Ajker Patrika

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে: ফিলিস্তিনি নারীদের সংগ্রাম

শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে: ফিলিস্তিনি নারীদের সংগ্রাম

শায়মা। গাজা উপত্যকার আল কুদস ওপেন ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ালেখা করছিলেন। তাঁর পরিবার ইসরায়েলি আগ্রাসনে হারিয়েছে সবকিছু। এ বছরের ১২ মার্চ শায়মার মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ভেঙে গেছে তাঁর বিয়ে। আর টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পর অর্ধেক অবশ হয়ে গেছে তাঁর শরীর। টিউমার পুরোপুরি অপসারণের জন্য তাঁর আরও একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু ১২ আগস্ট গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, ইসরায়েল অধিকৃত ভূমিতে কোনো ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা হবে না।

১০০ বছর ধরে শায়মার মতো বিরামহীন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনের নারীরা। সে দেশের সমাজব্যবস্থায় ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত কারণে নারীর ওপর ছিল নানান নিষেধাজ্ঞা। তার ওপর ইসরায়েলি দখলদারি ফিলিস্তিনি নারীদের জীবন আরও বিষিয়ে তুলেছে। শুধু পিতৃতান্ত্রিক নিপীড়ন থেকে নয়; বরং সে দেশে দারিদ্র্য, অর্থনৈতিক নির্ভরতা, অব্যাহত রাজনৈতিক সহিংসতা, দীর্ঘস্থায়ী ইসরায়েলি দখলদারি, অবরোধ ও বসতি স্থাপনকারীদের ঔপনিবেশিক নীতির কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তাহীনতা এবং অস্থিতিশীলতা থেকে নারীর প্রতি বৈষম্য ও অত্যাচার বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ।

ফিলিস্তিনের নারী অধিকারকর্মীরা মনে করেন, ফিলিস্তিনি প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমান অধিকারের জন্য তাঁদের সংগ্রাম রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। আর এটি শুধু ইসরায়েলি দখলদারির অবসান ঘটিয়েই অর্জন করা সম্ভব। কারণ, ইসরায়েলি দখলদারি বাস্তবায়নে তারা শুধু নারীদের ধর্ষণ ও হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়েছে, এমন নয়। দীর্ঘদিনের অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে ফিলিস্তিনি নারীরাও হয়ে উঠছেন সহিংস।

ইসরায়েলি অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অসংখ্য নারী ফিলিস্তিনি ভূমি দখল, বাড়িঘর ভেঙে ফেলা, তাঁদের সন্তানদের প্রতি অশোভন আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ইসরায়েলি বাহিনী তাঁদের গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ এবং কখনো কখনো শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ১৯৬৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার ফিলিস্তিনি নারীকে কারাবন্দী করেছে ইসরায়েল সরকার।

অন্যায়ের প্রতিবাদকারী এই নারী বন্দীরা ইসরায়েলি কারাগারে অসহনীয় জীবনযাপনের শিকার হন। তাঁরা সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত হন গোপনীয়তার, শিক্ষার অধিকারসহ সব ধরনের মৌলিক মানবাধিকার থেকেও। এ ছাড়া কারাবাসের সময় প্রায়ই লৈঙ্গিক সহিংসতার শিকার হন ফিলিস্তিনি নারীরা।

৫ অক্টোবর ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের নারীরা শান্তি সমাবেশ করেছিলেন।দীর্ঘদিনের এসব অত্যাচারে সহিংস হয়ে উঠেছেন অসংখ্য ফিলিস্তিনি নারী। এ ছাড়া হামাসের মতো সংগঠনগুলোর বিদ্রোহ এবং ইসরায়েলিদের সেই বিদ্রোহ দমনের ঘটনাও ঘটে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধের এই দুষ্টচক্রের কারণে প্রতিদিন মূল্য দিতে হচ্ছে মূলত নারী ও শিশুদের।

হামাসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি বড় আকারের আক্রমণ শুরু করে। হামাস একে অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড নামে অভিহিত করেছে। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর এই প্রতি আক্রমণকে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী অপারেশন আয়রন সোর্ডস নাম দেয়। কিন্তু আল-আকসা ফ্লাডই হোক কিংবা অপারেশন আয়রন সোর্ডস—বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেখানকার নারীরা। এসব প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধে সর্বস্ব হারাচ্ছেন প্রধানত নারীরাই। এ কারণেই হয়তো হামাসের আক্রমণের মাত্র দুই দিন আগে ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীরে শত শত ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি নারী শান্তি সমাবেশ করেছেন। এ সময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। সাদাপোশাকে সমাবেশে অংশ নিয়ে এসব নারী ‘আমরা শান্তি চাই’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় তাঁদের হাতে ছিল ‘আমাদের শিশু হত্যা বন্ধ করো’ লেখা প্ল্যাকার্ড।

ফিলিস্তিনি নারীদের নির্যাতন-নিপীড়নের ইতিহাস প্রায় শত বছরের পুরোনো। ১৯২০ সালে জাতিপুঞ্জ ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটিশরা ‘ম্যান্ডেটরি প্যালেস্টাইন’ প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকেই ব্রিটিশ বাহিনীর সহযোগিতায় ইহুদিদের আধা সামরিক বাহিনী আরব ফিলিস্তিনিদের মূল ভূখণ্ড থেকে বিতাড়ন করতে শুরু করে। হাগানাহ, ইরগুন ও স্ট্যার্ন গ্যাংয়ের মতো ইহুদি সংগঠনগুলো হত্যা, সন্ত্রাস, ধর্ষণ আর ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বাধ্য করে সে দেশ ছেড়ে চলে যেতে। এর পরের কয়েক দশক ধরেও চলমান রয়েছে ফিলিস্তিনি নারীর ওপর রাজনৈতিক, সামাজিক ও লৈঙ্গিক সহিংসতা।

তথ্যসূত্র
■    Specific risks facing women and girls in Palestine by OCHA. 
■    Ending Violence against Women by UN Women Palestine.
■    The ongoing struggle of Palestinian women by Nazla M Shahwan. The Daily Sabah.

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিডনি সুইনির প্রেমিকেরা কেন বেশি বয়সের হয়—ব্যাখ্যা দিলেন মনোবিজ্ঞানী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্কুটার ব্রৌন, সিডনি সুইনি ও জনাথন দাভিনো। ছবি: সংগৃহীত
স্কুটার ব্রৌন, সিডনি সুইনি ও জনাথন দাভিনো। ছবি: সংগৃহীত

হলিউড অভিনেত্রী সিডনি সুইনি বরাবরই আলোচনায় থাকেন শুধু তাঁর অভিনয়ের জন্য নয়, বরং প্রেমের সম্পর্ক নিয়েও। ২৮ বছর বয়সী এই তারকা সম্প্রতি ৪৪ বছর বয়সী সংগীত উদ্যোক্তা স্কুটার ব্রৌনের সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এর আগে তিনি ব্যবসায়ী জনাথন দাভিনোর সঙ্গে সাত বছর ধরে ছিলেন। ৪২ বছর বয়সী দাভিনোর সঙ্গে মিলে তিনি ‘ফিফটি-ফিফটি ফিল্মস’ নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন।

এদিকে বরাবরই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সে অনেক বড় পুরুষদের প্রতি সুইনির আগ্রহ নিয়ে ভক্তদের মনে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও যৌন-মনোবিজ্ঞানী সোফি রোস। তিনি প্রায় ১৮ বছর ধরে এই বিষয়ে কাজ করছেন।

সোফির মতে, এই ধরনের আকর্ষণ আসলে বয়সের জন্য নয়, বরং মানসিক নিরাপত্তা, স্থিতি ও আবেগীয় পরিপক্বতার প্রতি টান থেকে আসে।

সোফি বলেন, ‘যেসব মানুষ সম্পর্কের স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দিহান—তারা প্রায় সময়ই এমন সঙ্গী খোঁজেন যিনি স্থির ও নির্ভরযোগ্য। বড় বয়সের মানুষেরা প্রায়ই সেই নিরাপত্তার অনুভূতি দিতে পারেন।’

তিনি আরও মত দেন, এটি সব সময় যে কোনো মানসিক আঘাতের ফলে হবে, এমন নয়। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় কেউ বয়সের তুলনায় পরিণত হয় এবং অনুভব করে, সমবয়সীরা তার মতো পরিপক্ব নয়।’

ইতিপূর্বে সুইনি তাঁর কঠিন শৈশবের কথাও বলেছিলেন। মা-বাবার বিচ্ছেদ, আর্থিক সংকট এবং ১৬ বছর বয়সে পুরো পরিবার নিয়ে এক রুমের হোটেলে বসবাস—এই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সোফি রোসের মতে, এমন অভিজ্ঞতা পরবর্তী জীবনে অবচেতনভাবে প্রভাব ফেলে। যদি ছোটবেলায়ই কাউকে পরিবার দেখভালের দায়িত্ব নিতে হয়, তবে প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে তিনি এমন কাউকে চাইতে পারেন, যিনি সেই দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেবেন।’

তবে এর উল্টোটাও হতে পারে। রোস বলেন, ‘অনেক সময় যারা ছোটবেলায় অভিভাবকের ভূমিকায় থাকেন, পরিণত বয়সেও তারা এমন সম্পর্ক খোঁজেন যেখানে অন্যকে যত্ন নিতে হয়। পরিচিত অভ্যাসই তাঁদের কাছে নিরাপদ লাগে।’

বিশেষজ্ঞের মতে, মূল বিষয় হলো সচেতনতা। যদি দুই পক্ষই বুঝতে পারে কেন তারা একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট এবং সম্পর্কটি সমান মর্যাদা, পারস্পরিক সম্মান ও যোগাযোগের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে বয়সের পার্থক্য কোনো সমস্যা নয়।

সোফি বলেন, ‘সিডনি সুইনির মতো কেউ, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলার, কারও ওপর নির্ভরশীল নন। এই সম্পর্কগুলো অনেক সময় ক্ষমতা নয়, বরং মানসিক সামঞ্জস্যের ওপর গড়ে ওঠে।’

সম্প্রতি সাবেক প্রেমিক দাভিনোর সঙ্গে এক তীব্র বিতণ্ডার পর সুইনিকে প্রকাশ্যে চিৎকার করতে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেক আলোচনা ও সমালোচনা হয়। তবে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল জানিয়েছে, সবেক হয়ে গেলেও সুইনি ও দাভিনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখছেন। কারণ তাঁদের প্রযোজনা সংস্থা এখনো সক্রিয় এবং সম্প্রতি ‘ক্রিস্টি’ নামে এক নারী মুষ্টিযোদ্ধার জীবনীচিত্র প্রযোজনা করেছে। ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্পর্কের সমাপ্তি তাঁদের দুজনকে ব্যথিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ আসনে নারী প্রার্থী চান নারী উদ্যোক্তারা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ১৫০ আসনে নারী প্রার্থী চান নারী উদ্যোক্তারা। আজ বুধবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে এমন দাবি জানায় নারী উদ্যোক্তাদের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউর অব বাংলাদেশের (ডব্লিউইএবি) প্রেসিডেন্ট নাসরিন ফাতেমা আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চাই, নারীর সংখ্যা যেন বাড়ে। অ্যাটলিস্ট ১৫০টা সংসদীয় আসন যেন নারীদের দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আমরা সরকারকেও বলতে চাই যে, নারীরা যে নির্বাচনে আসছেন, তাঁদের ডেফিনেটলি সহায়তা দিতে হবে। আমেরিকাতেও দেখবেন, এ রকম নারীদের সহায়তা দেওয়া হয়। তো নারীদের একটু সাহায্য দেওয়া এবং তাঁরা যেন নির্বাচনটা করতে পারেন, সেই রকম একটা ব্যবস্থা যেন নারীদের জন্য থাকে। নারীরা যেন স্বাচ্ছন্দে ভোট দিতে পারেন, সেটা নিয়েও আমরা কথা বলেছি।’

ফাতেমা আউয়াল বলেন, ‘আমরা চাই যে, অ্যাটলিস্ট ৫০ শতাংশ, আপনার ৩০০টা সিট না, কিন্তু ১৫০টা সিট যেন নারীদের জন্য দেওয়া হয়। নারীরা যেন কনটেস্ট করতে পারেন। সেই জিনিসটা আমরা একটু নিশ্চিত করতে চেয়েছি।’

নির্বাচনী তহবিল নিয়ে ফাতেমা আউয়াল বলেন, ‘নারীদের পক্ষে একটু অসম্ভব, একটু কষ্টকর, একটু না অনেক কষ্টকর। কারণ, সহজে কিন্তু ফ্যামিলি থেকেও নারীদের জন্য ফান্ড পাওয়া যায় না, যেটা পুরুষেরা অহরহ পারেন। আমাদের কথা হলো, নারীদের গভর্নমেন্ট যদি একটু সহায়তা করে, তাহলে অনেক নারীই কিন্তু নির্বাচনে আসতে পারবেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে ফাতেমা আউয়াল বলেন, ‘দলগুলোকেও আমরা বলতে চাই, কোথাও দেখা যায় যে, এটা ৫ শতাংশ, কোথাও দেখা যাচ্ছে ৭ শতাংশ—এভাবে মনোনয়ন দিচ্ছে। এভাবে না করে আমার মনে হয়, উনারা যদি বলেন যে এত পারসেন্ট দেবেন, সেভাবে যদি হয়, তাহলে জিনিসটা একটু ব্যালেন্স হবে।’

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ডব্লিউইএবির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মেম্বার সাবেরা আহমেদ কলি, সেকেন্ড ভাইস প্রেসিডেন্ট মেহেরুন্নেসা খান, মেম্বার আইরিন তালুকদার, এস এম আনজুমানু ফেরদৌস ও ফাহিমা কাউসার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণপরিবহনে হয়রানি, যেভাবে আইনি ব্যবস্থা নেবেন

ব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৪৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশে গণপরিবহনে যাতায়াতে ৮৭ শতাংশ নারী মৌখিক, শারীরিকসহ বিভিন্ন হয়রানির শিকার হয়। তাদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ হয় যৌন হয়রানির শিকার। এসব তথ্য চলতি বছরের এপ্রিলে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ইউএন উইমেন্স ও সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতায় আয়োজিত একটি ক্যাম্পেইনে তুলে ধরা হয়। গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হলে কীভাবে আইনি সহায়তা পেতে পারেন, সে বিষয়ে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস।

গণপরিবহনে হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হলে প্রথম কাজ হবে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

যত দ্রুত সম্ভব ভিড় থেকে দূরে চলে যান, চিৎকার করে আশপাশের লোকদের সচেতন করুন এবং সরাসরি বিপদাপন্ন মনে হলে চালক, কন্ডাক্টর কিংবা শুভানুধ্যায়ীর সাহায্য চান। একই সময়ে মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও বা অডিও রেকর্ড রাখুন, ছবি তুলুন এবং পাশে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীর নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর নোট করে নিন। এগুলো পরে প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে।

আইনগত দিক

গণপরিবহনে শারীরিক ভঙ্গি, ছোঁয়া কিংবা আপত্তিকর আচরণ পেনাল কোডের ধার্য শাস্তিযোগ্য অপরাধের মধ্যে পড়ে। যেমন কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীর শালীনতা ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে অথবা শালীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে জেনেও উক্ত নারীকে আক্রমণ করে বা তার ওপর অপরাধমূলক বল প্রয়োগ করে, সেটি ধারা ৩৫৪-এর মধ্যে পড়ে। আবার কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কোনো শব্দ ব্যবহার, অঙ্গভঙ্গি অথবা কোনো কাজ করলে তা ধারা ৫০৯ অনুসারে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এই অপরাধগুলোর ভিত্তিতে মামলা করা যায়। দেশের সংবিধান নাগরিকদের সমতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। তাতে নারীদের পুরুষের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।

কীভাবে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে

ঘটনার পর দ্রুত নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি বা জিডি অথবা গুরুতর হলে এফআইআর/মোকদ্দমা করুন। এ ছাড়া অনলাইন জিডি সার্ভিসও আছে, যেখানে প্রাথমিক অভিযোগ দাখিল করা যায়। পরে পুলিশ আপনাকে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে সাহায্য করবে। মেডিকেল পরীক্ষার কাগজ এবং মোবাইল ফোনে করা ভিডিও অথবা অডিও প্রমাণ সংরক্ষণ করুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট বা মেসেজের স্ক্রিনশট রাখুন। প্রয়োজনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর অধীন কঠোর ধারাও বিবেচিত হতে পারে।

গণপরিবহনে হয়রানি অথবা সহিংসতার শিকার হলে পেনাল কোড ধারা ৩৫৪, ৫০৯, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, সাংবিধানিক সমতা—এসব আইনি সূত্রের সাহায্যে যে কেউ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন।

কটূক্তি বা মৌখিক হয়রানির শিকার হলে করণীয়

হয়রানির ঘটনা ঘটলে কড়া ভাষায় বিরক্তি জানান। আশপাশের মানুষকে ডাকা এবং ঘটনাটি রেকর্ড বা নোট করা গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিকভাবে মামলা কিংবা অভিযোগ আনা গেলে ভুক্তভোগীকে অপমান করা

বা ন্যক্কারজনক ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে। এখানে আইনি প্রক্রিয়া ও প্রমাণই নির্ণায়ক, ব্যক্তিগত কলঙ্ক বা সোশ্যাল মিডিয়ার চাপকে অতিরঞ্জিতভাবে গ্রহণ করবেন না। গবেষণা ও এনজিও সার্ভেতে দেখা গেছে, গণপরিবহনে কটূক্তি ব্যাপক। এ কারণেই ব্যক্তিগত ঘটনা আইনি ও সামাজিকভাবে গুরুত্ব পায়।

মানসিক সহায়তা ও সুরাহা

ন্যক্কারজনক কোনো ঘটনা ঘটে গেলে পরিবার, বন্ধু অথবা স্থানীয় নারী সাহায্য কেন্দ্র কিংবা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রমাণ জোগাড় না করে দ্রুত সামাজিক মিডিয়ায় নেটিভ স্টোরি ছড়িয়ে দেওয়ার আগে আইনগত পরামর্শ নিন। সমাজে ভুক্তভোগীকে দোষারোপ বন্ধ করতে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে নিন্দা নয়, সহায়তা বাড়ানোই সমাধান।

গণপরিবহনে হয়রানি অথবা সহিংসতার শিকার হলে পেনাল কোড ধারা ৩৫৪, ৫০৯, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, সাংবিধানিক সমতা—এসব আইনি সূত্রের সাহায্যে যে কেউ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন।

জীবিকার প্রয়োজনে কিংবা পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে নারীদের ঘর থেকে বের হতে হয়। এই প্রাত্যহিক কাজে গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হলে নারীদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হয়। এটি আইনের চোখে অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

অক্টোবরে সংঘটিত সহিংসতায় নারী হত্যার ঘটনা বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অক্টোবর মাসে ২৩১ জন নারী এবং কন্যাশিশু ধর্ষণ, হত্যা, যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হওয়ার খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ কন্যা, ১৬ নারীসহ মোট ৬২ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রকাশিত মাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। অক্টোবরে বেশিসংখ্যক নারী ও কন্যাশিশু হত্যার শিকার হয়েছে। এ ঘটনার শিকার হওয়া ৫৩ জনের মধ্যে ৪৬ নারী ও ৭ জন কন্যাশিশু। ১৫টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপপরিষদ এ তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্যাতনের শিকার হওয়া ২৩১ নারী ও কন্যাশিশুর মধ্যে ৩৪ কন্যাসহ ৪৪ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ১০ কন্যাসহ ১৩ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে ২ কন্যাসহ ৫ জন। এ ছাড়া ১০ কন্যাসহ ১৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া সহিংসতার ঘটনার মধ্যে ১০১ কন্যাশিশু, আর ১৩০ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছে।

বিভিন্ন কারণে ৭ কন্যা এবং ৪৬ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছে। হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছে ১ কন্যা ও ২ জন নারী। ৯ কন্যা, ১৭ নারীসহ ২৬ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

২ কন্যা, ৫ নারীসহ ৭ জন আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছে ১ জন।

যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে ৬ কন্যা, ৬ নারীসহ মোট ১২ জন। এর মধ্যে ৫ কন্যাসহ ১১ জন যৌন নিপীড়নের শিকার এবং ১ কন্যা উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে।

অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে ৪ জন নারী। সে কারণে মৃত্যু হয়েছে ১ জন নারীর। ১ জন নারী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে।

৭ কন্যা অপহরণের শিকার হয়েছে। পাচারের শিকার হয়েছে ৬ কন্যাসহ ১০ জন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫ কন্যাসহ ১৯ জন। বাল্যবিবাহের চেষ্টা হয়েছে ২ জন কন্যার। যৌতুকের ঘটনা ঘটেছে ৭টি। এর মধ্যে যৌতুকের জন্য নির্যাতনে ২ এবং যৌতুকের কারণে হত্যার শিকার ৫ জন নারী। এ ছাড়া ৫ জন নারী বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত