কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্রিস্ট্রুন মজল ফ্রস্টাডোত্তির। ৩৬ বছর বয়সে তিনি আইসল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এদিকে নিজের দেশ থেকে নির্বাসিত হয়ে দেশে ফিরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নামিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী সারা কুগোঙ্গেলওয়া। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ প্রায় পুরোপুরি পুরুষেরা শাসন করেছেন কিংবা করে চলেছেন। এই প্রধান স্রোতের বাইরে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনার ইতিহাস নারীদেরও আছে।
ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৮টি দেশে ৩০ জন নারী রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এই নারীদের অনেকে তাঁদের উদ্ভাবনী ও কার্যকর নেতৃত্ব এবং দেশের চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর ভিন্ন ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেওয়ার জন্য প্রশংসিত হচ্ছেন। বর্তমানে একক বা নিম্নকক্ষে সংসদ সদস্যদের মাত্র ২৭ দশমিক ২ শতাংশ নারী, যা ১৯৯৫ সালে ছিল মাত্র ১১ শতাংশ।
২০২৪ সালের নির্বাচনগুলোর পর দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৪৫টি দেশের মধ্যে ৪টি দেশে নারী রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। এশিয়া মহাদেশে মোট ১৪টি দেশে নারী রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছেন। তবে বিশ্বের ১১৫টি দেশে এখনো কোনো নারী রাষ্ট্রপ্রধান হননি। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত ১৪টি দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। ১২টি দেশে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন নারী। এদিকে একমাত্র বার্বাডোজে প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট—দুজনই নারী। একটি দেশে চেয়ারওম্যান অব দ্য কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স পদে এবং আরেকটি দেশে গভর্নর জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত আছেন একজন নারী।
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর এই জরিপকে আরও ভাগ করে যদি মহাদেশভিত্তিক দেখা যায়, তাহলে ইউরোপের ১১টি দেশে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রিপরিষদের চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরেশিয়ায় সেই সংখ্যা ১ জন। এশিয়ার দিকে তাকালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩, দক্ষিণ আমেরিকায় ১, উত্তর আমেরিকায় ৪ এবং আফ্রিকায় ৬ জন। ইউএন উইমেনের তথ্যমতে, মাত্র ছয়টি দেশে সংসদের একক বা নিম্নকক্ষে ৫০ শতাংশ কিংবা তার বেশি নারী সদস্য রয়েছেন। আরও ২১টি দেশ রয়েছে, যেখানে নারী সদস্যদের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। বিশ্বে এখনো ২১টি দেশ আছে, যেখানে সংসদের একক বা নিম্নকক্ষে নারী সদস্য ১০ শতাংশের কম। এমনকি তিনটি দেশের নিম্নকক্ষে কোনো নারী সদস্যই নেই। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ এবং সংসদ সদস্যদের মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। স্থানীয় সরকারে এই সংখ্যা ৩৪ শতাংশ।
নারী নেতৃত্ব কোথায় পরিবর্তন আনছে
১৪৫টি দেশের তথ্য অনুসারে, স্থানীয় পরামর্শমূলক সংস্থাগুলোয় নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ লাখের বেশি। শুধু দুটি দেশে স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশ বা তার বেশি এবং আরও ২৬টি দেশে তা ৪০ শতাংশের বেশি। নারী নেতৃত্ব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। সমাজের সার্বিক উন্নয়নে কার্যকর প্রভাব ফেলে। এই তথ্য উঠে এসেছে ইউএন উইমেনের গবেষণায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতের গ্রামীণ পর্যায়ের পঞ্চায়েতে নারীদের নেতৃত্বাধীন এলাকায় পানীয় জলের প্রকল্পের সংখ্যা ৬২ শতাংশ বেশি ছিল পুরুষ নেতৃত্বাধীন এলাকার তুলনায়। নরওয়েতে নারীদের উপস্থিতি এবং শিশুসেবা কেন্দ্র বৃদ্ধির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া গেছে। নারীরা রাজনৈতিক নেতৃত্বে দলীয় সীমার বাইরে গিয়ে কাজ করেন। তাঁরা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, শিশুসেবা, পেনশন, লৈঙ্গিক সমতা আইন এবং নির্বাচনী সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। সংসদ ও স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে।
এবার হয়তো জাপানের পালা
সম্প্রতি নেপালের ৭৫ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসে আনুষ্ঠানিক নিয়োগের মাধ্যমে প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কারকি। তাঁর আগে দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত প্রথম নারী ছিলেন নেপালের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারি। সম্প্রতি জাপানে সানায়ে তাকাইচি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে প্রার্থী হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই হতে পারেন জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৪ অক্টোবর এলডিপির ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে ১৪৮টি দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ১১৮তম। দেশটিতে অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত। সেখানে আজ পর্যন্ত কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়নি। সংসদেও নারী সদস্যের সংখ্যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক কম। ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত জাপানের নিম্নকক্ষ পার্লামেন্টে নারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ; যেখানে বৈশ্বিক গড় ২৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং এশীয় গড় ২২ দশমিক ১ শতাংশ। তবে জাপানে কি জনগণ নারী প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করতে প্রস্তুত? এই প্রশ্নের জবাবে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভার বিশেষ উপদেষ্টা তোমোহিকো তানিগুচি বলেছিলেন, এখনই সময় জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার। গত ১০-১৫ বছরে দেশে যে সামাজিক পরিবর্তন এসেছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা।
নারা প্রিফেকচারের বাসিন্দা তাকাইচি জানান, তিনি জাপানের শান্তিপূর্ণ সংবিধানের ধারা ৯ সংশোধন করতে চান; যা দেশটিকে যুদ্ধ ঘোষণা করার অধিকার থেকে বিরত রাখতে পারে। তিনি কঠোর নীতির পক্ষে সংবিধান পরিবর্তন চান। তবে এলডিপির নেতা হলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে না। জাপানের নিম্নকক্ষের সদস্যদের ভোটে সিদ্ধান্ত হবে, কে হবেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
জাপান টাইমসে উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক বিশ্লেষক জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী সানায়ে তাকাইচির প্রসঙ্গ ‘গ্লাস ক্লিফ’ ঘটনার একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। কয়েকজন বিশ্লেষকের মতে, জাপানের রাজনৈতিক সংকটের সময় তাঁকে ব্যবহার করে ব্যর্থ হলে পরে এমন বলা যেতে পারে, ‘আমরা নতুন কিছু চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সফল হইনি।’
আলোর নিচের অন্ধকার কতটা গভীর
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের এক-চতুর্থাংশ ছিলেন নারী প্রতিনিধি ও সিনেটর। কমলা হ্যারিস দেশটিতে প্রথমবার নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান এবং প্রথম এশিয়ান-আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশটির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেননি কোনো নারী রাজনীতিবিদ।
অনেক সমাজে নারীদের নেতৃত্ব গ্রহণ অস্বাভাবিক হিসেবে দেখা হয়। এখনো নারীরা রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক সময় সহিংসতার শিকার হয়। রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সম্পদের অভাবও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য বাধা। জাপান, নেপালের মতো দেশগুলোয় নারীর ক্ষমতা কিংবা বার্বাডোজের মতো দেশের সর্বোচ্চ দুটি পর্যায়েই নারীদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নারীর ক্ষমতায়নের ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে। তারপরও বিশ্বব্যাপী নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের হার খুব একটা এগিয়েছে, সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্রিস্ট্রুন মজল ফ্রস্টাডোত্তির। ৩৬ বছর বয়সে তিনি আইসল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এদিকে নিজের দেশ থেকে নির্বাসিত হয়ে দেশে ফিরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নামিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী সারা কুগোঙ্গেলওয়া। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ প্রায় পুরোপুরি পুরুষেরা শাসন করেছেন কিংবা করে চলেছেন। এই প্রধান স্রোতের বাইরে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনার ইতিহাস নারীদেরও আছে।
ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৮টি দেশে ৩০ জন নারী রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এই নারীদের অনেকে তাঁদের উদ্ভাবনী ও কার্যকর নেতৃত্ব এবং দেশের চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর ভিন্ন ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেওয়ার জন্য প্রশংসিত হচ্ছেন। বর্তমানে একক বা নিম্নকক্ষে সংসদ সদস্যদের মাত্র ২৭ দশমিক ২ শতাংশ নারী, যা ১৯৯৫ সালে ছিল মাত্র ১১ শতাংশ।
২০২৪ সালের নির্বাচনগুলোর পর দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৪৫টি দেশের মধ্যে ৪টি দেশে নারী রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। এশিয়া মহাদেশে মোট ১৪টি দেশে নারী রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছেন। তবে বিশ্বের ১১৫টি দেশে এখনো কোনো নারী রাষ্ট্রপ্রধান হননি। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত ১৪টি দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। ১২টি দেশে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন নারী। এদিকে একমাত্র বার্বাডোজে প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট—দুজনই নারী। একটি দেশে চেয়ারওম্যান অব দ্য কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স পদে এবং আরেকটি দেশে গভর্নর জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত আছেন একজন নারী।
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর এই জরিপকে আরও ভাগ করে যদি মহাদেশভিত্তিক দেখা যায়, তাহলে ইউরোপের ১১টি দেশে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রিপরিষদের চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরেশিয়ায় সেই সংখ্যা ১ জন। এশিয়ার দিকে তাকালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩, দক্ষিণ আমেরিকায় ১, উত্তর আমেরিকায় ৪ এবং আফ্রিকায় ৬ জন। ইউএন উইমেনের তথ্যমতে, মাত্র ছয়টি দেশে সংসদের একক বা নিম্নকক্ষে ৫০ শতাংশ কিংবা তার বেশি নারী সদস্য রয়েছেন। আরও ২১টি দেশ রয়েছে, যেখানে নারী সদস্যদের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। বিশ্বে এখনো ২১টি দেশ আছে, যেখানে সংসদের একক বা নিম্নকক্ষে নারী সদস্য ১০ শতাংশের কম। এমনকি তিনটি দেশের নিম্নকক্ষে কোনো নারী সদস্যই নেই। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ এবং সংসদ সদস্যদের মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। স্থানীয় সরকারে এই সংখ্যা ৩৪ শতাংশ।
নারী নেতৃত্ব কোথায় পরিবর্তন আনছে
১৪৫টি দেশের তথ্য অনুসারে, স্থানীয় পরামর্শমূলক সংস্থাগুলোয় নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ লাখের বেশি। শুধু দুটি দেশে স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশ বা তার বেশি এবং আরও ২৬টি দেশে তা ৪০ শতাংশের বেশি। নারী নেতৃত্ব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। সমাজের সার্বিক উন্নয়নে কার্যকর প্রভাব ফেলে। এই তথ্য উঠে এসেছে ইউএন উইমেনের গবেষণায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতের গ্রামীণ পর্যায়ের পঞ্চায়েতে নারীদের নেতৃত্বাধীন এলাকায় পানীয় জলের প্রকল্পের সংখ্যা ৬২ শতাংশ বেশি ছিল পুরুষ নেতৃত্বাধীন এলাকার তুলনায়। নরওয়েতে নারীদের উপস্থিতি এবং শিশুসেবা কেন্দ্র বৃদ্ধির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া গেছে। নারীরা রাজনৈতিক নেতৃত্বে দলীয় সীমার বাইরে গিয়ে কাজ করেন। তাঁরা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, শিশুসেবা, পেনশন, লৈঙ্গিক সমতা আইন এবং নির্বাচনী সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। সংসদ ও স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে।
এবার হয়তো জাপানের পালা
সম্প্রতি নেপালের ৭৫ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসে আনুষ্ঠানিক নিয়োগের মাধ্যমে প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কারকি। তাঁর আগে দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত প্রথম নারী ছিলেন নেপালের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারি। সম্প্রতি জাপানে সানায়ে তাকাইচি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে প্রার্থী হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই হতে পারেন জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৪ অক্টোবর এলডিপির ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে ১৪৮টি দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ১১৮তম। দেশটিতে অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত। সেখানে আজ পর্যন্ত কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়নি। সংসদেও নারী সদস্যের সংখ্যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক কম। ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত জাপানের নিম্নকক্ষ পার্লামেন্টে নারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ; যেখানে বৈশ্বিক গড় ২৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং এশীয় গড় ২২ দশমিক ১ শতাংশ। তবে জাপানে কি জনগণ নারী প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করতে প্রস্তুত? এই প্রশ্নের জবাবে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভার বিশেষ উপদেষ্টা তোমোহিকো তানিগুচি বলেছিলেন, এখনই সময় জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার। গত ১০-১৫ বছরে দেশে যে সামাজিক পরিবর্তন এসেছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা।
নারা প্রিফেকচারের বাসিন্দা তাকাইচি জানান, তিনি জাপানের শান্তিপূর্ণ সংবিধানের ধারা ৯ সংশোধন করতে চান; যা দেশটিকে যুদ্ধ ঘোষণা করার অধিকার থেকে বিরত রাখতে পারে। তিনি কঠোর নীতির পক্ষে সংবিধান পরিবর্তন চান। তবে এলডিপির নেতা হলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে না। জাপানের নিম্নকক্ষের সদস্যদের ভোটে সিদ্ধান্ত হবে, কে হবেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
জাপান টাইমসে উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক বিশ্লেষক জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী সানায়ে তাকাইচির প্রসঙ্গ ‘গ্লাস ক্লিফ’ ঘটনার একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। কয়েকজন বিশ্লেষকের মতে, জাপানের রাজনৈতিক সংকটের সময় তাঁকে ব্যবহার করে ব্যর্থ হলে পরে এমন বলা যেতে পারে, ‘আমরা নতুন কিছু চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সফল হইনি।’
আলোর নিচের অন্ধকার কতটা গভীর
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের এক-চতুর্থাংশ ছিলেন নারী প্রতিনিধি ও সিনেটর। কমলা হ্যারিস দেশটিতে প্রথমবার নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান এবং প্রথম এশিয়ান-আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশটির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেননি কোনো নারী রাজনীতিবিদ।
অনেক সমাজে নারীদের নেতৃত্ব গ্রহণ অস্বাভাবিক হিসেবে দেখা হয়। এখনো নারীরা রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক সময় সহিংসতার শিকার হয়। রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সম্পদের অভাবও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য বাধা। জাপান, নেপালের মতো দেশগুলোয় নারীর ক্ষমতা কিংবা বার্বাডোজের মতো দেশের সর্বোচ্চ দুটি পর্যায়েই নারীদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নারীর ক্ষমতায়নের ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে। তারপরও বিশ্বব্যাপী নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের হার খুব একটা এগিয়েছে, সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না।
আমি এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আমার বাবা-মা প্রায় চার বছর ধরে আলাদা থাকছেন। বাবা একাধিক নারীতে আসক্ত ছিলেন। সে কারণে মাকে মারধর করতেন। শেষমেশ মা বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। এর পর থেকে বাবা আমার খরচ দেওয়া বন্ধ করে দেন। তবে কখনো কখনো পারিবারিক চাপের কারণে কিছু দেন, আবার বন্ধ করে দেন।
১০ ঘণ্টা আগেতার কোনো সাম্রাজ্য নেই, রাজপ্রাসাদ নেই। কখনো স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিন বানানো, কখনো বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি, কখনো ইভ টিজিং, বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রথা বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে সতর্কতা গড়ে তোলাতেই তার আগ্রহ বেশি। মেয়েটির নাম মীনা। আমরা জানি না মীনার বয়স কত, তার বাড়ি কোথায়। কোথায় সেই
১১ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী, রাজনীতিবিদ ও বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামের নেত্রী উইনি ম্যান্ডেলা। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবিরোধী সংগ্রামের এক কিংবদন্তি চরিত্র। তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার দ্বিতীয় স্ত্রী। যখন ম্যান্ডেলা প্রায় ২৭ বছর কারাবন্দী ছিলেন, তখন উইনি বাইরে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগেএলিজাবেথ গ্যারেথ অ্যান্ডারসন ছিলেন ব্রিটেনে প্রথম নিবন্ধিত নারী শল্যচিকিৎসক। সে সময় নারীদের জন্য চিকিৎসা শিক্ষা ছিল প্রায় অসম্ভব। কারণ, অধিকাংশ মেডিকেল স্কুল ও প্রতিষ্ঠান নারীদের ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানাত। ১৮৬৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এলিজাবেথ গ্যারেথ অ্যান্ডারসন সোসাইটি অব অ্যাপোথেকারিজ থেকে একটি লাইস
১১ ঘণ্টা আগে