মৌনতা আমিন
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় উপমহাদেশের পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আর উন্নত জীবন ছিল এককালে এই কাবুলে। ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত দেশটির কৃষি কলেজে ইংরেজি ও ফারসি ভাষার শিক্ষক ছিলেন সৈয়দ মুজতবা আলী। শুধু দেশটি নয়, আমাদের কাছেও এসব এখন গল্প।
এক দীর্ঘ ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পথ পাড়ি দিয়ে আফগানিস্তান বর্তমান সময়ে পৌঁছেছে। বিভিন্ন সময় দেশটি শাসিত হয়েছে বিভিন্নভাবে। কখনো পশ্চিমের ভাবধারায়, কখনো সোভিয়েত ইউনিয়নের আদর্শে। এখন কট্টর ধর্মীয় মতাদর্শে। এসব শাসনের ছাপ পড়েছে দেশটির মানুষের ওপর, বিশেষ করে নারীদের ওপর।
১৯৯৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে প্রথমবার দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তাদের সে শাসনকাল স্থায়ী ছিল ২০০১ সাল পর্যন্ত। এ সময় তালেবান সরকার বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটির জনগণের ওপর। এর বড় অংশ আরোপিত হয় নারীদের ওপর। তাদের বাড়ির বাইরে কাজ করতে নিষেধ করা হয়, ‘উদ্দীপক ও আকর্ষণীয়’ হিসেবে বিবেচিত পোশাক পরা থেকে বিরত রাখা হয়, একান্ত ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয় বা মাহরাম ছাড়া ট্যাক্সি নেওয়া বন্ধ করা হয়, স্রোতে কাপড় ধোয়া অথবা দরজিদের কাছে গিয়ে পোশাকের মাপ দেওয়াও নিষিদ্ধ হয়।
নারীদের চিকিৎসা খাতে কর্মসংস্থান সীমাবদ্ধ ছিল। পুরুষ চিকিৎসকদের নারীদের শরীর পরীক্ষার অনুমতি ছিল না। কাবুলের মতো জায়গায় শুধু মেয়েদের জন্যই নয়; বরং ছেলেদের জন্যও অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। তালেবান জানিয়েছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার সঙ্গে সঙ্গে সব প্রতিষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। কিন্তু আদতে তা হয়নি। বরং বিষয়গুলো স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছিল।
২০০১ সালের পর তালেবান ক্ষমতা হারায় প্রায় দুই দশকের জন্য। এই দীর্ঘ সময় সরকার নারীদের ‘উন্নয়ন’-এর চেষ্টা করে। তারা আগের চাপিয়ে দেওয়া আইনকানুন শিথিল করে এক নতুন পরিবেশ তৈরি করে। ২০ বছর সেটিই ছিল স্বাভাবিক। নারীরা ফিরতে চেষ্টা করেছিল তাদের স্বাভাবিক জীবনে।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে ক্ষমতা নেয় তালেবান। সেই সূত্রে এই আগস্টে তালেবান তাদের দ্বিতীয় মেয়াদের পঞ্চম বছরে পদার্পণ করল। আমরা জানি, তালেবান শাসনে এসেই ফিরিয়ে এনেছে আগের ব্যবস্থা। আর গত চার বছরে এসব ঘটনাকে দেশটির নারীদের কাছে ‘স্বাভাবিক’ করার জোর চেষ্টা হয়েছে।
সম্প্রতি ইউএন উইমেন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আফগানিস্তানের ৭৮ শতাংশের বেশি নারীর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও চাকরি নেই। আফগানিস্তানে নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার দিকে লক্ষ রেখে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে সেখানে মাতৃমৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। জাতিসংঘের আফগানিস্তান মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে মতপ্রকাশের অধিকার কমে যাওয়ার কারণে। আফগান নারীদের কণ্ঠস্বর শুধু জনসমক্ষেই নয়, পরিবারেও উপেক্ষিত হচ্ছে। ইউএন উইমেনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬২ শতাংশ আফগান নারী মনে করে, তারা ঘরের সিদ্ধান্তেও নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে না।
যদি এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে, তাহলে সমাজ ধীরে ধীরে বুদ্ধিবৃত্তিক বৈচিত্র্য মুছে ফেলার দিকে এগিয়ে যাবে এবং লৈঙ্গিক বৈষম্য স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ড. হুমায়রা কাদেরি, আফগান ঔপন্যাসিক ও নারী অধিকারকর্মী; সূত্র: রুখসানা মিডিয়া
তালেবানের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চলতি মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক চাপের অভাব আসলে তালেবানকে ‘পরোক্ষ বৈধতা’ দিচ্ছে। তারা বলেছে, জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলো গত চার বছরে আফগানিস্তানে ঘটে চলা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবেদনে সরকারগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে তালেবানের ওপর আরও চাপ বাড়াতে এবং আফগান শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো বন্ধ করতে। মানবাধিকারকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন, মানুষকে বাধ্য হয়ে মানিয়ে নিতে হচ্ছে বলে অনেকেই ভয়, অর্থনৈতিক দুর্দশা অথবা মানসিক ক্লান্তির কারণে এমন কঠোর অবস্থাকে দৈনন্দিন বাস্তবতার অংশ হিসেবে মেনে নিচ্ছে।
২০২৪ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, তালেবানের জারি করা নির্দেশনাগুলো নারী ও কিশোরীদের শিক্ষা, চাকরি, চলাফেরার স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করেছে। তারা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কিশোরীদের সুরক্ষাব্যবস্থা বাতিল করেছে, স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক বাধা সৃষ্টি করেছে এবং খেলাধুলা ও পার্কে যাওয়া নারীদের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। হিজাব ও মাহরাম বা পুরুষ অভিভাবক-সংক্রান্ত কঠোর নিয়মের ফলে নারীদের চাকরির জন্য যাতায়াত বা চিকিৎসা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ড্রেস কোড মানা হয়নি এমন অভিযোগে অনেক নারী ও কিশোরীকে আটক করেছে তালেবান প্রশাসন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আটক নারী ও কিশোরীদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন নির্জন কারাবন্দী ছিল। তাদের ওপর শারীরিক সহিংসতা, হুমকি ও ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে সেগুলো স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছে।
আফগানিস্তানে বাধ্যতামূলক বিয়ে ও যৌন সহিংসতা বেড়ে চলেছে এবং এর স্বাভাবিকীকরণও সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কবি ও মানবাধিকারকর্মী মাজদা মেহরগান বলেছেন, নারীর মর্যাদা নিয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের পুরুষদের সম্পত্তি হিসেবে দেখার মানসিকতা সহিংসতাকে স্বাভাবিক করে তুলেছে। এই মানসিকতার ভয়াবহতা হলো, এ কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা ব্যক্তির প্রতি সহিংসতা হিসেবে বিবেচিত হয় না। সচেতনতা বৃদ্ধি তাৎক্ষণিক বিপ্লব না ঘটালেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি নতুন প্রজন্মের চোখে নারীদের অনুপস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ হয়ে ওঠা থেকে রক্ষা করবে।
টানা চার বছরের সংগ্রামের পর কোনো দৃশ্যমান ফল না পাওয়ায় মানুষ আশাহীন হয়ে পড়ছে। তালেবানের দমনমূলক শাসনে যেকোনো ধরনের প্রকাশ্য প্রতিবাদ এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও কিছু মানুষ কম ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করছে। তবে এই বিষয়ে বিশ্বের নীরবতা আসলে তালেবান অপরাধকে মেনে নেওয়ার নামান্তর বলেও মনে করছেন অনেকেই।
সূত্র: রুখসানা মিডিয়া, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় উপমহাদেশের পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আর উন্নত জীবন ছিল এককালে এই কাবুলে। ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত দেশটির কৃষি কলেজে ইংরেজি ও ফারসি ভাষার শিক্ষক ছিলেন সৈয়দ মুজতবা আলী। শুধু দেশটি নয়, আমাদের কাছেও এসব এখন গল্প।
এক দীর্ঘ ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পথ পাড়ি দিয়ে আফগানিস্তান বর্তমান সময়ে পৌঁছেছে। বিভিন্ন সময় দেশটি শাসিত হয়েছে বিভিন্নভাবে। কখনো পশ্চিমের ভাবধারায়, কখনো সোভিয়েত ইউনিয়নের আদর্শে। এখন কট্টর ধর্মীয় মতাদর্শে। এসব শাসনের ছাপ পড়েছে দেশটির মানুষের ওপর, বিশেষ করে নারীদের ওপর।
১৯৯৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে প্রথমবার দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তাদের সে শাসনকাল স্থায়ী ছিল ২০০১ সাল পর্যন্ত। এ সময় তালেবান সরকার বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটির জনগণের ওপর। এর বড় অংশ আরোপিত হয় নারীদের ওপর। তাদের বাড়ির বাইরে কাজ করতে নিষেধ করা হয়, ‘উদ্দীপক ও আকর্ষণীয়’ হিসেবে বিবেচিত পোশাক পরা থেকে বিরত রাখা হয়, একান্ত ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয় বা মাহরাম ছাড়া ট্যাক্সি নেওয়া বন্ধ করা হয়, স্রোতে কাপড় ধোয়া অথবা দরজিদের কাছে গিয়ে পোশাকের মাপ দেওয়াও নিষিদ্ধ হয়।
নারীদের চিকিৎসা খাতে কর্মসংস্থান সীমাবদ্ধ ছিল। পুরুষ চিকিৎসকদের নারীদের শরীর পরীক্ষার অনুমতি ছিল না। কাবুলের মতো জায়গায় শুধু মেয়েদের জন্যই নয়; বরং ছেলেদের জন্যও অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। তালেবান জানিয়েছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার সঙ্গে সঙ্গে সব প্রতিষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। কিন্তু আদতে তা হয়নি। বরং বিষয়গুলো স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছিল।
২০০১ সালের পর তালেবান ক্ষমতা হারায় প্রায় দুই দশকের জন্য। এই দীর্ঘ সময় সরকার নারীদের ‘উন্নয়ন’-এর চেষ্টা করে। তারা আগের চাপিয়ে দেওয়া আইনকানুন শিথিল করে এক নতুন পরিবেশ তৈরি করে। ২০ বছর সেটিই ছিল স্বাভাবিক। নারীরা ফিরতে চেষ্টা করেছিল তাদের স্বাভাবিক জীবনে।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে ক্ষমতা নেয় তালেবান। সেই সূত্রে এই আগস্টে তালেবান তাদের দ্বিতীয় মেয়াদের পঞ্চম বছরে পদার্পণ করল। আমরা জানি, তালেবান শাসনে এসেই ফিরিয়ে এনেছে আগের ব্যবস্থা। আর গত চার বছরে এসব ঘটনাকে দেশটির নারীদের কাছে ‘স্বাভাবিক’ করার জোর চেষ্টা হয়েছে।
সম্প্রতি ইউএন উইমেন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আফগানিস্তানের ৭৮ শতাংশের বেশি নারীর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও চাকরি নেই। আফগানিস্তানে নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার দিকে লক্ষ রেখে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে সেখানে মাতৃমৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। জাতিসংঘের আফগানিস্তান মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে মতপ্রকাশের অধিকার কমে যাওয়ার কারণে। আফগান নারীদের কণ্ঠস্বর শুধু জনসমক্ষেই নয়, পরিবারেও উপেক্ষিত হচ্ছে। ইউএন উইমেনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬২ শতাংশ আফগান নারী মনে করে, তারা ঘরের সিদ্ধান্তেও নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে না।
যদি এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে, তাহলে সমাজ ধীরে ধীরে বুদ্ধিবৃত্তিক বৈচিত্র্য মুছে ফেলার দিকে এগিয়ে যাবে এবং লৈঙ্গিক বৈষম্য স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ড. হুমায়রা কাদেরি, আফগান ঔপন্যাসিক ও নারী অধিকারকর্মী; সূত্র: রুখসানা মিডিয়া
তালেবানের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চলতি মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক চাপের অভাব আসলে তালেবানকে ‘পরোক্ষ বৈধতা’ দিচ্ছে। তারা বলেছে, জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলো গত চার বছরে আফগানিস্তানে ঘটে চলা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবেদনে সরকারগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে তালেবানের ওপর আরও চাপ বাড়াতে এবং আফগান শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো বন্ধ করতে। মানবাধিকারকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন, মানুষকে বাধ্য হয়ে মানিয়ে নিতে হচ্ছে বলে অনেকেই ভয়, অর্থনৈতিক দুর্দশা অথবা মানসিক ক্লান্তির কারণে এমন কঠোর অবস্থাকে দৈনন্দিন বাস্তবতার অংশ হিসেবে মেনে নিচ্ছে।
২০২৪ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, তালেবানের জারি করা নির্দেশনাগুলো নারী ও কিশোরীদের শিক্ষা, চাকরি, চলাফেরার স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করেছে। তারা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কিশোরীদের সুরক্ষাব্যবস্থা বাতিল করেছে, স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক বাধা সৃষ্টি করেছে এবং খেলাধুলা ও পার্কে যাওয়া নারীদের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। হিজাব ও মাহরাম বা পুরুষ অভিভাবক-সংক্রান্ত কঠোর নিয়মের ফলে নারীদের চাকরির জন্য যাতায়াত বা চিকিৎসা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ড্রেস কোড মানা হয়নি এমন অভিযোগে অনেক নারী ও কিশোরীকে আটক করেছে তালেবান প্রশাসন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আটক নারী ও কিশোরীদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন নির্জন কারাবন্দী ছিল। তাদের ওপর শারীরিক সহিংসতা, হুমকি ও ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে সেগুলো স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছে।
আফগানিস্তানে বাধ্যতামূলক বিয়ে ও যৌন সহিংসতা বেড়ে চলেছে এবং এর স্বাভাবিকীকরণও সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কবি ও মানবাধিকারকর্মী মাজদা মেহরগান বলেছেন, নারীর মর্যাদা নিয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের পুরুষদের সম্পত্তি হিসেবে দেখার মানসিকতা সহিংসতাকে স্বাভাবিক করে তুলেছে। এই মানসিকতার ভয়াবহতা হলো, এ কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা ব্যক্তির প্রতি সহিংসতা হিসেবে বিবেচিত হয় না। সচেতনতা বৃদ্ধি তাৎক্ষণিক বিপ্লব না ঘটালেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি নতুন প্রজন্মের চোখে নারীদের অনুপস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ হয়ে ওঠা থেকে রক্ষা করবে।
টানা চার বছরের সংগ্রামের পর কোনো দৃশ্যমান ফল না পাওয়ায় মানুষ আশাহীন হয়ে পড়ছে। তালেবানের দমনমূলক শাসনে যেকোনো ধরনের প্রকাশ্য প্রতিবাদ এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও কিছু মানুষ কম ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করছে। তবে এই বিষয়ে বিশ্বের নীরবতা আসলে তালেবান অপরাধকে মেনে নেওয়ার নামান্তর বলেও মনে করছেন অনেকেই।
সূত্র: রুখসানা মিডিয়া, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্রিস্ট্রুন মজল ফ্রস্টাডোত্তির। ৩৬ বছর বয়সে তিনি আইসল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এদিকে নিজের দেশ থেকে নির্বাসিত হয়ে দেশে ফিরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নামিবিয়ার সাবেক
২ দিন আগেআমি এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আমার বাবা-মা প্রায় চার বছর ধরে আলাদা থাকছেন। বাবা একাধিক নারীতে আসক্ত ছিলেন। সে কারণে মাকে মারধর করতেন। শেষমেশ মা বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। এর পর থেকে বাবা আমার খরচ দেওয়া বন্ধ করে দেন। তবে কখনো কখনো পারিবারিক চাপের কারণে কিছু দেন, আবার বন্ধ করে দেন।
২ দিন আগেতার কোনো সাম্রাজ্য নেই, রাজপ্রাসাদ নেই। কখনো স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিন বানানো, কখনো বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি, কখনো ইভ টিজিং, বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রথা বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে সতর্কতা গড়ে তোলাতেই তার আগ্রহ বেশি। মেয়েটির নাম মীনা। আমরা জানি না মীনার বয়স কত, তার বাড়ি কোথায়। কোথায় সেই
২ দিন আগেদক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী, রাজনীতিবিদ ও বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামের নেত্রী উইনি ম্যান্ডেলা। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবিরোধী সংগ্রামের এক কিংবদন্তি চরিত্র। তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার দ্বিতীয় স্ত্রী। যখন ম্যান্ডেলা প্রায় ২৭ বছর কারাবন্দী ছিলেন, তখন উইনি বাইরে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
২ দিন আগে