Ajker Patrika

তেলের পর পেঁয়াজ-রসুন

আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট)
আপডেট : ১৪ মে ২০২২, ১২: ১৯
তেলের পর পেঁয়াজ-রসুন

বাগেরহাটের ফকিরহাটে সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই হঠাৎ পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। দুই দিনের ব্যবধানে ৭৫ কেজির প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ৭৫০ টাকা, ৬০ কেজি রসুনের বস্তা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং কেজি প্রতি কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

হঠাৎ পেঁয়াজ-রোশনের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ক্রেতার পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন। দাম আরও বৃদ্ধির ভয়ে উদ্বিগ্ন ক্রেতাদের পেঁয়াজ কিনতে দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে ফকিরহাট বাজারের বিভিন্ন খুচরা দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ (ছোট-বড় এক সঙ্গে) ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে, যা একদিন আগে ২৮ থেকে ৩০ টাকা ছিল। রসুন দুই দিনের ব্যবধানে ৫৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

এ ছাড়া ৬০ টাকার কাঁচামরিচ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে আলু, আদাসহ বিভিন্ন পণ্যের। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এভাবে হুটহাট দাম বাড়িয়ে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের জিম্মি করছে বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পেঁয়াজ কিনতে আসা একাধিক ক্রেতা। একই চিত্র উপজেলার অন্যান্য বাজারগুলোতেও। বাধ্যবাধকতা থাকলেও এ সময় বেশির ভাগ দোকানে পণ্যের দৈনিক মূল্যতালিকা দেখা যায়নি।

ফকিরহাট বাজারের পূর্ব মাথার খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা ফেরদৌস শেখ, জামাল হোসেনসহ কয়েকজন দোকানি বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১২ থেকে ১৭ টাকা, রোশনে ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, আলুতে ৫ থেকে ৭ টাকা ও মরিচে ৬০ টাকার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাজার করতে আসা বেসরকারি কলেজের শিক্ষক শেখ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সয়াবিনে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তার মধ্যে পেঁয়াজ-রোশনের বাজার চড়া হতে শুরু করেছে। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। দিনদিন প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে, হতাশায় পড়ে গেছি।’

ভ্যানচালক মো. জুলু শেখ বলেন, ‘যা আয় করি তা যদি তেল-পেঁয়াজ কিনতেই চলে যায়, তাহলে ভাত খাব কী করে? উচ্চমূল্যের কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।’

ক্রেতাদের ভোগান্তির সঙ্গে নিজেরাও বিপাকে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেন আসলাম খান নামের এক খুচরা বিক্রেতা। এই পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা আসলে কম দামে বিক্রি করতে চাই, কিন্তু বেশি টাকা দিয়ে কিনে সেটা তো সম্ভব নয়।’

সততা বাণিজ্য ভান্ডারের ছাদেক মল্লিক বলেন, পেঁয়াজের দাম কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। হঠাৎ খুলনার বড় বাজারের পাইকারেরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরাও নাকি বেশি দামে কিনেছে! এভাবে দাম বৃদ্ধিকে তিনি অস্বাভাবিক বলে মনে করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। তাঁদের আইনের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তবে দামের তালিকা দোকানে টানিয়ে না রাখলে জরিমানা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত