Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ায় জরুরি কলসেবায় বিভ্রাট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত দুই বছরের মধ্যে এটি অপটাসের দ্বিতীয় বড় বিভ্রাট। ছবি: সংগৃহীত
গত দুই বছরের মধ্যে এটি অপটাসের দ্বিতীয় বড় বিভ্রাট। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিকম সংস্থা অপটাস আবারও জরুরি কলসেবায় বিভ্রাটের মুখে পড়েছে। গত ১০ দিনের মধ্যে এটি তাদের দ্বিতীয় বড় ধরনের বিপর্যয়। রোববার সকালে নিউ সাউথ ওয়েলসের ড্যাপ্টো শহরে (সিডনি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে) এ ঘটনা ঘটে। এর ফলে প্রায় সাড়ে চার হাজার গ্রাহক বিপাকে পড়েন।

উল্লেখ্য, জরুরি কলসেবা অস্ট্রেলিয়ায় ‘ট্রিপল জিরো’ (000) নামে পরিচিত। এটি মারাত্মক বিপদ, দুর্ঘটনা বা প্রাণঘাতী পরিস্থিতিতে জরুরি সহায়তা চাওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবস্থা।

এক বিবৃতিতে অপটাস জানায়, একটি ত্রুটিপূর্ণ মোবাইল টাওয়ার এই সেবা বিচ্যুতির কারণ। এর ফলে ব্যবহারকারীরা জরুরি নম্বরে ফোন করতে পারেননি।

তবে অপটাস আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, ‘যেসব গ্রাহক জরুরি সেবা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁরা সবাই নিরাপদ আছেন।’

অপটাস আরও জানায়, ঘটনার কারণ এখনো তদন্তাধীন, তবে বর্তমানে সেবা পুনরুদ্ধার হয়েছে।

অপটাসের মূল প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর টেলিকমিউনিকেশনসের (সিঙ্গটেল) পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, তারা ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং অস্ট্রেলিয়ান সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করবে।

এ ঘটনা অস্ট্রেলিয়ান সরকার তদন্ত করবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ১৮ সেপ্টেম্বরে ১৩ ঘণ্টাব্যাপী বড় ধরনের বিভ্রাট হয়। এর ফলে দুটি রাজ্য ও উত্তরাঞ্চলে জরুরি সেবা বন্ধ ছিল।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ মন্তব্য করেছিলেন, ‘এ ধরনের ব্যর্থতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।’

ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় সরকার এবার আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী আনিকা ওয়েলসের সঙ্গে সিঙ্গটেল গ্রুপের সিইও ইউন কুয়ান মুন, অপটাসের চেয়ারম্যান জন আর্থার এবং বর্তমান সিইও স্টিফেন রুয়ের বৈঠক নির্ধারিত হয়েছে চলতি সপ্তাহে।

গত দুই বছরের মধ্যে এটি অপটাসের দ্বিতীয় বড় বিভ্রাট। ২০২৩ সালে এমন একটি বিপর্যয়ের পর প্রতিষ্ঠানটিকে ১ কোটি ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল। কারণ, তারা জরুরি সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং পরে গ্রাহকদের খোঁজখবর নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করেনি।

এর আগে ২০২২ সালে এক সাইবার হামলায় অপটাসের প্রায় ৯৫ লাখ গ্রাহকের তথ্য ফাঁস হয়, যা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি বড়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

২০২৩ সালের আরেকটি বিভ্রাটের পর তৎকালীন সিইও কেলি বায়ার রোজমারিন পদত্যাগ করেন। এরপর ২০২৪ সালের নভেম্বরে বর্তমান সিইও স্টিফেন রু দায়িত্ব নেন।

প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বর্তমানে নিউইয়র্ক সফরে রয়েছেন। তিনি সরাসরি রুয়ের পদত্যাগ দাবি না করলেও বলেছেন, ‘সরকারের হাতে কিছু পদক্ষেপের সুযোগ রয়েছে, যা তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে নেওয়া হতে পারে।’

ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়ান কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অথোরিটি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে এক কোটি ডলারের বেশি জরিমানা এবং অতিরিক্ত শাস্তি পেতে পারে অপটাস।

অপটাস জানিয়েছে, তারা নিজস্ব অভ্যন্তরীণ তদন্ত করছে এবং এর ফলাফল সবার সামনে প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি, তারা সব ধরনের তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানিয়েছে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত