আড্ডা

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকেই খাকি পোশাকের লোকজনদের আনাগোনা বেড়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসের রাস্তায় তখন শিক্ষক বা শিক্ষার্থী নেই। হাঁটছে শুধু সেনা সদস্যরা। পরিবারসহ গৃহবন্দী হয়ে থাকাটাই সবচেয়ে নিরাপদ। নাজিম মাহমুদ আপাতত সে কাজটাই করলেন।

হাইকোর্টের বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৭১ সালে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে তিনি যখন অধিবেশনে ছিলেন, তখন ঢাকায় চলছিল জেনোসাইড।

২৫ মার্চ বোঝা যাচ্ছিল, ইয়াহিয়া সরকার বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা দেবে না। অস্বাভাবিক কিছু ঘটতে পারে, সেটা বোঝা যাচ্ছিল। তাজউদ্দীন আহমদের বাড়িতে উত্তেজনা। মিমি আর সোহেলকে নিয়ে...

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ রাত কোনোভাবেই স্বাভাবিক ছিল না। মেজর রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম শহরের রেলওয়ে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে দাঁড়ালেন। তখন রাত নয়টা। সেই পাহাড়ের ওপরে একটি দোতলা কাঠের বাংলো। সেখান থেকে টেলিফোনে পর পর দুটি মেসেজ পাঠিয়েছেন তিনি। দুটি মেসেজই ইপিআর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দক্ষিণে টেকনাফ থেকে উত্তরে শুভপুর

পাকিস্তানিদের শোষণের বিষয়টি ষাটের দশকে ভালো করে বুঝতে পারছিল বাঙালিরা। একষট্টি সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকীতে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেই অনুষ্ঠান করেছিলেন সংস্কৃতিসেবীরা। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হয়েছিল সেই অনুষ্ঠান। ফাহমিদা সেই অনুষ্ঠানে গেয়েছিলেন গান

সিনেমায় অভিনয় করবেন বলে স্থির করেছিলেন রাজ্জাক। তখন থাকতেন কলকাতায়। ১৯৬৪ সালে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হলো, তাতে তিনি বুঝলেন এখানে থাকা যাবে না। ঠিক করলেন

কেউ একজন একদিন অভিনেতা আল মনসুরকে ডেকে বললেন, ‘নন্দিত নরকে বইটা ভালো। পড়েন।’ আল-মনসুর বইটি পড়ে ফেললেন। ভালো লাগল। তারপর তিনি গেলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকের বিশিষ্টজন আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছে। বললেন, ‘মামুন ভাই, এটা একটা ভালো গল্প। নাটক করা যায়।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের সিংহভাগ মানুষই ছিল অবরুদ্ধ। উদ্বাস্তু হিসেবে প্রায় এক কোটি মানুষ গিয়েছিল সীমান্তের ওপারে। যুবকেরা গিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে। শিল্পীরা গিয়েছিলেন

পাকিস্তান সরকার বাংলা সংস্কৃতির পরোক্ষ বিরোধিতা করেছিল, এ কথা নতুন কিছু নয়। সবার অলক্ষ্যে সংস্কৃতিবিরোধী কিছু করার মানসিকতা ছিল তাদের। জয়নুল আবেদিন তাদের সেই ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছিলেন পরোক্ষভাবে। পরোক্ষ বদমায়েশীর পরোক্ষ বিরোধিতা।

প্রবল গণ-আন্দোলনের পর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বিনা শর্তে মুক্তি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু। আইয়ুব খান গোলটেবিল বৈঠক ডেকেছেন ১৯৬৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। গোলটেবিল হবে পিন্ডিতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে পৌঁছালেন ২৭ ফেব্রুয়ারি। তাঁকে অভ্যর্থনা করতে গেলেন কে আব্দুল মোমেন।

ব্রতচারী আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছিল ১৯৩১ সালে। হাওড়া জেলার প্রথম শিবির থেকে। এর আগে বয় স্কাউট ছিল ছোটদের একমাত্র আন্দোলন। পটুয়া কামরুল হাসান সে সময় স্কাউটিং করতেন। ১৯৩২ সালে তিনি হাফপ্যান্ট, মিলিটারি শার্ট ও গলায় স্কার্ফ দিয়ে পায়ে বাটা কোম্পানির নটিবয় শু পরে স্কাউটের বালক বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।

ঢাকায় এসেছিলেন যখন, তখন সৈয়দ শামসুল হককে মুর্তজা বশীর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামে তাঁর ফ্ল্যাটে আসার জন্য। বলেছিলেন, ‘গোটা তিরিশেক নতুন ছবি আঁকছি, একটা এক্সিবিশন করব। বাড়িতে এলে দেখতে পাবে।’

জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক পড়াতেন দুটো বিভাগে—রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যক্ষ ড. এম এ আজিজের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক স্থির করলেন এই বিভাগে আর পড়াবেন না। ড. আজিজ লিখিতভাবে রাজ্জাক সাহেবকে ক্লাস নিতে অনুরোধ করলেন। যে চিঠিপত্র পাঠিয়েছিলেন, আব্দ

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় যুদ্ধের মধ্যেই বাংলাদেশের মুক্ত এলাকায় গিয়েছেন, প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। কবির তৈরি প্রতিবেদন তো আসলে প্রতিবেদন নয়, হৃদয়-উৎসারিত শব্দাবলি। যশোরের মনিরামপুরের মেহের আলী জল্লাদকে সামনে পেলে কেন এক কোপে দুখানা করতে চেয়েছিলেন কবি, সে কথাই জানব এখন।

গণসংগীত ছিল তাঁর প্রাণ। তবে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করে সংগীতে তাঁর জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন। ‘কার বউ’, ‘আপন দুলাল’, ‘রহিম বাদশা ও রূপবান’, ‘বেহুলা’সহ অনেক ছবির গানেই পাওয়া যাবে তাঁর স্পর্শ।

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ চট্টগ্রামের প্যারেড ময়দানে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম কলেজের মাঠে শিক্ষক সমিতি পরিচালিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ আর মল্লিক। রাত সাড়ে ৮টার দিকে যখন স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে একটা নাটক হচ্ছিল, তখন খবর এল চট্টগ্রাম বন্দরে সদ্য আসা পাকিস্তানি সোয়াত জাহাজ

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এম আর আখতার মুকুল নানা পথ দিয়ে পৌঁছালেন কলকাতায়। খবর পেলেন, তিনি যে মাকিরিনি সংবাদ সংস্থায় সংবাদদাতা হিসেবে চাকরি করতেন, সেটা তখনো বহাল আছে। ইউপিআইয়ের কলকাতার সংবাদদাতা অজিত দাশের সঙ্গেও এম আর আখতার মুকুলের ছিল ঘনিষ্ঠতা। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের ২৫ মিটার ব্যান্ডে ৫০ কিলোওয়াট