অনলাইন ডেস্ক
প্রসেসরের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি এবং শক্তি খরচ কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে চীনের তৈরি সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর। নতুন এই ট্রানজিস্টর তৈরি করতে সিলিকনের বদলে বিসমাথ ব্যবহার করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন ট্রানজিস্টরটি এমন চিপ তৈরি করতে সাহায্য করবে, যা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ইনটেলসহ অন্যদের তৈরি সিলিকন প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ দ্রুত কাজ করতে পারবে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
গবেষকেরা জানান, এ ধরনের চিপগুলো ১০ শতাংশ কম শক্তি খরচ করবে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নেচার জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিকিইউ) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান লেখক হাইলিন পেং বলেন, যদি বিদ্যমান উপকরণের ভিত্তিতে চিপ উদ্ভাবনকে ‘সোজা পথ’ বলা হয়, তবে ২ডি উপাদানভিত্তিক ট্রানজিস্টরের উন্নয়নটি ‘রাস্তা বদল’ করার মতো।
নতুন ধরনের সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর
গবেষকেরা যেটি তৈরি করেছেন, তা হলো গেট-অল-অ্যারাউন্ড ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টর (জিএএএফইটি)। পূর্ববর্তী ট্রানজিস্টর ডিজাইন যেমন: ফিন ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টরের (ফিনএফইটি) তুলনায় জিএএএফইটি ট্রানজিস্টর তিনটির বদলে চারদিকের গেট দিয়ে সোর্সগুলোকে মোড়ানো হয়।
ট্রানজিস্টর একটি সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস, যা প্রতিটি কম্পিউটার চিপে থাকে। প্রতিটি ট্রানজিস্টরের সোর্স, গেট ও ড্রেন থাকে, যা ট্রানজিস্টরটিকে সুইচ হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে।
গেট হলো সেই উপাদান, যা সোর্স ও ড্রেনের মধ্যে বৈদ্যুতিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুইচ ও অ্যামপ্লিফায়ারের ভূমিকা পালন করতে পারে। সোর্সের চারপাশে গেটটি পুরোপুরি মোড়ানো থাকলে পারফরম্যান্স ও কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।
যদিও জিএএএফইটি আর্কিটেকচার নতুন নয়। তবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দলের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ছিল। কারণ তারা নতুন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর হিসেবে বিসমাথ অক্সিসেলেনাইড ব্যবহার করেছেন। তারা এটিকে ‘আণবিকভাবে পাতলা’ ২ডি ট্রানজিস্টর তৈরি করতে ব্যবহার করেছেন।
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সুবিধা
২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টরটি সিলিকনের তুলনায় কম ভঙ্গুর এবং আরও নমনীয়। গবেষকেরা জানান, বিসমাথ উপাদানটি উচ্চ গতির বিদ্যুৎ চলাচলের জন্য উপযুক্ত এবং এর উচ্চ ডাইইলেকট্রিক কনস্ট্যান্ট (বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষমতা) ট্রানজিস্টরের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।
সিলিকনের তুলনায় বিসমাথে ইলেকট্রন খুব কম রেজিস্ট্যান্সের মুখোমুখি হয় এবং এটি তাদের চলাচলকে ত্বরান্বিত করে।
উন্নত ন্যানোফ্যাব্রিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকেরা ২ডি ট্রানজিস্টরটি তৈরি করে, যার পুরু ছিল মাত্র কয়েকটি আণবিক স্তর। এই অতিক্ষুদ্র কাঠামোটি ট্রানজিস্টরের আকার হ্রাস করে এবং ইলেকট্রনের বিচ্ছুরণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে দ্রুত সুইচিং স্পিড এবং কম শক্তি খরচ হয়।
যদি এই ট্রানজিস্টর এমন কোনো চিপে ব্যবহৃত হয়, যা ইনটেল এবং অন্যান্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানের তৈরি সিলিকন চিপগুলোর তুলনায় দ্রুত কাজ করে, তাহলে এটি চীনকে বর্তমান চিপ প্রসেসিং সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়িয়ে গিয়ে একটি ভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করার সুযোগ দিতে পারে।
চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
যদিও বিসমাথ ট্রানজিস্টর চিপ তৈরিতে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে এটি তৈরিতে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। বর্তমানে ২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টর তৈরি করতে অত্যন্ত বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি এবং কৌশল প্রয়োজন। এর ফলে প্রতিযোগিতামূলক খরচে এসব ডিভাইসের ব্যাপক উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই উৎপাদন পদ্ধতি উন্নত করার জন্য কাজ করছেন গবেষকেরা। তবে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হতে কয়েক বছর সময় নেবে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলোর বর্তমান সিলিকনভিত্তিক প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূতকরণ। বর্তমান যুগের বেশির ভাগ বৈদ্যুতিক ডিভাইস সিলিকন উপাদানের ওপর নির্মিত এবং বিসমাথের মতো নতুন কোনো উপাদানে স্থানান্তর করতে গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। তবে সিলিকন উপাদানগুলোর সঙ্গে বিসমাথ ট্রানজিস্টর ব্যবহারের জন্য হাইব্রিড পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে।
এসব চ্যালেঞ্জের পরেও বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করার মতো নয়। বিসমাথ উপাদানটির বৈশিষ্ট্য আরও উন্নত করার এবং ট্রানজিস্টরের কার্যকারিতা বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা অন্য ২ডি উপাদানগুলোও পরীক্ষা করছেন, যা বিসমাথের সঙ্গে মিশ্রিত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত ডিভাইস তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রভাব
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের উন্নয়ন সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। যদি সফলভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা যায়, সিলিকনভিত্তিক বর্তমান বাজারকে বিপর্যস্ত করতে পারে এবং নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। যেসব কোম্পানি বিসমাথ প্রযুক্তি দ্রুত গ্রহণ করবে, তারা একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করবে।
চীনের জন্য বিসমাথ ট্রানজিস্টর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এটি সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিতে চীনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা দেশটিকে বৈশ্বিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।
বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং প্রযুক্তিশিল্পে একটি শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে চীন। বিসমাথ ট্রানজিস্টর প্রকল্পের সাফল্য এই প্রচেষ্টার কার্যকারিতার একটি প্রমাণ এবং এটি আগামী বছরগুলোতে আরও বৈপ্লবিক আবিষ্কারগুলোর জন্য পথ প্রশস্ত করতে পারে।
চীন যদি এই নতুন প্রযুক্তিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়, তবে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারে দেশটির একটি শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রকে এই শিল্পে বড় টেক্কা দিতে পারবে চীন।
ইলেকট্রনিকসের বাইরে: কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ আরও অনেক কিছু বিসমাথ ট্রানজিস্টরের প্রভাব শুধু ঐতিহ্যবাহী ইলেকট্রনিকসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে একটি হলো কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলো কোয়ান্টাম মেকানিকস নীতির ওপর ভিত্তি করে জটিল গণনা সম্পন্ন করে এবং এর জন্য অত্যন্ত দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট উপাদানগুলোর প্রয়োজন হয়। বিসমাথের উচ্চ ইলেকট্রন গতিশীলতা এবং অনন্য বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য এটিকে কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টরের জন্য একটি আদর্শ প্রার্থী করে তোলে, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলোর বাস্তবায়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত করতে পারে।
এ ছাড়া, বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলো পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেহেতু বিশ্ব ৬জি নেটওয়ার্ক এবং তার পরবর্তী প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে, উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি এবং কম শক্তি খরচযুক্ত ট্রানজিস্টরের চাহিদা বাড়বে। বিসমাথের টেরা-হার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করার ক্ষমতা এই উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত করবে।
তথ্যসূত্র: মিডিয়াম ও লাইভ সায়েন্স
প্রসেসরের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি এবং শক্তি খরচ কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে চীনের তৈরি সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর। নতুন এই ট্রানজিস্টর তৈরি করতে সিলিকনের বদলে বিসমাথ ব্যবহার করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন ট্রানজিস্টরটি এমন চিপ তৈরি করতে সাহায্য করবে, যা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ইনটেলসহ অন্যদের তৈরি সিলিকন প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ দ্রুত কাজ করতে পারবে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
গবেষকেরা জানান, এ ধরনের চিপগুলো ১০ শতাংশ কম শক্তি খরচ করবে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নেচার জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিকিইউ) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান লেখক হাইলিন পেং বলেন, যদি বিদ্যমান উপকরণের ভিত্তিতে চিপ উদ্ভাবনকে ‘সোজা পথ’ বলা হয়, তবে ২ডি উপাদানভিত্তিক ট্রানজিস্টরের উন্নয়নটি ‘রাস্তা বদল’ করার মতো।
নতুন ধরনের সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর
গবেষকেরা যেটি তৈরি করেছেন, তা হলো গেট-অল-অ্যারাউন্ড ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টর (জিএএএফইটি)। পূর্ববর্তী ট্রানজিস্টর ডিজাইন যেমন: ফিন ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টরের (ফিনএফইটি) তুলনায় জিএএএফইটি ট্রানজিস্টর তিনটির বদলে চারদিকের গেট দিয়ে সোর্সগুলোকে মোড়ানো হয়।
ট্রানজিস্টর একটি সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস, যা প্রতিটি কম্পিউটার চিপে থাকে। প্রতিটি ট্রানজিস্টরের সোর্স, গেট ও ড্রেন থাকে, যা ট্রানজিস্টরটিকে সুইচ হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে।
গেট হলো সেই উপাদান, যা সোর্স ও ড্রেনের মধ্যে বৈদ্যুতিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুইচ ও অ্যামপ্লিফায়ারের ভূমিকা পালন করতে পারে। সোর্সের চারপাশে গেটটি পুরোপুরি মোড়ানো থাকলে পারফরম্যান্স ও কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।
যদিও জিএএএফইটি আর্কিটেকচার নতুন নয়। তবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দলের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ছিল। কারণ তারা নতুন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর হিসেবে বিসমাথ অক্সিসেলেনাইড ব্যবহার করেছেন। তারা এটিকে ‘আণবিকভাবে পাতলা’ ২ডি ট্রানজিস্টর তৈরি করতে ব্যবহার করেছেন।
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সুবিধা
২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টরটি সিলিকনের তুলনায় কম ভঙ্গুর এবং আরও নমনীয়। গবেষকেরা জানান, বিসমাথ উপাদানটি উচ্চ গতির বিদ্যুৎ চলাচলের জন্য উপযুক্ত এবং এর উচ্চ ডাইইলেকট্রিক কনস্ট্যান্ট (বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষমতা) ট্রানজিস্টরের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।
সিলিকনের তুলনায় বিসমাথে ইলেকট্রন খুব কম রেজিস্ট্যান্সের মুখোমুখি হয় এবং এটি তাদের চলাচলকে ত্বরান্বিত করে।
উন্নত ন্যানোফ্যাব্রিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকেরা ২ডি ট্রানজিস্টরটি তৈরি করে, যার পুরু ছিল মাত্র কয়েকটি আণবিক স্তর। এই অতিক্ষুদ্র কাঠামোটি ট্রানজিস্টরের আকার হ্রাস করে এবং ইলেকট্রনের বিচ্ছুরণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে দ্রুত সুইচিং স্পিড এবং কম শক্তি খরচ হয়।
যদি এই ট্রানজিস্টর এমন কোনো চিপে ব্যবহৃত হয়, যা ইনটেল এবং অন্যান্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানের তৈরি সিলিকন চিপগুলোর তুলনায় দ্রুত কাজ করে, তাহলে এটি চীনকে বর্তমান চিপ প্রসেসিং সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়িয়ে গিয়ে একটি ভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করার সুযোগ দিতে পারে।
চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
যদিও বিসমাথ ট্রানজিস্টর চিপ তৈরিতে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে এটি তৈরিতে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। বর্তমানে ২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টর তৈরি করতে অত্যন্ত বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি এবং কৌশল প্রয়োজন। এর ফলে প্রতিযোগিতামূলক খরচে এসব ডিভাইসের ব্যাপক উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই উৎপাদন পদ্ধতি উন্নত করার জন্য কাজ করছেন গবেষকেরা। তবে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হতে কয়েক বছর সময় নেবে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলোর বর্তমান সিলিকনভিত্তিক প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূতকরণ। বর্তমান যুগের বেশির ভাগ বৈদ্যুতিক ডিভাইস সিলিকন উপাদানের ওপর নির্মিত এবং বিসমাথের মতো নতুন কোনো উপাদানে স্থানান্তর করতে গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। তবে সিলিকন উপাদানগুলোর সঙ্গে বিসমাথ ট্রানজিস্টর ব্যবহারের জন্য হাইব্রিড পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে।
এসব চ্যালেঞ্জের পরেও বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করার মতো নয়। বিসমাথ উপাদানটির বৈশিষ্ট্য আরও উন্নত করার এবং ট্রানজিস্টরের কার্যকারিতা বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা অন্য ২ডি উপাদানগুলোও পরীক্ষা করছেন, যা বিসমাথের সঙ্গে মিশ্রিত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত ডিভাইস তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রভাব
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের উন্নয়ন সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। যদি সফলভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা যায়, সিলিকনভিত্তিক বর্তমান বাজারকে বিপর্যস্ত করতে পারে এবং নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। যেসব কোম্পানি বিসমাথ প্রযুক্তি দ্রুত গ্রহণ করবে, তারা একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করবে।
চীনের জন্য বিসমাথ ট্রানজিস্টর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এটি সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিতে চীনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা দেশটিকে বৈশ্বিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।
বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং প্রযুক্তিশিল্পে একটি শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে চীন। বিসমাথ ট্রানজিস্টর প্রকল্পের সাফল্য এই প্রচেষ্টার কার্যকারিতার একটি প্রমাণ এবং এটি আগামী বছরগুলোতে আরও বৈপ্লবিক আবিষ্কারগুলোর জন্য পথ প্রশস্ত করতে পারে।
চীন যদি এই নতুন প্রযুক্তিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়, তবে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারে দেশটির একটি শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রকে এই শিল্পে বড় টেক্কা দিতে পারবে চীন।
ইলেকট্রনিকসের বাইরে: কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ আরও অনেক কিছু বিসমাথ ট্রানজিস্টরের প্রভাব শুধু ঐতিহ্যবাহী ইলেকট্রনিকসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে একটি হলো কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলো কোয়ান্টাম মেকানিকস নীতির ওপর ভিত্তি করে জটিল গণনা সম্পন্ন করে এবং এর জন্য অত্যন্ত দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট উপাদানগুলোর প্রয়োজন হয়। বিসমাথের উচ্চ ইলেকট্রন গতিশীলতা এবং অনন্য বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য এটিকে কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টরের জন্য একটি আদর্শ প্রার্থী করে তোলে, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলোর বাস্তবায়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত করতে পারে।
এ ছাড়া, বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলো পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেহেতু বিশ্ব ৬জি নেটওয়ার্ক এবং তার পরবর্তী প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে, উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি এবং কম শক্তি খরচযুক্ত ট্রানজিস্টরের চাহিদা বাড়বে। বিসমাথের টেরা-হার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করার ক্ষমতা এই উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত করবে।
তথ্যসূত্র: মিডিয়াম ও লাইভ সায়েন্স
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে পেপ্যাল, ওয়াইজ ও স্ট্রাইপের মতো পেমেন্ট সেবাগুলো চালুর দাবি জানিয়েছেন ফ্রিল্যান্সার ও আইটি পেশাজীবীরা। তাঁরা বলছেন, দেশের তরুণ উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের অভাবে বড় ধরনের সীমাবদ্ধতায় পড়ছেন।
১২ ঘণ্টা আগেনতুন মডুলার ফোন নিয়ে আসছে নাথিংয়ের সাব-ব্র্যান্ড সিএমএফ। তাদের দ্বিতীয় মডুলার ফোন সিএমএফ ফোন ২ প্রো ঘোষণা করা হয়েছে। আগের মতোই স্ক্রু দিয়ে লাগানো যায় এমন একাধিক অ্যাকসেসরিজ যুক্ত করা যাবে ফোনটিতে। ডিভাইসটি ৩ বছরের অ্যান্ড্রয়েড আপডেট এবং ৬ বছরের নিরাপত্তা আপডেট পাবে।
১৩ ঘণ্টা আগেনতুন চিপসেট ‘স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২’ নিয়ে কাজ করছে চিপ নির্মাতা কোম্পানি কোয়ালকম। এই চিপ পরবর্তী প্রজন্মের একটি শক্তিশালী প্রসেসর, যা নতুন আইফোন ১৭-এর পারফরম্যান্সকেও ছাপিয়ে যেতে পারে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
১৫ ঘণ্টা আগেব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কনস্টেলেশন প্রকল্প ‘প্রজেক্ট কুইপার’-এর প্রথম ২৭টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে ই–কমার্স জায়ান্ট আমাজন। এর মাধ্যমে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারলিংককে চ্যালেঞ্জ জানাল কোম্পানিটি। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে স্যাটেলাইটগুলো উৎক্ষেপণ করা হয়।
১৬ ঘণ্টা আগে