Ajker Patrika

লাফিয়ে লাফিয়ে মাইক্রোফোন হাতে ক্রিকেটাররা কথা বলেছে: বিসিবি সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ১৬
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছ থেকে মাইক হাতে নিয়ে কথা বলছেন লিটন দাস। ছবি: বিসিবি
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছ থেকে মাইক হাতে নিয়ে কথা বলছেন লিটন দাস। ছবি: বিসিবি

এ বছরের মে মাসে বাংলাদেশি ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হওয়ার পরই আমিনুল ইসলাম বুলবুল ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নতিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় যেতে হচ্ছে। শত ব্যস্ততার মধ্যে আজ বিসিবি সভাপতি বসেছেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে।

সোনারগাঁও হোটেলের কনফারেন্স রুমে আজ ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ নামে একটি সেশন করেছেন। বোর্ড পরিচালক আকরাম খান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন, স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদসহ এসেছেন লিটন দাস, খালেদ আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, নাসুম আহমেদ, তাওহিদ হৃদয়রা। বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর ক্রিকেটারদের সঙ্গে আজই প্রথম বসেছেন বুলবুল। বিকেলে যখন গণমাধ্যমের সঙ্গে বুলবুল কথা বলেছেন, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন মিঠু ও বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটে সদ্য যোগ দেওয়া অ্যালেক্স মার্শাল।

ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় আলোচনার পর সেটা যে অনেকটা ফলপ্রসূ হয়েছে, তা বুলবুলের কথাবার্তায় বোঝা গেছে। বিসিবি সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জিজ্ঞেস করেছি লজিস্টিক, অ্যাটায়ার, অনুশীলনের সুবিধা, মেডিকেল, ওভারঅল সাপোর্ট—আমরা কতটুকু করতে পেরেছি। তারা তাদের কথা মন খুলে লিখেছে, পরামর্শ দিয়েছে। সেখান থেকে আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের অবস্থান কোথায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের যে এজেন্ডা ছিল, এজেন্ডার বাইরে থেকে এসে ক্রিকেটাররা লাফিয়ে লাফিয়ে মাইক হাতে নিয়ে কথা বলছিল। মনের কথা প্রকাশ করছিল। এটাই সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার।’

মিরাজ-মুশফিকদের পাওয়ার হাউস মনে করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: বিসিবি
মিরাজ-মুশফিকদের পাওয়ার হাউস মনে করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: বিসিবি

প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের পাশাপাশি স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্বে আছেন মুশতাক আহমেদ। স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ হিসেবে রয়েছেন নাথান কেলি। ইনস্যুরেন্স, মেডিকেল, কোচ—এসবের বাইরেও যে বোর্ডের অনেক কিছু করার থাকে, সেটা উল্লেখ করেছেন বুলবুল। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অংশীদার আমরা মনে করি ক্রিকেটারদের। তারা মাঠে খেলে। তাদের দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। দায়িত্ব বলতে শুধু ইনস্যুরেন্স, মেডিকেল নয়। মাঠে কোচরা যে স্কিল ডেভেলপ করে, সেটাই সবকিছু না।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ বছর উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি-মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে যান শান্ত-মিরাজরা। এমনকি লিটনের নেতৃত্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজও হেরেছে বাংলাদেশ। তাঁর অধিনায়কত্বেই শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।

কথা বলছেন তাসকিন আহমেদ। শ্রোতার মতো শুনছেন তানজিম হাসান সাকিব-মোস্তাফিজুর রহমানরা। ছবি: বিসিবি
কথা বলছেন তাসকিন আহমেদ। শ্রোতার মতো শুনছেন তানজিম হাসান সাকিব-মোস্তাফিজুর রহমানরা। ছবি: বিসিবি

লিটন-শান্তরা কীভাবে বিশ্বসেরা ক্রিকেটার হতে পারবেন—সে টোটকা দিয়েছেন বুলবুল। বিসিবি সভাপতি আজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেটা আলোচনা হয়েছে, পারফরম্যান্স কীভাবে আরও ভালো করতে পারি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে তারা একেকটা বড় পাওয়ারহাউস। একেকটা ক্রিকেটার কীভাবে বিশ্বের সেরা ক্রিকেটার হতে পারবে, সেই আত্মবিশ্বাস তাদের দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’

ক্রিকেটার-কোচিং স্টাফদের ওপর বুলবুল যে জরিপ চালিয়েছেন, সেটা নিয়েও আজ কথা বলেছেন। ১ মানে বেশি ভালো না, ৫ মানে বেশি ভালো—এভাবে জরিপে পাঁচটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। ক্রিকেটার, বোর্ড মিলিয়ে যে একটা দল গড়ে ওঠে, সেটা আজকের সেশনের পর বোঝা গেছে বলে জানিয়েছেন বুলবুল। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘একটা জরিপ করেছি। জরিপের মধ্যে তাদের যে মতামত,সেটা তারা লিখেছে। শুধু তারা মার্কিংই করেনি, তাদের মনের কথা লিখেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে লেখার পরও তারা সশরীরে উপস্থিত ছিল এখানে। তাদের যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো শেয়ার করেছে। তাদের সফলতাগুলো শেয়ার করেছে। তারা এটাও বলেছে যে যেসব সাপোর্ট ক্রিকেট বোর্ড থেকে তারা পাচ্ছে, তাতে তারা খুশি। আরও কিছু জায়গায় আমাদের উন্নতি করতে হবে। আমরা যে একটা দল, হারলে শুধু খেলোয়াড়রাই হারে না, কর্মকর্তারাও হারে, সেটা সবাইকে বোঝাতে পেরেছি।’

বুলবুল আজ যে জরিপের কথা সাংবাদিকদের বলেছেন, সে ব্যাপারে কদিন আগে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বলেছিলেন। সেখানেই তিনি ১৯ আগস্ট ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসার কথা বলেছিলেন। বুলবুল তাঁর কথা রেখেছেন। বিসিবি সভাপতির সঙ্গে ক্রিকেটারদের সেশন যে দারুণ হয়েছে, সেটা তো বোঝাই গেছে। এখন মাঠের পারফরম্যান্সে লিটন-হৃদয়দের সেটা প্রমাণ করার পালা। ৩০ আগস্ট, ১ সেপ্টেম্বর ও ৩ সেপ্টেম্বর সিলেটে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস। এ সিরিজের পর বাংলাদেশ খেলবে এশিয়া কাপে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত