আল জাজিরার বিশ্লেষণ
অনলাইন ডেস্ক
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম যৌথ কংগ্রেস ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প চমকপ্রদ এক ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটে প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাকিস্তানের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে সময় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির বৈঠকে বলেছিলেন, কাবুল হামলায় অভিযুক্ত আইএস সদস্যকে ধরতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সরাসরি তাঁকে ফোন করে জানান। এরপর জুনে (১৮ জুন) হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প—যা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।
মাত্র সাত বছর আগে ট্রাম্প পাকিস্তানকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয়দাতা’ বলেছিলেন, অথচ এখন সেই দেশকেই ‘গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সহযোগী’ হিসেবে তুলে ধরছেন। তাঁর আমন্ত্রণে পাকিস্তান সেনাপ্রধানের আমেরিকা সফর এবং কাশ্মীর ইস্যুতে মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা—সব মিলিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে যে ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানের প্রতি নতুনভাবে মনোযোগী।
নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রেজা আহমাদ রুমি বলেন, ‘ট্রাম্পের এই আমন্ত্রণ শুধু নিয়ম ভাঙা নয়, বরং নিয়ম নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা। এটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, পাকিস্তান এখন কেবল নজরদারির মধ্যে নয়, বরং ওয়াশিংটনের ‘‘ইনার সার্কেলে’’ রয়েছে।’
ট্রাম্প-মুনির বৈঠক এমন সময়ে হয়, যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েলের হামলায় ২০০ জন নিহত এবং ইরানের পাল্টা ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত ৯০০ কিলোমিটার হওয়ায় এই উত্তেজনা পাকিস্তানের দৃষ্টি এড়ায়নি।
তবে ট্রাম্প জানান, মুনিরকে আমন্ত্রণ জানানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এড়াতে তাঁর ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানানো। মে মাসে কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক হামলা ও পাল্টা হামলার সময় মার্কিন মধ্যস্থতায় সংঘাত থেমে যায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অ্যাডভাইজরি ফার্ম পরিট্যাক্টের বিশ্লেষক আরিফ আনসার বলছেন, ‘যুদ্ধের সময় পাকিস্তান তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা সত্ত্বেও কৌশলগতভাবে বড় প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করে ট্রাম্পের দৃষ্টি কাড়ে।’
মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো মারভিন ওয়েইনবাউম আল জাজিরাকে বলেন, ‘পাকিস্তান এখন ট্রাম্পের কাছ থেকে সেই শ্রদ্ধা পাচ্ছে, যা বাইডেন প্রশাসনে ছিল না। এই সম্পর্কের সঙ্গে এসেছে বাণিজ্য চুক্তি, শুল্কমুক্ত সুবিধা, রেয়ার আর্থ মিনারেল ও ক্রিপ্টো ইনভেস্টমেন্ট—সবই পাকিস্তান দিচ্ছে।’
তবে এই সম্পর্ক পুনর্গঠনের মাঝেও উঠেছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—এটি কি সামরিক সম্পর্কের পুনর্জাগরণ, নাকি গণতান্ত্রিক কাঠামোর বাইপাস?
অধ্যাপক রেজা আহমাদ রুমি বলেন, ‘এই বৈঠক প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের মূল সেতুটি এখনো সেনাবাহিনী। এতে বেসামরিক সরকারকে পাশ কাটানো হয়েছে—যা গণতন্ত্রপ্রত্যাশীদের জন্য উদ্বেগের।’
বিশ্লেষক আরিফ আনসার বলেন, ‘এই ধরনের সম্পর্ক অতীতে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ডেকে এনেছে। জনসাধারণকে বাদ দিয়ে গোপনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই প্রবণতা বাড়লে জনগণের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষ বাড়বে।’
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বরাবরই ছিল মূলত নিরাপত্তাকেন্দ্রিক এবং ‘লেনদেনভিত্তিক’। যুক্তরাষ্ট্রের যখন প্রয়োজনে পড়ে, তখন পাকিস্তানের দিকে ফিরে তাকায়, আবার পরিস্থিতি বদলালেই মুখ ফিরিয়ে নেয়।
সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ওয়েইনবাউম সতর্ক করে বলেন, ‘এই প্রশাসনে কিছুই স্থায়ী নয়। এক মুহূর্তে যা অগ্রাধিকার, পরের মুহূর্তেই তা বদলে যেতে পারে।’
অর্থাৎ পাকিস্তান আবারও একটি বড় কৌশলগত সিদ্ধান্তের সামনে—চীন না যুক্তরাষ্ট্র? সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব এবং ইরানের ভূমিকার ওপর।
পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্র এখনো সেনাবাহিনী এবং জেনারেল আসিম মুনিরের যুক্তরাষ্ট্র সফর তা আবারও স্পষ্ট করল। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই ঘনিষ্ঠতা কি নতুন কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কের ইঙ্গিত, নাকি আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি—যেখানে গণতন্ত্রের বদলে অগ্রাধিকার পায় কৌশলগত সুবিধা?
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম যৌথ কংগ্রেস ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প চমকপ্রদ এক ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটে প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাকিস্তানের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে সময় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির বৈঠকে বলেছিলেন, কাবুল হামলায় অভিযুক্ত আইএস সদস্যকে ধরতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সরাসরি তাঁকে ফোন করে জানান। এরপর জুনে (১৮ জুন) হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প—যা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।
মাত্র সাত বছর আগে ট্রাম্প পাকিস্তানকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয়দাতা’ বলেছিলেন, অথচ এখন সেই দেশকেই ‘গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সহযোগী’ হিসেবে তুলে ধরছেন। তাঁর আমন্ত্রণে পাকিস্তান সেনাপ্রধানের আমেরিকা সফর এবং কাশ্মীর ইস্যুতে মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা—সব মিলিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে যে ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানের প্রতি নতুনভাবে মনোযোগী।
নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রেজা আহমাদ রুমি বলেন, ‘ট্রাম্পের এই আমন্ত্রণ শুধু নিয়ম ভাঙা নয়, বরং নিয়ম নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা। এটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, পাকিস্তান এখন কেবল নজরদারির মধ্যে নয়, বরং ওয়াশিংটনের ‘‘ইনার সার্কেলে’’ রয়েছে।’
ট্রাম্প-মুনির বৈঠক এমন সময়ে হয়, যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েলের হামলায় ২০০ জন নিহত এবং ইরানের পাল্টা ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত ৯০০ কিলোমিটার হওয়ায় এই উত্তেজনা পাকিস্তানের দৃষ্টি এড়ায়নি।
তবে ট্রাম্প জানান, মুনিরকে আমন্ত্রণ জানানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এড়াতে তাঁর ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানানো। মে মাসে কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক হামলা ও পাল্টা হামলার সময় মার্কিন মধ্যস্থতায় সংঘাত থেমে যায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অ্যাডভাইজরি ফার্ম পরিট্যাক্টের বিশ্লেষক আরিফ আনসার বলছেন, ‘যুদ্ধের সময় পাকিস্তান তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা সত্ত্বেও কৌশলগতভাবে বড় প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করে ট্রাম্পের দৃষ্টি কাড়ে।’
মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো মারভিন ওয়েইনবাউম আল জাজিরাকে বলেন, ‘পাকিস্তান এখন ট্রাম্পের কাছ থেকে সেই শ্রদ্ধা পাচ্ছে, যা বাইডেন প্রশাসনে ছিল না। এই সম্পর্কের সঙ্গে এসেছে বাণিজ্য চুক্তি, শুল্কমুক্ত সুবিধা, রেয়ার আর্থ মিনারেল ও ক্রিপ্টো ইনভেস্টমেন্ট—সবই পাকিস্তান দিচ্ছে।’
তবে এই সম্পর্ক পুনর্গঠনের মাঝেও উঠেছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—এটি কি সামরিক সম্পর্কের পুনর্জাগরণ, নাকি গণতান্ত্রিক কাঠামোর বাইপাস?
অধ্যাপক রেজা আহমাদ রুমি বলেন, ‘এই বৈঠক প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের মূল সেতুটি এখনো সেনাবাহিনী। এতে বেসামরিক সরকারকে পাশ কাটানো হয়েছে—যা গণতন্ত্রপ্রত্যাশীদের জন্য উদ্বেগের।’
বিশ্লেষক আরিফ আনসার বলেন, ‘এই ধরনের সম্পর্ক অতীতে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ডেকে এনেছে। জনসাধারণকে বাদ দিয়ে গোপনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই প্রবণতা বাড়লে জনগণের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষ বাড়বে।’
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বরাবরই ছিল মূলত নিরাপত্তাকেন্দ্রিক এবং ‘লেনদেনভিত্তিক’। যুক্তরাষ্ট্রের যখন প্রয়োজনে পড়ে, তখন পাকিস্তানের দিকে ফিরে তাকায়, আবার পরিস্থিতি বদলালেই মুখ ফিরিয়ে নেয়।
সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ওয়েইনবাউম সতর্ক করে বলেন, ‘এই প্রশাসনে কিছুই স্থায়ী নয়। এক মুহূর্তে যা অগ্রাধিকার, পরের মুহূর্তেই তা বদলে যেতে পারে।’
অর্থাৎ পাকিস্তান আবারও একটি বড় কৌশলগত সিদ্ধান্তের সামনে—চীন না যুক্তরাষ্ট্র? সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব এবং ইরানের ভূমিকার ওপর।
পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্র এখনো সেনাবাহিনী এবং জেনারেল আসিম মুনিরের যুক্তরাষ্ট্র সফর তা আবারও স্পষ্ট করল। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই ঘনিষ্ঠতা কি নতুন কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কের ইঙ্গিত, নাকি আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি—যেখানে গণতন্ত্রের বদলে অগ্রাধিকার পায় কৌশলগত সুবিধা?
বিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ...
১৯ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও বাংলাদেশের এক নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির আশায় হাজারো মানুষ গত সপ্তাহে ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন। বর্ষাস্নাত দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা, অধিকারকর্মীদের উপস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ‘নয়া বাংলাদেশের’ ঘোষণাপত্র উন্মোচন করেছেন।
২ দিন আগেমিয়ানমারে জান্তা বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সেই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে গত ২৪ জুলাই মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর...
২ দিন আগে১৫৮ বছর আগে মাত্র ৭২ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আলাস্কা বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া। আর ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানসূত্র খুঁজতে সেখানেই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প-পুতিন। মার্কিন মুল্লুকের এত সব জৌলুস এলাকা বাদ দিয়ে কেন এই হিমশীতল অঙ্গরাজ্য আলাস্কাকে বেছে নেওয়া হলো? এর পেছনে রহস্য কী?
২ দিন আগে