Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের পরিচালনা বোর্ডে মাত্র একটি আসন পাবে চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
টিকটকের অ্যালগরিদম এখন পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ছবি: এএফপি
টিকটকের অ্যালগরিদম এখন পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ছবি: এএফপি

টিকটকের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে বলে জানালেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। ফক্স নিউজকে গত শনিবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নতুন একটি চুক্তির আওতায় টিকটকের পরিচালনা বোর্ডে সাতটি আসনের মধ্যে ছয়টিতেই থাকবেন মার্কিন নাগরিকেরা। একই সঙ্গে অ্যাপটির অ্যালগরিদম, ব্যবহারকারীদের তথ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ও থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে।

লেভিট আরও বলেন, ‘এই চুক্তি আমেরিকার স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে। অ্যাপটির ডেটা ও প্রাইভেসি-সংক্রান্ত বিষয়াদি এখন থেকে দেখভাল করবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সফটওয়্যার ও ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানি ওরাকল।’

টিকটকের অ্যালগরিদম এখন পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তবে ঠিক কারা ওই ছয় মার্কিন বোর্ড সদস্য হবেন বা অ্যালগরিদম পরিচালনার দায়িত্বে কারা থাকবেন, সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। টিকটকের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বোর্ডে যুক্ত হতে যাওয়া বিনিয়োগকারীরা খুবই পরিচিত এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী আমেরিকান ব্যক্তিত্ব। এই বোর্ডে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা সবাই আমেরিকান এবং অত্যন্ত প্রভাবশালী ও সম্ভ্রান্ত।

গত সপ্তাহে স্পেনের মাদ্রিদে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, চুক্তির কাঠামো চূড়ান্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ কোটি ছাড়িয়েছে। গত বছর ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের সমর্থনে কংগ্রেসে একটি আইন পাস হয়। এতে বলা হয়, টিকটক যদি কোনো আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি না হয়, তাহলে সেটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই আইনে স্বাক্ষরও করেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর কয়েক দিন আগেই টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ট্রাম্প কয়েকবার নির্বাহী আদেশ দিয়ে টিকটকের জন্য সময়সীমা বাড়ান।

জাতীয় নিরাপত্তা এবং তথ্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল টিকটক যেন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির অধীনে চলে আসে। কারণ, চীনা মূল কোম্পানির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য চীন সরকারের কাছে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

গত শনিবার লেভিট বলেন, ‘প্রশাসন শতভাগ আত্মবিশ্বাসী যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু চুক্তিতে সই দেওয়ার অপেক্ষা এবং প্রেসিডেন্টের টিম চীনা প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে কাজ করছে।’

শুক্রবার ট্রাম্প জানান, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশেও অনেকেই চায় অ্যাপটি খোলা থাকুক। যদি খোলা না থাকত, তবু আমাদের জয় আসত। তবে অনেক তরুণ ভোটার আমাদের ভোট দিয়েছেন টিকটকের কারণেই।’

২০২০ সালে নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প টিকটক বন্ধ করার উদ্যোগ নেন। তখন জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তিনি এক নির্বাহী আদেশ দিয়েছিলেন।

তবে এবার ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। তিনি বলেন, ‘আমি আগে টিকটকের ভক্ত ছিলাম না। তবে এরপর আমি এটা ব্যবহার করতে শুরু করি এবং আমি ভক্ত হয়ে যাই। এই অ্যাপ আমাকে নির্বাচনে জিততেও সাহায্য করেছে।’

তথ্যসূত্র: রয়টার্স ও এনবিসি নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত