বিশ ঘণ্টাই কাজ করছি।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। ওই সময় প্রায় ২৪০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নেয় হামাস। প্রতিশোধপরায়ণ ইসরায়েল পাল্টা হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার গাজাবাসীকে হত্যা করেছে। তাঁদের মধ্য অধিকাংশই নারী ও শিশু। আর নিহতদের মধ্যে কতজন হামাস যোদ্ধা রয়েছেন তা এখনো অস্পষ্ট।
গত বছরের নভেম্বরে কাতার এবং মিসরের সঙ্গে বাইডেনের মধ্যস্থতায় মাত্র সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ১০০ জিম্মি ও ২৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দী বিনিময় হয়। তবে ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়া আরও ১৩৬ জন হামাসের হাতে বন্দী রয়েছে, যার মধ্যে ৬ আমেরিকান নাগরিক রয়েছেন। যদিও তাঁদের মধ্যে প্রায় দুই ডজন ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের চুক্তিটি আগেরটির চেয়ে আরও বিস্তৃত হবে। প্রথম পর্যায়ে, যুদ্ধ প্রায় ৩০ দিনের বিরতি থাকবে। এই সময়ে নারী, বয়স্ক এবং আহত জিম্মিদের হামাস মুক্তি দেবে। একই সময় উভয় পক্ষ দ্বিতীয় পর্যায়ের বিশদ বিবরণ নিয়ে কাজ করবে। একমত হতে পারলে ইসরায়েলি সৈন্য এবং বেসামরিক পুরুষ জিম্মিদের বিনিময়ে আরও ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি থাকবে। তবে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির অনুপাত নিয়ে আলোচনা এখনো বাকি আছে। এটি একটি সমাধানযোগ্য সমস্যা হিসাবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া, এই চুক্তি গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে।
হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে চুক্তিটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হলেও চুক্তিতে অংশ নেওয়া আলোচকেরা মনে করছেন, যুদ্ধ আর আগের মাত্রায় শুরু হবে না। এই যুদ্ধবিরতি আরও কূটনৈতিক আলাপের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা সংঘর্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাইডেন খানিকটা হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পাবেন। যিনি ইসরায়েলের পাল্টা হামলাকে সমর্থন দিয়ে নিজের দলের বামপন্থীদের তোপের মুখে রয়েছেন। এদিকে হামাসকে ধ্বংস করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে যুদ্ধ শুরু করা নেতানিয়াহুও এখন জিম্মিদের মুক্তির জন্যই সবচেয়ে বড় চাপের মধ্যে পড়েছেন।
তৎসত্ত্বেও, নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান নমনীয় করতে ও কৌশল পরিবর্তনে আমেরিকান এবং আন্তর্জাতিক চাপকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এমনকি গত শনিবারের বিবৃতিতেও সেই সংকল্পের পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, ‘আমরা কাজটি শেষ করতে, হামাসকে নির্মূল করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দীর্ঘসময় লাগলেও লক্ষ্য থেকে আমরা পিছপা হব না।’
নতুন এই চুক্তি বাস্তবায়ন শুধু বাইডেনের জন্যই স্বস্তিদায়ক নয়, বরং এটি বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতাকে হ্রাস করতে পারে। কেননা নভেম্বরে ৭ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় হুতি এবং হিজবুল্লাহর মতো অন্যান্য ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো আমেরিকান, ইসরায়েলি এবং অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা থেকে বিরত ছিল।
নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরে হামাস এবং ইসরায়েল তাঁদের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি গাজাবাসীর জন্য আরও ওষুধ-ত্রাণের বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের কাছে ওষুধ সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে সেই যোগাযোগহীনতা কাটে। এটাকেই নতুন চুক্তির সূচনা হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
সেই সূচনাবিন্দু থেকে ইসরায়েল এবং হামাস একটি বৃহত্তর চুক্তির জন্য লিখিত প্রস্তাব দেয় এবং আমেরিকান মধ্যস্থতাকারীরা সেগুলোকে একত্রিত করে চুক্তির খসড়া তৈরি করেন। প্রায় এক মাস পর বাইডেন গত ১৯ জানুয়ারি নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, এবং জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
দুই দিন পরে বাইডেন ম্যাকগার্ককে এই অঞ্চলে পাঠান। মধ্যপ্রাচ্যে এসে তিনি মিসরের জেনারেল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের প্রধান ও দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা জেনারেল আব্বাস কামেল এবং কাতারের শেখ মোহাম্মদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে ইসরায়েলি মিডিয়া নেতানিয়াহুর একটি ভিডিওবার্তা প্রচার করলে আলোচনাটি জটিল হয়ে ওঠে। ওই ভিডিওবার্তায় নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাতারের ভূমিকাকে ‘সমস্যাজনক’ বলে অভিহিত করেন। এরপর কাতার ওই মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ধ্বংসাত্মক’ বলে অভিহিত করে।
ম্যাকগার্ক শুক্রবার ওয়াশিংটনে ফেরার পর ওভাল অফিসে বাইডেন, বার্নস এবং সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দেখা করেন। এসব উপদেষ্টাদের সঙ্গে থাকাকালেই বাইডেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং শেখ মোহাম্মদকে ফোন করেন।
হোয়াইট হাউস সিসির সঙ্গে বাইডেনের ফোনালাপের সংক্ষিপ্তসারে বলেছে, সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি ও দীর্ঘ মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা এখনই করতে হবে।
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
গত এক সপ্তাহে মোদির কাশ্মীর নীতির বড় দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এই নীতি এখন অচলাবস্থার মুখে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুমান্ত্র বোস বলেছেন, পেহেলগাম হামলা মোদির ‘নয়া কাশ্মীর’ বয়ানের (ন্যারেটিভ) বেলুন ফুটো করে দিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, তিনিই বিশ্ব চালাচ্ছেন। তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা সীমাহীন। কিন্তু এটি বিপজ্জনক ঔদ্ধত্যেরও ইঙ্গিত দেয় এবং একটি গুরুতর প্রশ্ন তোলে—এই বিশৃঙ্খল ও প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে পৃথিবী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? দ্য আটলান্টিককে দেওয়া নতুন এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী আধিপত্য...
১৮ ঘণ্টা আগেবড় প্রশ্ন হলো, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেবে কি না? ২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ ভারতীয় পুলিশ নিহত হয়। এরপর পেহেলগামের হামলাই ছিল কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এমনকি এটি ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানকার
১ দিন আগেবিশ্লেষকদের মতে, ভারত হয়তো কিছুটা সংযত আচরণই করবে। কারণ, দেশটির সামরিক বাহিনী এখনো পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে, তাদের প্রকাশ্যে এনে যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মধ্যে ঝুঁকি আছে। ২০১৮ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে দেশের ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জামকে ‘পুরোনো মডেলের’, ২৪ শতাংশকে...
২ দিন আগে