ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৮ বছর। আমি মা-বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করি। মা-বাবা অনেক বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ। মতের অমিল হলে তাঁরা আমাকে মারধর পর্যন্ত করেন। একবার মতের অমিল হওয়ায় বাবা মেরে আমার হাত ভেঙে দেন। এ ছাড়া শরীরে এ ধরনের আরও অনেক আঘাতের চিহ্ন আছে যেগুলো বাবার দেওয়া। সম্প্রতি তাঁরা আমার বিয়ে দিতে চাইছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বিয়ে করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নই। লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা ক্যারিয়ার গড়তে চাই। তাঁদের সঙ্গে থাকতে চাই না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন আগে এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলাম। আমার মা-বাবা পুলিশ সঙ্গে করে সেখান থেকে আমাকে বাসায় নিয়ে এসেছেন। তারপর থেকে তাঁরা নানাভাবে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছেন। আমি এখান থেকে বের হতে চাই। এমন কোনো আইনি ব্যবস্থা আছে কি, যাতে আলাদা থাকতে পারব? কোনোভাবেই উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত নই। শুধু নিজের মতো করে নিজের জীবনটা গোছাতে চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা
আপনার বাবা-মা যদি মতের অমিল হলে গায়ে হাত তোলেন, সেটা অন্যায়। এ ক্ষেত্রে
■ ধৈর্য ধরে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামলে নিতে পারেন।
■ পরিবারের প্রভাবশালী কারও সাহায্য নিতে পারেন।
■ আপনি নিরাপদ কোনো আশ্রয়ে চলে যেতে পারেন।
■ মা-বাবার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় আপনাকে আঘাত করার জন্য আইনি সাহায্য নিতে পারেন।
সবচেয়ে ভালো হয় নিজেই নিজের জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে নিলে।
সন্তানদের অমতে বিয়ে দেওয়া আমাদের সমাজের জঘন্য চর্চা। এ ঘটনা মেয়েদের বেলায় বেশি ঘটে। মুসলিমদের ক্ষেত্রে জোর করে বিয়ে দেওয়ার বিষয়ে শরিয়া আইনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। ইসলামে জোরপূর্বক বিয়ের কোনো বৈধতা নেই। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, কোনো বিধবা নারীকে তাঁর সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না এবং কুমারীকে তাঁর অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। [৬৯৭০; মুসলিম ১৬/৮, হা: ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১]। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ এবং মুসলিম শরিয়া আইন দিয়ে মুসলিম বিবাহসংক্রান্ত বিষয়াদি নির্ধারণ করা হয়।
সাংবিধানিক আইনে বলা আছে, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন [অনুচ্ছেদ-২৮ (২)]। আইন অনুযায়ী এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে [অনুচ্ছেদ-৩১ ও ৩২]। এ ছাড়া ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তির অনুচ্ছেদ ২৩ (৩) এবং সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (১৯৪৮, অনুচ্ছেদ ১৬) অনুসারেও, ‘স্বামী-স্ত্রীর স্বাধীন ও পূর্ণ সম্মতি ব্যতীত কোনো বিবাহ করা যাবে না।’
তা ছাড়া, নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা বিষয়ক কনভেনশন (১৯৭৯)-এর ১৬ (বি) অনুসারে, ‘স্বাধীন ও পূর্ণ সম্মতিতে একজন নারী ও পুরুষ স্বাধীনভাবে তাঁদের জীবনসঙ্গী নির্বাচন করার এবং বিয়ে করার সমান অধিকার থাকবে।’
এ ছাড়া কনভেনশন ১৯৬৪-এর অনুচ্ছেদ ১ (১) মতে, ‘উভয় পক্ষের সম্পূর্ণ এবং স্বাধীন সম্মতি ব্যতীত কোনো বিয়ে আইনত সম্পাদন করানো যাবে না।’
সাধারণত, জোরপূর্বক বিয়ের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক দেওয়ানি প্রতিকার হিসেবে চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের ও বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনার যেহেতু এখনো বিয়ে হয়নি, তাই জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের সহযোগিতা চাইতে পারেন। প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৮ বছর। আমি মা-বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করি। মা-বাবা অনেক বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ। মতের অমিল হলে তাঁরা আমাকে মারধর পর্যন্ত করেন। একবার মতের অমিল হওয়ায় বাবা মেরে আমার হাত ভেঙে দেন। এ ছাড়া শরীরে এ ধরনের আরও অনেক আঘাতের চিহ্ন আছে যেগুলো বাবার দেওয়া। সম্প্রতি তাঁরা আমার বিয়ে দিতে চাইছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বিয়ে করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নই। লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা ক্যারিয়ার গড়তে চাই। তাঁদের সঙ্গে থাকতে চাই না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন আগে এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলাম। আমার মা-বাবা পুলিশ সঙ্গে করে সেখান থেকে আমাকে বাসায় নিয়ে এসেছেন। তারপর থেকে তাঁরা নানাভাবে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছেন। আমি এখান থেকে বের হতে চাই। এমন কোনো আইনি ব্যবস্থা আছে কি, যাতে আলাদা থাকতে পারব? কোনোভাবেই উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত নই। শুধু নিজের মতো করে নিজের জীবনটা গোছাতে চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা
আপনার বাবা-মা যদি মতের অমিল হলে গায়ে হাত তোলেন, সেটা অন্যায়। এ ক্ষেত্রে
■ ধৈর্য ধরে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামলে নিতে পারেন।
■ পরিবারের প্রভাবশালী কারও সাহায্য নিতে পারেন।
■ আপনি নিরাপদ কোনো আশ্রয়ে চলে যেতে পারেন।
■ মা-বাবার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় আপনাকে আঘাত করার জন্য আইনি সাহায্য নিতে পারেন।
সবচেয়ে ভালো হয় নিজেই নিজের জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে নিলে।
সন্তানদের অমতে বিয়ে দেওয়া আমাদের সমাজের জঘন্য চর্চা। এ ঘটনা মেয়েদের বেলায় বেশি ঘটে। মুসলিমদের ক্ষেত্রে জোর করে বিয়ে দেওয়ার বিষয়ে শরিয়া আইনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। ইসলামে জোরপূর্বক বিয়ের কোনো বৈধতা নেই। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, কোনো বিধবা নারীকে তাঁর সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না এবং কুমারীকে তাঁর অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। [৬৯৭০; মুসলিম ১৬/৮, হা: ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১]। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ এবং মুসলিম শরিয়া আইন দিয়ে মুসলিম বিবাহসংক্রান্ত বিষয়াদি নির্ধারণ করা হয়।
সাংবিধানিক আইনে বলা আছে, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন [অনুচ্ছেদ-২৮ (২)]। আইন অনুযায়ী এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে [অনুচ্ছেদ-৩১ ও ৩২]। এ ছাড়া ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তির অনুচ্ছেদ ২৩ (৩) এবং সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (১৯৪৮, অনুচ্ছেদ ১৬) অনুসারেও, ‘স্বামী-স্ত্রীর স্বাধীন ও পূর্ণ সম্মতি ব্যতীত কোনো বিবাহ করা যাবে না।’
তা ছাড়া, নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা বিষয়ক কনভেনশন (১৯৭৯)-এর ১৬ (বি) অনুসারে, ‘স্বাধীন ও পূর্ণ সম্মতিতে একজন নারী ও পুরুষ স্বাধীনভাবে তাঁদের জীবনসঙ্গী নির্বাচন করার এবং বিয়ে করার সমান অধিকার থাকবে।’
এ ছাড়া কনভেনশন ১৯৬৪-এর অনুচ্ছেদ ১ (১) মতে, ‘উভয় পক্ষের সম্পূর্ণ এবং স্বাধীন সম্মতি ব্যতীত কোনো বিয়ে আইনত সম্পাদন করানো যাবে না।’
সাধারণত, জোরপূর্বক বিয়ের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক দেওয়ানি প্রতিকার হিসেবে চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের ও বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনার যেহেতু এখনো বিয়ে হয়নি, তাই জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের সহযোগিতা চাইতে পারেন। প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং একাত্তরের ঘাতক দালালবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী জাহানারা ইমাম। ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় তাঁর নেতৃত্বে। জাহানারা ইমামের জন্ম ১৯২৯ সালের ৩ মে।
৬ মিনিট আগেবিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১২ মে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। তবে যুক্তরাষ্ট্র ৬ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত পালন করে জাতীয় নার্স সপ্তাহ। সপ্তাহ কিংবা দিবস—যা-ই হোক না কেন, এর মূল লক্ষ্য হলো নার্সদের কঠোর পরিশ্রম, মানবিকতা ও স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া। এই সময় দেশগুলো নার্সিং পেশাজীবীদের সম্মা
১৮ মিনিট আগেফ্রান্সের একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন ডমিনিক পেলিকট। তিনি ১৯৭৩ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন গিসেল নামের এক নারীর সঙ্গে। ৫০ বছরের সংসারজীবনে তাঁরা তিনটি সন্তানের জনক-জননী হন। সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের নিয়ে যদিও ছবির মতো নিখুঁত একটি পারিবারিক জীবন ছিল তাঁদের।
২৩ মিনিট আগেআমি কাবিনে ৫ লাখ টাকা মোহরানা উল্লেখ করে বিয়ে করি। তবে আমি জানতাম, তাঁর আগের স্ত্রীকে তিনি ডিভোর্স দিয়েছেন। এমনকি তিনি আমাকে একটা ডিভোর্স পেপারও দেখিয়েছিলেন। বিয়েটা কাজি অফিসে হয়। আমার পরিবারের কেউ বিষয়টি জানেন না।
২৬ মিনিট আগে