অর্চি হক, ঢাকা
‘যারা টিভি রুমকে পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করছেন, তাদের আজকের মধ্যে বইপত্রসহ ব্যক্তিগত জিনিস নিয়ে খালি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় হোস্টেল নীতিমালার শর্তভঙ্গের কারণে তাদের সিট বাতিল করা হবে।’
রাজধানীর নীলক্ষেতে অবস্থিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে এভাবেই টিভি রুম খালি করার জন্য নোটিশ সেঁটে দেওয়া হয়েছে। অথচ পড়ার আলাদা কোনো জায়গা না থাকাতেই বাধ্য হয়ে টিভি রুমে আশ্রয় নেন বোর্ডাররা।
পড়াশোনার অসুবিধা কর্মজীবী নারীদের এ আবাসনের অনেক সমস্যার মাত্র একটি। নতুন ভবন হয়েছে, যার ভাড়া পুরোনো ভবনের দ্বিগুণের বেশি। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন ভবন হলেও সেবার মান বাড়েনি।
‘ভাড়া বেশি, সেবা কম’
হোস্টেলের পুরোনো দুটি ভবনের ভাড়া একরকম, নতুন ভবনের ভাড়া তার তুলনায় মোটের ওপর তিনগুণ। পুরোনো ভবনে ৪ সিটের রুমে ভাড়া ১ হাজার ১২০ টাকা। আর নতুন ভবনে ৪ সিটের রুমে ভাড়া ৩ হাজার ৭৪৬ টাকা। পুরোনো ভবনে সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ২ হাজার ৫৬০ টাকা। নতুন ভবনে তা ৬ হাজার ৬০৩ টাকা।
বাসিন্দারা বলেছেন, ভাড়া বেশি হলেও নতুন ভবনে নেই বাড়তি কোনো সুবিধা। তিন ভবনে বোর্ডারদের নিজেদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি রান্নাঘর, দুটি টিভি রুম আর একটি মাত্র ক্যানটিন।
তামান্না আফরীন নামের একজন বোর্ডার বলেন, ‘সত্যি বলতে, বাধ্য হয়ে এখানে আছি।’
বিস্বাদ খাবার, সেটুকুও পান না অনেকে
‘মাছ আর মুরগির ঝোলটা এত বাজে! মুরগির মাংস প্রায়ই কাঁচা থাকে,’ হোস্টেলের খাবারের মানের এ বর্ণনা দিলেন সুমাইয়া তাবাসসুম। তিনি জানালেন, ক্যানটিনে যেতে দেরি হলে অনেক সময়ই শেষ হয়ে যায় দুপুরের খাবার।
শুক্রবার ক্যানটিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে খাবার দেওয়া শুরু হয় ৷ ২টা ২৫-এ শেষ হয়ে যায় ভাত। ২০ মিনিট পর যখন নতুন করে ভাত আসে, ততক্ষণে মাছ, মুরগি প্রায় শেষ।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার ছামিনা হাফিজ বলেন, ‘মাঝে মাঝে মাছ, মুরগিটা শেষ হয়ে যায়। এটা সব সময় হয় না।’
পড়ার পরিবেশ নেই
সরকারি এই হোস্টেলের তিন ভবন মিলিয়ে একটি লাইব্রেরি। তা মূলত বন্ধই থাকে বলে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন। প্রতিটি বেডের সঙ্গে একটি পড়ার টেবিল থাকলেও অনেকের উপস্থিতির কারণে পড়ার আদর্শ পরিবেশ থাকে না। তাই অনেকে টিভি ও জিম রুমে গিয়ে, এমনকি করিডরে টেবিল পেতে পড়াশোনার জায়গা করে নিয়েছেন। এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার বলেন, ‘বোর্ডাররা শিক্ষার্থী নন। তাই আলাদা রিডিং রুম নেই।’
লাইব্রেরি বন্ধ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। অন্যদিকে কর্মজীবীদের পড়ার দরকার নেই—এ যুক্তি হাস্যকর, বলেছেন কয়েকজন বোর্ডার।
এ প্রতিবেদক গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার হোস্টেলে গিয়ে লাইব্রেরিতে তালা ঝুলতে দেখেছেন।
অপরিচ্ছন্ন চারদিক
হোস্টেল ভবনগুলোর ভেতরে ও বাইরে দুদিন ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ জায়গাই অপরিচ্ছন্ন। রান্নাঘর, থালাবাটি ধোয়ার জায়গা এবং টয়লেটগুলো অপরিষ্কার। তাহিয়া ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘আমরা যে একটু শান্তিমতো হাঁটব, সেটাও পারি না। ছাদগুলোও বন্ধ করে রাখা হয়।’
সুপারিশ ছাড়া মেলে না সিট
কর্মজীবী নারীদের সাময়িকভাবে থাকার জন্য মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের এ রকম মোট নয়টি হোস্টেল রয়েছে। তবে সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে রাজধানীর এই হোস্টেলটিতেই আবেদন পড়ে সবচেয়ে বেশি। মাস্টার্সের পরে হল ছেড়ে দেওয়া অনেক নারী শিক্ষার্থীই নীলক্ষেত হোস্টেলে থাকাটা নিরাপদ ও সুবিধাজনক মনে করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, উচ্চপদস্থ বা অন্য কোনোভাবে প্রভাবশালী কারও সুপারিশ ছাড়া হোস্টেলে সিট মেলে না।
হোস্টেল সুপার সুপারিশের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, জমা পড়া আবেদন থেকে যাচাই-বাছাই করে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
(বোর্ডারদের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে)
‘যারা টিভি রুমকে পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করছেন, তাদের আজকের মধ্যে বইপত্রসহ ব্যক্তিগত জিনিস নিয়ে খালি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় হোস্টেল নীতিমালার শর্তভঙ্গের কারণে তাদের সিট বাতিল করা হবে।’
রাজধানীর নীলক্ষেতে অবস্থিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে এভাবেই টিভি রুম খালি করার জন্য নোটিশ সেঁটে দেওয়া হয়েছে। অথচ পড়ার আলাদা কোনো জায়গা না থাকাতেই বাধ্য হয়ে টিভি রুমে আশ্রয় নেন বোর্ডাররা।
পড়াশোনার অসুবিধা কর্মজীবী নারীদের এ আবাসনের অনেক সমস্যার মাত্র একটি। নতুন ভবন হয়েছে, যার ভাড়া পুরোনো ভবনের দ্বিগুণের বেশি। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন ভবন হলেও সেবার মান বাড়েনি।
‘ভাড়া বেশি, সেবা কম’
হোস্টেলের পুরোনো দুটি ভবনের ভাড়া একরকম, নতুন ভবনের ভাড়া তার তুলনায় মোটের ওপর তিনগুণ। পুরোনো ভবনে ৪ সিটের রুমে ভাড়া ১ হাজার ১২০ টাকা। আর নতুন ভবনে ৪ সিটের রুমে ভাড়া ৩ হাজার ৭৪৬ টাকা। পুরোনো ভবনে সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ২ হাজার ৫৬০ টাকা। নতুন ভবনে তা ৬ হাজার ৬০৩ টাকা।
বাসিন্দারা বলেছেন, ভাড়া বেশি হলেও নতুন ভবনে নেই বাড়তি কোনো সুবিধা। তিন ভবনে বোর্ডারদের নিজেদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি রান্নাঘর, দুটি টিভি রুম আর একটি মাত্র ক্যানটিন।
তামান্না আফরীন নামের একজন বোর্ডার বলেন, ‘সত্যি বলতে, বাধ্য হয়ে এখানে আছি।’
বিস্বাদ খাবার, সেটুকুও পান না অনেকে
‘মাছ আর মুরগির ঝোলটা এত বাজে! মুরগির মাংস প্রায়ই কাঁচা থাকে,’ হোস্টেলের খাবারের মানের এ বর্ণনা দিলেন সুমাইয়া তাবাসসুম। তিনি জানালেন, ক্যানটিনে যেতে দেরি হলে অনেক সময়ই শেষ হয়ে যায় দুপুরের খাবার।
শুক্রবার ক্যানটিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে খাবার দেওয়া শুরু হয় ৷ ২টা ২৫-এ শেষ হয়ে যায় ভাত। ২০ মিনিট পর যখন নতুন করে ভাত আসে, ততক্ষণে মাছ, মুরগি প্রায় শেষ।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার ছামিনা হাফিজ বলেন, ‘মাঝে মাঝে মাছ, মুরগিটা শেষ হয়ে যায়। এটা সব সময় হয় না।’
পড়ার পরিবেশ নেই
সরকারি এই হোস্টেলের তিন ভবন মিলিয়ে একটি লাইব্রেরি। তা মূলত বন্ধই থাকে বলে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন। প্রতিটি বেডের সঙ্গে একটি পড়ার টেবিল থাকলেও অনেকের উপস্থিতির কারণে পড়ার আদর্শ পরিবেশ থাকে না। তাই অনেকে টিভি ও জিম রুমে গিয়ে, এমনকি করিডরে টেবিল পেতে পড়াশোনার জায়গা করে নিয়েছেন। এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার বলেন, ‘বোর্ডাররা শিক্ষার্থী নন। তাই আলাদা রিডিং রুম নেই।’
লাইব্রেরি বন্ধ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। অন্যদিকে কর্মজীবীদের পড়ার দরকার নেই—এ যুক্তি হাস্যকর, বলেছেন কয়েকজন বোর্ডার।
এ প্রতিবেদক গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার হোস্টেলে গিয়ে লাইব্রেরিতে তালা ঝুলতে দেখেছেন।
অপরিচ্ছন্ন চারদিক
হোস্টেল ভবনগুলোর ভেতরে ও বাইরে দুদিন ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ জায়গাই অপরিচ্ছন্ন। রান্নাঘর, থালাবাটি ধোয়ার জায়গা এবং টয়লেটগুলো অপরিষ্কার। তাহিয়া ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘আমরা যে একটু শান্তিমতো হাঁটব, সেটাও পারি না। ছাদগুলোও বন্ধ করে রাখা হয়।’
সুপারিশ ছাড়া মেলে না সিট
কর্মজীবী নারীদের সাময়িকভাবে থাকার জন্য মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের এ রকম মোট নয়টি হোস্টেল রয়েছে। তবে সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে রাজধানীর এই হোস্টেলটিতেই আবেদন পড়ে সবচেয়ে বেশি। মাস্টার্সের পরে হল ছেড়ে দেওয়া অনেক নারী শিক্ষার্থীই নীলক্ষেত হোস্টেলে থাকাটা নিরাপদ ও সুবিধাজনক মনে করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, উচ্চপদস্থ বা অন্য কোনোভাবে প্রভাবশালী কারও সুপারিশ ছাড়া হোস্টেলে সিট মেলে না।
হোস্টেল সুপার সুপারিশের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, জমা পড়া আবেদন থেকে যাচাই-বাছাই করে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
(বোর্ডারদের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে)
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
২ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৪ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৪ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৪ দিন আগে