Ajker Patrika

বড় হারে যে বার্তা পেল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও ম্যাচের ১৫ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ কেটেছে নারী এশিয়ান কাপের টিকিট। ছবি: বাফুফে
দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও ম্যাচের ১৫ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ কেটেছে নারী এশিয়ান কাপের টিকিট। ছবি: বাফুফে

বিষাদের পর হরিষ। কাল বিকেলে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার খানিক পরে বাংলাদেশ পেল একটা বড় সুখবর—অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে খেলার টিকিট মিলেছে।

নারী ফুটবলের যেকোনো পর্যায়ে শেষ কবে এমন বিধ্বস্ত দেখা গেছে বাংলাদেশকে? সাম্প্রতিক সময়ে খুব একটা মনে পড়বে না। অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে গতকাল ৬-১ গোলের হার আরেক বাস্তবতার সঙ্গে নতুন করে যেন পরিচয় করিয়ে দিল বাংলাদেশকে।

জাতীয় দল নিয়ে গত বছর সাফ জেতার পরপর কোচ পিটার বাটলার আকুতি জানিয়ে আসছেন বড় দলের বিপক্ষে খেলার। প্রথমবারের মতো সিনিয়রদের নিয়ে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করার পর তা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে যাওয়ার আগে বাটলারের বড় দুশ্চিন্তার নাম ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। মেয়েদের বয়সভিত্তিক ফুটবলে কোনো র‍্যাঙ্কিং হয় না, জাতীয় দল বিচারে কোরিয়া (২১) বাংলাদেশের (১০৪) চেয়ে এগিয়ে আছে ৮৩ ধাপ। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খুব একটা পার্থক্য থাকার কথা নয়। এর প্রমাণ মিলেছে গতকাল। আগের দুই ম্যাচে লাওসকে ৩-১ ও পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

লাওসের জাতীয় স্টেডিয়ামে বড় পরীক্ষার ম্যাচে কোরিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল আক্রমণাত্মক। তৃষ্ণা রানীর গোলে এগিয়ে গেলেও প্রথমার্ধ শেষ করতে হয় ১-১ সমতা নিয়ে। তখন যে কেউই বলবে, দুই দলের খেলার মানে আকাশ-পাতাল পার্থক্য নেই। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কোরিয়া বোঝাল কত ধানে কত চাল। ৫ গোলের মধ্যে তিনটিই তারা করেছে শেষ ১০ মিনিটে। চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায় বাংলাদেশের রক্ষণ।

প্রশ্ন উঠতে পারে, এত শক্তিশালী দলের বিপক্ষে কেন নিজের চিরচেনা হাই লাইন ডিফেন্স কৌশলে খেলতে গেল বাংলাদেশ। লাওসের মতো লো ব্লকে খেলে আটকে রাখার সুযোগ ছিল কোরিয়াকে। প্রথম গোলের পর সেটা অবচেতন মনে আসার কথা।

বাটলারেরও কি আসেনি? অবশ্যই আসার কথা। তার চেয়ে বরং ঝুঁকি নেওয়াই ভালো মনে করেছেন তিনি। মার্চে জাতীয় দলকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে হবে এশিয়ান কাপ। কোরিয়ার কাছে হারলেও আফঈদা-সাগরিকারা ঠিকই অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে নাম লিখিয়েছে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে। এপ্রিলে থাইল্যান্ডে হবে টুর্নামেন্টটি।

দুটি টুর্নামেন্টে খেলতে হবে তুলনামূলক শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। তখনো কি একই ছবি দেখা যাবে? একটা বিষয় নিশ্চিত, প্রতিপক্ষকে ভয় পাবেন না বাটলার। খেলতে চান চোখে চোখ রেখে। এভাবে তিনি বড় করে তুলেছেন বাংলাদেশের স্বপ্নকে।

চিত্রটা একই থাকতে পারে, যদি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বেশি বেশি ম্যাচ না খেলা হয়। এশিয়ান কাপের আগে জাতীয় দলের জন্য দুটি ফিফা উইন্ডো পাচ্ছে বাফুফে। ভালোভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য জাপানে ক্যাম্প করার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন নারী ফুটবল উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, ‘জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (জেএফএ) সভাপতির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা চাইলে জাপানে গিয়ে ক্যাম্প করতে পারে। তবে তাদের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা সম্ভব নয়।’

অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারসহ জাতীয় দলের ৯ ফুটবলার আছেন অনূর্ধ্ব-২০ দলে। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো শক্তিশালী দলগুলো কেমন হতে পারে, সেটা নিয়ে ভালো ধারণা হলো তাঁদের। তবে এতটুকু বুঝতে পারছেন, ভালো ফল পেতে লড়াই করতে হবে পুরো ৯০ মিনিট।

এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে উত্তর কোরিয়া, চীন ও উজবেকিস্তান। সব দলই র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ওপরে। চীন তো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। উত্তর কোরিয়াও এর আগে পেয়েছে শিরোপার স্বাদ। অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপেও বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্বল দল হিসেবে যাবে। দুটো টুর্নামেন্ট শেষে নতুন বার্তা দিতে পারে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফেল করায় বকা খেয়ে বাড়ি ছাড়ে বাংলাদেশি কিশোরী, ভারতে ৩ মাসে ২০০ লোকের ধর্ষণ

রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

দেখো, ওর থেকে আরও ৫ লাখ নিতে পারো কি না—মেসেঞ্জার কলে এনসিপি নেতা নিজাম

‘কাল দেখা হইবে, ভালো থাকিস’—ছেলেকে বলেছিলেন গণপিটুনিতে নিহত প্রদীপ

ট্রাফিক সার্জেন্টকে গালিগালাজ: সহকারী কর কমিশনার ফাতেমা বরখাস্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত