পেঁয়াজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে চার দিন ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারে। তেলের পর এবার পেঁয়াজের দাম। আমদানি বন্ধ হওয়ার এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা কেজি মূল্যের ভারতীয় পেঁয়াজ...

বাগেরহাটের ফকিরহাটে সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই হঠাৎ পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। দুই দিনের ব্যবধানে ৭৫ কেজির প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ৭৫০ টাকা, ৬০ কেজি রসুনের বস্তা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং কেজি প্রতি কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্যতেলের সংকট পুরোপুরি কাটতে না কাটতেই আবার অস্থির হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সাটুরিয়া হাটে কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতারা এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার পরও বাজারে বাড়ছে আদা ও রসুনের দাম। খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১৬ টাকায়, অন্যদিকে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। অথচ দু-এক দিন আগেও প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হয়েছিল ১১০ টাকায়, আদা বিক্রি হয়েছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।

ঈদের আগে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন আমদানি বন্ধে সংকটের অজুহাতে বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ২৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকায়।

ভোজ্যতেলের পর এবার দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দুই দিনের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আইপির মেয়াদ (আমদানি অনুমতি) শেষ হওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি। আমদানি বন্ধ থাকলে আগামী দিনগুলোতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার আশঙ্কা পাইকারি ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে আমদানিকারকেরা বলছেন, হিলি স্থলবন্দর...

ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। একই সঙ্গে বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন ও ব্রয়লার মুরগির দাম। এ ছাড়া ঊর্ধ্বমুখী খোলা সয়াবিন তেলের দামও। বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি। গতকাল সোমবার সকালে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

ফরিদপুরের মধুখালীতে এ বছর পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। ফলনে খুশি হলেও পেঁয়াজের বাজারদর কম হওয়ায় লোকসানের চিন্তাও মাথায় রাখতে হচ্ছে।

‘সারের দাম বেশি, শ্রমিকের মজুরি বেশি, বেচার সময় খাজনা বেশি, ৪২ কেজিতে মণ, সব জায়গায় খালি কৃষকের লোকসান, এ চাষ আর করব না।’ আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন পেঁয়াজচাষি মো. আমিরুল ইসলাম।

দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ উৎপাদন হয় রাজবাড়ীতে। জেলার পাংশা-কালুখালী-বালিয়াকান্দি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের আবাদ হয়। দেশজুড়ে এই অঞ্চলের পেঁয়াজের সুনাম রয়েছে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে পেঁয়াজের আবাদ।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ও পদুয়ায় এই প্রথম পেঁয়াজ চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলায় ৯৯ শতক জমিতে এবার তিন কৃষক পেঁয়াজ চাষ করেছেন।

পাবনার সুজানগর, সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলায় পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। জেলার বাজারগুলো এখন নতুন পেঁয়াজে সয়লাব, কিন্তু হাসি নেই পেঁয়াজচাষিদের মুখে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১৮ টাকা। আর পেঁয়াজের তুলনায় ৫-৭ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আজ শুক্রবার উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি ডিগ্রি কলেজ মাঠের সাপ্তাহিক হাটে তরমুজ ও পেঁয়াজ এমন দরে কেনাবেচা হয়।

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ধস নেমেছে পেঁয়াজ-রসুনের বাজারে। প্রতি মণ পেঁয়াজ-রসুন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০০ টাকায়। অথচ বাজারে একটি বড় সাইজের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে। কেনাবেচার এ ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ-রসুনের দামে হতাশ চাষিসহ সংশ্লিষ্টরা।

পাবনার আটঘরিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা। উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় বাজারে দাম কম থাকায় লোকসানের কবলে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের।

দেশের মধ্যে পেঁয়াজ চাষে অন্যতম রাজবাড়ী। এ বছর জেলার পাংশা উপজেলায় পেঁয়াজের আশানুরূপ ফলন হয়নি। অন্যদিকে বাজারে দাম কম থাকয় হতাশায় পড়েছেন কৃষকেরা।